মুনতাসির সিয়াম
যেভাবে শুরু
সময় তখন ২০১৭ সাল। সবে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন অর্ণব। ঘুরে বেড়িয়েই কাটছিল সময়। সেই অবসর কাজে লাগাতে বন্ধুরা মিলে ঠিক করলেন, কিছু স্কিল ডেভেলপমেন্ট কোর্সে ভর্তি হবেন। পাশাপাশি বিকেলে পার্কের আড্ডা তো রমরমিয়ে চলছেই। একদিন তেমনই আড্ডা দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে ভিক্ষা করতে দেখলেন কিছু ছিন্নমূল শিশুকে। তাদের গায়ে না আছে জামা, পেটে খাবার। ঠিক এ জায়গা থেকেই অর্ণবের মাথায় ভাবনার উদয়। এক এক করে সেই কথা বন্ধুদের জানালেন। শুনে রাজিও হলেন সবাই। এভাবেই ২০১৭ সালের ১৭ জুন ইউনিটি ফর হিউম্যানিটির জন্ম।
শুরুতেই খটকা
সংগঠনের প্রথম মিটিংয়ে ছিলেন ৬০ থেকে ৭০ জন। তবে দ্রুতই সে সংখ্যাটা নেমে আসে ২০ জনে। লড়াইটা তাই বেশ কঠিন হয়ে যায়। অর্ণবের মনে খটকা লাগল কিছুটা। তত দিনে কলেজে ভর্তি হয়েছেন তিনি। অবসরও শেষ। খটকা মেটাতে বিষয়টি নিয়ে আলাপ করলেন শিক্ষকদের সঙ্গে। অর্ণবের কথা শুনে কয়েকজন শিক্ষক রাজি হয়ে গেলেন। এবার বেশ অভয় পেলেন অর্ণব। মানে, ঠিক পথেই হাঁটছেন। তবে দেরি কেন! শুরু হলো অসহায় শিশুদের কল্যাণে পথচলা।
সংগঠনের বেড়ে ওঠা
কলেজে পড়াকালে টিফিনের টাকা জমিয়ে অর্ণব ও তাঁর বন্ধুদের অদম্য ইচ্ছায় ধীরগতিতে কাজ চলছিল। আবারও বুদ্ধি নিতে ছুটলেন শিক্ষকদের কাছে। তাঁদের পরামর্শে কাজে গতি আনার চেষ্টা হলো। আগের চেয়ে অনেক বেশি সচল হয়ে উঠল ইউনিটি ফর হিউম্যানিটির কার্যক্রম।
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর আরও বড় পরিসরে কাজের সুযোগ মেলে অর্ণবের। শিশুদের কল্যাণে আর থেমে রইল না সংগঠন। জাতীয় দিবসগুলোতে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের খাবার ও পোশাক বিতরণ, পিছিয়ে থাকা এলাকার স্কুলশিক্ষার্থীদের মধ্যে শিক্ষাসামগ্রী বিতরণ, শিশুদের জন্য ছবি আঁকা, কুইজ, গান, আবৃত্তির মতো সৃজনশীল প্রতিযোগিতার আয়োজন চলছিল। পাশাপাশি চলছিল এতিম ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সেবা, শীতবস্ত্র বিতরণ, ধর্মীয় ও জাতীয় দিবসে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ, রক্তদান এবং দরিদ্রদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেওয়ার মতো মানবিক কার্যক্রম। অন্যদিকে ছিল পেশাজীবীদের সম্মাননা প্রদান, সামাজিক অবক্ষয় ও কুপ্রথার বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরির উদ্দেশ্যে নাটক তৈরি ও প্রদর্শনী, গুণীজনের উপস্থিতিতে অফলাইন ও অনলাইনে সেমিনার আয়োজন।
সেই ধারাবাহিকতায় সংগঠনটি গত ছয় বছরে সহায়তা দিয়েছে প্রায় সাত হাজার মানুষকে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, রংপুর, সিলেট, বরিশাল, কিশোরগঞ্জ মিলিয়ে মোট ১৭টি জেলায় নিয়মিত কাজ করে ইউনিটি ফর হিউম্যানিটি। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউনিট কার্যক্রম বেশ সচল। সেসব কাজ সচল রাখছেন প্রায় দেড় হাজার নিয়মিত সদস্য ও ভলান্টিয়ার।
প্রজেক্ট স্বনির্ভর
মানুষকে স্বাবলম্বী করে তোলা এ প্রজেক্টের মূল কাজ। ২০২০ সালে পথচলা শুরু করে বিশেষ প্রকল্পটি। খেটে খাওয়া মানুষের জন্য ভ্যানগাড়ি ও দুর্দশাগ্রস্ত পরিবারকে গাভি কিনে দেওয়া, ঘরহীন মানুষের বাড়ি তৈরির জন্য টিন, প্রয়োজনে কাউকে সাইকেল কিনে দেওয়ার মাধ্যমে জীবিকার লড়াইয়ে টিকে থাকতে সহায়তা করা এ প্রকল্পের উদ্দেশ্য।
পরিবেশ বিষয়ে সচেতনতা
বিভিন্ন মানবিক কাজের পাশাপাশি সংগঠনটি পরিবেশ বিষয়ে সচেতনতা তৈরিতেও কাজ করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের শুরুতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘গ্রিন অ্যান্ড ক্লিন ক্যাম্পাস’ শিরোনামে একটি সেমিনার ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা করে সংগঠনটি। ২০১৯ সালে সংগঠনের পক্ষ থেকে রোপণ করা হয়েছে প্রায় ৫০০ গাছ।
বাবার উৎসাহ
অর্ণবের বাবা ওমর ফারুক একজন ব্যবসায়ী। মানুষের কল্যাণমূলক কাজে উৎসাহ তিনিই জুগিয়েছেন। অর্ণব জানিয়েছেন, শিক্ষকদের বাইরে বাবার জন্যই তিনি মূলত সাহস পেয়েছেন এসব কাজ করার। শুরুর দিকে সব ইভেন্টে ছেলের পাশে থেকে তিনি উৎসাহ জোগাতেন। কেবল অর্ণবের বাবাই নন, পাশে ছিলেন বাকি বন্ধুদের বাবা-মায়েরা ও পরিবার।
আগামীর দিনগুলো
মানবিকতা ছড়ানোর কাজে থেমে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই বলেই বিশ্বাস ইউনিটি ফর হিউম্যানিটি সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা অর্ণবের। হাঁটি হাঁটি পা পা করে চলতে শুরু করা ছোট্ট সংগঠন আজ বেশ পরিণত ও সমৃদ্ধ। সাময়িক কিছু ব্যর্থতা আছে বটে; তারপরও একটু একটু করে উদ্যোগগুলো বড় হতে শুরু করেছে। ফলে কোনো কাজ বন্ধ করার সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন জুনায়েদ আরাফাত অর্ণব।
যেভাবে শুরু
সময় তখন ২০১৭ সাল। সবে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন অর্ণব। ঘুরে বেড়িয়েই কাটছিল সময়। সেই অবসর কাজে লাগাতে বন্ধুরা মিলে ঠিক করলেন, কিছু স্কিল ডেভেলপমেন্ট কোর্সে ভর্তি হবেন। পাশাপাশি বিকেলে পার্কের আড্ডা তো রমরমিয়ে চলছেই। একদিন তেমনই আড্ডা দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে ভিক্ষা করতে দেখলেন কিছু ছিন্নমূল শিশুকে। তাদের গায়ে না আছে জামা, পেটে খাবার। ঠিক এ জায়গা থেকেই অর্ণবের মাথায় ভাবনার উদয়। এক এক করে সেই কথা বন্ধুদের জানালেন। শুনে রাজিও হলেন সবাই। এভাবেই ২০১৭ সালের ১৭ জুন ইউনিটি ফর হিউম্যানিটির জন্ম।
শুরুতেই খটকা
সংগঠনের প্রথম মিটিংয়ে ছিলেন ৬০ থেকে ৭০ জন। তবে দ্রুতই সে সংখ্যাটা নেমে আসে ২০ জনে। লড়াইটা তাই বেশ কঠিন হয়ে যায়। অর্ণবের মনে খটকা লাগল কিছুটা। তত দিনে কলেজে ভর্তি হয়েছেন তিনি। অবসরও শেষ। খটকা মেটাতে বিষয়টি নিয়ে আলাপ করলেন শিক্ষকদের সঙ্গে। অর্ণবের কথা শুনে কয়েকজন শিক্ষক রাজি হয়ে গেলেন। এবার বেশ অভয় পেলেন অর্ণব। মানে, ঠিক পথেই হাঁটছেন। তবে দেরি কেন! শুরু হলো অসহায় শিশুদের কল্যাণে পথচলা।
সংগঠনের বেড়ে ওঠা
কলেজে পড়াকালে টিফিনের টাকা জমিয়ে অর্ণব ও তাঁর বন্ধুদের অদম্য ইচ্ছায় ধীরগতিতে কাজ চলছিল। আবারও বুদ্ধি নিতে ছুটলেন শিক্ষকদের কাছে। তাঁদের পরামর্শে কাজে গতি আনার চেষ্টা হলো। আগের চেয়ে অনেক বেশি সচল হয়ে উঠল ইউনিটি ফর হিউম্যানিটির কার্যক্রম।
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর আরও বড় পরিসরে কাজের সুযোগ মেলে অর্ণবের। শিশুদের কল্যাণে আর থেমে রইল না সংগঠন। জাতীয় দিবসগুলোতে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের খাবার ও পোশাক বিতরণ, পিছিয়ে থাকা এলাকার স্কুলশিক্ষার্থীদের মধ্যে শিক্ষাসামগ্রী বিতরণ, শিশুদের জন্য ছবি আঁকা, কুইজ, গান, আবৃত্তির মতো সৃজনশীল প্রতিযোগিতার আয়োজন চলছিল। পাশাপাশি চলছিল এতিম ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সেবা, শীতবস্ত্র বিতরণ, ধর্মীয় ও জাতীয় দিবসে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ, রক্তদান এবং দরিদ্রদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেওয়ার মতো মানবিক কার্যক্রম। অন্যদিকে ছিল পেশাজীবীদের সম্মাননা প্রদান, সামাজিক অবক্ষয় ও কুপ্রথার বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরির উদ্দেশ্যে নাটক তৈরি ও প্রদর্শনী, গুণীজনের উপস্থিতিতে অফলাইন ও অনলাইনে সেমিনার আয়োজন।
সেই ধারাবাহিকতায় সংগঠনটি গত ছয় বছরে সহায়তা দিয়েছে প্রায় সাত হাজার মানুষকে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, রংপুর, সিলেট, বরিশাল, কিশোরগঞ্জ মিলিয়ে মোট ১৭টি জেলায় নিয়মিত কাজ করে ইউনিটি ফর হিউম্যানিটি। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউনিট কার্যক্রম বেশ সচল। সেসব কাজ সচল রাখছেন প্রায় দেড় হাজার নিয়মিত সদস্য ও ভলান্টিয়ার।
প্রজেক্ট স্বনির্ভর
মানুষকে স্বাবলম্বী করে তোলা এ প্রজেক্টের মূল কাজ। ২০২০ সালে পথচলা শুরু করে বিশেষ প্রকল্পটি। খেটে খাওয়া মানুষের জন্য ভ্যানগাড়ি ও দুর্দশাগ্রস্ত পরিবারকে গাভি কিনে দেওয়া, ঘরহীন মানুষের বাড়ি তৈরির জন্য টিন, প্রয়োজনে কাউকে সাইকেল কিনে দেওয়ার মাধ্যমে জীবিকার লড়াইয়ে টিকে থাকতে সহায়তা করা এ প্রকল্পের উদ্দেশ্য।
পরিবেশ বিষয়ে সচেতনতা
বিভিন্ন মানবিক কাজের পাশাপাশি সংগঠনটি পরিবেশ বিষয়ে সচেতনতা তৈরিতেও কাজ করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের শুরুতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘গ্রিন অ্যান্ড ক্লিন ক্যাম্পাস’ শিরোনামে একটি সেমিনার ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা করে সংগঠনটি। ২০১৯ সালে সংগঠনের পক্ষ থেকে রোপণ করা হয়েছে প্রায় ৫০০ গাছ।
বাবার উৎসাহ
অর্ণবের বাবা ওমর ফারুক একজন ব্যবসায়ী। মানুষের কল্যাণমূলক কাজে উৎসাহ তিনিই জুগিয়েছেন। অর্ণব জানিয়েছেন, শিক্ষকদের বাইরে বাবার জন্যই তিনি মূলত সাহস পেয়েছেন এসব কাজ করার। শুরুর দিকে সব ইভেন্টে ছেলের পাশে থেকে তিনি উৎসাহ জোগাতেন। কেবল অর্ণবের বাবাই নন, পাশে ছিলেন বাকি বন্ধুদের বাবা-মায়েরা ও পরিবার।
আগামীর দিনগুলো
মানবিকতা ছড়ানোর কাজে থেমে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই বলেই বিশ্বাস ইউনিটি ফর হিউম্যানিটি সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা অর্ণবের। হাঁটি হাঁটি পা পা করে চলতে শুরু করা ছোট্ট সংগঠন আজ বেশ পরিণত ও সমৃদ্ধ। সাময়িক কিছু ব্যর্থতা আছে বটে; তারপরও একটু একটু করে উদ্যোগগুলো বড় হতে শুরু করেছে। ফলে কোনো কাজ বন্ধ করার সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন জুনায়েদ আরাফাত অর্ণব।
খাবার মজাদার করতে আমরা সাধারণভাবে তেল-মসলার খুব বাড়াবাড়ি করে ফেলি। সেখান থেকে বাদ যায় না পেঁয়াজ কিংবা রসুন। পেঁয়াজকে কায়দা করে সরিয়ে রাখলেও খাবার মজাদার হতে পারে। তেমনই কিছু রেসিপি...
২ দিন আগেবাংলা অঞ্চলে মিষ্টিজাতীয় প্রাচীন খাবারগুলোর মধ্যে সন্দেশের নাম আছে একেবারে প্রথম দিকে। সব মিষ্টির কিছু না কিছু বদল হলেও, এর বদল হয়েছে খুবই কম। যশোরের নলেন গুড়ের সন্দেশ, মানিকগঞ্জ বা নাগরপুরের প্যারা সন্দেশ, পাবনার মাছের পেটি সন্দেশ ইত্যাদি কে না খেতে পছন্দ করে!
২ দিন আগেজীবনানন্দ দাশের কবিতায় ঘুরেফিরে এসেছে দারুচিনি দ্বীপের কথা, তার রহস্যময় শ্যামলিমার কথা, সেই সবুজের গহিনে দিকহারা নাবিকের আশ্রয়-আকাঙ্ক্ষার কথা। এই দারুচিনি দ্বীপ কি আসলে কোনো সমুদ্রঘেরা ভূখণ্ড, নাকি বনলতা সেন নিজেই, তা নিয়ে কবিরা বিতর্ক করুক। আমরা বরং এই দ্বীপের তত্ত্বতালাশ করি।
২ দিন আগে‘প্রসেসেস’-এ প্রকাশিত এক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, ভাতের মাড় ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের জন্য একটি হজমযোগ্য স্বাস্থ্যকর পানীয় হিসেবে কাজ করে। এমনকি এটি ওজন কমাতে পারে।
২ দিন আগে