সাইফুল মাসুম
ভোরবেলা সূর্য উঠলে কিরণ পড়ে লালচরে,
বানরেরা ঝুলে থাকে কেওড়াগাছের ডাল ধরে।
লালচরে সকাল বিকেল বসে লাল কাঁকড়ার মেলা,
গহিন বনে হরিণেরা দল বেঁধে করে খেলা। …
সমুদ্রের গর্জন আর উদাস বাতাস উপেক্ষা করে ফয়েজ মিয়া গেয়ে চলেছেন এই গান। ভিড় করে শুনছে মানুষ। বিস্তৃত সমুদ্রসৈকত আর ঘন কেওড়া বনের পাশে ঘুরে বেড়াচ্ছেন দর্শনার্থীরা। বালুতটে খেলা করছে অজস্র লাল কাঁকড়া। প্রায় ১০ কিলোমিটার সমুদ্রসৈকতে পাওয়া যায় কক্সবাজারের সৌন্দর্য। আর কেওড়া বনে উপভোগ করা যায় সুন্দরবনের রূপ।
খুব ভোরে বঙ্গোপসাগরের বুকে জেগে ওঠা রক্তিম সূর্যোদয় দেখার দুর্লভ সুযোগও পাওয়া যায় এখানে। আছে হরিণসহ অনেক বন্য প্রাণী।
পর্যটনের এই নতুন গন্তব্য নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার লালচর। অনিন্দ্যসুন্দর জায়গাটি উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নে পড়েছে। প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা দর্শনার্থীরা লালচরে ভিড় জমাচ্ছেন। তেমনি একজন দর্শনার্থী মনির আহমেদ ঢাকা থেকে পরিবার নিয়ে ঘুরতে এসেছেন লালচরে। পানি উন্নয়ন বোর্ডে চাকরির সুবাদে কক্সবাজার, কুয়াকাটাসহ দেশের বিভিন্ন পর্যটন এলাকায় ঘুরেছেন তিনি। মনির আহমেদ বলেন, ‘ব্যস্ত জীবনের পাশ কাটিয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে লালচরে এসেছি সময় কাটাতে। আমরা সবাই কক্সবাজার নির্ভরশীল হয়ে যাচ্ছি। উপকূলের দ্বীপগুলোতে যে আরও পর্যটনের সম্ভাবনা রয়েছে, সেটা দেখা হচ্ছে না।’
যাতায়াতব্যবস্থা পর্যটন বিকাশে বড় চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মুনির আহমেদ আরও বলেন, ‘লালচরকে পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে টেকসই করতে পর্যটনবান্ধব অবকাঠামো গড়ে তুলতে হবে। এখানে দর্শনার্থীদের জন্য বিশ্রামাগার তৈরি করতে হবে।’
বুড়িরচর ইউনিয়নের পশ্চিম বড় দেইলের বাসিন্দা আতাউর রাব্বি তারেক। লালচরের অবস্থান বাড়ির পাশে হওয়ায় স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে ঘুরতে এসেছেন তিনি। আতাউর রাব্বি বলেন, ‘মন ভালো করতে মাঝেমধ্যে পরিবার ও বন্ধুবান্ধব নিয়ে লালচরে আসি। গত বছর আমরা এখানে জোছনা বিলাসের আয়োজন করেছিলাম। এবারও করব।’
সম্প্রতি ৩০০ মানুষের বহর নিয়ে লালচরে বনভোজনের আয়োজন করেছিল ‘অলি উল্যাহ ভূঁইয়ার পরিবার-পরিজন’। বনভোজনে অংশগ্রহণকারী আসাদুল্লাহ বলেন, ‘পারিবারিক এই পিকনিককে কেন্দ্র করে ঢাকা থেকে এসেছি। গত বছর এমন আয়োজন নিমতলী সমুদ্রসৈকতে হয়েছিল। এবার লালচরে করা হয়েছে।’
লালচরকে পর্যটকবান্ধব করতে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ ২০২১ সাল থেকে বিভিন্ন কার্যক্রম শুরু করেছে। বুড়িরচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিন শত শত মানুষ লালচরে আসে। পর্যটকদের সুবিধার্থে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে পাঁচ কিলোমিটার রাস্তা, ওয়াশরুম, টিউবওয়েল বসানো হয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যে বৈঠকের ব্যবস্থা করা হবে। নিরাপত্তাব্যবস্থা নিশ্চিত করতে ২০ সদস্যের স্বেচ্ছাসেবক টিম কাজ করছে।’ লালচরে একাধিক দোকান, সৌরবিদ্যুৎ ও জেনারেটরের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানান চেয়ারম্যান।
লালচরের চায়ের দোকানি ফয়সাল উদ্দিন রুবেল জানান, প্রতিদিন লালচরে তিন শতাধিক মানুষ ঘুরতে আসে। চায়ের দোকানে দিনে গড়ে ১০ হাজার টাকার বেশি বিক্রি হয়। শুক্রবারে তুলনামূলক পর্যটকের চাপ বেশি থাকে।
কীভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে লালচরে যাওয়ার সহজ পথ হচ্ছে, সদরঘাট থেকে লঞ্চে হাতিয়ার তমরুদ্দি ঘাট। এই রুটে তাসরিফ ও ফারহান নামে দু্টি লঞ্চ নিয়মিত চলে। প্রতিদিন বিকেলে লঞ্চ দুটি ছেড়ে যায়, হাতিয়ায় পৌঁছায় পরের দিন সকালে। তমরুদ্দি ঘাট থেকে সড়কপথে মোটরসাইকেল বা সিএনজি চালিত অটোরিকসায় সাগরিয়া বাজার হয়ে লালচরে যাওয়া যায়।
আর সড়কপথে গেলে ঢাকা থেকে নোয়াখালীর সোনাপুর পর্যন্ত একুশে পরিবহন, লাল সবুজসহ একাধিক বাস সার্ভিস রয়েছে। সোনাপুর থেকেসিএনজি চালিত অটোরিকসায় চেয়ারম্যানঘাট যেতে হবে। সেখান থেকে স্পিডবোট, ট্রলার বা সিট্রাকে নদী পার হয়ে হাতিয়ার আফাজিয়া ঘাটে যেতে হবে। সেখান থেকে লোকাল বাসে সাগরিয়া বাজার হয়ে লালচরে যেতে হবে মোটরসাইকেল অথবা সিএনজি চালিত অটোরিকসায় ।
থাকা ও খাওয়া
লালচর সমুদ্রসৈকত ঘোরার পর রাত যাপনের জন্য সাগরিয়া বাজারে দুটি বোর্ডিং রয়েছে। এ ছাড়া হাতিয়ার ওছখালীতে সরকারি ডাকবাংলোসহ রয়েছে উন্নতমানের বেসরকারি হোটেল-মোটেল। খাওয়ার জন্য রয়েছে সামুদ্রিক তাজা মাছ, কীটনাশকমুক্ত টাটকা সবজি, দ্বীপের বিখ্যাত মহিষের দধি।
ভোরবেলা সূর্য উঠলে কিরণ পড়ে লালচরে,
বানরেরা ঝুলে থাকে কেওড়াগাছের ডাল ধরে।
লালচরে সকাল বিকেল বসে লাল কাঁকড়ার মেলা,
গহিন বনে হরিণেরা দল বেঁধে করে খেলা। …
সমুদ্রের গর্জন আর উদাস বাতাস উপেক্ষা করে ফয়েজ মিয়া গেয়ে চলেছেন এই গান। ভিড় করে শুনছে মানুষ। বিস্তৃত সমুদ্রসৈকত আর ঘন কেওড়া বনের পাশে ঘুরে বেড়াচ্ছেন দর্শনার্থীরা। বালুতটে খেলা করছে অজস্র লাল কাঁকড়া। প্রায় ১০ কিলোমিটার সমুদ্রসৈকতে পাওয়া যায় কক্সবাজারের সৌন্দর্য। আর কেওড়া বনে উপভোগ করা যায় সুন্দরবনের রূপ।
খুব ভোরে বঙ্গোপসাগরের বুকে জেগে ওঠা রক্তিম সূর্যোদয় দেখার দুর্লভ সুযোগও পাওয়া যায় এখানে। আছে হরিণসহ অনেক বন্য প্রাণী।
পর্যটনের এই নতুন গন্তব্য নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার লালচর। অনিন্দ্যসুন্দর জায়গাটি উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নে পড়েছে। প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা দর্শনার্থীরা লালচরে ভিড় জমাচ্ছেন। তেমনি একজন দর্শনার্থী মনির আহমেদ ঢাকা থেকে পরিবার নিয়ে ঘুরতে এসেছেন লালচরে। পানি উন্নয়ন বোর্ডে চাকরির সুবাদে কক্সবাজার, কুয়াকাটাসহ দেশের বিভিন্ন পর্যটন এলাকায় ঘুরেছেন তিনি। মনির আহমেদ বলেন, ‘ব্যস্ত জীবনের পাশ কাটিয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে লালচরে এসেছি সময় কাটাতে। আমরা সবাই কক্সবাজার নির্ভরশীল হয়ে যাচ্ছি। উপকূলের দ্বীপগুলোতে যে আরও পর্যটনের সম্ভাবনা রয়েছে, সেটা দেখা হচ্ছে না।’
যাতায়াতব্যবস্থা পর্যটন বিকাশে বড় চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মুনির আহমেদ আরও বলেন, ‘লালচরকে পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে টেকসই করতে পর্যটনবান্ধব অবকাঠামো গড়ে তুলতে হবে। এখানে দর্শনার্থীদের জন্য বিশ্রামাগার তৈরি করতে হবে।’
বুড়িরচর ইউনিয়নের পশ্চিম বড় দেইলের বাসিন্দা আতাউর রাব্বি তারেক। লালচরের অবস্থান বাড়ির পাশে হওয়ায় স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে ঘুরতে এসেছেন তিনি। আতাউর রাব্বি বলেন, ‘মন ভালো করতে মাঝেমধ্যে পরিবার ও বন্ধুবান্ধব নিয়ে লালচরে আসি। গত বছর আমরা এখানে জোছনা বিলাসের আয়োজন করেছিলাম। এবারও করব।’
সম্প্রতি ৩০০ মানুষের বহর নিয়ে লালচরে বনভোজনের আয়োজন করেছিল ‘অলি উল্যাহ ভূঁইয়ার পরিবার-পরিজন’। বনভোজনে অংশগ্রহণকারী আসাদুল্লাহ বলেন, ‘পারিবারিক এই পিকনিককে কেন্দ্র করে ঢাকা থেকে এসেছি। গত বছর এমন আয়োজন নিমতলী সমুদ্রসৈকতে হয়েছিল। এবার লালচরে করা হয়েছে।’
লালচরকে পর্যটকবান্ধব করতে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ ২০২১ সাল থেকে বিভিন্ন কার্যক্রম শুরু করেছে। বুড়িরচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিন শত শত মানুষ লালচরে আসে। পর্যটকদের সুবিধার্থে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে পাঁচ কিলোমিটার রাস্তা, ওয়াশরুম, টিউবওয়েল বসানো হয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যে বৈঠকের ব্যবস্থা করা হবে। নিরাপত্তাব্যবস্থা নিশ্চিত করতে ২০ সদস্যের স্বেচ্ছাসেবক টিম কাজ করছে।’ লালচরে একাধিক দোকান, সৌরবিদ্যুৎ ও জেনারেটরের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানান চেয়ারম্যান।
লালচরের চায়ের দোকানি ফয়সাল উদ্দিন রুবেল জানান, প্রতিদিন লালচরে তিন শতাধিক মানুষ ঘুরতে আসে। চায়ের দোকানে দিনে গড়ে ১০ হাজার টাকার বেশি বিক্রি হয়। শুক্রবারে তুলনামূলক পর্যটকের চাপ বেশি থাকে।
কীভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে লালচরে যাওয়ার সহজ পথ হচ্ছে, সদরঘাট থেকে লঞ্চে হাতিয়ার তমরুদ্দি ঘাট। এই রুটে তাসরিফ ও ফারহান নামে দু্টি লঞ্চ নিয়মিত চলে। প্রতিদিন বিকেলে লঞ্চ দুটি ছেড়ে যায়, হাতিয়ায় পৌঁছায় পরের দিন সকালে। তমরুদ্দি ঘাট থেকে সড়কপথে মোটরসাইকেল বা সিএনজি চালিত অটোরিকসায় সাগরিয়া বাজার হয়ে লালচরে যাওয়া যায়।
আর সড়কপথে গেলে ঢাকা থেকে নোয়াখালীর সোনাপুর পর্যন্ত একুশে পরিবহন, লাল সবুজসহ একাধিক বাস সার্ভিস রয়েছে। সোনাপুর থেকেসিএনজি চালিত অটোরিকসায় চেয়ারম্যানঘাট যেতে হবে। সেখান থেকে স্পিডবোট, ট্রলার বা সিট্রাকে নদী পার হয়ে হাতিয়ার আফাজিয়া ঘাটে যেতে হবে। সেখান থেকে লোকাল বাসে সাগরিয়া বাজার হয়ে লালচরে যেতে হবে মোটরসাইকেল অথবা সিএনজি চালিত অটোরিকসায় ।
থাকা ও খাওয়া
লালচর সমুদ্রসৈকত ঘোরার পর রাত যাপনের জন্য সাগরিয়া বাজারে দুটি বোর্ডিং রয়েছে। এ ছাড়া হাতিয়ার ওছখালীতে সরকারি ডাকবাংলোসহ রয়েছে উন্নতমানের বেসরকারি হোটেল-মোটেল। খাওয়ার জন্য রয়েছে সামুদ্রিক তাজা মাছ, কীটনাশকমুক্ত টাটকা সবজি, দ্বীপের বিখ্যাত মহিষের দধি।
খাবার মজাদার করতে আমরা সাধারণভাবে তেল-মসলার খুব বাড়াবাড়ি করে ফেলি। সেখান থেকে বাদ যায় না পেঁয়াজ কিংবা রসুন। পেঁয়াজকে কায়দা করে সরিয়ে রাখলেও খাবার মজাদার হতে পারে। তেমনই কিছু রেসিপি...
১ দিন আগেবাংলা অঞ্চলে মিষ্টিজাতীয় প্রাচীন খাবারগুলোর মধ্যে সন্দেশের নাম আছে একেবারে প্রথম দিকে। সব মিষ্টির কিছু না কিছু বদল হলেও, এর বদল হয়েছে খুবই কম। যশোরের নলেন গুড়ের সন্দেশ, মানিকগঞ্জ বা নাগরপুরের প্যারা সন্দেশ, পাবনার মাছের পেটি সন্দেশ ইত্যাদি কে না খেতে পছন্দ করে!
১ দিন আগেজীবনানন্দ দাশের কবিতায় ঘুরেফিরে এসেছে দারুচিনি দ্বীপের কথা, তার রহস্যময় শ্যামলিমার কথা, সেই সবুজের গহিনে দিকহারা নাবিকের আশ্রয়-আকাঙ্ক্ষার কথা। এই দারুচিনি দ্বীপ কি আসলে কোনো সমুদ্রঘেরা ভূখণ্ড, নাকি বনলতা সেন নিজেই, তা নিয়ে কবিরা বিতর্ক করুক। আমরা বরং এই দ্বীপের তত্ত্বতালাশ করি।
১ দিন আগে‘প্রসেসেস’-এ প্রকাশিত এক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, ভাতের মাড় ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের জন্য একটি হজমযোগ্য স্বাস্থ্যকর পানীয় হিসেবে কাজ করে। এমনকি এটি ওজন কমাতে পারে।
১ দিন আগে