Ajker Patrika

শেখ হাসিনার আমলে বছরে দেশ থেকে গড়ে পাচার হয় ১৬ বিলিয়ন ডলার

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯: ২৩
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের হাতে অর্থনীতির অবস্থার ওপর তৈরি শ্বেতপত্র তুলে ধরা হয়। ছবি: পিআইডি
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের হাতে অর্থনীতির অবস্থার ওপর তৈরি শ্বেতপত্র তুলে ধরা হয়। ছবি: পিআইডি

আওয়ামী লীগের শাসনামলে প্রতিবছর গড়ে ১৬ বিলিয়ন ডলার অবৈধভাবে বাংলাদেশ থেকে পাচার করা হয়েছিল। শেখ হাসিনার শাসনামলে অর্থনীতির অবস্থার ওপর একটি শ্বেতপত্রে আজ রোববার এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। কমিটি তাদের প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের তেজগাঁও কার্যালয়ে জমা দেয়।

তারা শেখ হাসিনার শাসনামলে হওয়া দুর্নীতি, লুটপাট এবং পরিসংখ্যানগত কারসাজির মাত্রা দেখে আতঙ্কিত হয়েছেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে আজ রোববার এ তথ্য জানানো হয়।

‘ডিসেকশন অব অ্যা ডেভেলপমেন্ট ন্যারেটিভ’ শিরোনামের এই প্রতিবেদনটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করার আশা করা হয়।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশিষ্ট ফেলো এবং শীর্ষ অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে গঠিত এই কমিটি প্রতিবেদনটি হস্তান্তর করেন। যাতে বলা হয়, শেখ হাসিনার দুর্নীতিপূর্ণ শাসনামলে, যা দেশকে এক দুর্নীতিপরায়ণ অবস্থায় রেখে গিয়েছিল।

কমিটিকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, এটি একটি যুগান্তকারী কাজ এবং এটি চূড়ান্ত করার পর প্রকাশ করা উচিত। কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করাও গুরুত্বপূর্ণ বলে তিনি মন্তব্য করেন।

ড. ইউনূস বলেন, ‘এটি একটি ঐতিহাসিক দলিল। এটি আমাদের দেখাবে জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের পর আমরা কী অর্থনীতি উত্তরাধিকার পেয়েছি। জাতি এই দলিল থেকে উপকৃত হবে।’

প্রধান উপদেষ্টা বলের, ‘আমাদের রক্ত হিম হয়ে যায় জানতে যে কীভাবে তারা প্রকাশ্যে অর্থনীতি লুটপাট করেছে। আমাদের বেশির ভাগই তা প্রতিহত করার সাহস জোগাতে পারেনি।’ তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি পর্যবেক্ষণকারী বহু-পক্ষীয় সংস্থাগুলোও তখন এই লুটপাট নিয়ে নীরব ছিল।

কমিটির প্রধান ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, তাঁরা সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে কাজ করেছেন এবং সরকারের কোনো হস্তক্ষেপ ছিল না। সমস্যা যতটা ভেবেছিলাম তার চেয়েও গভীর। ৩০টি অধ্যায় এবং ৪০০ পৃষ্ঠার এই শ্বেতপত্রটি দেখাবে কীভাবে পৃষ্ঠপোষক পুঁজিবাদ অলিগার্কদের সৃষ্টি করেছিল, যারা নীতি প্রণয়নে প্রভাব বিস্তার করেছিল।

কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, তাঁরা ২৯টি বৃহৎ প্রকল্পের মধ্যে সাতটি প্রকল্প বিশ্লেষণ করেছেন, যার প্রত্যেকটির বাজেট ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি। এই ২৯টি প্রকল্পে মোট খরচ ছিল ৮৭ বিলিয়ন ডলার বা ৭ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। বিশ্লেষণ করা সাতটি প্রকল্পের প্রাথমিক ব্যয় ছিল ১ লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকা। পরে প্রকল্প ব্যয় ১ লাখ ৯৫ হাজার কোটি টাকায় উন্নীত করা হয়, জমির মূল্য বাড়িয়ে এবং ক্রয়ের ক্ষেত্রে কারসাজি দেখিয়ে।

অর্থ পাচারে জড়িতদের বিচারের জন্য একটি বিশেষ প্রসিকিউশন শুরু করা উচিত বলে মনে করেন কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান।

কমিটির সদস্য অধ্যাপক এ কে এনামুল হক বলেন, গত ১৫ বছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) মাধ্যমে ৭ লাখ কোটি টাকার বেশি ব্যয় হয়েছে, যার ৪০ শতাংশ অর্থ আমলারা লুটপাট করেছে।

কমিটির সদস্য মোহাম্মদ আবু ইউসুফ বলেন, গত সরকারের সময় মোট জিডিপির ৬ শতাংশ কর ছাড় দেওয়া হয়েছিল। এটি অর্ধেকে কমানো গেলে, শিক্ষার বাজেট দ্বিগুণ এবং স্বাস্থ্যের বাজেট তিনগুণ করা যেত।

কমিটির আরেক সদস্য এম তামিম বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদনে ৩০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছে। যদি ঘুষের হার ১০ শতাংশ ধরা হয়, তবে এর পরিমাণ অন্তত ৩ বিলিয়ন ডলার।

অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজউদ্দিন সাথী এবং এসডিজি–বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মাত্র তিনজনের জন্য লাখ লাখ মানুষ মরছে, কাদের কথা বললেন ট্রাম্প

বৈশাখী মেলার নাগরদোলায় চড়িয়ে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যা

ঈদের ছুটিতে কৃষি প্রকল্পে পাতানো দরপত্র

জেলা প্রশাসনের আনন্দ শোভাযাত্রায় অংশ নেওয়া সেই আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেপ্তার

এশিয়ার সেরা সুপ্ত সম্ভাবনা বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাত, বিপুল বিনিয়োগের সুযোগ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত