মাহতাব হোসেন
ঢাকা: শিলিগুড়ির হোটেল সেন্ট্রাল প্লাজায় পৌঁছলাম সন্ধ্যার পরে। আমাদের শুধু একটা রাত এখানে থাকতে হবে। টাইগার হিল থেকে সূর্যোদয় দেখব, একটাই চাওয়া। যদিও জানি না ভাগ্যে কী আছে? আবহাওয়া ঠিক থাকার পরেও শেষ মুহূর্তে নড়েচড়ে যায়। আর ভগ্নহৃদয়েই অনেককে ফিরে আসতে হয় সেখান থেকে। রাতটা শিলিগুড়িতে থেকে, পরদিন সকালেই বেরিয়ে পড়লাম।
টাইগার হিল থেকে সূর্যোদয়ের সময় কাঞ্চনজঙ্ঘার রূপের বর্ণনা পশ্চিমবঙ্গের অনেক লেখকের বইয়ে পড়েছি। হিলকার্ট রোড দিয়ে আমাদের গাড়ি দুটি বেশ গতিতে এগিয়ে চলল। পথে পথে অজস্র চা–বাগান। এসব চা–বাগান দেখে মনে পড়ে সমরেশ মজুমদারের গল্প–উপন্যাসের মদেশিয়াদের জীবনকাহিনি। ধীরে ধীরে গাড়ি পাহাড়ের ওপরে উঠতে লাগল। ঘণ্টা দুয়েক পর আমরা একটা জায়গায় থামলাম। চা পানের বিরতি। মিনিট দশেক পরে ফের শুরু হলো যাত্রা। পাহাড়ের ঢাল দিয়ে তৈরি রাস্তা। কিছুক্ষণ পরেই খেয়াল করলাম, পাহাড় দিয়েই ছুটে যাচ্ছে টয় ট্রেন। ব্রিটিশ আমলে নির্মিত রেলপথ দেখে বিস্ময়ই জাগে।
১৬ জনের দল নিয়ে দুপুরের আগে প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টার যাত্রা শেষে পৌঁছলাম দার্জিলিংয়ে। পথে দেখে এলাম ভারতের সবচেয়ে উঁচু রেলস্টেশন ‘ঘুম’। একসময় সাধারণজ্ঞান বইয়ে পড়েছি ঘুমই বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু রেলস্টেশন। বিজ্ঞানের উৎকর্ষের সঙ্গে সঙ্গে আরও অনেক উঁচু স্থানে রেলপথ চলে গেছে, তৈরি হয়েছে স্টেশন। হোটেলে যখন সবাই ফ্রেশ হয়ে বিশ্রাম নেওয়ার জন্য ব্যস্ত, আমি আর এক বন্ধু তৌহিদ মিলে চলে এলাম ম্যালে। ম্যালের কথাও পশ্চিমবঙ্গের লেখকদের লেখায় বহু পড়েছি। কিন্তু দেখলাম প্রথম। পাহাড়ের ওপর বড় আকারের সমতল জায়গাকে ম্যাল বলে। সবচেয়ে বড় বিষয়, বেড়াতে এসে একমুহূর্ত অলস সময় ব্যয় করার কোনো মানে নেই।
ম্যাল থেকে পাশেই ওপরে উঠে গেছে সিঁড়ি। মানে পাহাড়ের ওপরে সিঁড়ি। একেবারে চূড়ায় মন্দির। উঠতে গিয়ে যখন মনে হলো, কি দরকার ছিল, উফ! আর পারছি না। তারপরও সিঁড়ি বেয়ে উঠতে লাগলাম। পথ যেন শেষ হয় না। আমার ধারণা ছিল, তৌহিদ হয়তো আর উঠবে না। সে দেখি আমার চেয়েও উদ্যমী। দার্জিলিং শহরের সবচেয়ে উঁচুতে এই মন্দির। অবশ্য উঠতে গিয়ে আমরা অনুপ্রাণিত হচ্ছি সেসব মানুষ দেখে, যাঁরা পিঠে পাহাড়ি বন থেকে কেটে আনা কাঠখড়ি নিয়ে পাহাড় বাইছেন। সিঁড়ি দিয়ে অর্ধেক ওঠার পর আমরা বিশ্রাম নেওয়ার জন্য বসলাম।
ফের সিঁড়ি দিয়ে উঠতে শুরু করলাম। শেষ চূড়ায় মহাকাল মন্দির। প্রচুর লোকজন আসছে–যাচ্ছে। এলাহি কাণ্ডকারখানা! রান্না হচ্ছে, খিচুড়ি খাচ্ছেন কেউ কেউ। কেউ পূজা দিতে ব্যস্ত। মন্দিরের চারপাশ ঘুরে আমরা ফের নামতে শুরু করি। বিকেলে রক গার্ডেন, প্যাগোডা, চা–বাগানসহ সবকিছুই দেখে নিলাম। সন্ধ্যার পর দার্জিলিং শহর ঘুরে ঘুরে যে যার মতো শপিং করে নিল। শপিং করে সবাই রাত ১১টার মধ্যেই হোটেলে চলে এল। দ্রুত ঘুমিয়েও পড়ল। রাত তিনটার মধ্যে বেরিয়ে যেতে হবে টাইগার হিল, আলো ফোঁটার আগে।
তিনটার আগেই রুমে ফোন করে ঘুম ভাঙিয়ে দেওয়া হলো আমাদের। উঠেই ঝটপট তৈরি হয়ে নিলাম। হোটেলের বাইরে বেরিয়ে বুঝলাম কী ভয়ানক ঠান্ডা! ওভারকোট চাপিয়ে নেওয়ায় রক্ষে। টাইগার হিলে যখন পৌঁছলাম তখনো আঁধার কাটেনি। ঘুটঘুটে অন্ধকার। অনেকটা পথ হেঁটে হেঁটে মূল জায়গায় পৌঁছলাম। ধীরে ধীরে ফিকে হতে শুরু করল আঁধার। পূর্ব আকাশে মুহূর্তেই বিচিত্র কিছু রং ছড়িয়ে পড়ল। মনে হলো কে যেন আবির ছড়িয়ে দিল। একটু পর মনে হলো—অগ্নিকুণ্ড থেকে বেরিয়ে এল সূর্য। সেই সূর্যের আলো ঠিকরে পড়ল পশ্চিমের কাঞ্চনজঙ্ঘায়। কী অদ্ভুত, কী অদ্ভুত! এই দুই বাক্য উচ্চারণ ছাড়া বলার আর কিছুই নেই। শুধু মনে হলো, মানুষ এই দৃশ্য না দেখেও পৃথিবী ছাড়ে!
এক বিস্ময়কর সূর্যোদয়, সোনায় মোড়া কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখে আমরা বিমোহিত হয়েছি। একদিকে সূর্য ওঠে, আর সেই সূর্যের আলো এসে পড়ে কাঞ্চনজঙ্ঘার চূড়ায়। সোনার রাংতায় মোড়ানো কাঞ্চনজঙ্ঘার রূপ বর্ণনা করতে পারেননি বড় বড় লেখকেরাও। আমি আর কী লিখব?
ঢাকা: শিলিগুড়ির হোটেল সেন্ট্রাল প্লাজায় পৌঁছলাম সন্ধ্যার পরে। আমাদের শুধু একটা রাত এখানে থাকতে হবে। টাইগার হিল থেকে সূর্যোদয় দেখব, একটাই চাওয়া। যদিও জানি না ভাগ্যে কী আছে? আবহাওয়া ঠিক থাকার পরেও শেষ মুহূর্তে নড়েচড়ে যায়। আর ভগ্নহৃদয়েই অনেককে ফিরে আসতে হয় সেখান থেকে। রাতটা শিলিগুড়িতে থেকে, পরদিন সকালেই বেরিয়ে পড়লাম।
টাইগার হিল থেকে সূর্যোদয়ের সময় কাঞ্চনজঙ্ঘার রূপের বর্ণনা পশ্চিমবঙ্গের অনেক লেখকের বইয়ে পড়েছি। হিলকার্ট রোড দিয়ে আমাদের গাড়ি দুটি বেশ গতিতে এগিয়ে চলল। পথে পথে অজস্র চা–বাগান। এসব চা–বাগান দেখে মনে পড়ে সমরেশ মজুমদারের গল্প–উপন্যাসের মদেশিয়াদের জীবনকাহিনি। ধীরে ধীরে গাড়ি পাহাড়ের ওপরে উঠতে লাগল। ঘণ্টা দুয়েক পর আমরা একটা জায়গায় থামলাম। চা পানের বিরতি। মিনিট দশেক পরে ফের শুরু হলো যাত্রা। পাহাড়ের ঢাল দিয়ে তৈরি রাস্তা। কিছুক্ষণ পরেই খেয়াল করলাম, পাহাড় দিয়েই ছুটে যাচ্ছে টয় ট্রেন। ব্রিটিশ আমলে নির্মিত রেলপথ দেখে বিস্ময়ই জাগে।
১৬ জনের দল নিয়ে দুপুরের আগে প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টার যাত্রা শেষে পৌঁছলাম দার্জিলিংয়ে। পথে দেখে এলাম ভারতের সবচেয়ে উঁচু রেলস্টেশন ‘ঘুম’। একসময় সাধারণজ্ঞান বইয়ে পড়েছি ঘুমই বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু রেলস্টেশন। বিজ্ঞানের উৎকর্ষের সঙ্গে সঙ্গে আরও অনেক উঁচু স্থানে রেলপথ চলে গেছে, তৈরি হয়েছে স্টেশন। হোটেলে যখন সবাই ফ্রেশ হয়ে বিশ্রাম নেওয়ার জন্য ব্যস্ত, আমি আর এক বন্ধু তৌহিদ মিলে চলে এলাম ম্যালে। ম্যালের কথাও পশ্চিমবঙ্গের লেখকদের লেখায় বহু পড়েছি। কিন্তু দেখলাম প্রথম। পাহাড়ের ওপর বড় আকারের সমতল জায়গাকে ম্যাল বলে। সবচেয়ে বড় বিষয়, বেড়াতে এসে একমুহূর্ত অলস সময় ব্যয় করার কোনো মানে নেই।
ম্যাল থেকে পাশেই ওপরে উঠে গেছে সিঁড়ি। মানে পাহাড়ের ওপরে সিঁড়ি। একেবারে চূড়ায় মন্দির। উঠতে গিয়ে যখন মনে হলো, কি দরকার ছিল, উফ! আর পারছি না। তারপরও সিঁড়ি বেয়ে উঠতে লাগলাম। পথ যেন শেষ হয় না। আমার ধারণা ছিল, তৌহিদ হয়তো আর উঠবে না। সে দেখি আমার চেয়েও উদ্যমী। দার্জিলিং শহরের সবচেয়ে উঁচুতে এই মন্দির। অবশ্য উঠতে গিয়ে আমরা অনুপ্রাণিত হচ্ছি সেসব মানুষ দেখে, যাঁরা পিঠে পাহাড়ি বন থেকে কেটে আনা কাঠখড়ি নিয়ে পাহাড় বাইছেন। সিঁড়ি দিয়ে অর্ধেক ওঠার পর আমরা বিশ্রাম নেওয়ার জন্য বসলাম।
ফের সিঁড়ি দিয়ে উঠতে শুরু করলাম। শেষ চূড়ায় মহাকাল মন্দির। প্রচুর লোকজন আসছে–যাচ্ছে। এলাহি কাণ্ডকারখানা! রান্না হচ্ছে, খিচুড়ি খাচ্ছেন কেউ কেউ। কেউ পূজা দিতে ব্যস্ত। মন্দিরের চারপাশ ঘুরে আমরা ফের নামতে শুরু করি। বিকেলে রক গার্ডেন, প্যাগোডা, চা–বাগানসহ সবকিছুই দেখে নিলাম। সন্ধ্যার পর দার্জিলিং শহর ঘুরে ঘুরে যে যার মতো শপিং করে নিল। শপিং করে সবাই রাত ১১টার মধ্যেই হোটেলে চলে এল। দ্রুত ঘুমিয়েও পড়ল। রাত তিনটার মধ্যে বেরিয়ে যেতে হবে টাইগার হিল, আলো ফোঁটার আগে।
তিনটার আগেই রুমে ফোন করে ঘুম ভাঙিয়ে দেওয়া হলো আমাদের। উঠেই ঝটপট তৈরি হয়ে নিলাম। হোটেলের বাইরে বেরিয়ে বুঝলাম কী ভয়ানক ঠান্ডা! ওভারকোট চাপিয়ে নেওয়ায় রক্ষে। টাইগার হিলে যখন পৌঁছলাম তখনো আঁধার কাটেনি। ঘুটঘুটে অন্ধকার। অনেকটা পথ হেঁটে হেঁটে মূল জায়গায় পৌঁছলাম। ধীরে ধীরে ফিকে হতে শুরু করল আঁধার। পূর্ব আকাশে মুহূর্তেই বিচিত্র কিছু রং ছড়িয়ে পড়ল। মনে হলো কে যেন আবির ছড়িয়ে দিল। একটু পর মনে হলো—অগ্নিকুণ্ড থেকে বেরিয়ে এল সূর্য। সেই সূর্যের আলো ঠিকরে পড়ল পশ্চিমের কাঞ্চনজঙ্ঘায়। কী অদ্ভুত, কী অদ্ভুত! এই দুই বাক্য উচ্চারণ ছাড়া বলার আর কিছুই নেই। শুধু মনে হলো, মানুষ এই দৃশ্য না দেখেও পৃথিবী ছাড়ে!
এক বিস্ময়কর সূর্যোদয়, সোনায় মোড়া কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখে আমরা বিমোহিত হয়েছি। একদিকে সূর্য ওঠে, আর সেই সূর্যের আলো এসে পড়ে কাঞ্চনজঙ্ঘার চূড়ায়। সোনার রাংতায় মোড়ানো কাঞ্চনজঙ্ঘার রূপ বর্ণনা করতে পারেননি বড় বড় লেখকেরাও। আমি আর কী লিখব?
তরুণদের মধ্যে যাদের জন্ম ১৯৯৭ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে তাদের বলা হচ্ছে জেন জি বা জেনারেশন জেড। একাডেমিক পড়াশোনার পাঠ চুকিয়ে করোনা চলাকালীন কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ শুরু করে এই প্রজন্ম। কিন্তু তাদের নিয়ে সবার যে প্রত্যাশা এরই মধ্যে তাতে ধুলো পড়তে শুরু করেছে।
২ দিন আগেআমন্ত্রণ নয়, রাজশাহী আপনাকে নিমন্ত্রণ জানাচ্ছে। ছাতিমের সুগন্ধ ছাড়িয়ে রাজশাহী এখন ম-ম করছে হাঁসের মাংস ভুনার সুগন্ধে। সাদা ভাত আর গরম-গরম মাংস ভুনা। বিকেলে বাটার মোড়ের জিলাপির সঙ্গে নিমকি দিয়ে হালকা নাশতা। আলোর শহর রাজশাহী ঘুরে দেখার পর সন্ধ্যায় সিঅ্যান্ডবি মোড়ে গরম-গরম রসগোল্লার সঙ্গে পুরি।
৩ দিন আগেশুধু কলাপাড়া বললে অনেকে হয়তো জায়গাটা চিনবেন না। কিন্তু কুয়াকাটার কথা বললে চিনবেন প্রায় সবাই। কুয়াকাটা সৈকতের জন্য কলাপাড়া এখন সুপরিচিত। এখানে আছে এক বিখ্যাত খাবার। জগার মিষ্টি।
৩ দিন আগেঢাকা শহরের গলিগুলো এখন খাবারের ঘ্রাণে উতলা থাকে। এদিক-ওদিক তাকালেই দেখবেন, কোথাও না কোথাও একটি লাইভ বেকারি। এতে বেক করা হচ্ছে পাউরুটি, বিভিন্ন ধরনের কেক-বিস্কুট কিংবা বাটার বান। কৌতূহল নিয়ে এক পিস কিনে মুখে পুরে দিতে পারেন। এগুলোর দামও যে খুব আহামরি, তা কিন্তু নয়।
৩ দিন আগে