মুনতাসির সিয়াম
শুরুর গল্প
অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় স্কুলের বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে একবার বিতর্কে অংশ নিয়েছিলেন নাকিব বিন ইসলাম। বিষয় ছিল, ‘অধ্যবসায় নয়, মেধা থাকলে ভালো ফলাফল সম্ভব পরীক্ষায়।’ বাংলা ব্যাকরণ বই থেকে অধ্যবসায় রচনা পড়াই হোক কিংবা ভালো একটি স্ক্রিপ্ট তৈরি করার আশা; প্রস্তুতির জন্য তিনি জেগেছিলেন সারা রাত। স্কুলপর্যায়ে তাঁর বিতর্কের গল্প অতটুকুই।
প্রতিযোগিতামূলক বিতর্কের সঙ্গে সংযোগ ঘটে কলেজে এসে। কলেজের ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামে বক্তব্য দিয়েছিলেন নাকিব। বক্তব্য শেষে আমন্ত্রণ মেলে চট্টগ্রাম শহরের স্কুল বিতার্কিকদের মধ্যে পরিচিত সহপাঠী অভিষেকের সঙ্গে জোট বেঁধে বিতর্কের। একে তো শহুরে বিতার্কিকদের ভিড়, তার ওপর মফস্বলে বেড়ে ওঠা ছেলেটির প্রতিযোগিতামূলক বিতর্ক সম্পর্কে নেই কোনো ধারণা! সব মিলিয়ে নাকিবের মানসিক অবস্থা বেশ সঙিন। বিষয়টি টের পেয়ে সহপাঠী অভিষেক ভরসা জুগিয়েছিলেন নিজ থেকেই। সহপাঠীর অভয়ে সাহস জোটে নাকিবের মনে।
বিতার্কিক হওয়ার ইচ্ছে তো পুরোনোই। তাই ধীরে ধীরে তৈরি করতে শুরু করলেন নিজেকে, একে একে হাতেখড়ি শুরু হলো বিতর্কের বিভিন্ন শাখায়। এরপরই মূলত নাকিবের বিতার্কিক হয়ে ওঠার গল্প শুরু। সেই গল্পে সময়ে সময়ে জুড়েছে বিভিন্ন জাতীয় পর্যায়ের বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া কিংবা বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্টগ্রাম কেন্দ্র আয়োজিত বিতর্ক প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার খ্যাতি। বিতর্কের ওপর ভালোবাসা এবং হারজিতের অনুভূতি জন্মে সেখান থেকেই।
সইতে হয়েছে অবজ্ঞা
২০১৬ সালে কলেজের হয়ে একটি বড় বিতর্ক প্রতিযোগিতায় যোগ দেন নাকিব ও তাঁর দল। বিতর্কের জগতে নাকিবের তখনো তেমন কোনো অর্জন নেই। মুখ হিসেবে অন্য সবার চেয়ে অচেনা। পেশাদার প্রশিক্ষণ ও অভিজ্ঞতারও অভাব। জানা-শোনা বা জ্ঞানের পরিধিও স্বাভাবিকভাবেই বাকিদের তুলনায় কম। সবকিছু বুঝতে পেরে কেউ যেন বিতার্কিক হিসেবে পাত্তাই দিতে চাচ্ছেন না তাঁকে। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সেই অবজ্ঞার পাল্লা ভারী হয়ে দাঁড়াল রীতিমতো অপদস্থে। অচিরেই মন ভেঙে যায় নতুন বিতার্কিকের। সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নেয় তাঁর দল।
পোক্ত হওয়ার লড়াই
২০১৭ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ অর্জন করেন নাকিব। বিতর্কের জগতে হারজিত চলছিল ঠিকই। সে জগতের জাদুকর হয়ে ওঠা তখনো বাকি। বিতর্কপ্রিয় এক তরুণ বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন বিষয়ে পড়বেন তা নিশ্চিত হওয়ার আগেই নাম লেখালেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিতর্ক ক্লাব সিইউডিএসে। শুরু হলো নিয়ম করে লেকচার শোনা, বিভিন্ন কৌশল রপ্ত, বই বা আর্টিকেল পড়ে জ্ঞানের পরিধি বাড়ানো, প্রেজেন্টেশন স্লাইড তৈরি করে উপস্থাপন, অ্যাসাইনমেন্ট জমা দেওয়াসহ পুরোপুরি পেশাদার এক প্রশিক্ষণ। দলে সুযোগ পাওয়াই তাঁর একমাত্র লক্ষ্য। সেই লক্ষ্য পূরণও হয় দ্রুতই। সুযোগ পেয়ে নিজের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের পাশে নাকিব জুড়েছেন ছয়টি জাতীয় বিতর্ক উৎসবে চ্যাম্পিয়ন এবং চারটি প্রতিযোগিতায় রানারআপ হওয়ার গৌরব। ব্যক্তিগত অর্জনেও কমতি নেই তাঁর। জাতীয় পর্যায়ে তিনটি টুর্নামেন্টসেরা বিতার্কিক এবং ফাইনাল রাউন্ডে তিনবার সেরা বক্তার তকমা নাকিবের বিতর্কের জগতে নিখুঁত হয়ে ওটারই প্রমাণ দেয়।
পরিবারের প্রেরণা
নাকিবের বেড়ে ওঠা পরিবারের কড়া শাসনে। তবে কোনো এক অদ্ভুত কারণে পাঠক্রমবহির্ভূত কার্যকলাপে সব সময় পাশে ছিলেন বাবা-মা। প্রতিযোগিতার একেকটি পর্ব শেষে ছেলের মোবাইল ফোন বেজে উঠতে দেরি হয় না। এ প্রান্ত থেকে মা-বাবার প্রশ্ন, জিত্তুছ না (জিতেছিস না)? ওপাশ থেকে ছেলের জেতার খবর শুনে খুশিতে ঝলমল করে ওঠে তাঁদের পুরো শরীর। হেরে যাওয়ার কষ্টটাও একই রকম ভোগ করেন মা-বাবা। ছেলের অর্জনগুলো তাঁদেরই অর্জন যে। বিতর্ক প্রতিযোগিতার সব ক্রেস্ট বা ট্রফি খুব যত্ন করে সাজিয়ে রাখেন নাকিবের মা-বাবা।
দায়িত্বের ডালপালা
সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বিতর্কের জগতে দারুণভাবে জায়গা করে নিয়েছেন নাকিব। শূন্য ঝুলিতে অনেক পুরস্কার জুটেছে, তেমনি পাল্লা দিয়ে বেড়েছে দায়িত্ব। এখন দায়টা আরও চমৎকার জাদুর খেলা দেখানোর। সেই সুবাদে এক এক করে সামাল দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় বিতর্ক ক্লাবের ভিন্ন তিনটি কার্যনির্বাহী পরিষদের কাজ। বিতার্কিকের পাশাপাশি বিচারকাজেও বেশ পোক্ত তিনি। অল্প সময়ের ব্যবধানে ২৫টিরও বেশি জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতায় বিচারকের দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রশিক্ষক হিসেবেও দক্ষতায় কমতি নেই নাকিবের। এ পর্যন্ত ডজনখানেক স্কুল-কলেজে বিতর্ক শেখানোর নজির রয়েছে তাঁর। তারই ধারাবাহিকতায় নাকিব বিন ইসলাম এখন চট্টগ্রামের আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় বিতর্ক ক্লাবে কোচের দায়িত্ব পালন করছেন।
শুরুর গল্প
অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় স্কুলের বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে একবার বিতর্কে অংশ নিয়েছিলেন নাকিব বিন ইসলাম। বিষয় ছিল, ‘অধ্যবসায় নয়, মেধা থাকলে ভালো ফলাফল সম্ভব পরীক্ষায়।’ বাংলা ব্যাকরণ বই থেকে অধ্যবসায় রচনা পড়াই হোক কিংবা ভালো একটি স্ক্রিপ্ট তৈরি করার আশা; প্রস্তুতির জন্য তিনি জেগেছিলেন সারা রাত। স্কুলপর্যায়ে তাঁর বিতর্কের গল্প অতটুকুই।
প্রতিযোগিতামূলক বিতর্কের সঙ্গে সংযোগ ঘটে কলেজে এসে। কলেজের ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামে বক্তব্য দিয়েছিলেন নাকিব। বক্তব্য শেষে আমন্ত্রণ মেলে চট্টগ্রাম শহরের স্কুল বিতার্কিকদের মধ্যে পরিচিত সহপাঠী অভিষেকের সঙ্গে জোট বেঁধে বিতর্কের। একে তো শহুরে বিতার্কিকদের ভিড়, তার ওপর মফস্বলে বেড়ে ওঠা ছেলেটির প্রতিযোগিতামূলক বিতর্ক সম্পর্কে নেই কোনো ধারণা! সব মিলিয়ে নাকিবের মানসিক অবস্থা বেশ সঙিন। বিষয়টি টের পেয়ে সহপাঠী অভিষেক ভরসা জুগিয়েছিলেন নিজ থেকেই। সহপাঠীর অভয়ে সাহস জোটে নাকিবের মনে।
বিতার্কিক হওয়ার ইচ্ছে তো পুরোনোই। তাই ধীরে ধীরে তৈরি করতে শুরু করলেন নিজেকে, একে একে হাতেখড়ি শুরু হলো বিতর্কের বিভিন্ন শাখায়। এরপরই মূলত নাকিবের বিতার্কিক হয়ে ওঠার গল্প শুরু। সেই গল্পে সময়ে সময়ে জুড়েছে বিভিন্ন জাতীয় পর্যায়ের বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া কিংবা বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্টগ্রাম কেন্দ্র আয়োজিত বিতর্ক প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার খ্যাতি। বিতর্কের ওপর ভালোবাসা এবং হারজিতের অনুভূতি জন্মে সেখান থেকেই।
সইতে হয়েছে অবজ্ঞা
২০১৬ সালে কলেজের হয়ে একটি বড় বিতর্ক প্রতিযোগিতায় যোগ দেন নাকিব ও তাঁর দল। বিতর্কের জগতে নাকিবের তখনো তেমন কোনো অর্জন নেই। মুখ হিসেবে অন্য সবার চেয়ে অচেনা। পেশাদার প্রশিক্ষণ ও অভিজ্ঞতারও অভাব। জানা-শোনা বা জ্ঞানের পরিধিও স্বাভাবিকভাবেই বাকিদের তুলনায় কম। সবকিছু বুঝতে পেরে কেউ যেন বিতার্কিক হিসেবে পাত্তাই দিতে চাচ্ছেন না তাঁকে। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সেই অবজ্ঞার পাল্লা ভারী হয়ে দাঁড়াল রীতিমতো অপদস্থে। অচিরেই মন ভেঙে যায় নতুন বিতার্কিকের। সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নেয় তাঁর দল।
পোক্ত হওয়ার লড়াই
২০১৭ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ অর্জন করেন নাকিব। বিতর্কের জগতে হারজিত চলছিল ঠিকই। সে জগতের জাদুকর হয়ে ওঠা তখনো বাকি। বিতর্কপ্রিয় এক তরুণ বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন বিষয়ে পড়বেন তা নিশ্চিত হওয়ার আগেই নাম লেখালেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিতর্ক ক্লাব সিইউডিএসে। শুরু হলো নিয়ম করে লেকচার শোনা, বিভিন্ন কৌশল রপ্ত, বই বা আর্টিকেল পড়ে জ্ঞানের পরিধি বাড়ানো, প্রেজেন্টেশন স্লাইড তৈরি করে উপস্থাপন, অ্যাসাইনমেন্ট জমা দেওয়াসহ পুরোপুরি পেশাদার এক প্রশিক্ষণ। দলে সুযোগ পাওয়াই তাঁর একমাত্র লক্ষ্য। সেই লক্ষ্য পূরণও হয় দ্রুতই। সুযোগ পেয়ে নিজের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের পাশে নাকিব জুড়েছেন ছয়টি জাতীয় বিতর্ক উৎসবে চ্যাম্পিয়ন এবং চারটি প্রতিযোগিতায় রানারআপ হওয়ার গৌরব। ব্যক্তিগত অর্জনেও কমতি নেই তাঁর। জাতীয় পর্যায়ে তিনটি টুর্নামেন্টসেরা বিতার্কিক এবং ফাইনাল রাউন্ডে তিনবার সেরা বক্তার তকমা নাকিবের বিতর্কের জগতে নিখুঁত হয়ে ওটারই প্রমাণ দেয়।
পরিবারের প্রেরণা
নাকিবের বেড়ে ওঠা পরিবারের কড়া শাসনে। তবে কোনো এক অদ্ভুত কারণে পাঠক্রমবহির্ভূত কার্যকলাপে সব সময় পাশে ছিলেন বাবা-মা। প্রতিযোগিতার একেকটি পর্ব শেষে ছেলের মোবাইল ফোন বেজে উঠতে দেরি হয় না। এ প্রান্ত থেকে মা-বাবার প্রশ্ন, জিত্তুছ না (জিতেছিস না)? ওপাশ থেকে ছেলের জেতার খবর শুনে খুশিতে ঝলমল করে ওঠে তাঁদের পুরো শরীর। হেরে যাওয়ার কষ্টটাও একই রকম ভোগ করেন মা-বাবা। ছেলের অর্জনগুলো তাঁদেরই অর্জন যে। বিতর্ক প্রতিযোগিতার সব ক্রেস্ট বা ট্রফি খুব যত্ন করে সাজিয়ে রাখেন নাকিবের মা-বাবা।
দায়িত্বের ডালপালা
সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বিতর্কের জগতে দারুণভাবে জায়গা করে নিয়েছেন নাকিব। শূন্য ঝুলিতে অনেক পুরস্কার জুটেছে, তেমনি পাল্লা দিয়ে বেড়েছে দায়িত্ব। এখন দায়টা আরও চমৎকার জাদুর খেলা দেখানোর। সেই সুবাদে এক এক করে সামাল দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় বিতর্ক ক্লাবের ভিন্ন তিনটি কার্যনির্বাহী পরিষদের কাজ। বিতার্কিকের পাশাপাশি বিচারকাজেও বেশ পোক্ত তিনি। অল্প সময়ের ব্যবধানে ২৫টিরও বেশি জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতায় বিচারকের দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রশিক্ষক হিসেবেও দক্ষতায় কমতি নেই নাকিবের। এ পর্যন্ত ডজনখানেক স্কুল-কলেজে বিতর্ক শেখানোর নজির রয়েছে তাঁর। তারই ধারাবাহিকতায় নাকিব বিন ইসলাম এখন চট্টগ্রামের আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় বিতর্ক ক্লাবে কোচের দায়িত্ব পালন করছেন।
খাবার মজাদার করতে আমরা সাধারণভাবে তেল-মসলার খুব বাড়াবাড়ি করে ফেলি। সেখান থেকে বাদ যায় না পেঁয়াজ কিংবা রসুন। পেঁয়াজকে কায়দা করে সরিয়ে রাখলেও খাবার মজাদার হতে পারে। তেমনই কিছু রেসিপি...
২ দিন আগেবাংলা অঞ্চলে মিষ্টিজাতীয় প্রাচীন খাবারগুলোর মধ্যে সন্দেশের নাম আছে একেবারে প্রথম দিকে। সব মিষ্টির কিছু না কিছু বদল হলেও, এর বদল হয়েছে খুবই কম। যশোরের নলেন গুড়ের সন্দেশ, মানিকগঞ্জ বা নাগরপুরের প্যারা সন্দেশ, পাবনার মাছের পেটি সন্দেশ ইত্যাদি কে না খেতে পছন্দ করে!
২ দিন আগেজীবনানন্দ দাশের কবিতায় ঘুরেফিরে এসেছে দারুচিনি দ্বীপের কথা, তার রহস্যময় শ্যামলিমার কথা, সেই সবুজের গহিনে দিকহারা নাবিকের আশ্রয়-আকাঙ্ক্ষার কথা। এই দারুচিনি দ্বীপ কি আসলে কোনো সমুদ্রঘেরা ভূখণ্ড, নাকি বনলতা সেন নিজেই, তা নিয়ে কবিরা বিতর্ক করুক। আমরা বরং এই দ্বীপের তত্ত্বতালাশ করি।
২ দিন আগে‘প্রসেসেস’-এ প্রকাশিত এক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, ভাতের মাড় ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের জন্য একটি হজমযোগ্য স্বাস্থ্যকর পানীয় হিসেবে কাজ করে। এমনকি এটি ওজন কমাতে পারে।
২ দিন আগে