লা মেরিডিয়ানে চলছে ১১ দিনের বেনারসি মেলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ০৪ মার্চ ২০২৪, ০১: ০৩
আপডেট : ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১৪: ১৪

নারীর খুব যত্নে রাখা ভালোবাসা বেনারসি শাড়ি। বেনারসি শাড়ি আভিজাত্য, ঐতিহ্য আর পরম্পরা ধরে রাখার গল্প বলা একটি পণ্য। তবে বেনারসি কি শুধুই বেনারসের? মিরপুরে যারা যুগ যুগ ধরে বেনারসি তৈরি করছেন, বেনারসি কি তাঁদের কৃতিত্ব নয়? টাঙ্গাইল শাড়ির পর বেনারসি শাড়ি নিয়েও কানাঘুষা চলছে।

এরই মাঝে রাজধানীর লা মেরিডিয়ানে চলছে বেনারসি ফেস্টিভ্যাল। ২৯ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া এই ফেস্টিভ্যাল চলবে আগামী ১০ মার্চ পর্যন্ত।

এই মেলায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ঐতিহ্য, আভিজাত্য এবং ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের তৈরি ভিন্ন ধরনের পণ্যের পসরা সাজানো। দ্য মসলিন–এর উদ্যোগে ‘টাইমলেস ম্যাগনিফিশেন্স অব দ্য বাংলাদেশি বেনারসি’ নামে একটি বেনারসি ফেস্টিভ্যাল শুরু হয়েছে। এখানে শুধু বেনারসি শাড়িই নয় বেনারসি শাড়ি তৈরির সুতা, সুতার ধরন, বোনার যন্ত্র, কোন সুতা কোন ধরনের শাড়ি কিংবা কাপড় তৈরিতে ব্যবহৃত হয় সেগুলোর বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে সাজানো হয়েছে মেলার একটি অংশ। এ ছাড়া সারি সারি রঙিন বেনারসি রাখা হয়েছে প্রদর্শনীতে। নিয়ে আসা হয়েছে মিরপুরের বেনারসি তাঁতশিল্পী ও তাদের গল্পগুলো।

গত শনিবার ফেস্টিভ্যালের তৃতীয় দিন বিকেল ৩টায় রাজধানীর লো মেরিডিয়ান হোটেলে বেনারসির ইতিহাস, ঐতিহ্য, নৈপুণ্য এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে একটি সেমিনারের আয়োজন করা হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন আর্টিস্ট ডিজাইনার চন্দ্র শেখর শাহা, বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক লুভা নাহিদ চৌধুরী, আন্তর্জাতিক পুরস্কার প্রাপ্ত মিরপুর বেনারসি পল্লীর তাঁতশিল্পী মোহাম্মদ রফিক ও তাঁতশিল্পী আবদুর রশিদ।

আলোচনায় উঠে আসে বেনারসি শিল্পের বিবর্তনের গল্প। তাঁতিদের অভিবাসন ও পুনর্বাসন নিয়ে আলোচনা করেন উপস্থিত বক্তারা। দেশীয় পণ্যের প্রতি তরুণদের আগ্রহী করে তোলার জন্য উদ্যোগ নেওয়ার কথা আহ্বান জানান তাঁরা।

এ ছাড়া বিদেশি বেনারসির ওপরে শুল্ক, দেশি বেনারসির সহজলভ্যতা, বয়ান শিল্পীদের পৃষ্ঠপোষকতা ও মূল্যায়ন করার কথাও উল্লেখ করেন বক্তারা। দেশীয় পণ্যের ব্যবহার বৃদ্ধি করা, উৎপাদনকারী ও বিক্রয়কারীর মধ্যে সামঞ্জস্য রেখে তাদের লেনদেনের জায়গা স্পষ্ট করার আহ্বান জানান বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক লুভা নাহিদ চৌধুরী।

বেনারসি টিকিয়ে রাখতে মিডিয়ার ভূমিকা অনেক বলে উল্লেখ করেন আর্টিস্ট ডিজাইনার চন্দ্র শেখর শাহা। তিনি বলেন, বেনারসি আবার ফিরে আসবেই। যেভাবে জামদানি ফিরে এসেছে, সেভাবে বেনারসিকে ফিরিয়ে আনার জন্য কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।

মেলাতে আরও রাখা হয়েছে— জামদানি শাড়ি, মাটির বিভিন্ন বাসন ও ঘর সাজানোর পণ্য, রিকশা পেইন্টের পণ্য, কাঁসার তৈরি শো পিস, কাঠের ব্যাগ, সুতার কাজ করা বিভিন্ন ডায়েরি, পাটের পণ্যসহ নানান পণ্য। শাড়ির পাশাপাশি ঘর সাজানোর বিভিন্ন জিনিস পাওয়া যাচ্ছে এই মেলায়। সর্বসাধারণের জন্য প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে মেলাটি।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত