ইস্তাম্বুল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগ

জুবায়ের ইবনে কামাল
প্রকাশ : ১৮ জুন ২০২৩, ০৮: ৫০

পুরো পৃথিবীতে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে গণমাধ্যম ও সাংবাদিকতা বিষয়টি পড়ানো হচ্ছে দীর্ঘদিন থেকে। এ বিষয়টি নিয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পড়াশোনা করছেন বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা। শাকিল রেজা ইফতি পড়ছেন তুরস্কের ইস্তাম্বুল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগে। বিভাগটি নিয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন তিনি।

আমি তুরস্কে পড়তে এসেছিলাম সরকারি বৃত্তি নিয়ে। তুরস্ক সরকারের অর্থায়নে প্রতিবছর ‘তুরকিয়ে বুর্সলারি’ বা তুর্কি স্কলারশিপ দেওয়া হয়। অনলাইনে আবেদনের পর প্রাথমিক বাছাইপর্ব উতরে তুরস্কের দূতাবাসে একটা পরীক্ষায় বসতে হয়েছিল। সেখান থেকেই আমি সুযোগ পাই বৃত্তি নিয়ে এখানে পড়তে আসার।

তুরস্কে এসে ইস্তাম্বুল ইউনিভার্সিটির আওতায় বছরখানেক এখানকার ভাষা শিখি। সত্যি বলতে, ঐতিহাসিকভাবে এ বিশ্ববিদ্যালয়টি চমৎকার একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ১৪৫৩ সালে প্রতিষ্ঠিত, অর্থাৎ প্রায় ৫৭০ বছরের পুরোনো এই বিশ্ববিদ্যালয় তুরস্কের সবচেয়ে পুরোনো বিশ্ববিদ্যালয়। এখানে যোগাযোগ অনুষদের আওতায় তিনটি বিষয়ে স্নাতক সম্পন্ন করা যায়। একটি হলো সাংবাদিকতা। আর অন্য দুটি যথাক্রমে জনসংযোগ এবং রেডিও, টেলিভিশন ও সিনেমা। আমি উচ্চশিক্ষার জন্য সাংবাদিকতা বিভাগকেই বেছে নিয়েছিলাম। তবে আমাদের এখানে অনুষদের আওতায় যতগুলো বিভাগ আছে, সবখানেই কমবেশি ক্লাস করতে হয়; অর্থাৎ সাংবাদিকতার পাশাপাশি রেডিও-টিভি কিংবা জনসংযোগ বিষয়টি নিয়েও আমাদের পড়ানো হয়েছে।

তুরস্কে পড়াশোনা শুরুর প্রথম চ্যালেঞ্জটা ছিল ভাষা। আগেই বলেছি, ইস্তাম্বুল বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় ভাষা শিখেছিলাম প্রায় দশ মাসের বেশি সময়। এখানে ধাপে ধাপে তুরস্কের ভাষা শিখিয়ে সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছিল। এই সার্টিফিকেট ছাড়া ইস্তাম্বুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া যেত না। তাই বলা যায়, এটা ছিল চ্যালেঞ্জ। তবে আমি খুব আগ্রহ নিয়ে তুরস্কের সাহিত্য-সিনেমা উপভোগ করতাম। তাই এই চ্যালেঞ্জটাকে ‘সুইট চ্যালেঞ্জ’ বলা যায়।

বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনেক বেশি আন্তরিকতা পেয়েছি। বিদেশি শিক্ষার্থী হিসেবে আমার সঙ্গে শিক্ষক থেকে শুরু করে সবাই বেশ আন্তরিক। যোগাযোগ ও গণমাধ্যম বিষয়টা আমি নিজে উপভোগ করি বিধায় উচ্চশিক্ষার সঙ্গে আমিও মানিয়ে নিতে পেরেছি সহজেই।

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে তুরস্কে চলে যাওয়ার পর করোনা মহামারি শুরু হয়। তাই স্বাভাবিক পাঠদানের পদ্ধতি পাল্টে যায়। করোনার পরপর আবার সবকিছু ঠিকঠাক হয়ে এলেও কিছুদিন আগে তুরস্কে ভয়াবহ ভূমিকম্পের কারণে ‘হাইব্রিড’ পদ্ধতিতে আমাদের পাঠদান শুরু হয়েছে; অর্থাৎ অনলাইন ও সশরীরে দুইভাবেই ক্লাস চলছে এখন।

আমি সাংবাদিকতা ও যোগাযোগ বিষয়ে পড়ে আনন্দ পাই। আর হ্যাঁ, অনেকেই হয়তো জানেন না ইস্তাম্বুল বিশ্ববিদ্যালয়ে এই বিভাগেই পড়াশোনা করেছিলেন নোবেলজয়ী সাহিত্যিক ওরহান পামুক। এটাও আমাদের গর্বের বিষয়!

অনুলিখন: জুবায়ের ইবনে কামাল

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত