নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
গত এক দশকে দেশের মাথাপিছু আয় ও জীবন মান বেড়েছে, দৃশ্যমান উন্নয়ন হয়েছে। কিন্তু এর ভেতরে চোরাবালি আছে। কারণ দেশের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী এখনো পেছনে পড়ে রয়েছে। বৈষম্য বৃদ্ধিতে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণি দুর্বল হয়ে গেছে। নেতিবাচক রাজনৈতিক চর্চার কারণে সব জায়গায় একটি ভীতির সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে। রাজনৈতিক, সামাজিক, ধর্মীয় সবক্ষেত্রেই এই ভীতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিশেষ করে দলীয় প্রতীকে স্থানীয় নির্বাচন রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা আরও তীব্র করে তুলেছে।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর মহাখালীতে ব্র্যাক সেন্টারে এসিডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম, বাংলাদেশের উদ্যোগে ‘জাতীয় উন্নয়ন আখ্যান ও স্থানীয় ভাবনা উপ-আঞ্চলিক পরামর্শ সভার সার-সংক্ষেপ উপস্থাপন’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব পর্যবেক্ষণ তুলে ধরা হয়।
সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। ড. দেবপ্রিয় এসিডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক এবং বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফল পলিসি ডায়ালগের সম্মানীয় ফেলো।
তিনি জানান, মাঠপর্যায়ে এ বছরের জুন থেকে অক্টোবর পর্যন্ত রংপুর, খুলনা, টাঙ্গাইল, সিলেট, ঠাকুরগাঁও, রাঙামাটি ও চট্টগ্রামে পরামর্শ সভায় ৫০০ সক্রিয় নাগরিক সরাসরি আলোচনায় অংশ নেন। তাঁদের মতামতের ভিত্তিতে মূল্যায়ন ও পর্যবেক্ষণটি তৈরি করা হয়েছে।
ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘বৈষম্যের বিষয়টি আরও বেড়েছে। মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণি দুর্বল হয়ে গেছে। তাঁদের পক্ষে কথা বলার লোক কমে যাচ্ছে। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো দুর্বল হয়ে গেছে।’ তবে বাংলাদেশ রুগ্ণ না হলেও এর পুষ্টির অভাব রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
বৈশ্বিক কারণে উন্নয়নের সুষম বণ্টন আরও ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে বলে সতর্ক করেন ড. দেবপ্রিয়। দেশের উন্নয়ন প্রয়োজন তবে উন্নয়নকে কখনো মানবাধিকারের বিকল্প হিসেবে উপস্থাপন করা যাবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আরও বলেন, ‘স্থানীয় মানুষ, আদিবাসী, দরিদ্র মানুষদের প্রতি জাতীয় গণমাধ্যমের আগ্রহ কম। তাঁদের দুঃখ কষ্ট, সমস্যা শহরের গণমাধ্যমে আসে না। গরিব মানুষ হেডলাইনে আসে না। জাতীয় সংবাদমাধ্যমে ধনীদের কথা আসে। কিন্তু এই অনগ্রসর মানুষের কথা কম আসে।’
গত এক দশকের অর্থনীতির সামগ্রিক অবস্থা পর্যালোচনা করলে দেখা যায় জাতীয় আয়, প্রবৃদ্ধি, গড় আয়ু, গড় শিক্ষার হার, রপ্তানি আয় সবই বেড়েছে। তবে এই উন্নয়ের ভিত্তি কতটা মজবুত সেটা আমরা দেখার চেষ্টা করেছি। তৃণমূল পর্যায়ের মানুষ, আদিবাসী মানুষ, হিজড়া বা ট্রান্সজেন্ডার মানুষ, বিশেষ ভৌগোলিক এলাকার মানুষ, কৃষক, মৎস্যজীবীদের কাছে উন্নয়ন ঠিকমতো পৌঁছাচ্ছে না। এসব মানুষদের যাতে আমরা যাতে ভুলে না যাই এবং নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে এবং উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় যাতে তাদের বিষয়টি সক্রিয় বিবেচনায় রাখা হয় সে জন্য এই গবেষণা কার্যক্রম। এই গবেষণার ফলাফল সরকার গ্রহণ করতে পারে। যোগ করেন ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
এই গবেষণা থেকে ছয়টি বার্তা পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ করেন ড. দেবপ্রিয়।
প্রথমত, শোভন কর্ম সংস্থানের ঘাটতি। বিশেষ করে যুব সমাজের কর্মসংস্থানের ঘাটতি রয়েছে এবং দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সার্টিফিকেটধারী যুব সমাজ তৈরি হচ্ছে, কিন্তু কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে পিছিয়ে যাচ্ছে। বড় বড় মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে যে উন্নয়ন হচ্ছে তাতে পর্যাপ্ত কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে না। স্বজনপ্রীতি, দুর্নীতির কারণে উন্নয়নের সুফল সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছাচ্ছে না। এমনও তথ্য পাওয়া গেছে যে, দলিত শ্রেণির জন্য চাকরির যে কোটা সেখানেও ৮ লাখ টাকা ঘুষ না দিলে চাকরি হয় না। কর্মসংস্থানের বাইরে থাকা এই যুবসমাজ মাদকাসক্ত হচ্ছে, উগ্রবাদে জড়াচ্ছে।
দ্বিতীয়ত, নারী ও কন্যাশিশুদের প্রতি সহিংসতা বেড়েছে। পুরুষতান্ত্রিকতা ও সাইবার সিকিউরিটির অভাবে নারীদের হয়রানি ও নির্যাতনের নতুন ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। আইনের শাসনের ঘাটতির কারণে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে।
তৃতীয় বার্তায় ড. দেবপ্রিয় বলেন, পরিবেশ দূষণ এখন জাতীয় সমস্যায় পরিণত হয়েছে। বন্যা, ভূমিধস, বায়ুদূষণ, পানিতে লবণাক্ততা বেড়েছে।
চতুর্থত, সরকারি সেবা পদ্ধতি বা রাষ্ট্রীয় সেবার মান ও সেবা দান ক্ষমতার কমেছে।
পঞ্চম বার্তায় বহুত্ববাদী সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ কমার কথা বলেছেন এই গবেষক। তিনি বলেন, ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা নানাভাবে হয়রানির শিকার ও নির্যাতিত হচ্ছে। পাহাড়ি ও সমতলের আদিবাসীদের বড় সমস্যা হলো ভূমি সমস্যা তার এখনো সমাধান হয়নি।
ষষ্ঠ বার্তায় তিনি বলেন, সব জায়গায় একটি ভীতির সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে। রাজনৈতিক, সামাজিক, ধর্মীয় সবক্ষেত্রেই এই ভীতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। মানুষ কথা বলেতে ভয় পাচ্ছে।
এ ছাড়া আরও ৫টি খাত বিশেষ করে শিক্ষা খাতে শিক্ষার মান কমা, আর্থিক সংগতির অভাবে মাধ্যমিক পর্যায়ে কন্যাশিশুদের ঝরে পড়া, স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে হাসপাতাল থাকলেও ডাক্তার ও ওষুধ না থাকা, সুপেয় পানি ও স্যানিটেশনের সমস্যা, সামাজিক নিরাপত্তা খাতে মাথাপিছু ও সামগ্রিক বরাদ্দ দুটোই এত কম যে তা দিয়ে মানুষের প্রয়োজন মিটছে না, রাস্তার নিরাপত্তা কম, দুর্ঘটনা বাড়তে থাকায় মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বেড়েছে। প্রবীণদের সংখ্যা বাড়ছে কিন্তু তাদের সুরক্ষা কম। খেলার মাঠের অভাব ও সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলের অভাবে উগ্রবাদের বিস্তার বাড়ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
দলীয় প্রতীকে স্থানীয় নির্বাচন খুবই অন্যায় হয়েছে, এর কারণে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আরও বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন ডক্টর দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
এ সময় সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘উন্নয়ন নৈতিক হতে হবে। পিছিয়ে পড়া এসব প্রান্তিক মানুষের উন্নয়নে যদি আমরা কাজ না করি তাহলে অর্থনৈতিক একটা বড় শক্তিকে আমরা হারিয়ে ফেলব। তাতে আমাদের সামগ্রিক ক্ষতি। এদের উন্নয়ন করা গেলে নতুন চাহিদা ও বাজার তৈরি হবে। অর্থনৈতিক লেনদেনের নতুন ক্ষেত্র তৈরি হবে। এতে সবারই লাভ।’
তিনি আরও বলেন, ‘বৈষম্য দূর করতে রাজনৈতিক ও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও সক্রিয় হতে হবে। মানসম্মত শিক্ষা, দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন, সুশাসন এখন দ্বিতীয় প্রজন্মের চাওয়া। জনগণের কাছে জনপ্রতিনিধিদের জবাবদিহির ঘাটতি রয়েছে, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।’
এই গবেষণায় সিপিডির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান, সিপিডির সহযোগী গবেষক ফাবিয়া বুশরা খান অংশ নেন। সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে ছিল হিকস বাংলাদেশ, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি), ওয়াটার এআইডি বাংলাদেশ, ইউনাইটেড নেশন্স ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম বাংলাদেশ, এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রাম পভার্টি-এনভায়রনমেন্ট অ্যাকশন, বাংলাদেশ ইন্ডিজেনাস পিপলস ফোরাম, ইকো সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন, ঘাসফুল ও কাপেং ফাউন্ডেশন।
গত এক দশকে দেশের মাথাপিছু আয় ও জীবন মান বেড়েছে, দৃশ্যমান উন্নয়ন হয়েছে। কিন্তু এর ভেতরে চোরাবালি আছে। কারণ দেশের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী এখনো পেছনে পড়ে রয়েছে। বৈষম্য বৃদ্ধিতে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণি দুর্বল হয়ে গেছে। নেতিবাচক রাজনৈতিক চর্চার কারণে সব জায়গায় একটি ভীতির সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে। রাজনৈতিক, সামাজিক, ধর্মীয় সবক্ষেত্রেই এই ভীতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিশেষ করে দলীয় প্রতীকে স্থানীয় নির্বাচন রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা আরও তীব্র করে তুলেছে।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর মহাখালীতে ব্র্যাক সেন্টারে এসিডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম, বাংলাদেশের উদ্যোগে ‘জাতীয় উন্নয়ন আখ্যান ও স্থানীয় ভাবনা উপ-আঞ্চলিক পরামর্শ সভার সার-সংক্ষেপ উপস্থাপন’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব পর্যবেক্ষণ তুলে ধরা হয়।
সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। ড. দেবপ্রিয় এসিডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক এবং বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফল পলিসি ডায়ালগের সম্মানীয় ফেলো।
তিনি জানান, মাঠপর্যায়ে এ বছরের জুন থেকে অক্টোবর পর্যন্ত রংপুর, খুলনা, টাঙ্গাইল, সিলেট, ঠাকুরগাঁও, রাঙামাটি ও চট্টগ্রামে পরামর্শ সভায় ৫০০ সক্রিয় নাগরিক সরাসরি আলোচনায় অংশ নেন। তাঁদের মতামতের ভিত্তিতে মূল্যায়ন ও পর্যবেক্ষণটি তৈরি করা হয়েছে।
ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘বৈষম্যের বিষয়টি আরও বেড়েছে। মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণি দুর্বল হয়ে গেছে। তাঁদের পক্ষে কথা বলার লোক কমে যাচ্ছে। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো দুর্বল হয়ে গেছে।’ তবে বাংলাদেশ রুগ্ণ না হলেও এর পুষ্টির অভাব রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
বৈশ্বিক কারণে উন্নয়নের সুষম বণ্টন আরও ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে বলে সতর্ক করেন ড. দেবপ্রিয়। দেশের উন্নয়ন প্রয়োজন তবে উন্নয়নকে কখনো মানবাধিকারের বিকল্প হিসেবে উপস্থাপন করা যাবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আরও বলেন, ‘স্থানীয় মানুষ, আদিবাসী, দরিদ্র মানুষদের প্রতি জাতীয় গণমাধ্যমের আগ্রহ কম। তাঁদের দুঃখ কষ্ট, সমস্যা শহরের গণমাধ্যমে আসে না। গরিব মানুষ হেডলাইনে আসে না। জাতীয় সংবাদমাধ্যমে ধনীদের কথা আসে। কিন্তু এই অনগ্রসর মানুষের কথা কম আসে।’
গত এক দশকের অর্থনীতির সামগ্রিক অবস্থা পর্যালোচনা করলে দেখা যায় জাতীয় আয়, প্রবৃদ্ধি, গড় আয়ু, গড় শিক্ষার হার, রপ্তানি আয় সবই বেড়েছে। তবে এই উন্নয়ের ভিত্তি কতটা মজবুত সেটা আমরা দেখার চেষ্টা করেছি। তৃণমূল পর্যায়ের মানুষ, আদিবাসী মানুষ, হিজড়া বা ট্রান্সজেন্ডার মানুষ, বিশেষ ভৌগোলিক এলাকার মানুষ, কৃষক, মৎস্যজীবীদের কাছে উন্নয়ন ঠিকমতো পৌঁছাচ্ছে না। এসব মানুষদের যাতে আমরা যাতে ভুলে না যাই এবং নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে এবং উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় যাতে তাদের বিষয়টি সক্রিয় বিবেচনায় রাখা হয় সে জন্য এই গবেষণা কার্যক্রম। এই গবেষণার ফলাফল সরকার গ্রহণ করতে পারে। যোগ করেন ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
এই গবেষণা থেকে ছয়টি বার্তা পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ করেন ড. দেবপ্রিয়।
প্রথমত, শোভন কর্ম সংস্থানের ঘাটতি। বিশেষ করে যুব সমাজের কর্মসংস্থানের ঘাটতি রয়েছে এবং দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সার্টিফিকেটধারী যুব সমাজ তৈরি হচ্ছে, কিন্তু কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে পিছিয়ে যাচ্ছে। বড় বড় মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে যে উন্নয়ন হচ্ছে তাতে পর্যাপ্ত কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে না। স্বজনপ্রীতি, দুর্নীতির কারণে উন্নয়নের সুফল সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছাচ্ছে না। এমনও তথ্য পাওয়া গেছে যে, দলিত শ্রেণির জন্য চাকরির যে কোটা সেখানেও ৮ লাখ টাকা ঘুষ না দিলে চাকরি হয় না। কর্মসংস্থানের বাইরে থাকা এই যুবসমাজ মাদকাসক্ত হচ্ছে, উগ্রবাদে জড়াচ্ছে।
দ্বিতীয়ত, নারী ও কন্যাশিশুদের প্রতি সহিংসতা বেড়েছে। পুরুষতান্ত্রিকতা ও সাইবার সিকিউরিটির অভাবে নারীদের হয়রানি ও নির্যাতনের নতুন ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। আইনের শাসনের ঘাটতির কারণে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে।
তৃতীয় বার্তায় ড. দেবপ্রিয় বলেন, পরিবেশ দূষণ এখন জাতীয় সমস্যায় পরিণত হয়েছে। বন্যা, ভূমিধস, বায়ুদূষণ, পানিতে লবণাক্ততা বেড়েছে।
চতুর্থত, সরকারি সেবা পদ্ধতি বা রাষ্ট্রীয় সেবার মান ও সেবা দান ক্ষমতার কমেছে।
পঞ্চম বার্তায় বহুত্ববাদী সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ কমার কথা বলেছেন এই গবেষক। তিনি বলেন, ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা নানাভাবে হয়রানির শিকার ও নির্যাতিত হচ্ছে। পাহাড়ি ও সমতলের আদিবাসীদের বড় সমস্যা হলো ভূমি সমস্যা তার এখনো সমাধান হয়নি।
ষষ্ঠ বার্তায় তিনি বলেন, সব জায়গায় একটি ভীতির সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে। রাজনৈতিক, সামাজিক, ধর্মীয় সবক্ষেত্রেই এই ভীতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। মানুষ কথা বলেতে ভয় পাচ্ছে।
এ ছাড়া আরও ৫টি খাত বিশেষ করে শিক্ষা খাতে শিক্ষার মান কমা, আর্থিক সংগতির অভাবে মাধ্যমিক পর্যায়ে কন্যাশিশুদের ঝরে পড়া, স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে হাসপাতাল থাকলেও ডাক্তার ও ওষুধ না থাকা, সুপেয় পানি ও স্যানিটেশনের সমস্যা, সামাজিক নিরাপত্তা খাতে মাথাপিছু ও সামগ্রিক বরাদ্দ দুটোই এত কম যে তা দিয়ে মানুষের প্রয়োজন মিটছে না, রাস্তার নিরাপত্তা কম, দুর্ঘটনা বাড়তে থাকায় মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বেড়েছে। প্রবীণদের সংখ্যা বাড়ছে কিন্তু তাদের সুরক্ষা কম। খেলার মাঠের অভাব ও সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলের অভাবে উগ্রবাদের বিস্তার বাড়ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
দলীয় প্রতীকে স্থানীয় নির্বাচন খুবই অন্যায় হয়েছে, এর কারণে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আরও বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন ডক্টর দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
এ সময় সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘উন্নয়ন নৈতিক হতে হবে। পিছিয়ে পড়া এসব প্রান্তিক মানুষের উন্নয়নে যদি আমরা কাজ না করি তাহলে অর্থনৈতিক একটা বড় শক্তিকে আমরা হারিয়ে ফেলব। তাতে আমাদের সামগ্রিক ক্ষতি। এদের উন্নয়ন করা গেলে নতুন চাহিদা ও বাজার তৈরি হবে। অর্থনৈতিক লেনদেনের নতুন ক্ষেত্র তৈরি হবে। এতে সবারই লাভ।’
তিনি আরও বলেন, ‘বৈষম্য দূর করতে রাজনৈতিক ও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও সক্রিয় হতে হবে। মানসম্মত শিক্ষা, দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন, সুশাসন এখন দ্বিতীয় প্রজন্মের চাওয়া। জনগণের কাছে জনপ্রতিনিধিদের জবাবদিহির ঘাটতি রয়েছে, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।’
এই গবেষণায় সিপিডির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান, সিপিডির সহযোগী গবেষক ফাবিয়া বুশরা খান অংশ নেন। সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে ছিল হিকস বাংলাদেশ, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি), ওয়াটার এআইডি বাংলাদেশ, ইউনাইটেড নেশন্স ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম বাংলাদেশ, এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রাম পভার্টি-এনভায়রনমেন্ট অ্যাকশন, বাংলাদেশ ইন্ডিজেনাস পিপলস ফোরাম, ইকো সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন, ঘাসফুল ও কাপেং ফাউন্ডেশন।
নবীন উদ্যোক্তাদের সংগ্রাম ও সাফল্যের গল্প শুনতে তাঁদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ শনিবার (১৮ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এ বৈঠকের আয়োজন করা হয়। এতে ১৫ জন উদ্যোক্তা অংশ নেন, যাঁরা সামাজিক ব্যবসার মাধ্যমে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার পথে এগিয়ে চলেছেন।
৩ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস. এম. কামরুল হাসান ও পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা সচিব লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মুহাম্মদ আলী রাওয়ালপিন্ডিতে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় প্রতিরক্ষা সহযোগিতা সম্প্রসারণের ওপর জোর দেওয়া হয়।
৫ ঘণ্টা আগেপ্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের পরিচালক এ কে এম মনিরুজ্জামানকে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব পদে বদলি করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে পদ–পদবি ব্যবহার করে প্রভাব খাটানোর অভিযোগ রয়েছে।
৭ ঘণ্টা আগে২০২৪ সালে বাংলাদেশে ৩১০ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে। তাদের মাঝে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীও রয়েছেন। এর মধ্যে ৬৫ শতাংশের বেশি কৈশোর বয়সী।
৯ ঘণ্টা আগে