আনিসুল ইসলাম নাঈম
জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদের গেট। আমার দিকে তাক করা ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের দুই ডজন রাইফেলের নল! একজন বলল, সুরা ফাতিহা পাঠ করতে। সুরা ফাতিহা পাঠ করলাম। সুরা ইয়াসিন পাঠ করো, বলল একজন। তাও মুখস্থ পাঠ করলাম। এরপর আমার পাসপোর্ট দেখে বাবা-দাদা ও পরিবারের কথা জিজ্ঞেস করল। ভেতর থেকে দুজন রক্ষী এসে হাতে একটি বোরকা ধরিয়ে দিয়ে মসজিদের ভেতরে যেতে দিল। ফিলিস্তিন বর্ডারে ইসরায়েলি সেনারা নানা ধরনের প্রশ্ন করেছিল। দুরু দুরু বুকে বর্ডারের কাজ শেষ করে বাসে উঠি। সেদিন ভোরেই বেশ কিছু ফিলিস্তিনিকে মেরে ফেলা হয়েছিল!
নাজমুন নাহারের গল্পগুলো এমনই রোমহর্ষক। সম্প্রতি পশ্চিম আফ্রিকার দ্বীপদেশ কেপ ভার্দে ভ্রমণের মধ্য দিয়ে ১৫৯ দেশ ভ্রমণ শেষ করেছেন তিনি। তাঁর বিচিত্র ভ্রমণ অভিজ্ঞতার কাহিনি জানাচ্ছেন আনিসুল ইসলাম নাঈম।
ভ্রমণ শুরুর গল্পটা
নাজমুন নাহারের জন্ম লক্ষ্মীপুর সদরে। বাবা ছিলেন ব্যবসায়ী। দাদা ছিলেন তাঁর নিজের সময়ের একজন ফিকাহ শাস্ত্রবিদ ও ইসলামি পণ্ডিত। তাঁর দাদা ১৯২৬-১৯৩১ সাল পর্যন্ত আরবের বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেন। বাবার মুখে শোনা দাদার ভ্রমণকাহিনি শিশু বয়সে নাজমুন নাহারের মনে গেঁথে গিয়েছিল। গল্প শুনতে শুনতেই হয়তো ভ্রমণকাহিনি তাঁর পছন্দের বিষয় হয়ে যায়। ফলে ছোটবেলা থেকে ভ্রমণকাহিনি পড়া ভালোবাসেন। ম্যাপের ওপর ভালো দখল ছিল তাঁর ছোটবেলা থেকেই। ২০০০ সালে ভারতের ভূপালের পাঁচমারিতে ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল অ্যাডভেঞ্চার প্রোগ্রামে অংশ নেওয়ার মাধ্যমে তাঁর প্রথম বিশ্বভ্রমণের সূচনা হয়। সবশেষে ১৫৯তম দেশ হিসেবে সফর করেন কেপ ভার্দে। নাজমুন নাহার পড়াশোনা করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং সুইডেনের লুন্ড ইউনিভার্সিটিতে। সুইডেনে বেশ কিছুদিন গবেষণার কাজ করেন।
পৃথিবীর পথে পথে রুদ্ধশ্বাস অভিযাত্রা
‘দক্ষিণ আমেরিকার গুয়াতেমালার রাস্তায় আমার গলায় ছুরি ও বুকে বন্দুক ধরেছে সবকিছু দিয়ে দেওয়ার জন্য। ক্ষতবিক্ষত হয়ে সেদিনও আমি বেঁচে গেছি। কোস্টারিকার ব্রাসিলিত নদীর ভয়াল স্রোতে প্যাসিফিক মহাসমুদ্রে আমি ভেসে যাচ্ছিলাম। তখন সে দেশের এক সাহসী লোক আমাকে বাঁচিয়েছেন। সাহারা মরুভূমির ভয়ংকর ঝড়ে পড়ে চোখ-নাক-মুখে ধারালো বালু ঢুকে গিয়েছিল। তার পরও বেঁচে এসেছি। কিরগিজস্তানের পর্বতে সাইট থেকে পড়ে গাছের সঙ্গে ঝুলে ছিলাম। সেখান থেকে ভাগ্যক্রমে দুজন বাঁচিয়েছিল। আফ্রিকার গিনির জঙ্গলে মধ্যরাতে আটকা পড়ে আড়াই দিন না খেয়ে থাকতে হয়েছে। ইথিওপিয়ার জঙ্গলে হামার আদিবাসীদের সঙ্গে গরুর কাঁচা মাংস খেয়ে বেঁচে থাকতে হয়েছে। চিলির আতাকামা, যেখানে ১০০ বছরে বৃষ্টি হয়নি, এমন আশ্চর্যজনক জায়গায়ও পা রেখেছি বহু কষ্টে।’এমন অসংখ্য রুদ্ধশ্বাস অভিযাত্রার গল্প আছে তাঁর জীবনে।
পৃথিবীর সৌন্দর্য উপভোগ
‘ইউরোপের ছোট্ট দেশ মালটা ভ্রমণের সময় আমার মায়ের সঙ্গে এক সন্ধ্যায় ভূমধ্যসাগরে বোটে বসে চাঁদ দেখেছিলাম। আইসল্যান্ডের ল্যান্ড মান্না লুগার পর্বত ভ্যালিতে বিভিন্ন রঙের পর্বতের মাঝে তাঁবু করে থাকার সময় রাতে চাঁদ দেখার আনন্দ ছিল খুবই অসাধারণ। পিয়ার আদি মরুভূমিতে আটলান্টিক মহাসমুদ্র এবং মরুভূমির মধ্যখান দিয়ে যে রাস্তা চলে গেছে, সেখান থেকে অনেক কিলোমিটার ভ্রমণ করে দেখেছি সমুদ্র কীভাবে মরুভূমির সঙ্গে মিলেছে আর মরুভূমি কীভাবে সমুদ্রের সঙ্গে মিলেছে। তাজিকিস্তান ও আফগানিস্তানের মাঝে যে করিডর রয়েছে, পামির মালভূমির সেই এক হাজার কিলোমিটার করিডর ভ্রমণ ছিল আমার জীবনের অন্যতম ভ্রমণ। পশ্চিম আফ্রিকার আইভরি কোস্টের মান শহরে স্বর্ণের খনিতে পানির স্রোতের সঙ্গে আসা স্বর্ণকণা ছুঁয়ে দেখেছি, সেটা ছিল খুবই ইন্টারেস্টিং। ভ্রমণের সময় আমি বিভিন্ন দেশের স্থানীয় খাবারগুলো খেয়ে থাকি। স্থানীয় খাবারের সঙ্গে পরিচিত হওয়া ভ্রমণের একটি শিক্ষণীয় অংশ। একেক দেশের খাবার একেক রকম হলেও মেক্সিকো ও লেবানিজ খাবার ভালো লেগেছে।
বেশির ভাগ দেশ সড়কপথে ভ্রমণ
২২ বছর তিনি পৃথিবীর পথে পথে ঘুরে চলেছেন। সর্বোচ্চ টানা ৫৮ ঘণ্টা, কখনো ৪৮ ঘণ্টা, কখনো ৩৬ ঘণ্টা তাঁকে বাসে ভ্রমণ করতে হয়েছে এক দেশ থেকে আরেক দেশে। টানা কখনো ১৫ দেশ, কখনো ১৪ দেশ তিনি তিন, চার বা পাঁচ মাসের জন্য ঘুরে বেড়িয়েছেন। এই পুরো যাত্রার বেশির ভাগটাই হয়েছে সড়কপথে, এক শহর থেকে আরেক শহরে, এক দেশ থেকে আরেক দেশে।
ভ্রমণের খরচ
সুইডেনে পড়াশোনার পাশাপাশি খণ্ডকালীন কাজ করতেন নাজমুন নাহার। কম খরচে থাকতেন পৃথিবীর বিভিন্ন ট্র্যাভেলার্স হোস্টেলে। কখনো তাঁবু করে, কখনো কোচ সার্ফিংয়ের মাধ্যমে। স্বল্প খরচে পৃথিবী ভ্রমণের জন্য সড়কপথে ভ্রমণ করতেন। পৃথিবীর বিভিন্ন মহাদেশে এলাকা ভাগ করে একটানা ভ্রমণ করতেন। কোনো দেশে ভ্রমণের আগে তিনি সেই মহাদেশের ম্যাপ ও সেখানকার দর্শনীয় জায়গাগুলোর ওপর ধারণা নিতেন।
বিশ্বভ্রমণে যত অর্জন
দেশের পতাকা ও পৃথিবীতে শান্তির বার্তা বহনের বিরল অবদানের কৃতিত্বস্বরূপ তাঁকে ‘পিস রানার’ সম্মাননায় ভূষিত করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের ‘পিস টর্চ অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছেন তিনি। জাম্বিয়া সরকারের গভর্নর হ্যারিয়েট কায়োনার কাছ থেকে ‘ফ্ল্যাগ গার্ল’ উপাধি, দক্ষিণ সুদানে উইমেন এমপাওয়ারমেন্ট অ্যাওয়ার্ডসহ দেশে-বিদেশে অনেক সম্মাননা পেয়েছেন। পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মন্ত্রী, রাষ্ট্রপ্রধান, বিখ্যাত ব্যক্তিরা তাঁকে সংবর্ধিত করেছেন।
নতুন ভ্রমণকারীদের উদ্দেশ্যে
‘ভ্রমণটা হচ্ছে একটা শিক্ষা। এই শিক্ষা অর্জনের জন্য অবশ্যই পরিশ্রমী হতে হবে। ভ্রমণের মাধ্যমে পৃথিবীর নানা দেশের মানুষ, প্রকৃতি, সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে পারবে। ভ্রমণ করলে মানুষের চিন্তার পরিবর্তন হয়। তখন ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে সবকিছুর ঊর্ধ্বে নিজেকে একজন মানুষ হিসেবে ভাবতে পারে।’ নতুনদের উদ্দেশ্য এমনটাই জানিয়েছেন নাজমুন নাহার।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
‘বিশ্বের বাকি দেশগুলো পর্যায়ক্রমে ভ্রমণের ইচ্ছে রয়েছে। সেটাই আমার স্বপ্ন। এর জন্য ম্যাপ, পড়াশোনা ও কাজ করে যাচ্ছি। তা ছাড়া ভ্রমণবিষয়ক একটা বই লিখছি। আগামী প্রজন্মের কাছে বইটা উপহার হিসেবে দিতে চাই।’
জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদের গেট। আমার দিকে তাক করা ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের দুই ডজন রাইফেলের নল! একজন বলল, সুরা ফাতিহা পাঠ করতে। সুরা ফাতিহা পাঠ করলাম। সুরা ইয়াসিন পাঠ করো, বলল একজন। তাও মুখস্থ পাঠ করলাম। এরপর আমার পাসপোর্ট দেখে বাবা-দাদা ও পরিবারের কথা জিজ্ঞেস করল। ভেতর থেকে দুজন রক্ষী এসে হাতে একটি বোরকা ধরিয়ে দিয়ে মসজিদের ভেতরে যেতে দিল। ফিলিস্তিন বর্ডারে ইসরায়েলি সেনারা নানা ধরনের প্রশ্ন করেছিল। দুরু দুরু বুকে বর্ডারের কাজ শেষ করে বাসে উঠি। সেদিন ভোরেই বেশ কিছু ফিলিস্তিনিকে মেরে ফেলা হয়েছিল!
নাজমুন নাহারের গল্পগুলো এমনই রোমহর্ষক। সম্প্রতি পশ্চিম আফ্রিকার দ্বীপদেশ কেপ ভার্দে ভ্রমণের মধ্য দিয়ে ১৫৯ দেশ ভ্রমণ শেষ করেছেন তিনি। তাঁর বিচিত্র ভ্রমণ অভিজ্ঞতার কাহিনি জানাচ্ছেন আনিসুল ইসলাম নাঈম।
ভ্রমণ শুরুর গল্পটা
নাজমুন নাহারের জন্ম লক্ষ্মীপুর সদরে। বাবা ছিলেন ব্যবসায়ী। দাদা ছিলেন তাঁর নিজের সময়ের একজন ফিকাহ শাস্ত্রবিদ ও ইসলামি পণ্ডিত। তাঁর দাদা ১৯২৬-১৯৩১ সাল পর্যন্ত আরবের বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেন। বাবার মুখে শোনা দাদার ভ্রমণকাহিনি শিশু বয়সে নাজমুন নাহারের মনে গেঁথে গিয়েছিল। গল্প শুনতে শুনতেই হয়তো ভ্রমণকাহিনি তাঁর পছন্দের বিষয় হয়ে যায়। ফলে ছোটবেলা থেকে ভ্রমণকাহিনি পড়া ভালোবাসেন। ম্যাপের ওপর ভালো দখল ছিল তাঁর ছোটবেলা থেকেই। ২০০০ সালে ভারতের ভূপালের পাঁচমারিতে ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল অ্যাডভেঞ্চার প্রোগ্রামে অংশ নেওয়ার মাধ্যমে তাঁর প্রথম বিশ্বভ্রমণের সূচনা হয়। সবশেষে ১৫৯তম দেশ হিসেবে সফর করেন কেপ ভার্দে। নাজমুন নাহার পড়াশোনা করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং সুইডেনের লুন্ড ইউনিভার্সিটিতে। সুইডেনে বেশ কিছুদিন গবেষণার কাজ করেন।
পৃথিবীর পথে পথে রুদ্ধশ্বাস অভিযাত্রা
‘দক্ষিণ আমেরিকার গুয়াতেমালার রাস্তায় আমার গলায় ছুরি ও বুকে বন্দুক ধরেছে সবকিছু দিয়ে দেওয়ার জন্য। ক্ষতবিক্ষত হয়ে সেদিনও আমি বেঁচে গেছি। কোস্টারিকার ব্রাসিলিত নদীর ভয়াল স্রোতে প্যাসিফিক মহাসমুদ্রে আমি ভেসে যাচ্ছিলাম। তখন সে দেশের এক সাহসী লোক আমাকে বাঁচিয়েছেন। সাহারা মরুভূমির ভয়ংকর ঝড়ে পড়ে চোখ-নাক-মুখে ধারালো বালু ঢুকে গিয়েছিল। তার পরও বেঁচে এসেছি। কিরগিজস্তানের পর্বতে সাইট থেকে পড়ে গাছের সঙ্গে ঝুলে ছিলাম। সেখান থেকে ভাগ্যক্রমে দুজন বাঁচিয়েছিল। আফ্রিকার গিনির জঙ্গলে মধ্যরাতে আটকা পড়ে আড়াই দিন না খেয়ে থাকতে হয়েছে। ইথিওপিয়ার জঙ্গলে হামার আদিবাসীদের সঙ্গে গরুর কাঁচা মাংস খেয়ে বেঁচে থাকতে হয়েছে। চিলির আতাকামা, যেখানে ১০০ বছরে বৃষ্টি হয়নি, এমন আশ্চর্যজনক জায়গায়ও পা রেখেছি বহু কষ্টে।’এমন অসংখ্য রুদ্ধশ্বাস অভিযাত্রার গল্প আছে তাঁর জীবনে।
পৃথিবীর সৌন্দর্য উপভোগ
‘ইউরোপের ছোট্ট দেশ মালটা ভ্রমণের সময় আমার মায়ের সঙ্গে এক সন্ধ্যায় ভূমধ্যসাগরে বোটে বসে চাঁদ দেখেছিলাম। আইসল্যান্ডের ল্যান্ড মান্না লুগার পর্বত ভ্যালিতে বিভিন্ন রঙের পর্বতের মাঝে তাঁবু করে থাকার সময় রাতে চাঁদ দেখার আনন্দ ছিল খুবই অসাধারণ। পিয়ার আদি মরুভূমিতে আটলান্টিক মহাসমুদ্র এবং মরুভূমির মধ্যখান দিয়ে যে রাস্তা চলে গেছে, সেখান থেকে অনেক কিলোমিটার ভ্রমণ করে দেখেছি সমুদ্র কীভাবে মরুভূমির সঙ্গে মিলেছে আর মরুভূমি কীভাবে সমুদ্রের সঙ্গে মিলেছে। তাজিকিস্তান ও আফগানিস্তানের মাঝে যে করিডর রয়েছে, পামির মালভূমির সেই এক হাজার কিলোমিটার করিডর ভ্রমণ ছিল আমার জীবনের অন্যতম ভ্রমণ। পশ্চিম আফ্রিকার আইভরি কোস্টের মান শহরে স্বর্ণের খনিতে পানির স্রোতের সঙ্গে আসা স্বর্ণকণা ছুঁয়ে দেখেছি, সেটা ছিল খুবই ইন্টারেস্টিং। ভ্রমণের সময় আমি বিভিন্ন দেশের স্থানীয় খাবারগুলো খেয়ে থাকি। স্থানীয় খাবারের সঙ্গে পরিচিত হওয়া ভ্রমণের একটি শিক্ষণীয় অংশ। একেক দেশের খাবার একেক রকম হলেও মেক্সিকো ও লেবানিজ খাবার ভালো লেগেছে।
বেশির ভাগ দেশ সড়কপথে ভ্রমণ
২২ বছর তিনি পৃথিবীর পথে পথে ঘুরে চলেছেন। সর্বোচ্চ টানা ৫৮ ঘণ্টা, কখনো ৪৮ ঘণ্টা, কখনো ৩৬ ঘণ্টা তাঁকে বাসে ভ্রমণ করতে হয়েছে এক দেশ থেকে আরেক দেশে। টানা কখনো ১৫ দেশ, কখনো ১৪ দেশ তিনি তিন, চার বা পাঁচ মাসের জন্য ঘুরে বেড়িয়েছেন। এই পুরো যাত্রার বেশির ভাগটাই হয়েছে সড়কপথে, এক শহর থেকে আরেক শহরে, এক দেশ থেকে আরেক দেশে।
ভ্রমণের খরচ
সুইডেনে পড়াশোনার পাশাপাশি খণ্ডকালীন কাজ করতেন নাজমুন নাহার। কম খরচে থাকতেন পৃথিবীর বিভিন্ন ট্র্যাভেলার্স হোস্টেলে। কখনো তাঁবু করে, কখনো কোচ সার্ফিংয়ের মাধ্যমে। স্বল্প খরচে পৃথিবী ভ্রমণের জন্য সড়কপথে ভ্রমণ করতেন। পৃথিবীর বিভিন্ন মহাদেশে এলাকা ভাগ করে একটানা ভ্রমণ করতেন। কোনো দেশে ভ্রমণের আগে তিনি সেই মহাদেশের ম্যাপ ও সেখানকার দর্শনীয় জায়গাগুলোর ওপর ধারণা নিতেন।
বিশ্বভ্রমণে যত অর্জন
দেশের পতাকা ও পৃথিবীতে শান্তির বার্তা বহনের বিরল অবদানের কৃতিত্বস্বরূপ তাঁকে ‘পিস রানার’ সম্মাননায় ভূষিত করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের ‘পিস টর্চ অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছেন তিনি। জাম্বিয়া সরকারের গভর্নর হ্যারিয়েট কায়োনার কাছ থেকে ‘ফ্ল্যাগ গার্ল’ উপাধি, দক্ষিণ সুদানে উইমেন এমপাওয়ারমেন্ট অ্যাওয়ার্ডসহ দেশে-বিদেশে অনেক সম্মাননা পেয়েছেন। পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মন্ত্রী, রাষ্ট্রপ্রধান, বিখ্যাত ব্যক্তিরা তাঁকে সংবর্ধিত করেছেন।
নতুন ভ্রমণকারীদের উদ্দেশ্যে
‘ভ্রমণটা হচ্ছে একটা শিক্ষা। এই শিক্ষা অর্জনের জন্য অবশ্যই পরিশ্রমী হতে হবে। ভ্রমণের মাধ্যমে পৃথিবীর নানা দেশের মানুষ, প্রকৃতি, সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে পারবে। ভ্রমণ করলে মানুষের চিন্তার পরিবর্তন হয়। তখন ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে সবকিছুর ঊর্ধ্বে নিজেকে একজন মানুষ হিসেবে ভাবতে পারে।’ নতুনদের উদ্দেশ্য এমনটাই জানিয়েছেন নাজমুন নাহার।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
‘বিশ্বের বাকি দেশগুলো পর্যায়ক্রমে ভ্রমণের ইচ্ছে রয়েছে। সেটাই আমার স্বপ্ন। এর জন্য ম্যাপ, পড়াশোনা ও কাজ করে যাচ্ছি। তা ছাড়া ভ্রমণবিষয়ক একটা বই লিখছি। আগামী প্রজন্মের কাছে বইটা উপহার হিসেবে দিতে চাই।’
১৯৫১ সাল। ইরানের রাজা রেজা শাহ পাহলভি এলেন পৃথিমপাশা জমিদারবাড়িতে। সে এক হুলুস্থুল ব্যাপার! এ বাড়ির পূর্বপুরুষেরা ইরান থেকে এসেছিলেন বলে জানা যায়।
১ দিন আগেশীতে কাপড় ভালো রাখতে সেগুলোকে যেমন রোদে মেলে দিতে হয়, সম্পর্ক উন্নয়নে মাঝেমধ্যে তেমনি ভ্রমণেও যেতে হয়। শীত চলে এসেছে। ভ্রমণপ্রেমীরা হয়ে উঠেছেন সরব।
১ দিন আগেপর্যটন বন্ধে কারফিউ! হ্যাঁ, তেমনটিই ঘটেছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। গ্রামের নাম বুকচন হ্যানোক। দক্ষিণ কোরিয়ার জংনো জেলায় এর অবস্থান। বুকচন হ্যানোক দেশটির ‘মাস্ট ভিজিট’ পর্যটন গন্তব্য।
১ দিন আগেভ্রমণের স্বাদ একবার রক্তে ঢুকলে, তা থেকে মুক্তি পাওয়া কঠিন। এক অদৃশ্য তাড়না কাজ করতে থাকে ভেতরে-ভেতরে।
১ দিন আগে