আনোয়ারুলের আসন শূন্য ঘোষণা নিয়ে জটিলতা: ৫ জুনের মধ্যে সুরাহার আশা স্পিকারের

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৬ মে ২০২৪, ২১: ৩৭
Thumbnail image

ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপি আনোয়ারুল আজীম আনার খুন হয়েছেন—এমন তথ্য জানালেও, এখনো মরদেহ উদ্ধার করতে পারেনি ভারতের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এ অবস্থায় তাঁর সংসদীয় আসন শূন্য ঘোষণা নিয়ে দেখা দিয়েছে জটিলতা। তবে আগামী ৫ জুন অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া তৃতীয় অধিবেশনের আগেই সুরাহা হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। 

আজ রোববার জাতীয় সংসদ ভবনে স্পিকারের কার্যালয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা হয় স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর। আলাপকালে তিনি ৫ জুনের মধ্যে আনোয়ারুলের আসন শূন্য ঘোষণা নিয়ে সৃষ্ট জটিলতার সুরাহা হবে বলে আশা প্রকাশ করেন। 

স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আনোয়ারুল আজীম আনারের আসন নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়ে চিন্তাভাবনা চলছে, আলোচনা চলছে। আশা করি ফয়সালা হবে। সবকিছু নির্ভর করছে উনি মারা গেছেন, এ তথ্যটা সংসদের কাছে কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে আসতে হবে। আগামী ৫ জুন সংসদ অধিবেশনের আগে কার্য উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক হবে, সেখানে আলোচনা হবে। ওই বৈঠকে কমিটির সদস্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও উপস্থিত থাকবেন।’ 

আনোয়ারুলের মরদেহ না পাওয়ার ঘটনা প্রসঙ্গে শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, অতীতের কোনো ঘটনার সঙ্গে এটাকে মেলানো যাবে না। তাই এ জন্য আরও অপেক্ষা করতে হবে। আগামী ৫ জুন অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া সংসদের তৃতীয় অধিবেশনের আগেই সুরাহা হবে। 

মৃত্যু, পদত্যাগ বা অন্য কোনো কারণে সংসদের কোনো আসন শূন্য হলে সংসদ সচিবালয় থেকে গেজেট প্রকাশের মাধ্যমে ওই আসনটি শূন্য (মৃত্যুর তারিখ থেকে) ঘোষণা করা হয়। পরে গেজেটের কপি পাঠানো হয় নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে। নির্বাচন কমিশন ওই শূন্য আসনে ৯০ দিনের মধ্যে উপনির্বাচনের আয়োজন করে। 

অন্য মৃত্যুর ঘটনা এবং আনোয়ারুলের ‘মৃত্যুর’ ঘটনাটি এক নয়। অতীতে যেসব সংসদ সদস্য মৃত্যুকরণ করেছেন বা হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন, তার প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাঁদের মৃতদেহ পাওয়া গেছে। দাফন বা সৎকার হয়েছে। কিন্তু ভারতে ‘হত্যাকাণ্ডের’ শিকার হওয়া আনোয়ারুলের মৃত্যুর ঘটনাটি কোনো সোর্স থেকে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান গণমাধ্যমকে মৃত্যুর বিষয়টি জানানো হলেও তাঁর মরদেহ এখনো পাওয়া যায়নি। এমনকি কবে মারা গেছেন, সেটিও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। 

অবশ্য আনোয়ারুলের হত্যাকাণ্ডের খবর প্রকাশের দিনই ২২ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে শোক প্রকাশ করেছেন। 

এক প্রশ্নের জবাবে স্পিকার বলেন, ‘এ ঘটনা খুবই ব্যতিক্রমধর্মী। পূর্বে এ ধরনের ঘটনা কখনোই ঘটেনি। আমাদের সামনে কোনো নজির নেই। কার্যপ্রণালি বিধিতেও এ বিষয়ে কোনো নির্দেশনা নেই। এটাতো অনুমান নির্ভর।’ 

হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়া শাহ এ এম এস কিবরিয়া ও মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনের প্রসঙ্গ টেনে স্পিকার বলেন, ‘তাঁদের হত্যার বিষয়টি দৃশ্যমান ছিল। তাঁদের ডেড বডি পাওয়া গেছে এবং জানাজা হয়েছে। সেই হিসেবে তাঁদের আসন শূন্য ঘোষণা করা হয়েছিল। সে সময় সরকার পক্ষ না জানালেও সংসদ নিশ্চিত হয়েছিল, তাঁরা মারা গেছেন। কারণ, সবই চোখের সামনে ঘটেছিল। কাজেই ওই ঘটনার সঙ্গে এটা মেলানোর কোনো সুযোগ নেই।’ 

আনোয়ারুলের বিষয়ে স্পিকার আরও বলেন, ‘এখানে সমস্যা হচ্ছে তাঁর দেহ পাওয়া যায়নি। তাই এখনো আমরা অপেক্ষা করছি। আমাদের কোনো একটা নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে জানতে হবে। সেটা হয়তো ওনার মৃত্যু সনদ বা কোনো কাগজ আমাদের কাছে আসতে হবে। যেখানে প্রমাণ হবে উনি মারা গেছেন। না হলে আমরা কীভাবে বুঝব উনি মারা গেছেন? সেটার প্রমাণটা কী? সেটা আসতে হবে। শুধু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা গণমাধ্যমের প্রতিবেদনের ওপর নির্ভর করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না।’ 

জাতীয় সংসদের ওয়েবসাইটে এমপিদের তালিকায় ঝিনাইদহ–৪ আসনটি নেই। ছবি: স্ক্রিনশটসংসদের ওয়েবসাইটে প্রত্যেক জাতীয় সংসদ আসন, এমপিদের ছবি, নাম, দলের নাম ও নির্বাচনী এলাকা উল্লেখ থাকে। নামের ওপরে ক্লিক করলে ঠিকানাসহ আরও কিছু তথ্য পাওয়া যায়। এদিকে আসন শূন্য ঘোষণা না হলেও জাতীয় সংসদের ওয়েবসাইটে ঝিনাইদহ-৪ আসনের তথ্য মুছে ফেলা হয়েছে।

আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত