ফারুক হোসেন চৌধুরী
প্রযুক্তি ছোঁয়ায় বদলে যাচ্ছে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। প্রচলিত শ্রেণিকক্ষের জায়গায় এখানে চালু হয়েছে স্মার্ট ক্লাসরুম। এর মাধ্যমে শিক্ষার গুণগতমান বৃদ্ধি, শিক্ষকদের দক্ষতা ও শিক্ষা দানের প্রতি শিক্ষার্থীর আগ্রহ বেড়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ি কোথায়, কোন অবস্থায় আছে তা ভেহিক্যাল ট্র্যাকিং সিস্টেমের মাধ্যমে জানতে পারছেন শিক্ষার্থীরা। পুরো ক্যাম্পাস ওয়াইফাইয়ের আওতায় এসেছে। প্রচলিত অফিস ব্যবস্থাপনার জায়গায় অটোমেশন চালু হওয়ায় আর কিছুদিনের মধ্যে এটি হবে ‘পেপারলেস’ বিশ্ববিদ্যালয়। এখানে নিয়মিত মুক্তিযুদ্ধের গল্প শোনানোর আয়োজন করা হয়। উদ্বোধন করা হয়েছে কবি বন্দে আলী মিয়া মুক্তমঞ্চ, যেটি দিনভর সংস্কৃতিকর্মীদের পদচারণায় মুখরিত থাকে। খেলার মাঠ জমজমাট থাকে খেলোয়াড়দের অনুশীলনে।
গত বছরের এপ্রিল মাসে উপাচার্য হিসেবে এখানে যোগ দেন বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং বিশিষ্ট পরিবেশ বিশেষজ্ঞ, গবেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. হাফিজা খাতুন। দেশের চতুর্থ নারী উপাচার্য হিসেবে তিনি আলোর দিশারি হয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের পরেই একাডেমিক ও প্রশাসনিক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনেন। একে প্রকৃত বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তুলতে গবেষণার ওপর জোর দেন। তাঁকে সহযোগিতা করেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এসএম মোস্তফা কামাল এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কে এম সালাহ উদ্দিন। এক সময় বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত বিশ্ববিদ্যালয়টি মাত্র এক বছরের মাথায় এগিয়ে চলেছে ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির ‘বিদ্যা পিঠ’ হিসেবে। পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হতে যাচ্ছে ভবিষ্যতের নতুন দিনের বিশ্ববিদ্যালয়।
পাবনা জেলার শিক্ষা, সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক তথা সামগ্রিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে এই বিশ্ববিদ্যালয়। বিজ্ঞানমুখী শিক্ষার প্রসার, দেশে উচ্চ শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি, জ্ঞান চর্চা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে পঠন-পাঠন ও গবেষণার সুযোগ সৃষ্টি করেছে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
বিজ্ঞান, প্রকৌশল আর প্রযুক্তি শিক্ষার গুরুত্ব সারা বিশ্বে সমাদৃত ও অনস্বীকার্য। একটি দেশকে উন্নত পর্যায়ে পৌঁছাতে হলে তাকে আধুনিক ও দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে হয়। আর দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে কয়েকটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করেছেন, তার অন্যতম হলো পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী চিন্তা, আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নির্ভর রাষ্ট্র গড়ার পরিকল্পনা, বিজ্ঞানমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা, বিশেষ করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নির্ভর উন্নত বিশ্বের সমকক্ষতা অর্জনের যে স্বপ্ন, তা বাস্তবায়নে কার্যকরী পদক্ষেপের ফসল পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা বিনির্মাণের এক একজন সুনাগরিক হিসেবে দেশের সেবায় নিজেদের নিয়োজিত করবে বলে আশা করি।
২০০৮ সালে পাবনা শহর থেকে তিন কিলোমিটার পূর্বে ৩০ একর জমির ওপর স্থাপিত হয় পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। ২০০৯ সালের ৫ জুন আনুষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। তারপর হাটি হাটি পা পা করে নবীন এই বিশ্ববিদ্যালয় কৈশোর অতিক্রম করছে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য উপযুক্ত কর্মী তৈরি হচ্ছে এখানে। ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের দক্ষ কর্মী তৈরি করছেন এখানকার শিক্ষকেরা। বেশি দিন আর দূরে নেই, একদিন রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্রের হাল ধরবে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫টি অনুষদে ২১টি বিভাগের অধীনে প্রায় পাঁচ হাজার শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে এখানে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং, বিএসসি (অনার্স), বি. অর্ক, বিফার্ম (অনার্স), বিএসএস (অনার্স), বিবিএ, এমএসসি, এমএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং, এম ইঞ্জিনিয়ারিং, এমফিল ও পিএইচডি ডিগ্রি চালু আছে।
শুরু থেকে এখানে মানসম্মত শিক্ষার পাশাপাশি আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। পাঠদান কার্যক্রম সেমিস্টার পদ্ধতিতে পরিচালিত হয়। আট সেমিস্টারের সময়সীমায় প্রতি বছর দুইটি সেমিস্টার শেষ করা হয়। মাত্র চার বছরে এখান থেকে শিক্ষার্থীরা শিক্ষাজীবন শেষ করতে পারছেন। এখানকার শিক্ষার্থীরা নতুন নতুন জ্ঞান সৃষ্টি করে জ্ঞানের জগৎকে এগিয়ে নিচ্ছেন। ভর্তি পরীক্ষা অনেক প্রতিযোগিতাপূর্ণ হওয়ায় সারা দেশের শিক্ষার্থীদের আগ্রহের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে এই বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কারণে পাবনা শহরে নূতন নূতন স্থাপনা গড়ে উঠেছে। অর্থনীতিতে এসেছে গতিশীলতা। এর ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে শহরবাসীর ওপর।
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান ভবন শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান চর্চা ও গবেষণার উর্বর ক্ষেত্র। এখানে রয়েছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছাত্র হল ও শেখ হাসিনা ছাত্রী হল। লাইব্রেরিতে ই-বুক ও ই-জার্নালের সুবিধা ছাড়াও যুগোপযোগী ৩০ হাজার বই রয়েছে। এখান থেকে নিয়মিত প্রকাশিত হয় বিভিন্ন জার্নাল। রয়েছে বিভিন্ন বিভাগের সেমিনার ও লাইব্রেরি কক্ষ। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য রয়েছে পর্যাপ্ত পরিবহন ব্যবস্থা। ‘স্বাধীনতা চত্বর’ থেকে শিক্ষার্থীরা জানতে পারছেন ভাষা আন্দোলন থেকে স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস। শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন মুক্ত চিন্তা ও মত প্রকাশের অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে চলেছে। রয়েছে মহান ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে নির্মিত শহীদ মিনার। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবর্ষ উপলক্ষে নির্মাণ করা হয়েছে ‘স্মারক ম্যুরাল জনক জ্যোতির্ময়।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের দৃষ্টিনন্দন লেকটি ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেছে। এদিকে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আধুনিক সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর জন্য সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মিলে শুরু করেছে উন্নয়নের মহাযজ্ঞ। ১২ তলা বিশিষ্ট দুটি একাডেমিক ভবন, ছাত্র ও ছাত্রীদের জন্য ১০ তলা বিশিষ্ট দুটি পৃথক আবাসিক হল, ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র, ১০ তলা বিশিষ্ট প্রশাসন ভবন, শিক্ষক-কর্মকর্তা ক্লাব, ১০ তলা বিশিষ্ট অডিটোরিয়ামসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণকাজ চালু হতে যাচ্ছে।
উপাচার্য বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. হাফিজা খাতুনের সুদক্ষ নেতৃত্ব শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে এনেছে নতুন উৎসাহ উদ্দীপনা, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে এনেছে কর্মচাঞ্চল্য। উপাচার্য মহোদয়ের সার্বিক তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হচ্ছে গবেষণা, ক্লাসসহ প্রশাসনিক ও দাপ্তরিক কাজ। ফলে সর্বত্র এসেছে উন্নয়ন ও গতিশীলতা। শিক্ষার আদর্শ পরিবেশ পেয়ে জ্ঞানচর্চার তীর্থভূমি হতে চলেছে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
আজ পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় তার ১৫ তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে বর্ণিল সাজে সেজেছে। দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের চেয়ারম্যান ড. আফতাব আলী শেখের নেতৃত্বে ১৫ জন বিজ্ঞানী প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন। আমাদের সঙ্গে আছেন পাবনার বিশিষ্ট শিক্ষাবিদসহ আলোকিত মানুষেরা। বর্ণিলময় উৎসবমুখর পরিবেশে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদ্যাপন করছে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারসহ পাবনাবাসী। আজ বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের এ বিশ্ববিদ্যালয়ের আলো ছড়িয়ে পড়বে দেশব্যাপী।
লেখক: উপপরিচালক, জনসংযোগ দপ্তর, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
প্রযুক্তি ছোঁয়ায় বদলে যাচ্ছে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। প্রচলিত শ্রেণিকক্ষের জায়গায় এখানে চালু হয়েছে স্মার্ট ক্লাসরুম। এর মাধ্যমে শিক্ষার গুণগতমান বৃদ্ধি, শিক্ষকদের দক্ষতা ও শিক্ষা দানের প্রতি শিক্ষার্থীর আগ্রহ বেড়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ি কোথায়, কোন অবস্থায় আছে তা ভেহিক্যাল ট্র্যাকিং সিস্টেমের মাধ্যমে জানতে পারছেন শিক্ষার্থীরা। পুরো ক্যাম্পাস ওয়াইফাইয়ের আওতায় এসেছে। প্রচলিত অফিস ব্যবস্থাপনার জায়গায় অটোমেশন চালু হওয়ায় আর কিছুদিনের মধ্যে এটি হবে ‘পেপারলেস’ বিশ্ববিদ্যালয়। এখানে নিয়মিত মুক্তিযুদ্ধের গল্প শোনানোর আয়োজন করা হয়। উদ্বোধন করা হয়েছে কবি বন্দে আলী মিয়া মুক্তমঞ্চ, যেটি দিনভর সংস্কৃতিকর্মীদের পদচারণায় মুখরিত থাকে। খেলার মাঠ জমজমাট থাকে খেলোয়াড়দের অনুশীলনে।
গত বছরের এপ্রিল মাসে উপাচার্য হিসেবে এখানে যোগ দেন বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং বিশিষ্ট পরিবেশ বিশেষজ্ঞ, গবেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. হাফিজা খাতুন। দেশের চতুর্থ নারী উপাচার্য হিসেবে তিনি আলোর দিশারি হয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের পরেই একাডেমিক ও প্রশাসনিক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনেন। একে প্রকৃত বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তুলতে গবেষণার ওপর জোর দেন। তাঁকে সহযোগিতা করেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এসএম মোস্তফা কামাল এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কে এম সালাহ উদ্দিন। এক সময় বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত বিশ্ববিদ্যালয়টি মাত্র এক বছরের মাথায় এগিয়ে চলেছে ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির ‘বিদ্যা পিঠ’ হিসেবে। পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হতে যাচ্ছে ভবিষ্যতের নতুন দিনের বিশ্ববিদ্যালয়।
পাবনা জেলার শিক্ষা, সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক তথা সামগ্রিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে এই বিশ্ববিদ্যালয়। বিজ্ঞানমুখী শিক্ষার প্রসার, দেশে উচ্চ শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি, জ্ঞান চর্চা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে পঠন-পাঠন ও গবেষণার সুযোগ সৃষ্টি করেছে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
বিজ্ঞান, প্রকৌশল আর প্রযুক্তি শিক্ষার গুরুত্ব সারা বিশ্বে সমাদৃত ও অনস্বীকার্য। একটি দেশকে উন্নত পর্যায়ে পৌঁছাতে হলে তাকে আধুনিক ও দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে হয়। আর দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে কয়েকটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করেছেন, তার অন্যতম হলো পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী চিন্তা, আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নির্ভর রাষ্ট্র গড়ার পরিকল্পনা, বিজ্ঞানমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা, বিশেষ করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নির্ভর উন্নত বিশ্বের সমকক্ষতা অর্জনের যে স্বপ্ন, তা বাস্তবায়নে কার্যকরী পদক্ষেপের ফসল পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা বিনির্মাণের এক একজন সুনাগরিক হিসেবে দেশের সেবায় নিজেদের নিয়োজিত করবে বলে আশা করি।
২০০৮ সালে পাবনা শহর থেকে তিন কিলোমিটার পূর্বে ৩০ একর জমির ওপর স্থাপিত হয় পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। ২০০৯ সালের ৫ জুন আনুষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। তারপর হাটি হাটি পা পা করে নবীন এই বিশ্ববিদ্যালয় কৈশোর অতিক্রম করছে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য উপযুক্ত কর্মী তৈরি হচ্ছে এখানে। ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের দক্ষ কর্মী তৈরি করছেন এখানকার শিক্ষকেরা। বেশি দিন আর দূরে নেই, একদিন রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্রের হাল ধরবে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫টি অনুষদে ২১টি বিভাগের অধীনে প্রায় পাঁচ হাজার শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে এখানে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং, বিএসসি (অনার্স), বি. অর্ক, বিফার্ম (অনার্স), বিএসএস (অনার্স), বিবিএ, এমএসসি, এমএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং, এম ইঞ্জিনিয়ারিং, এমফিল ও পিএইচডি ডিগ্রি চালু আছে।
শুরু থেকে এখানে মানসম্মত শিক্ষার পাশাপাশি আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। পাঠদান কার্যক্রম সেমিস্টার পদ্ধতিতে পরিচালিত হয়। আট সেমিস্টারের সময়সীমায় প্রতি বছর দুইটি সেমিস্টার শেষ করা হয়। মাত্র চার বছরে এখান থেকে শিক্ষার্থীরা শিক্ষাজীবন শেষ করতে পারছেন। এখানকার শিক্ষার্থীরা নতুন নতুন জ্ঞান সৃষ্টি করে জ্ঞানের জগৎকে এগিয়ে নিচ্ছেন। ভর্তি পরীক্ষা অনেক প্রতিযোগিতাপূর্ণ হওয়ায় সারা দেশের শিক্ষার্থীদের আগ্রহের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে এই বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কারণে পাবনা শহরে নূতন নূতন স্থাপনা গড়ে উঠেছে। অর্থনীতিতে এসেছে গতিশীলতা। এর ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে শহরবাসীর ওপর।
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান ভবন শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান চর্চা ও গবেষণার উর্বর ক্ষেত্র। এখানে রয়েছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছাত্র হল ও শেখ হাসিনা ছাত্রী হল। লাইব্রেরিতে ই-বুক ও ই-জার্নালের সুবিধা ছাড়াও যুগোপযোগী ৩০ হাজার বই রয়েছে। এখান থেকে নিয়মিত প্রকাশিত হয় বিভিন্ন জার্নাল। রয়েছে বিভিন্ন বিভাগের সেমিনার ও লাইব্রেরি কক্ষ। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য রয়েছে পর্যাপ্ত পরিবহন ব্যবস্থা। ‘স্বাধীনতা চত্বর’ থেকে শিক্ষার্থীরা জানতে পারছেন ভাষা আন্দোলন থেকে স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস। শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন মুক্ত চিন্তা ও মত প্রকাশের অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে চলেছে। রয়েছে মহান ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে নির্মিত শহীদ মিনার। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবর্ষ উপলক্ষে নির্মাণ করা হয়েছে ‘স্মারক ম্যুরাল জনক জ্যোতির্ময়।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের দৃষ্টিনন্দন লেকটি ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেছে। এদিকে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আধুনিক সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর জন্য সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মিলে শুরু করেছে উন্নয়নের মহাযজ্ঞ। ১২ তলা বিশিষ্ট দুটি একাডেমিক ভবন, ছাত্র ও ছাত্রীদের জন্য ১০ তলা বিশিষ্ট দুটি পৃথক আবাসিক হল, ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র, ১০ তলা বিশিষ্ট প্রশাসন ভবন, শিক্ষক-কর্মকর্তা ক্লাব, ১০ তলা বিশিষ্ট অডিটোরিয়ামসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণকাজ চালু হতে যাচ্ছে।
উপাচার্য বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. হাফিজা খাতুনের সুদক্ষ নেতৃত্ব শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে এনেছে নতুন উৎসাহ উদ্দীপনা, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে এনেছে কর্মচাঞ্চল্য। উপাচার্য মহোদয়ের সার্বিক তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হচ্ছে গবেষণা, ক্লাসসহ প্রশাসনিক ও দাপ্তরিক কাজ। ফলে সর্বত্র এসেছে উন্নয়ন ও গতিশীলতা। শিক্ষার আদর্শ পরিবেশ পেয়ে জ্ঞানচর্চার তীর্থভূমি হতে চলেছে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
আজ পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় তার ১৫ তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে বর্ণিল সাজে সেজেছে। দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের চেয়ারম্যান ড. আফতাব আলী শেখের নেতৃত্বে ১৫ জন বিজ্ঞানী প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন। আমাদের সঙ্গে আছেন পাবনার বিশিষ্ট শিক্ষাবিদসহ আলোকিত মানুষেরা। বর্ণিলময় উৎসবমুখর পরিবেশে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদ্যাপন করছে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারসহ পাবনাবাসী। আজ বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের এ বিশ্ববিদ্যালয়ের আলো ছড়িয়ে পড়বে দেশব্যাপী।
লেখক: উপপরিচালক, জনসংযোগ দপ্তর, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
তরুণদের মধ্যে যাদের জন্ম ১৯৯৭ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে তাদের বলা হচ্ছে জেন জি বা জেনারেশন জেড। একাডেমিক পড়াশোনার পাঠ চুকিয়ে করোনা চলাকালীন কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ শুরু করে এই প্রজন্ম। কিন্তু তাদের নিয়ে সবার যে প্রত্যাশা এরই মধ্যে তাতে ধুলো পড়তে শুরু করেছে।
১ দিন আগেআমন্ত্রণ নয়, রাজশাহী আপনাকে নিমন্ত্রণ জানাচ্ছে। ছাতিমের সুগন্ধ ছাড়িয়ে রাজশাহী এখন ম-ম করছে হাঁসের মাংস ভুনার সুগন্ধে। সাদা ভাত আর গরম-গরম মাংস ভুনা। বিকেলে বাটার মোড়ের জিলাপির সঙ্গে নিমকি দিয়ে হালকা নাশতা। আলোর শহর রাজশাহী ঘুরে দেখার পর সন্ধ্যায় সিঅ্যান্ডবি মোড়ে গরম-গরম রসগোল্লার সঙ্গে পুরি।
৩ দিন আগেশুধু কলাপাড়া বললে অনেকে হয়তো জায়গাটা চিনবেন না। কিন্তু কুয়াকাটার কথা বললে চিনবেন প্রায় সবাই। কুয়াকাটা সৈকতের জন্য কলাপাড়া এখন সুপরিচিত। এখানে আছে এক বিখ্যাত খাবার। জগার মিষ্টি।
৩ দিন আগেঢাকা শহরের গলিগুলো এখন খাবারের ঘ্রাণে উতলা থাকে। এদিক-ওদিক তাকালেই দেখবেন, কোথাও না কোথাও একটি লাইভ বেকারি। এতে বেক করা হচ্ছে পাউরুটি, বিভিন্ন ধরনের কেক-বিস্কুট কিংবা বাটার বান। কৌতূহল নিয়ে এক পিস কিনে মুখে পুরে দিতে পারেন। এগুলোর দামও যে খুব আহামরি, তা কিন্তু নয়।
৩ দিন আগে