প্রাথমিকে শিক্ষক প্রশিক্ষণ: ১৮ মাসের কোর্স ১০ মাসে সম্পন্ন হবে যেভাবে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ২০ জানুয়ারি ২০২৩, ১৯: ২১
আপডেট : ২০ জানুয়ারি ২০২৩, ১৯: ৪৫

দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মৌলিক প্রশিক্ষণ কোর্সকে পাঁচ ভাগে ভাগ করা হয়েছে। কোর্সটির মেয়াদ হবে ১০ মাস। এর মধ্যে প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে (পিটিআই) ৬ মাসের সরাসরি প্রশিক্ষণ এবং বিদ্যালয়ে ৪ মাসের প্র্যাকটিস টিচিং প্রোগ্রাম রয়েছে। এর আগে এ কোর্সটির মেয়াদ ছিল ১৮ মাস। সম্প্রতি সরকার এ কোর্সের মেয়াদ ১০ মাস নির্ধারণ করে। একই সঙ্গে কোর্সটির নাম পরিবর্তন করে ‘প্রাথমিক শিক্ষক মৌলিক প্রশিক্ষণ’ করা হয়। 

প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ শিক্ষাক্রম স্টিয়ারিং কমিটির সভার কার্যবিবরণী থেকে এসব তথ্য জানা যায়। গত ১৯ ডিসেম্বর কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশিক্ষণ) ড. উত্তম কুমার দাশ এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। 

উত্তম কুমার বলেন, নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ কোর্সের মেয়াদ হবে ১০ মাস। এ সময়কে মোট পাঁচ ভাগে বিভক্ত করে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। 

জানা যায়, শিক্ষক প্রশিক্ষণের মেয়াদকালকে মোট পাঁচ ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম ৪ মাস প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে (পিটিআই) সরাসরি প্রশিক্ষণ, পরবর্তী ২ মাস ইনস্ট্রাক্টরের তত্ত্বাবধানে বিদ্যালয়ে অর্জিত জ্ঞান-দক্ষতার অনুশীলন, এর পরের এক মাস পিটিআই এ অনুশীলন শেষে প্রশিক্ষণ ফিডব্যাক ও মুখোমুখি প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হবে। এর পরের ২ মাস উপজেলা/জেলা/থানা শিক্ষা অফিসারের তত্ত্বাবধানে বিদ্যালয়ে অনুশীলন করতে হবে। এর শেষে এক মাস পিটিআইতে অনুশীলনের ফিডব্যাক ও প্রশিক্ষণ শেষে চূড়ান্ত সনদ দেওয়া হবে। 

স্বাধীনতার আগে থেকেই দেশে প্রাথমিক শিক্ষকদের জন্য এক বছর মেয়াদি সার্টিফিকেট-ইন-এডুকেশন (সিইনএড) চালু ছিল। ২০১০ সালের শিক্ষানীতি অনুযায়ী সিইনএডকে আরও যুগোপযোগী করে ১৮ মাস মেয়াদি ডিপ্লোমা ইন প্রাইমারি এডুকেশন (ডিপিএড) কোর্সের প্রবর্তন করা হয়। 

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বরাদ্দ টাকা যাতে ফেরত চলে না যায় সে জন্য বিশ্বব্যাংক, জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) ও ইউনিসেফের পরামর্শে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ১৮ মাস মেয়াদি ডিপিএড প্রশিক্ষণের মেয়াদ কমানো হয়েছে। একই সঙ্গে কোর্সটির নামও পরিবর্তন করা হয়েছে। 

প্রশিক্ষণের সময় কমায় কোর্সের মান নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. এস এম হাফিজুর রহমান। 

হাফিজুর রহমান বলেন, ‘প্রশিক্ষণের সময় কমায় এর একটি ইমপ্যাক্ট পড়বে। অনেকেই বলছে এই কোর্স মানসম্মত নয়, কিন্তু সময় কমালে মান বাড়বে কীভাবে? একটি গবেষণায় দেখা গেছে এই কোর্সটিকে মানসম্মত করতে এর সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে হবে। কিন্তু তা না করে সময় কমালে এর মান আরও খারাপও হওয়ার শঙ্কা থেকে যায়।’ 

বর্তমানে সারা দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে ৬৫ হাজার ৬২০টি। এসব বিদ্যালয়ে শিক্ষক আছেন ৩ লাখ ৫৯ হাজার ৯৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ শিক্ষক ১ লাখ ২৬ হাজার ৪৩০ এবং নারী শিক্ষক ২ লাখ ২৯ হাজার ৯৩৬ জন। আর শিক্ষার্থী সংখ্যা ১ কোটি ৪১ লাখ ৪৪৫ জন।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত