Ajker Patrika

পিলখানা হত্যাকাণ্ড: শেখ হাসিনা ও মইন ইউসহ ৫৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০: ৩৪
শেখ হাসিনা ও মইন ইউ আহমদ। ছবি: সংগৃহীত
শেখ হাসিনা ও মইন ইউ আহমদ। ছবি: সংগৃহীত

দেড় দশক আগে রাজধানীর পিলখানায় বিডিআর সদর দপ্তরে (বর্তমানে বিজিবি) সংঘটিত বিদ্রোহে ৫৭ সেনা কর্মকর্তাকে হত্যার অভিযোগে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৫৮ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের দপ্তরে অভিযোগ করা হয়েছে।

পিলখানা হত্যাকাণ্ডে নিহত বিডিআর মহাপরিচালক জেনারেল শাকিল আহমেদের ছেলে রাকিন আহমেদ ভূঁইয়া, নিহত কর্নেল কুদরত এলাহীর ছেলে সাবিক রহমানসহ প্রায় ২৫ জন গতকাল বৃহস্পতিবার অভিযোগ দেন বলে প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম জানান।

অন্যদের মধ্যে অভিযোগের মুখে রয়েছেন শেখ হাসিনার প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল তারিক আহমেদ সিদ্দিক, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন (প্রয়াত), আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ, সেনাপ্রধান মইন ইউ আহমেদ ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর প্রধানেরা।

অভিযোগকারীদের আইনজীবী অ্যাডভোকেট এস এম তাসমিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ৫৭ জন নেতা কর্মকর্তার ওপর যে বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছে, তা মানবতাবিরোধী অপরাধ। একই সঙ্গে গণহত্যার সঙ্গে সামঞ্জস্য রয়েছে বলে আমরা মনে করি।’

‘আওয়ামী ফ্যাসিস্ট’ মতাদর্শ প্রতিষ্ঠা করার জন্য দেশপ্রেমিক এবং দক্ষ অফিসারদের ‘পরিকল্পিকভাবে খুন’ করা হয়েছে দাবি করে তাসমিরুল বলেন, ‘সেনা কর্মকর্তাদের পরিবারের সদস্যদের আটক করে, জিম্মি করে লুটপাট চালানো হয়েছে; তাদের ওপর আঘাত করা হয়েছে। এ সবকিছুই মানবতাবিরোধী অপরাধ ‍হিসেবে গণ্য হয়।’

ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে অভিযোগ করে শাকিল আহমেদের ছেলে রাকিন আহমেদ ভূঁইয়া বলেন, ‘পিলখানা হত্যাকাণ্ড হয়েছে এই দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর ৫৭ অফিসারকে হত্যা করার জন্য। শুধু বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বাংলাদেশ রাইফেলস ধ্বংস করার জন্য নয়, দেশের সার্বভৌমত্বকে ধ্বংস করার জন্য এই ষড়যন্ত্র করা হয়েছে।’

রাকিন আহমেদ বলেন, ‘আমার বাবা-মাকে কীভাবে মেরেছে, বলতে আমার বুকটা ফেটে যায়। আমাকে অফিসাররা বলেছিল, বাবা ‍তুমি তোমার বাবা-মায়ের লাশ দেখো না, তুমি তোমার বাবা-মায়ের লাশ নিতে পারবা না। দেখতেই পারিনি। সে নির্মমতা, বর্বরতা, আপনারা কল্পনাও করতে পারবেন না।’

মা-বাবাসহ পিলখানায় হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার চেয়ে রাকিন আহমেদ বলেন, ‘আমরা চাই, একটা সুষ্ঠু বিচার হোক। গত ১৫ বছর একা একা বড় হয়েছি। কী যে কষ্ট, বলে বোঝাতে পারব না!’

২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন বিডিআর সদর দপ্তরে বিদ্রোহে ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। সেই বিদ্রোহের পর সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিডিআরের নাম বদলে যায়, পরিবর্তন আসে পোশাকেও। এ বাহিনীর নাম এখন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বা বিজিবি।

বিদ্রোহের বিচার বিজিবির আদালতে হলেও হত্যাকাণ্ডের মামলা বিচারের জন্য আসে প্রচলিত আদালতে। এ ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা হয়। হত্যা মামলায় খালাস বা সাজা ভোগ শেষে বিস্ফোরক মামলার কারণে মুক্তি আটকে আছে ৪৬৮ বিডিআর সদস্যের।

হত্যা মামলায় ৮৫০ জনের বিচার শেষ হয় ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর। তাতে ১৫২ জনের ফাঁসি, ১৬০ জনের যাবজ্জীবন ও ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। খালাস পান ২৭৮ জন।

২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর সেই মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায় হয় হাইকোর্টে। তাতে ১৩৯ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়। যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয় ১৮৫ জনকে। আরও ২২৮ জনকে দেওয়া হয় বিভিন্ন মেয়াদে সাজা। খালাস পান ২৮৩ জন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সিরিয়ায় রাশিয়ার ঘাঁটি রাখতে যুক্তরাষ্ট্রে ইসরায়েলের তদবির

চকরিয়া থানার ওসিকে প্রত্যাহারের নির্দেশ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার

‘আমাদের অনুমতি ছাড়া কাউকে গ্রেপ্তার করলে থানা ঘেরাও করব’, সরকারি কর্মকর্তার বক্তব্য ভাইরাল

এনসিপির কর্মীদের ঢাকায় আনতে সরকারের বাস রিকুইজিশন, সমালোচনার ঝড়

নয়াদিল্লিতে নতুন হাইকমিশনার রিয়াজ হামিদুল্লাহ, ৩ মাস সময় নিল ভারত

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত