দামি শ্যাম্পু যথেষ্ট নয়, স্ক্যাল্প ডিটক্স করবেন যে কারণে

সানজিদা সামরিন, ঢাকা
আপডেট : ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২: ১৫
Thumbnail image

স্ক্যাল্প বা মাথার ত্বক ডিটক্স বলতে বোঝায় মাথার ত্বককে গভীর ভাবে পরিষ্কার করা, যাতে চুল সুস্থ থাকে ও মাথার ত্বক থেকে সুন্দরভাবে পুষ্টি নিতে পারে। অনেকেই এখন হয়তো বলে উঠবেন, এখন প্রায় প্রত্য়েকেই তো সপ্তাহে ২ থেকে ৩ দিন ভালো মানের শ্যাম্পু দিয়ে চুল পরিষ্কার করেন। তাহলে মাথার ত্বকে ময়লা জমবে কী করে? বলে রাখি, শ্যাম্পু বা কন্ডিশনার ব্যবহারের পর বা চুলে প্যাক লাগানোর পর তার কিছুটাও যদি মাথার ত্বক বা চুলে লেগে থাকে তাহলেও স্ক্যাল্প ও চুল ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। স্ক্যাল্প ডিটক্সিফিকেশনের মাধ্যমে মাথার ত্বক থেকে অতিরিক্ত তেল, খুশকি, মরা কোষ ও বিভিন্ন প্রসাধনীর অবশিষ্টাংশ ভালোভাবে অপসারণ করা যায়। 

কখন মাথার ত্বক ডিটক্স করবেন
স্ক্যাল্প ডিটক্সিফিকেশনের সময় হয়েছে কীভাবে বুঝবেন? এক কথায় উত্তর হলো, আপনার মাথার ত্বকই আপনাকে সংকেত দেবে। 

মাথার ত্বকের তৈলাক্ততা বাড়লে: সিবাম গ্রন্থি যখন অতিমাত্রায় সক্রিয় থাকে তখন মাথার ত্বকে তৈলাক্ত ভাব দেখা দিতে পারে। এই অতিমাত্রার তেল দূষণ ও ধুলো ময়লাকে আটকে ধরে। ফলে চুলের গোড়ায় ময়লা জমতে থাকে বলে চুল পুষ্টি পায় না। কোনো কোনো ক্ষেত্রে চুলকানিও হতে পারে। এমন হলে মাথার ত্বক গভীর ভাবে পরিষ্কার করতে হবে। 

খুশকি হলে: অনেকের মাথায় সব সময়ই খুশকি থাকে। আবার ঋতু পরিবর্তনের কারণেও খুশকি হতে পারে। এই খুশকি নিয়মিত পরিষ্কার না করলে মাথার ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। চুলও পড়তে শুরু করে। তাই খুশকি হলে বুঝতে হবে মাথার ত্বক গভীর ভাবে পরিষ্কার করার সময় এসেছে। 

চুলে দুর্গন্ধ হলে: অনেক সময় নিয়মিত শ্যাম্পু করার পরও চুলে দুর্গন্ধ হতে পারে। এর কারণ মাথার ত্বকে জমা হওয়া ময়লা ভালোভাবে পরিষ্কার না হওয়া। এ রকম হলে মাথার ত্বক গভীর ভাবে পরিষ্কার করতে হবে। 

মাথার ত্বকে ব্যথা হলে: অনেক সময় চুল আঁচড়ানোর সময় মাথার ত্বকে চিরুনি লাগলে ব্যথা অনুভূত হয়। তখন বুঝতে হবে চুলো গোড়ায় কোনো সমস্যা দেখা দিয়েছে। এ সময়ে অবশ্যই উচিত একজন অভিজ্ঞ ত্বক ও চুল বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হওয়া। 

স্ক্যাল্প ডিটক্সের উপকারিতা
স্ক্যাল্প ডিটক্সের মূল কাজ হচ্ছে মাথার ত্বককে খুব ভালোভাবে পরিচ্ছন্ন রাখা। তবে ডিটক্সিফিকেশনের ফলে আরও যেসব উপকার পাওয়া যায় সেগুলো হলো: 

মাথার ত্বকের শুষ্কতা, চুলকানি ও মরা কোষ দূর করে। 
মাথার ত্বকের সংবেদনশীলতা কমায়। 
স্ক্যাল্প ও চুলের তৈলাক্ত ভাব দূর করে। 
চুল গজাতে সহায়তা করে। 
চুল নরম ও উজ্জ্বল রাখে। 
চুলের গোড়া মজবুত রাখে। 

স্ক্যাল্প ডিটক্স যেভাবে করবেন
প্রথম ধাপ: নারকেল তেল ও অলিভ অয়েল একসঙ্গে মিশিয়ে হালকা গরম করে নিন। এবার চুলে বিলি কেটে মাথার ত্বকে ভালোভাবে তেল ম্যাসাজ করুন। এভাবে ২০ মিনিট ম্যাসাজ করা যেতে পারে। 

দ্বিতীয় ধাপ: কুসুম গরম পানিতে তোয়ালে ভিজিয়ে নিংড়ে নিতে হবে। এরপর এই তোয়ালে দিয়ে পুরো মাথা ঢেকে রাখতে হবে ১০ মিনিট। স্ক্যাল্পে বেশি পরিমাণে খুশকি থাকলে একটু বেশি সময় নিয়ে ২ থেকে ৩ বার এই হট টাওয়েল ট্রিটমেন্ট নিতে পারেন। 

তৃতীয় ধাপ: চুলে খুশকি থাকলে অ্যান্টি–ড্যানড্রাফ শ্যাম্পু দিয়ে ভালোভাবে স্ক্যাল্প পরিষ্কার করতে হবে। স্ক্যাল্পে চুলকানি ও অন্যান্য সমস্য়া থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে। 

স্ক্যাল্প ডিটক্স প্যাক
ভেষজ উপকরণ দিয়েই স্ক্যাল্প ডিটক্স করতে পারেন। 

  • আপেল সিডার ভিনেগার স্ক্যাল্প বা মাথার ত্বক খুব ভালোভাবে পরিষ্কার করে। দুই কাপ পানিতে আধা কাপ আপেল সিডার ভিনেগার মিশিয়ে তুলোর সাহায্যে মাথার ত্বকে লাগান। ১০ মিনিট রেখে মাথার ত্বক ভালোভাবে ব্রাশ করে শ্যাম্পু করে ফেলুন। স্ক্যাল্প খুব সুন্দর পরিষ্কার থাকবে। চুলও থাকবে ঝলমলে। 
  • একটা বড় লেবু ও একটা মাঝারি শসার রস একসঙ্গে মিশিয়ে মাথার ত্বকে ম্যাসাজ করুন। ১৫ থেকে ২০ মিনিট রেখে ভালোভাবে চুল শ্যাম্পু করে নিন। সপ্তাহে ১ বা ২ বার ব্যবহার করলে স্ক্যাল্প থাকবে পরিচ্ছন্ন ও সতেজ। 
  • মাঝারি আকারের দুটো লেবুর রস, আদা, এক মুঠ পুদিনাপাতা মিক্সচারে ভালোভাবে ব্লেন্ড করে নিন। এবার ছেঁকে রসটুকু স্ক্যাল্পে লাগান। ৫ মিনিট ম্যাসাজ করুন। এরপর সিলিকন ও সালফেটমুক্ত শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। চুলে তরতাজা ভাব ধরে রাখতে এই প্যাকটির জুড়ি নেই। 

সূত্র: হেলথ লাইন, ওয়েল অ্যান্ড গুড

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত