Ajker Patrika

মার্কিন মুলুকে ম্যান-মার্কিং

হিল্লোল দত্ত
আপডেট : ০৪ মে ২০২৩, ১২: ১৫
মার্কিন মুলুকে ম্যান-মার্কিং

রবীন্দ্রনাথ ভ্রমণপিয়াসী ছিলেন। নেহাত কম দেশ ঘোরেননি তিনি। কাজের উদ্দেশ্যে, সম্মান গ্রহণ করতে, আমন্ত্রণে সাড়া দিতে, প্রদর্শনীতে অংশ নিতে, বক্তৃতা দিতে তিনি বিভিন্ন সময়ে নানান দেশে গেছেন। এক হিসাবে জানা যায়, ১৮৭৮ থেকে ১৯৩২-এর মধ্যে তিনি পাঁচটি মহাদেশে অন্তত ৩০টিরও বেশি দেশ ভ্রমণ করেছিলেন, যার অনেকগুলো নিয়ে তাঁর ভ্রমণকাহিনিও রয়েছে। 

এত সব দেশের মধ্যে যে দেশটিতে তিনি সবচেয়ে বেশি সময় ধরে ভ্রমণ করেছেন, ইংল্যান্ড বাদে, আশ্চর্যজনকভাবে সেই দেশ নিয়েই আলোচনা খুব কম হয়। খোদ রবীন্দ্রনাথও তাঁর সেই দেশেতে ভ্রমণ নিয়ে কেন যেন নীরবই থেকেছেন। বই তো দূর স্থান, সেই দেশের অভিজ্ঞতা নিয়ে তাঁর তেমন কোনো লেখালেখিই চোখে পড়ে না।

দেশটির নাম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যেখানে কবি পাঁচবার যাত্রা করেন। প্রায় ১৭ মাস তিনি কাটিয়েছিলেন বিশাল এই দেশে। ১৯১২ থেকে ১৯৩০ অবধি এই যাত্রা নানান প্রাপ্তি, প্রশংসা, সমালোচনা এবং অন্তত একটি অঘটনে বিজড়িত।

রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চিন্তাধারার প্রথম পরিচয় তাঁর পিতা মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে অমৃতসরে গিয়ে। সেখানে বারো বছর বয়েসে তিনি ‘দ্য অটোবায়োগ্রাফি অব বেঞ্জামিন ফ্রাংকলিন’ পড়া শুরু করেন। পুত্রের ভাষায়, ‘পিতা আমাকে ইংরেজি পড়াইবেন বলিয়া পিটার পার্লি'স টেলস পর্যায়ের অনেকগুলি বই লইয়া গিয়াছিলেন। তাহার মধ্য হইতে বেঞ্জামিন ফ্রাংকলিনের জীবনবৃত্তান্ত তিনি আমার পাঠ্যরূপে বাছিয়া লইলেন। তিনি মনে করিয়াছিলেন জীবনী অনেকটা গল্পের মতো লাগিবে এবং তাহা পড়িয়া আমার উপকার হইবে। কিন্তু পড়াইতে গিয়া তাঁহার ভুল ভাঙিল। বেঞ্জামিন ফ্রাংকলিন নিতান্তই সুবুদ্ধি মানুষ ছিলেন। তাঁহার হিসাব করা কেজো ধর্মনীতির সংকীর্ণতা আমার পিতাকে পীড়িত করিত। তিনি এক-এক জায়গা পড়াইতে পড়াইতে ফ্রাংকলিনের ঘোরতর সাংসারিক বিজ্ঞতার দৃষ্টান্তে ও উপদেশবাক্যে অত্যন্ত বিরক্ত হইয়া উঠিতেন এবং প্রতিবাদ না করিয়া থাকিতে পারিতেন না।’

এই হিসেবি নৈতিকতার প্রতি রবীন্দ্রনাথের অপছন্দ আমৃত্যুই ছিল, যা তাঁর মার্কিন দেশে ভ্রমণের সময়ও প্রতিভাত হয়েছে। তবে সাহিত্যিক হিসেবে ওয়াল্ট হুইটম্যান, রালফ এমার্সনের প্রতি তাঁর ভালোবাসা ও আগ্রহ পরিস্ফুট হয়েছে নানান সময়ে।

কিন্তু আমেরিকার সঙ্গে তাঁর প্রথম পরোক্ষ সম্পর্ক স্থাপিত হয় ১৯০৬ সালে, যখন তাঁর পুত্র রথীন্দ্রনাথ সেখানকার ইউনিভার্সিটি অব ইলিনয়ে কৃষিবিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করতে যান। সে সময় প্রায় সবাই, যাঁরা উচ্চবিত্ত এবং সামাজিক স্তরে উঁচু দরের, তাঁদের সন্তানদের ইংল্যান্ডেই পড়াশোনার জন্য পাঠাতেন। রবীন্দ্রনাথ নিজেও ইংল্যান্ডে ব্যারিস্টারি পড়তে যান এবং ব্যর্থ হয়ে দেশে ফেরেন। রথীন্দ্রনাথ অবশ্য সফল হয়ে ফিরেছিলেন ১৯০৯ সালে। 

১৯১২ সালে রবীন্দ্রনাথ প্রথম মার্কিন দেশে যান ইংল্যান্ড থেকে। সে বছরই তাঁর ক্ষীণকায় গীতাঞ্জলি ‘সং অফারিংস’ নামে প্রকাশিত হয়েছে ইংল্যান্ড থেকে এবং মার্কিন মুলুকের প্রখ্যাত ‘পোয়েট্রি’ সাময়িকীতে তাঁর সেই বই থেকে ছখানা কবিতাও বেরিয়েছে। তিনি সেবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সাত মাসের একটি ভ্রমণ করেন, যার একটা বড় অংশ গেছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে, যার মধ্যে হার্ভার্ডও ছিল এবং নানান জায়গায় বক্তৃতা দেওয়ায়। তাঁর দ্বিতীয় সফরটি নানান দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ ও কৌতূহলোদ্দীপক ছিল। 

১৯১৬-১৭ সালের মধ্যে তিনি আমেরিকার নানান বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তৃতা দেন, যার মূল লক্ষ্য ছিল শান্তিনিকেতনের জন্য অর্থ সংগ্রহ। বিখ্যাত প্রকাশক ম্যাকমিলান তাঁর এই বক্তৃতার উদ্যোক্তা ছিলেন। প্রতি বক্তৃতায় তিনি তৎকালীন ৭০০ থেকে ১ হাজার মার্কিন ডলার অবধি সম্মানী পেতেন। এই নিয়ে আমেরিকায়ও তিনি সমালোচনার মুখোমুখি হন। নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হয়ে তিনি সম্মানিত ও জনপ্রিয় হয়েছিলেন এবং জাতীয়তাবাদের বিপক্ষে বক্তব্য রেখে হয়েছিলেন সমালোচিত, বিশেষত যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূলে।

বছর তিনেক পর, ১৯২০ সালে কবি আবারও ফিরলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, চার মাসের মেয়াদে। এবারও মূল উদ্দেশ্য শান্তিনিকেতনের জন্য অর্থ জোগাড়। কিন্তু এবারের সফর নিষ্ফল। আমেরিকা জড়িয়ে পড়েছিল প্রথম বিশ্বযুদ্ধে, কিছুটা হলেও, তাদের অনাক্রমণনীতি সত্ত্বেও। রবীন্দ্রনাথের যুদ্ধবিরোধী অবস্থান, জাতীয়তাবাদবিরোধী বক্তব্য, ভোগবাদসর্বস্ব জীবনের প্রতি বিতৃষ্ণা এবং জালিয়ানওয়ালাবাগে ব্রিটিশ নরমেধের প্রতিবাদে তাঁর নাইটহুড ত্যাগ করা, সবকিছু মিলিয়ে তিনি ইয়াংকিদের কাছে অপ্রিয় ও অগ্রহণযোগ্য তখন। এবং বড় বড় ব্যবসায়ীদের কাছেও, যাঁদের বড়সড় ব্যবসা তখনো ইংরেজদের সঙ্গে চলমান। 

১৯২৯ সাঁলে কানাডার সোসাইটি অব এজুকেশনের আমন্ত্রণে তিনি কানাডা যাত্রা করেন। কিন্তু ভ্যাংকুভারের ইমিগ্রেশন কর্মকর্তার রূঢ় আচরণে তিনি সবকিছু বাতিল করে হপ্তা তিনেক লস অ্যাঞ্জেলেসে থাকেন এবং পরে জাপানে ফেরত আসেন।

পরের বছরই তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জীবনের শেষ সফর করেন। ১৯৩০ সালের এই সফর নানান দিক থেকে বর্ণাঢ্য ছিল। মাস দুয়েকের এই সফর তাঁর জনপ্রিয়তা পুনরুদ্ধার করে। ম্যানহাটনে তিনি আলবার্ট আইনস্টাইনের সঙ্গে সত্য, সৌন্দর্য নিয়ে আলাপ করেন, যা এখন বিশেষভাবে স্মরণীয়। কারণ কবি হয়েও তিনি বিজ্ঞানের অন্তর্নিহিত সত্য উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন।

তবে ১৯১৬-১৭ মেয়াদে তাঁর জীবনের একটা উল্লেখযোগ্য ঘটনা, যা মার্কিন মুলুকে ঘটেছিল, সেটা না বললেই নয়। ১ অক্টোবর, ১৯১৬ সালে তিনি নামলেন পোর্টল্যান্ড, ওরিগনে। ৪ অক্টোবর গেলেন সান ফ্র্যান্সিসকো, ক্যালিফোর্নিয়ায়। সেখানে কলম্বিয়া থিয়েটারে তাঁর বক্তৃতার সময় নিরাপত্তার খুব কড়াকড়ি দেখা গেল। কোনো এশীয় লোকজনকে সেখানে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছিল না। পুলিশ কড়া নজর রাখছে চারপাশে। নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা তাঁকে লুকিয়ে হোটেলের পেছনের দরজা দিয়ে আনেন। বক্তৃতা দিয়ে বেরোনোর সময়ও পেছনের দরজা। ট্রেনে করে সরিয়ে নেওয়া হয় ঘণ্টাখানেক দূরের পথ স্যান্টা বারবারায়। এমনকি পরের নির্ধারিত অনুষ্ঠানগুলোও বাতিলের অনুরোধ করা হয় কবিকে। 

কারণ কী? 

পুলিশের কাছে গোয়েন্দা মারফত খবর এসেছে, এর আগে হিন্দুস্থান গদর পার্টি নামে আমেরিকার একটি রাজনৈতিক দল রবীন্দ্রনাথের ওপর হামলা করতে চায়। দলটি ১৯১৩ সালে আমেরিকায় নিবন্ধিত হয়। মূলত মার্কিন প্রবাসী পাঞ্জাবিদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে ব্রিটিশ শাসনের বিপক্ষে ভারতে সহিংস সংগ্রাম করাই ছিল তাদের লক্ষ্য। দলের তৎকালীন নেতা রামচন্দ্র ভরদ্বাজ ‘হিন্দুস্থান গদর’ নামের একটি পত্রিকা চালাতেন, যা মূলত উর্দু ও পাঞ্জাবি, মাঝেমধ্যে ইংরেজিতে প্রকাশিত হতো। অক্টোবরেই পত্রিকার সম্পাদকীয়তে জগদীশ চন্দ্র বসু ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ওপর ব্রিটিশ প্রশাসনের গোয়েন্দাগিরির তীব্র সমালোচনা করা হয়। কিন্তু পরে রবীন্দ্রনাথের বিপক্ষে ৫ অক্টোবর ‘সান ফ্র্যান্সিসকো এক্সামিনার’ নামে এক পত্রিকায় রামচন্দ্র রবীন্দ্রনাথকে সরাসরি আক্রমণ করেন। রবীন্দ্রনাথের নাইটহুড গ্রহণের বিপক্ষে ছিলেন রামচন্দ্র। এ ছাড়া রবীন্দ্রনাথ এক লেখায় ‘মুঘল শাসনের চাইতে ব্রিটিশ শাসন উত্তম’ বলায় রামচন্দ্র প্রচণ্ড প্রতিবাদ জানান। 

৫ অক্টোবর রবীন্দ্রনাথের সাময়িক আবাস প্যালেস হোটেলের বাইরে গদর পার্টির দুজন সদস্য, হাতেশি সিং ও জীবন সিং খালসা দিওয়ান সোসাইটি নামের আরেকটি প্রবাসী পাঞ্জাবিদের সাংস্কৃতিক পরিবর্তনকামী দলের দুই সদস্য বিষেণ সিং মাট্টু ও উমরাও সিংয়ের ওপর হামলা করেন। হামলার কারণে বিষেণের পাগড়ি মাথা থেকে খুলে পড়ে যায়। বিষেণ ও উমরাও রবীন্দ্রনাথকে একটি সভায় বক্তব্য রাখার জন্য আমন্ত্রণ জানাতে এসেছিলেন। যদিও হামলা হোটেলের বাইরে হয়, গোয়েন্দাদের প্রাপ্ত তথ্যমতে, গদর পার্টির লোক রবীন্দ্রনাথের ওপরই হামলা চালাতে এসেছিল। কারণ তো আগেই বলা হলো। গদর পার্টির ভেতরে একজন মার্কিন গোয়েন্দাও চুপিসারে নিজের কাজ চালাচ্ছিলেন। তাঁর নাম উইলিয়াম মান্ডেল। তিনি সান ফ্র্যান্সিসকোর প্রবাসী ভারতীয়দের ওপর নজরদারি করতেন, যারা ব্রিটিশ ভারতে সহিংস আন্দোলনের মাধ্যমে স্বাধীনতা লাভে মদদ দিতেন। মজার বিষয় হলো, তাঁকে গদর পার্টিরই একজন রামচন্দ্র ও তাঁর সাথিদের ওপর অর্থ আত্মসাতের বিষয়ে গুপ্তচরবৃত্তির জন্য নিয়োগ করেছিলেন। তিনি একসঙ্গে দুটো কাজই চালাচ্ছিলেন সুবিধামতো। সম্ভবত তিনিই রবীন্দ্রনাথের ওপর গদর পার্টির সম্ভাব্য হামলার বিষয়ে পুলিশকে জানান। 

রবীন্দ্রনাথ অবশ্য এসব নিয়ে তেমন মাথা ঘামাননি এবং তিনি বলেন যে, এই রাজনৈতিক মতভেদের বিষয়াশয় নিয়ে তিনি উদ্বিগ্ন নন। দেশবাসীর ওপরেই তিনি ভরসা রাখবেন। 

এই হামলার আতঙ্ক মোটেও ছায়া ফেলেনি তাঁর সফরে। সান ফ্র্যান্সিসকো ও লস অ্যাঞ্জেলেসে সেবার অভূতপূর্ব সাফল্য ও সম্মান লাভ করেন রবীন্দ্রনাথ। ‘সান ফ্র্যান্সিসকো এক্সামিনারেই’ লেখা হয়, স্থাপিত হয়েছে দ্য কাল্ট অব রবীন্দ্রনাথ। ‘লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমস’ গর্বভরে ঘোষণা করে, লস অ্যাঞ্জেলেসে অন্য যেকোনো মার্কিন নগরীর চাইতেই রবীন্দ্রনাথের বই বেশি বিক্রি হয়। ১৯১৭ সালে তিনি ‘ন্যাশনালিজম’ নামের বইটি লিখে শেষ করেন। তৎকালীন মার্কিন রাষ্ট্রপতি উড্রো উইলসনকে তিনি বইটি উৎসর্গ করতে চান। কিন্তু প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরুর ডামাডোলের মধ্যে এবং অন্যান্য বৈশ্বিক রাজনৈতিক গোলযোগে সেটা আর হয়নি। 

এ ঘটনার একটি করুণ পরিণতি আছে। রামচন্দ্রকে তাঁর দলেরই রাম সিং নামে এক তরুণ ১৯১৫ সালে আদালতকক্ষে গুলি করে হত্যা করেন ব্রিটিশদের সঙ্গে যোগসাজশের সন্দেহে। সেই আদালতে চলছিল হিন্দুস্থান-জার্মান ষড়যন্ত্র মামলার শুনানি। ঘটনাচক্রে তাতে উঠে এসেছিল রবীন্দ্রনাথেরও নাম। কিন্তু সে আরেক কাহিনি।

লেখক: আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। অনুবাদক ও ব্লগার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আজকের রাশিফল: তাড়াহুড়ো করে বিয়ে আর ঋণ—দুটাই সমান বিপজ্জনক

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আজকের রাশিফল: তাড়াহুড়ো করে বিয়ে আর ঋণ—দুটাই সমান বিপজ্জনক

মেষ

আজ আপনার দিনটি বেশ ভালো, কিন্তু বড্ড তাড়াতাড়ি সিদ্ধান্ত নেওয়ার বাতিক আপনার। মনে রাখবেন, তাড়াহুড়ো করে বিয়ে আর তাড়াহুড়ো করে ঋণ করা—দুটাই সমান বিপজ্জনক। আজ ঋণ নেওয়ার আগে ভাবুন, শোধ করার ক্ষমতা আপনার আছে নাকি নাতি-পুতিদের ওপর দায় চাপাতে চান। বন্ধুদের সঙ্গে সময় ভালো কাটবে, তবে তাদের পকেট মারার চেষ্টা করবেন না!

বৃষ

আজ খুব ব্যস্ত থাকবেন। এত দৌড়ঝাঁপ করবেন যে লোকে ভাববে আপনি বোধহয় অলিম্পিকের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তবে সাবধান, আজ পায়ে চোট পাওয়ার প্রবল যোগ। রাস্তাঘাটে মোবাইলে মুখ গুঁজে না হেঁটে একটু সামনের দিকে তাকান। আর্থিক বিনিয়োগের জন্য দিনটি ভালো, তবে টাকাটা লটারিতে না লাগিয়ে একটু বুদ্ধি খাটিয়ে লাগালে ভবিষ্যতে বাড়ির লোক আপনাকে অন্তত একটু সম্মান দেবে।

মিথুন

অফিসে আজ বসের প্রচুর কথা শুনতে হতে পারে। মনে রাখবেন, বসের কথাগুলো অনেকটা রেডিওর বিজ্ঞাপনের মতো—শুনতে খারাপ লাগলেও বন্ধ করার উপায় নেই। বাড়িতে গেস্ট আসার সম্ভাবনা আছে, যা আপনার শান্তিতে বিঘ্ন ঘটাবে। জরুরি কাগজে সই করার আগে অন্তত তিনবার পড়ে নিন, নয়তো পরে দেখবেন নিজের সম্পত্তি অজান্তেই কাউকে দান করে দিয়েছেন। আর্থিক দিকটা মোটামুটি উজ্জ্বল।

কর্কট

সকাল থেকে ব্যবসায় ভালো গতি আসবে। কাস্টমারকে কথা বলার সুযোগ দেবেন না, একাই বকে যান। তবে খরচ করার সময় একটু রাশ টানুন, জমানো টাকা খরচ হয়ে যাওয়ার ভয় আছে। ভাই-বোনদের ওপর আজ দাদাগিরি ফলাতে পারবেন, তারা আপনার কথা শুনবে (হয়তো ভয়ে)। স্বাস্থ্য ভালো থাকবে, কিন্তু তাই বলে আজই হিমালয়ে ট্রেকিং করতে বেরিয়ে যাবেন না!

সিংহ

স্ত্রীর সঙ্গে ঘুরতে যাওয়ার যোগ আছে। মনে রাখবেন, স্ত্রীর হাসি মানেই আপনার পকেটের ফাঁসি! পাশের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো হবে। যদি কেউ আপনার নামে ষড়যন্ত্র করে, তবে জানবেন জনপ্রিয় হচ্ছেন। আজ নতুন কারোর সঙ্গে বন্ধুত্ব হতে পারে, তবে সেই বন্ধুর থেকে টাকা ধার নেওয়ার কথা এখনই ভাববেন না।

কন্যা

আপনার অসাধারণ বুদ্ধির জোরে আজ ব্যবসায় মুনাফা বাড়বে। ঋণ থেকে মুক্তির সুযোগ আসতে পারে, কিন্তু তার জন্য লটারি জেতার অপেক্ষা করলে চলবে না। আজ কাউকে ‘না’ বলতে শিখুন, নয়তো লোকে আপনাকে দিয়ে অফিসের সব ছোট কাজ করিয়ে নেবে। ভ্রমণে বেরোলে পেটের দিকে খেয়াল রাখুন, রাস্তার ফুচকা আপনার বড় শত্রু হতে পারে।

তুলা

প্রেমে অতিরিক্ত আশা করা আজ ঠিক হবে না। হয়তো চাঁদ-তারা এনে দেওয়ার স্বপ্ন দেখছেন, আর সঙ্গী হয়তো ভাবছে পরের মাসে ইলেকট্রিক বিল কে দেবে। মানসিক চাপ বাড়তে পারে। তাড়াহুড়ো এড়িয়ে চলুন, শান্তিতে এক কাপ চা খান। মনে রাখবেন, প্রেম না টিকলে কাচ্চি বিরিয়ানি তো আছেই!

বৃশ্চিক

সকালের দিকে কোনো বন্ধুর দ্বারা একটু বিরক্ত হতে পারেন। হয়তো সে আপনার কাছে পুরোনো ধার চাইতে এসেছে। শরীরের কোথাও ব্যথা আজ আপনার কাজে বাগড়া দিতে পারে। হাঁটাহাঁটি করার সময় একটু সচেতন থাকুন। প্রিয়জনের প্রতি আস্থা বজায় রাখুন, অকারণে গোয়েন্দাগিরি করতে গিয়ে ধরা পড়লে কপালে দুঃখ আছে।

ধনু

আজ সকাল থেকেই মন খাওয়ার দিকে থাকবে। ডায়েট চার্টটা আজ ড্রয়ারে ভরে রাখুন। সমাজে দান-ধ্যান করার জন্য খ্যাতি বাড়তে পারে, তবে নিজের পকেট খালি করে দান করবেন না। অতিথিদের সংখ্যা বাড়তে পারে, তাই ফ্রিজে অন্তত কয়েকটা মিষ্টি মজুত রাখুন। পরিবারে আনন্দের পরিবেশ থাকবে।

মকর

অংশীদারি ব্যবসায় নিজের অধিকার বজায় রাখার চেষ্টা করুন, নয়তো পার্টনার আপনাকে দিয়ে চা বানিয়ে নেবে। শিল্পীদের জন্য আজ দারুণ সুযোগ আসতে পারে। গাড়ি কেনার পরিকল্পনা থাকলে আজ আলোচনা এগোতে পারেন। গুরুজনদের শরীর নিয়ে একটু দুশ্চিন্তা হতে পারে, তাই অযথা তর্ক করে তাঁদের ব্লাড প্রেশার বাড়াবেন না।

কুম্ভ

আজকের দিনটি আপনার জন্য চ্যালেঞ্জিং হতে পারে। বিবাদে জড়ানোর সম্ভাবনা আছে, তাই পাড়ার মোড়ে অযথা তর্ক করবেন না। ব্যবসায় একটু ক্ষতির আশঙ্কা আছে, তাই বড় ইনভেস্টমেন্ট আজ এড়িয়ে চলাই মঙ্গল। জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনার চেষ্টা করুন, অন্তত প্রতিদিন সকালে দাঁত মাজাটা শুরু করতে পারেন!

মীন

আজ কর্মক্ষেত্রে পরিস্থিতি আপনার অনুকূল থাকবে। তবে অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসের বশে বসের চেয়ারে বসে পড়বেন না। পরিবারের সঙ্গে পরামর্শ করে তবেই বড় সিদ্ধান্ত নিন। মূল্যবান জিনিসপত্রের প্রতি যত্নশীল হোন, নয়তো দেখবেন মোবাইলটা ভুলে বাসেই ফেলে এসেছেন। দিনটি সামগ্রিকভাবে শুভ, শুধু বিকেলের পর একটু শান্ত থাকুন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

উৎসবে ঘরের আবহ বদলে দেবে আলোর ব্যবহার

তুষ্টি মনোয়ার
ছবি: রিনিশ ডিআইওয়াই নেস্ট
ছবি: রিনিশ ডিআইওয়াই নেস্ট

সুন্দর দেখাতে ঘরে শুধু দামি আসবাব নয়, বরং সেই ঘরে দরকার আলো-ছায়ার এক নিখুঁত সমন্বয়। আলোকসজ্জা শুধু ঘর আলোকিত করে না, এটি রুচি ও ব্যক্তিত্বের বহিঃপ্রকাশ ঘটায়। সঠিক রঙের দেয়াল ও আসবাবের সঙ্গে সঠিক আলোর ব্যবহার মুহূর্তে আপনার ঘরের আবহ বদলে দিতে পারে। সঙ্গে আপনার ঘর করে তুলবে প্রাণবন্ত ও ইতিবাচক শক্তিতে ভরপুর। এটি যেমন আভিজাত্যপূর্ণ, তেমনি মন ভালো রাখতেও যথেষ্ট কার্যকর। এখন খুব সহজে একটি সুইচ টিপে নিজের ঘর ছবির মতো অনন্য করে তোলা যায়। ঘর স্মার্টভাবে সাজাতে কোন জায়গায় কী রকম আলো ব্যবহার করতে হবে, তা জেনে নিন এখানে।

আলোর ধরন ও ব্যবহার

ঘর সাজাতে সাধারণত কয়েক ধরনের আলো ব্যবহার করা হয়—

  • প্রাকৃতিক আলো: জানালার মাধ্যমে আসা আলো ঘরে আরামদায়ক একটা ভাব দেয়। এটি আমাদের শরীরে সেরোটোনিন বাড়াতে সাহায্য করে। ফলে মন ভালো থাকে।
  • অ্যাম্বিয়েন্ট লাইট: এটি পুরো ঘর সমানভাবে আলোকিত করে। সাধারণত বসার ঘরে এর ব্যবহার সবচেয়ে বেশি।
  • টাস্ক লাইট: পড়াশোনা, রান্না বা ড্রেসিং টেবিলের আয়নার সামনে কাজ করার জন্য নির্দিষ্ট স্থানে যে জোরালো আলো ব্যবহার করা হয়, সেটিই হলো টাস্ক লাইট।
  • অ্যাকসেন্ট লাইট: ঘরের কোনো নির্দিষ্ট কোনা, ছবি বা গাছ ফুটিয়ে তুলতে এই আলো ব্যবহার করা হয়।
  • মুড লাইটিং: ক্লান্তিকর দিনের শেষে একটু প্রশান্তি পেতে ওয়ার্ম এলইডি স্ট্রিপ বা ফেইরি লাইটের মৃদু আলো খুব ভালো কাজ করে।

উৎসবে বিভিন্ন ঘরে আলোর ব্যবহার

শোয়ার ঘর

শোয়ার ঘর যেহেতু বিশ্রামের জায়গা, তাই সেখানে আলো হওয়া উচিত নরম। তবে বাড়িতে দাওয়াত বা উৎসবের দিনগুলোয় অতিথি সমাগম হলে শোয়ার ঘরেও আড্ডা জমে ওঠে। উৎসবকে কেন্দ্র করে শোয়ার ঘর আলোয় সাজাতে পারেন। দেয়ালের ল্যাম্প অথবা সিলিং থেকে ঝোলানো পেন্ডেন্ট লাইটে ঘরে আভিজাত্য এনে দেয়। এই ঘরের আলোকসজ্জায় ফ্ল্যাশ-মাউন্ট-ফিক্সচার বেছে নিতে পারেন।

2

বসার ঘর

এটি সবাই মিলে বসে টিভি দেখা বা আড্ডা দেওয়ার জায়গা। এই ঘরে টিভির পেছনে ‘বায়াস লাইটিং’ ব্যবহার করলে চোখের ওপর চাপ কম পড়বে। এখানে আড্ডার আবহ ঠিক রাখতে সাধারণ আলোর পাশাপাশি মৃদু আলোর ব্যবস্থাও রাখা উচিত।

545576442_1118617443699907_7184441671146611119_n---Copy

ডাইনিং

খাবার টেবিলের ঠিক ওপরে একটি ঝাড়বাতি বা মাল্টি-লাইট পেন্ডেন্ট বসালে তা সব দিকে সমানভাবে আলো ছড়াবে। খাবারের পরিবেশ উৎসবমুখর রাখতে আলোর তীব্রতা কমানো-বাড়ানোর জন্য ‘ডিমার সুইচ’ ব্যবহার করা বুদ্ধিমানের কাজ হবে।

4

পড়ার ঘর

পড়ার টেবিলে অবশ্যই অ্যাডজাস্টেবল ল্যাম্প রাখতে হবে। এখানে আলো এমনভাবে সেট করতে হবে, যাতে বইয়ের ওপর সরাসরি আলো পড়ে এবং চোখের ওপর চাপ তৈরি না করে।

সিঁড়ি ও আউটডোর

নিরাপত্তার জন্য সিঁড়িতে স্ট্রিপ লাইট বা ওয়াল মাউন্টেড স্পটলাইট ব্যবহার করতে পারেন। আর উৎসবে বাড়ির প্রবেশপথ বা বাগানে হাঙ্গিং লাইট লাগালে তা বাড়ির সৌন্দর্য বহুগুণে বাড়িয়ে দেবে।

সূত্র: হোমলেন

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বেকিং করতে কোন খাবারে কোন ময়দা

ফারাহ্ রহমান
ছবি: পেক্সেলস
ছবি: পেক্সেলস

বেকিংয়ের কথা মনে এলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে নরম কেক, তুলতুলে পাউরুটি কিংবা বিস্কুটের কথা। তবে এসব বানানোর সময় একই ময়দা দিয়ে সব তৈরি করতে গেলেই ঘটে বিপত্তি—হয় কেক শক্ত হয়ে যায়, নয়তো পাউরুটি ঠিকমতো ফোলে না। এর মূল কারণ হলো ভুল ময়দা নির্বাচন করা। প্রতিটি খাবারের সঠিক গন্ধ ও স্বাদ বজায় রাখতে এর মূল উপাদান সম্পর্কে ধারণা রাখা খুবই জরুরি। ২৫ ডিসেম্বর বড়দিন। তারপর নতুন বছর; ফলে এটাই বেকিংয়ের সেরা সময়। জেনে নিতে পারেন কোন খাবার বেকিংয়ে কোন ধরনের ময়দা বেছে নিতে হবে।

ময়দা আসলে কী

বিভিন্ন শস্য; যেমন ধান, গম, যব, বিভিন্ন বাদাম অথবা বিভিন্ন বীজ পিষে তৈরি করা মিহি গুঁড়াই মূলত ময়দা। আমরা সাধারণত গমের ময়দা বেশি ব্যবহার করি। ময়দার সঙ্গে পানি বা দুধ মেশালে এতে থাকা প্রোটিনগুলো মিলে ‘গ্লুটেন’ তৈরি করে। এই গ্লুটেনই খাবার নরম বানায়।

ভিন্ন ভিন্ন ময়দা এবং এর ব্যবহার

সাধারণ ময়দা

আমাদের রান্নাঘরে খুঁজলেই পাওয়া যায় এই সাধারণ ময়দা বা অল পারপাস ফ্লাওয়ার। কেক, বিস্কুট, পেস্ট্রি কিংবা প্যানকেক বানানোর জন্য এটি সবচেয়ে উপযুক্ত। এর গ্লুটেন মাঝারি মানের হওয়ায় তৈরি খাবার খুব বেশি নরম বা শক্ত হয় না।

স্ট্রং হোয়াইট ব্রেড ফ্লাওয়ার

এটি পাউরুটি বানানোর জন্য বিশেষ ময়দা। যাঁরা ঘরে পাউরুটি, পিৎজা অথবা ডোনাট বানাতে চান, তাঁদের জন্য এটি হবে সেরা। এতে প্রোটিনের পরিমাণ বেশি থাকে, যা প্রচুর গ্লুটেন তৈরি করে। ফলে পাউরুটি অনেক বেশি ফোলে এবং সুন্দর টেক্সচার তৈরি করে।

সেলফ-রাইজিং ফ্লাওয়ার

এই ময়দায় আগে থেকে বেকিং পাউডার ও লবণ মেশানো থাকে। ঝটপট কেক, মাফিন বা স্কোনস বানাতে এটি ব্যবহার করা হয়। এতে আগে থেকে পরিমাণমতো সব মেশানো থাকায় পরিমাণে ভুল হওয়ার ভয় থাকে না।

হোলসাম ফ্লাওয়ার

পুরো গম পিষে এটি তৈরি করা হয়। ফলে এতে আঁশ ও পুষ্টিগুণ বেশি থাকে এবং এটি দেখতে লাল বা বাদামি রঙের হয়। স্বাস্থ্যকর রুটি বা ভারী পাউরুটি বানাতে এটি ব্যবহার করা হয়। এটি একটু ঘন ও দানাদার হয়।

কর্নফ্লাওয়ার

এটি আসলে বেকিংয়ের চেয়ে রান্নায় বেশি ব্যবহার করা হয়। স্যুপ অথবা ঘন সস তৈরিতে কর্নফ্লাওয়ার অতুলনীয়। তবে এটি ব্যবহার করার আগে ঠান্ডা পানিতে গুলিয়ে ব্যবহার করলে দলা পাকানোর ভয় থাকে না।

সঠিক নির্বাচনেই সাফল্য

যে রেসিপির জন্য যে ধরনের ময়দার কথা বলা হয়, সব সময় সেটিই ব্যবহারের চেষ্টা করুন। হাতের কাছে সেলফ-রাইজিং ফ্লাওয়ার না থাকলে সাধারণ ময়দার সঙ্গে পরিমাণমতো বেকিং পাউডার মিশিয়ে নিলে কাজ চলে যাবে। সঠিক ময়দা ব্যবহার করার মাধ্যমে আপনি ঘরে বসে দারুণ কেক বা পাউরুটি বানাতে পারবেন।

সূত্র: গয়া বেকারি ও অন্যান্য

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

তিনটি সহজ ও সুস্বাদু ভেজ খাবার

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ০০
রেড ক্যাবেজ স্যালাড। ছবি: বিবিসি
রেড ক্যাবেজ স্যালাড। ছবি: বিবিসি

আসছে বড়দিন। মানে ছুটির দিন। কর্মব্যস্ত জীবনে একটা দিন ছুটি মানেই খানিক অন্য রকম খাবার খাওয়ার চেষ্টা। শখের রাঁধুনি যাঁরা ভাবছেন, এবার বড়দিনে রান্নাঘরের দায়িত্বটা নিজেই নেবেন, তাঁদের জন্যই এই লেখা। যেহেতু উৎসবে প্রথম নিজে রান্না করবেন, তাই রান্নাটা যত রিস্ক ফ্রি হবে, ততই ভালো। মাংস ও মিষ্টি আইটেমের পাশাপাশি ভেজ আইটেমও তো রাখা চাই। কী থাকতে পারে ভেজ আইটেমে?

হানি রোস্টেড ক্যারট

উপকরণ

ছোট গাজর ১ কেজি, অলিভ অয়েল ২ টেবিল চামচ, খাঁটি মধু ৩ টেবিল চামচ, তাজা লেবুর রস ১ টেবিল চামচ, থাইম গুঁড়া সামান্য, লবণ এবং গোলমরিচগুঁড়া পরিমাণমতো।

হানি রোস্টেড ক্যারট। ছবি: বিবিসি ইউকে
হানি রোস্টেড ক্যারট। ছবি: বিবিসি ইউকে

প্রণালি

ওভেন ২০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় প্রিহিট করুন। গাজরের গোড়া ও আগার অংশ কেটে খোসা ছাড়িয়ে নিন। গাজর মোটা হলে লম্বালম্বি অর্ধেক বা লম্বালম্বি চার টুকরো করে কেটে নিয়ে একটি বড় বেকিং ট্রেতে রাখুন। এবার এগুলোর ওপর অলিভ অয়েল ঢেলে দিন। এরপর ওপর থেকে লবণ ও গোলমরিচ ছড়িয়ে দিয়ে ভালো করে মেশান। তারপর ওভেনে ১৫ থেকে ২৫ মিনিটের জন্য বেক করুন। প্রায় নরম ও হালকা বাদামি না হওয়া পর্যন্ত বেক করতে থাকুন। কতটা সময় বেক করতে হবে, তা নির্ভর করবে গাজর কতটা পুরু তার ওপর।

এই ফাঁকে একটি বাটিতে মধু ও লেবুর রস একসঙ্গে ফেটিয়ে নিন। এবার ওভেন থেকে গাজরের ট্রে বের করে নিয়ে বেক করা গাজরের ওপর মধু ও লেবুর মিশ্রণ ছড়িয়ে দিন। সামান্য থাইম পাতার গুঁড়াও ছড়িয়ে দিতে পারেন। এবার সবকিছু হালকা করে মিশিয়ে নিয়ে আরও ৮-১০ মিনিটের জন্য ওভেনে বেক করুন। গাজরে চকচকে ভাব এলে বের করে পরিবেশন করুন।

এই রেসিপি ভেগানদের জন্য তৈরি করতে, মধুর পরিবর্তে ম্যাপল সিরাপ ব্যবহার করতে পারেন।

রেড ক্যাবেজ স্যালাড

উপকরণ

মাখন ১ চা-চামচ, অলিভ অয়েল ২ টেবিল চামচ, সরু করে কাটা পেঁয়াজ ১টি, দারুচিনিগুঁড়া ১ চা- চামচ, জায়ফলগুঁড়া আধা চা-চামচ, ঝিরি ঝিরি করে কাটা লাল বাঁধাকপি ৬০০ গ্রাম, ব্রাউন সুগার ৩ টেবিল চামচ, খোসা ছাড়িয়ে কুচি করে করা আপেল ৩টি, সিরকা এক টেবিল চামচ, থাইম পাতা সাজানোর জন্য।

প্রণালি

একটি বড় ঢাকনাযুক্ত সসপ্যানে মাখন এবং তেল গরম করুন। গরম হলে পেঁয়াজ দিন এবং নরম না হওয়া পর্যন্ত ভাজুন। এবার অন্যান্য মসলা দিয়ে নাড়ুন। তারপর বাঁধাকপি যোগ করুন এবং মাঝে মাঝে নাড়তে থাকুন। এভাবে ৩ থেকে ৪ মিনিট ভাজুন। এবার চিনি, আপেল কুচি ও সিরকা দিয়ে আবার কিছুক্ষণ নাড়ুন। তারপর চুলার আঁচ কমিয়ে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে ৩০ মিনিট ধরে রান্না করুন। সবশেষ নিজের পছন্দমতো ডিশে পরিবেশন করুন।

পারফেক্ট রোস্ট পটেটো

উপকরণ

যেকোনো উদ্ভিজ্জ তেল ৩ টেবিল চামচ, ৪ ভাগ করে কাটা মাঝারি আকারের আলু ২০০ গ্রাম, লবণ ও গোলমরিচগুঁড়া পরিমাণমতো।

পারফেক্ট রোস্ট পটেটো। ছবি: বিবিসি ইউকে
পারফেক্ট রোস্ট পটেটো। ছবি: বিবিসি ইউকে

প্রণালি

ওভেন ২০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস প্রিহিট করুন। চুলায় আলুগুলো প্যানে ঢেকে সেদ্ধ হতে দিন। পানি ফুটে উঠলে লবণ দিয়ে আবার ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিন। ১০ থেকে ১৫ মিনিট ধরে সেদ্ধ করুন। আধা সেদ্ধ হলে আলুগুলো চুলা থেকে নামিয়ে পানি ঝরিয়ে নিন। এবার পেপার টাওয়েল দিয়ে চেপে আলুর সঙ্গে লেগে থাকা বাড়তি পানি শুকিয়ে ফেলুন। এবার ট্রেতে করে আলুগুলো ১০ মিনিটের জন্য বাতাসের নিচে রাখুন। ওভেন ট্রেতে তেল দিয়ে আলুগুলো ছড়িয়ে দিন। ভালোভাবে তেল ও আলু মাখা হয়ে গেলে ওভেনে ২০ মিনিট ধরে বেক করুন। এরপর বের করে আলুগুলো উল্টেপাল্টে দিয়ে আরও ২০-৩০ মিনিটের জন্য অথবা সোনালি ও মুচমুচে না হওয়া পর্যন্ত বেক করুন। হয়ে গেলে আলুর ওপর লবণ ও গোলমরিচগুঁড়া ছড়িয়ে দিয়ে পরিবেশন করুন।

সূত্র: বিবিসি ইউকে

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত