অনটাইম ফ্লাইট ও সেফটির বিকল্প নেই

আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০২৩, ০৯: ১২
Thumbnail image

প্রশ্ন: নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত বলা হয় পর্যটন মৌসুম। সামনের মাস থেকেই তা শুরু হচ্ছে। পর্যটকদের জন্য আপনাদের কোনো পরিকল্পনা।
জাফর: ভ্রমণপ্রিয় যাত্রীদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে আমরা এ সময়টায় কক্সবাজার রুটে ফ্লাইট বাড়ানোর চেষ্টা করি। এ ছাড়া পর্যটকদের সুবিধার্ধে কক্সবাজারের হলিডে প্যাকেজ দিয়ে থাকি। এতে যাত্রীরা খুব কম খরচে ফ্যামিলি নিয়ে কক্সবাজার ঘুরে আসতে পারেন। 

প্রশ্ন: ‘মৌসুম এলেই এয়ারলাইনসগুলো ভাড়া বাড়ায়’—যাত্রীরা এমন অভিযোগ প্রায়ই করেন। এ বিষয়ে আপনাদের পদক্ষেপ কী?
জাফর: টিকিটের দাম আলাদা করে বাড়ানো হয় না। যাত্রীদের চাহিদা বেশি থাকায় ফেয়ারটা অটোমেটিক্যালি বেড়ে যায়। তবে আমরা চেষ্টা করি, সেটাও যাতে যাত্রীদের সাধ্যের মধ্যে থাকে।

প্রশ্ন: দেশের পর্যটন স্পটগুলোর মধ্যে বছরের অধিকাংশ সময় সবচেয়ে বেশি পর্যটক যান কক্সবাজারে। এত যাত্রী হ্যান্ডলিংয়ে কক্সবাজার বিমানবন্দর কতটা সক্ষম?
জাফর: যেহেতু ঢাকা থেকে কক্সবাজারের দূরত্ব অনেক এবং বাই রোডে যেতে প্রায় ৮ ঘণ্টা সময় লাগে, সেহেতু স্বল্প সময়ে আরামদায়ক ভ্রমণের জন্য ঢাকা থেকে পর্যটকেরা বিমানে কক্সবাজারে যেতে স্বাচ্ছন্দ্ব বোধ করেন। এ ক্ষেত্রে ডোমেস্টিক রুটে যাত্রীরা এয়ারলাইনসের কাছ থেকে অনটাইম ফ্লাইট, নিরাপদ ভ্রমণ এবং এয়ারপোর্ট ও ইন-ফ্লাইটে প্রিমিয়াম সার্ভিস প্রত্যাশা করেন। কয়েক বছরে ডোমেস্টিক টার্মিনালে যাত্রীর চাপ বেশ বেড়েছে, স্বল্প চেকিং কাউন্টার, স্বল্প বোর্ডিং গেট ও স্বল্প সিকিউরিটি গেট থাকায় যাত্রীদের কাঙ্ক্ষিত সেবা দেওয়াটা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে তৃতীয় টার্মিনালের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক রুটের বিমানযাত্রীরা খুব শিগগির আন্তর্জাতিক মানের যাত্রীসেবা পাবেন, তাই ঢাকার ডোমেস্টিক টার্মিনালের সংস্কার করাও খুব জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ছবি: সংগৃহীতপ্রশ্ন: আপনি দীর্ঘদিন ধরে এভিয়েশন সেক্টরে কাজ করছেন। অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের যাত্রীদের সেবা দিতে গিয়ে এয়ারলাইনসগুলোকে কী ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে?
জাফর: মূলত ডোমেস্টিক ফ্লাইটের ক্ষেত্রে ভেতরে প্রবেশের একটাই রাস্তা, একটাই গেট। তাই বেশির ভাগ সময় দেখা যায়, সকালের দিকে যখন অনেক ফ্লাইট থাকে, তখন যাত্রীরা সবাই লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থাকেন চেকিং কাউন্টারে আসার জন্য। প্রথমত, আমাদের চেকিং কাউন্টারে যাওয়ার গেটের সংখ্যা অবশ্যই বাড়ানো উচিত বলে মনে করি। দ্বিতীয়ত, যাত্রীরা বোর্ডিং কার্ড নিয়ে ভেতরে যাওয়ার সময় সিকিউরিটি চেক করারও একটাই গেট। তাই ওই একটা গেটে মাঝে মাঝে দুটি স্ক্যানার ব্যবহার করা হয়। তবে সব সময় একটা স্ক্যানারই ব্যবহার করা হয়। সকালে অনেক ফ্লাইট থাকায় প্রতিদিন ওই জায়গায় অনেক ভিড় হয়। বিষয়টি নিয়ে ভাবা দরকার। তৃতীয়ত, চেকিং করার পরে এখন যেহেতু দুটি ব্যাগেজ বেল করা হয়েছে, জায়গাটা অনেক কমে গেছে। অনেক সময় ফ্লাইট একটু ডিলে হয়ে গেলে ওখানে বসার জায়গা তো নেই, দাঁড়ানোর জায়গাটাও পাওয়া যায় না। অনেক সিনিয়র সিটিজেন বা হুইলচেয়ার ব্যবহারকারী যাত্রী থাকেন, যাঁদের সুবিধা-অসুবিধা দেখার কোনো ব্যবস্থা সেখানে নেই। এসব দিক চিন্তা করা দরকার বলে মনে হয়।

প্রশ্ন: কক্সবাজার ছাড়া অন্য অভ্যন্তরীণ গন্তব্যগুলোয় যাত্রীর চাহিদা কেমন?
জাফর: অভ্যন্তরীণ সব রুটেই যাত্রীদের চাপ পর্যায়ক্রমে বাড়ছে, বিশেষ করে সৈয়দপুর, সিলেট ও চট্টগ্রাম রুটে প্রতিদিন যাত্রীদের যাতায়াত বৃদ্ধি পাচ্ছে। অপরদিকে পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর যশোর ও বরিশালে যাত্রীর সংখ্যা কমে গেলেও বিকল্প রুটে যাত্রীদের চাহিদা তৈরি হচ্ছে।

প্রশ্ন: এয়ার অ্যাস্ট্রা অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করে, সে ক্ষেত্রে বিদেশি পর্যটকের সাড়া কেমন?
জাফর: মূলত বিদেশি যাত্রী কক্সবাজার রুটে সবচেয়ে বেশি। রোহিঙ্গাদের জন্য ওখানে অনেক এনজিও আছে। কক্সবাজারের সকালের অধিকাংশ ফ্লাইট ফরেনার দিয়ে ভরা থাকে। তাঁরা এনজিওর কাজে যান আর সবচেয়ে বেশি ট্রাভেল করেন সকালের দিকে। এরই মধ্যে ইউএন, এডিবি, ইউনিলিভারসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা আমাদের সঙ্গে ফ্লাই করেছেন এবং আমাদের সার্ভিসের প্রশংসা করেছেন।

প্রশ্ন: এয়ার অ্যাস্ট্রা নতুন এয়ারলাইনস, সামনে এক বছর পূর্তি হতে যাচ্ছে। এই এক বছরে এয়ারলাইনসের অর্জন কী?
জাফর: আমি একটা কথা বলতে পারি, আমরা অনটাইম রাখতে পেরেছি সব। এক বছরের রেকর্ড দেখলে তা জানা যাবে। একটা টার্গেট ছিল, আমরা ১০ মিনিট আগে ডোর ক্লোজ করব। কারণ, মিনিমাম ২৫ মিনিট লাগে ফ্লাইট টেকঅফ করতে। তাই ১০ মিনিট আগে ডোর ক্লোজ করি, যাতে এই সময়টাতে এয়ারক্রাফটটা টেকঅফ পয়েন্টে যায়। প্রথমত, এটা আমাদের বড় অ্যাচিভমেন্ট। দ্বিতীয়ত, আমরাই ডোমেস্টিকে প্রথম, যারা শিশুদের জন্য ইন-ফ্লাইটে আর্ট বুকের সেবা রেখেছি। শিশুরা যেন আর্টবুকে আঁকাআঁকি করতে পারে, সে জন্য একটা বই বের করেছি, যা ফ্লাইটে দিচ্ছি। এ ছাড়া সম্প্রতি ডোমেস্টিক এয়ারলাইনস হিসেবে সেরা ইন-ফ্লাইট সার্ভিস অ্যাওয়ার্ড জিতেছে এয়ার অ্যাস্ট্রা। আর এই প্রাপ্তি আমাদের আরও ভালো সার্ভিস দেওয়ার অনুপ্রেরণা দেবে।

 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত