ভারতীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদন

ট্রাম্প জেতায় আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংখ্যালঘুরাও আশাবাদী

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ১১: ৫৬
আপডেট : ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ১২: ০৪
ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭ তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। ছবি: এএফপি

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর জয়ে আশাবাদী হয়ে উঠেছে বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ। পাশাপাশি আশাবাদী হয়ে উঠেছে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরাও।

টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তনে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু গোষ্ঠী এবং বিরোধী দলের (আওয়ামী লীগ) সদস্যরা যথেষ্ট আশাবাদী হয়ে উঠেছেন। অনেকের ধারণা, আমেরিকার সঙ্গে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সম্পর্ক ভবিষ্যতে একটি ‘পরিবর্তনশীল সময়ের’ সূচনা করতে পারে।

প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় আওয়ামী লীগের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানানো হয়। সেখানে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘প্রধানমন্ত্রী’ বলেই দাবি করে আওয়ামী লীগ। যদিও শেখ হাসিনা বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন বিগত কয়েক মাস ধরে। শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর আত্মগোপনে চলে যাওয়া আওয়ামী লীগের এক নেতা ট্রাম্পের ক্ষমতায় আসার বিষয়টি ইঙ্গিত করে টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেন, ‘পরিবর্তন অনিবার্য।’ কারণ, দেশে একটি অনির্বাচিত কর্তৃত্ববাদী সরকার সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষের পাশাপাশি ‘মবতন্ত্রকে’ উসকে দিচ্ছে।

টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন শহরে যেখানে আন্দোলনকারী ছাত্ররা নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছে, সেখানে হিন্দু, বৌদ্ধ এবং আওয়ামী লীগ সমর্থকদের লক্ষ্যবস্তু করেছে তারা। বিশ্লেষকদের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমটি বলেছে, ভারতের প্রতি বন্ধুত্বে ‘অটল’ ট্রাম্প। তাঁর আমলে বাংলাদেশের ‘অনির্বাচিত সরকার’ একটি অনিশ্চিত পরিস্থিতিতে থাকবে। পত্রিকাটির মতে, ট্রাম্পের আমলে ভারত-মার্কিন অক্ষ চীনকে ‘ঠেকাতে’ বাংলাদেশকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করবে।

আওয়ামী লীগের আত্মগোপনে থাকা ওই নেতার মতে, যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতা ডেমোক্র্যাটদের হাত থেকে রিপাবলিকানদের কাছে যাওয়ার কারণে ওয়াশিংটন-ঢাকা কূটনৈতিক সম্পর্কে একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হতে পারে। কারণ, ক্ষমতা হারানো ডেমোক্র্যাটদের কাছ থেকে তাদের বন্ধু ড. ইউনূস আর সমর্থন পাবেন না।

তিনি বলেন, ‘নির্বাচনী প্রচারণার সময় ট্রাম্প বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের অধীনে হিন্দু ও সংখ্যালঘু নিপীড়নের কথা তুলে ধরেছেন। নিপীড়নের অসংখ্য ঘটনা সামনে আসছে। বিরোধীদের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হয়রানি শুরু হয়েছে। সম্প্রতি, অভিনেত্রী শমি কায়সারকে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে বেশির ভাগ মানুষই বিশ্বাস করে, আওয়ামী লীগের সঙ্গে তাঁর সংশ্লিষ্টতা থাকার কারণে প্রতিহিংসা হিসেবে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ট্রাম্পের নির্বাচনে জয়ী হওয়ায় আমরা আশা করি এই পরিস্থিতির উন্নতি হবে।’

বাংলাদেশে গণঅভ্যুত্থানের পর ঢাকা থেকে কলকাতা চলে যাওয়া এক ভারতীয় টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেন, ‘গত তিন মাসে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, বিশেষ করে হিন্দু ও উপজাতি গোষ্ঠীর ওপর নিপীড়ন আন্তর্জাতিক মহলের নজর কেড়েছে। ট্রাম্প বাংলাদেশে হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সহিংসতার নিন্দা করেছেন। তিনি হিন্দুদের উদ্বেগকে উপেক্ষা করার জন্য বর্তমান প্রশাসনের সমালোচনা করায় নির্যাতিত গোষ্ঠীগুলো আস্থা ফিরে পাচ্ছে। তারা এখন আশা করেন যে, ট্রাম্পের প্রশাসন এই নিপীড়ন বন্ধ করতে হস্তক্ষেপ করবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত