পরিবারের জন্য একটু সময় রাখুন

অধ্যাপক ডা. সানজিদা শাহ্‌রিয়া
প্রকাশ : ০১ জানুয়ারি ২০২৪, ০৭: ৩৮
আপডেট : ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১৪: ৪৪

কর্মব্যস্ত দিন শেষে ঘরে ফিরলেও অনেকের পরিবারকে দেওয়ার মতো সময় প্রায় থাকে না। তার ওপর প্রতিদিন বিভিন্ন ডিভাইস আমাদের পরিবারকে দেওয়া সময় অনেকটাই গিলে নিয়েছে। কিন্তু সুস্থ-স্বাভাবিক জীবনের জন্য পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর বিকল্প নেই। শত ব্যস্ততার ফাঁকেও পরিবারের সঙ্গে কোয়ালিটি টাইম কাটানো উচিত। পরিবারের লোকজনের সঙ্গে আড্ডা দেওয়া, একসঙ্গে বসে খাওয়া, একসঙ্গে ঘুরতে যাওয়ার মতো কাজ শুরু হোক এ বছর থেকে। তাতে এসব সম্পর্ক তাজা থাকে, নিজেকে ফিরে পাওয়া যায়। ১ জানুয়ারি বিশ্ব পরিবার দিবস। পরিবার দিবস থেকেই পরিবারকে সময় দিন।

দাম্পত্য সম্পর্ক তাজা হোক
অপ্রিয় সত্য হলো, আমরা সবচেয়ে কম কোয়ালিটি টাইম দিই জীবনসঙ্গীকে। বিয়ের আগে প্রথম দেখা করতে যাওয়ার, সুন্দর করে নিজেকে উপস্থাপন করার জায়গাটা থেকে নারী-পুরুষ উভয়েই বিয়ের পর অনেক দূরে সরে আসি। কিন্তু যাঁর সঙ্গে পুরো জীবন কাটাবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তাঁকে হেলা করলে চলবে কেন। সম্পর্কে প্রাণ দিন এই নতুন বছরেই।

যা করবেন

  • চোখে চোখ রেখে কথা বলুন।
  • কথা শুরু হলে হাতের ফোন, টিভির রিমোট সব নামিয়ে রাখুন।
  • অন্যজন কী বলছেন, সেটা মনোযোগ দিয়ে শুনুন।
  • একসঙ্গে দুজনেই পছন্দ করেন, এমন কিছু কাজ সাপ্তাহিক তালিকায় রাখুন। যেমন হাঁটতে যাওয়া, সিনেমা দেখা, বই পড়া ইত্যাদি।
  • পাশের মানুষটি যখন আপনাকে কিছু বোঝাচ্ছেন, তখন তার প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন করুন।
  • নিজস্ব মতামতের অংশীদারত্বে রুটিন ঠিক করুন।
  • কোনো প্রসঙ্গে আপনার সঙ্গে আপনার জীবনসঙ্গী বা ভালোবাসার মানুষটি আলোচনা করতে চাইলে এড়িয়ে যাবেন না। এড়িয়ে যাওয়া জিনিসটি সবাই বোঝে। সেটা সম্পর্কের জন্য ক্ষতিকর। বয়োজ্যেষ্ঠদের সঙ্গে কোয়ালিটি টাইমবাবা-মা, শ্বশুর-শাশুড়ি ও পরিবারের অন্য বয়োজ্যেষ্ঠদের সঙ্গেও সময় কাটান সময় করে। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে দাঁড়ানো মানুষের জন্য কাঁধ পেতে দিন দিনের শেষ ভাগে। 

যা করবেন

  • বয়স্ক মানুষের জীবনের ঝুলি পরিপূর্ণ। তাঁদের প্রচুর কথা বলতে দিন।
  • তাঁদের কাছে পুরোনো দিনের গল্প শুনতে চান।
  • তাঁর সমস্যা কী, সেটা স্পষ্ট করে জিজ্ঞেস করুন।
  • এমন কিছু বলবেন না, যেটা তাঁর আত্মসম্মানে লাগে।
  • যেকোনো প্রয়োজনে আপনার সঙ্গে যোগাযোগের সব ব্যবস্থা তাঁর হাতের কাছে রাখুন।
  • তিনি কোথাও ঘুরতে যাবেন কি না, জিজ্ঞেস করুন।

শিশুর সঙ্গে সহজ হোন
যখন শিশুর কথা শুনবেন, তখন মাঝে মাঝে আগের শব্দের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রাসঙ্গিক ছোট ছোট প্রশ্ন করুন, যাতে শিশুটি বোঝে যে আপনি খেয়াল করছেন। রাতে ঘুমানোর সময় সব ডিভাইস দূরে সরিয়ে রেখে শিশুটিকে হয় গল্পের বই পড়ে শোনান, না হলে সারা দিন কী হলো, তা দুজন দুজনের সঙ্গে শেয়ার করুন। শিশুকে বুঝতে দিন, তার প্রতিটি কথা আপনার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। মনে রাখবেন, দৈনিক ২৪ ঘণ্টা সময় দিলেও অনেক সময় শিশুরা নিজেদের পরিত্যক্ত মনে করে। তার চেয়ে আধা ঘণ্টার কোয়ালিটি টাইম অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ শিশুর জন্য।

অধ্যাপক ডা. সানজিদা শাহ্‌রিয়া, চিকিৎসক ও সাইকোথেরাপি প্র‍্যাকটিশনার, ফিনিক্স ওয়েলনেস সেন্টার, ঢাকা

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত