অধ্যাপক ডা. মো. শাহ আলম
বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়নের চিত্র মোট দেশজ প্রবৃদ্ধি (জিডিপি) ও মাথাপিছু আয়ের মতো সামষ্টিক অর্থনৈতিক সূচকে দৃশ্যমান। তবে দেশের স্বাস্থ্য ও চিকিৎসাব্যবস্থায় সর্বক্ষেত্রে তার সমান প্রভাব দেখা যায় না। সংক্রামক রোগের প্রাদুর্ভাব হ্রাসে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখালেও অসংক্রামক রোগে মৃত্যুর হার ভয়াবহ আকারে বাড়ছে। বিশেষ করে হৃদ্রোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও ক্যানসারের মতো প্রাণঘাতী রোগে আক্রান্ত হচ্ছে কোটি মানুষ।
বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের ক্ষতি মোকাবিলা করেও বিগত অর্থবছরে উল্লেখযোগ্য হারে প্রবৃদ্ধি অর্জনে বাংলাদেশ সারা বিশ্বে প্রশংসিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ অর্থনীতির সব খাতে এগিয়ে যাচ্ছে এবং বিশ্বে রোল মডেল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
জনগণ উন্নয়নের সুফল ভোগ করছে। তবে কার্যকর উদ্যোগের অভাবে তাদের স্বাস্থ্যসুরক্ষা পড়ছে মারাত্মক হুমকির মুখে। এই স্বাস্থ্যঝুঁকির অন্যতম কারণ, তামাক ও তামাকজাত পণ্যের যথেচ্ছ ব্যবহার। বিশ্বে সর্বোচ্চ তামাক ব্যবহারকারী দেশগুলোর তালিকায় বাংলাদেশ আছে প্রথম ১০টির মধ্যে। তামাক ব্যবহারে জনগণ অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত হচ্ছে এবং এর ফলে তাদের চিকিৎসা বাবদ বিপুল পরিমাণ অর্থ সরকারকে ব্যয় করতে হচ্ছে। নাগরিকদের নিজেদের পকেট থেকেও টাকা খরচ হচ্ছে। ফলে তামাক ব্যবহারের ব্যাপকতার কারণে বাংলাদেশ বিপুল অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়েছে।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশে তামাক ব্যবহারের হার সবচেয়ে বেশি (৩৫.৩%, গ্যাটস, ২০১৭)। তামাক ব্যবহারজনিত রোগে বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে তামাক ব্যবহারের অর্থনৈতিক ক্ষতির (চিকিৎসা ব্যয় এবং উৎপাদনশীলতা হারানো) পরিমাণ ছিল ৩০ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা।
তামাক ব্যবহার নিরুৎসাহিত করার জন্য কর বৃদ্ধির মাধ্যমে তামাক পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি আন্তর্জাতিকভাবে অনুসৃত পদ্ধতি। কিন্তু বাংলাদেশে তামাকের যে করহার আছে, তা তামাক ব্যবহার কমাতে ভূমিকা রাখতে পারছে না। কার্যকর করারোপের অভাবে দেশে তামাকপণ্য অত্যন্ত সস্তা ও সহজলভ্য হয়ে যাচ্ছে। সিগারেটের চারটি স্তর থাকার ফলে সিগারেট ব্যবহারকারী সিগারেট ছেড়ে দেওয়ার পরিবর্তে তুলনামূলকভাবে কম দামি সিগারেট বেছে নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে।
বাংলাদেশে তামাকের ভয়াবহতা উপলব্ধি করে ২০১৬ সালে ঢাকায় এসডিজি অর্জন নিয়ে সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে তামাকের ব্যবহার সম্পূর্ণ নির্মূল করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। এই ঈপ্সিত লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য তিনি যে বিষয়গুলোর ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন, সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো বর্তমান তামাকের করকাঠামো সহজ করা, যার উদ্দেশ্য হবে দেশে তামাকজাত পণ্যের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস ও সরকারের শুল্ক আয় বৃদ্ধি করা।
এই অবস্থায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে এবং তামাকের নেতিবাচক প্রভাব থেকে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার নিমিত্ত আসন্ন ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে তামাকবিরোধী সংগঠনসমূহ, অর্থনীতিবিদ, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এবং সুশীল সমাজের পক্ষ থেকে তামাক-কর ও মূল্যবৃদ্ধির জন্য সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব করা হয়।
১। সকল সিগারেটের ব্র্যান্ডে অভিন্ন করভারসহ (সম্পূরক শুল্ক চূড়ান্ত খুচরা মূল্যের ৬৫%) মূল্যস্তরভিত্তিক সুনির্দিষ্ট এক্সাইজ (সম্পূরক) শুল্ক প্রচলন করা অর্থাৎ, নিম্ন স্তরে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা মূল্য ৫৫ টাকা নির্ধারণ করে ৩৫.৭৫ টাকা সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক আরোপ; মধ্যম স্তরে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা মূল্য ৭০ টাকা নির্ধারণ করে ৪৫.৫০ টাকা সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক আরোপ; উচ্চ স্তরে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা মূল্য ১২০ টাকা নির্ধারণ করে ৭৮ টাকা সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক আরোপ; এবং প্রিমিয়াম স্তরে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা মূল্য ১৫০ টাকা নির্ধারণ করে ৯৭.৫০ টাকা সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা।
২। ফিল্টারযুক্ত ও ফিল্টারবিহীন বিড়িতে অভিন্ন করভারসহ (সম্পূরক শুল্ক চূড়ান্ত খুচরা মূল্যের ৪৫%) সুনির্দিষ্ট এক্সাইজ (সম্পূরক) শুল্ক প্রচলন করা অর্থাৎ, ফিল্টারবিহীন ২৫ শলাকা বিড়ির খুচরা মূল্য ২৫ টাকা নির্ধারণ করে ১১.২৫ টাকা সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক আরোপ; এবং ফিল্টারযুক্ত ২০ শলাকা বিড়ির খুচরা মূল্য ২০ টাকা নির্ধারণ করে ৯.০০ টাকা সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা।
৩। জর্দা ও গুলের কর ও দামবৃদ্ধিসহ সুনির্দিষ্ট এক্সাইজ শুল্ক (সম্পূরক শুল্ক চূড়ান্ত খুচরা মূল্যের ৬০%) প্রচলন করা অর্থাৎ, প্রতি ১০ গ্রাম জর্দার খুচরা মূল্য ৪৫ টাকা নির্ধারণ করে ২৭.০০ টাকা সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক আরোপ; এবং প্রতি ১০ গ্রাম গুলের খুচরা মূল্য ২৫ টাকা নির্ধারণ করে ১৫.০০ টাকা সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে তামাকপণ্যে করারোপে উল্লিখিত প্রস্তাবসমূহ বাস্তবায়ন করা হলে কেবল সিগারেট খাত থেকেই প্রায় ৪২ হাজার ৩০০ কোটি টাকা রাজস্ব আয় হবে, যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ৩০ শতাংশ বেশি। এ ছাড়া প্রায় ১৪ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ ধূমপান থেকে বিরত থাকতে উৎসাহিত হবে, ১০ লাখ তরুণ ধূমপান শুরু করতে নিরুৎসাহিত হবে, এবং দীর্ঘ মেয়াদে প্রায় ১০ লাখ জনগোষ্ঠীর তামাক ব্যবহারজনিত অকালমৃত্যু রোধ করা সম্ভব হবে। এটি সুস্পষ্টভাবে সরকার ও জনগণ—উভয়ের জন্যই লাভজনক। সর্বোপরি, এটি ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
তামাক পণ্যে কার্যকর করারোপ এখন সময়ের দাবি এবং এগুলোর কর ও মূল্যবৃদ্ধির সমর্থনে রয়েছে যথেষ্ট গবেষণালব্ধ তথ্য ও প্রমাণ। এগুলো বাস্তবায়ন করা গেলে উপকৃত হবে সব শ্রেণির মানুষ। তাই এ লক্ষ্যে সব অংশীজনের সম্মিলিত প্রচেষ্টাই এই মুহূর্তে সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ।
লেখক: বিভাগীয় প্রধান, অর্থোপেডিকস, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়নের চিত্র মোট দেশজ প্রবৃদ্ধি (জিডিপি) ও মাথাপিছু আয়ের মতো সামষ্টিক অর্থনৈতিক সূচকে দৃশ্যমান। তবে দেশের স্বাস্থ্য ও চিকিৎসাব্যবস্থায় সর্বক্ষেত্রে তার সমান প্রভাব দেখা যায় না। সংক্রামক রোগের প্রাদুর্ভাব হ্রাসে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখালেও অসংক্রামক রোগে মৃত্যুর হার ভয়াবহ আকারে বাড়ছে। বিশেষ করে হৃদ্রোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও ক্যানসারের মতো প্রাণঘাতী রোগে আক্রান্ত হচ্ছে কোটি মানুষ।
বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের ক্ষতি মোকাবিলা করেও বিগত অর্থবছরে উল্লেখযোগ্য হারে প্রবৃদ্ধি অর্জনে বাংলাদেশ সারা বিশ্বে প্রশংসিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ অর্থনীতির সব খাতে এগিয়ে যাচ্ছে এবং বিশ্বে রোল মডেল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
জনগণ উন্নয়নের সুফল ভোগ করছে। তবে কার্যকর উদ্যোগের অভাবে তাদের স্বাস্থ্যসুরক্ষা পড়ছে মারাত্মক হুমকির মুখে। এই স্বাস্থ্যঝুঁকির অন্যতম কারণ, তামাক ও তামাকজাত পণ্যের যথেচ্ছ ব্যবহার। বিশ্বে সর্বোচ্চ তামাক ব্যবহারকারী দেশগুলোর তালিকায় বাংলাদেশ আছে প্রথম ১০টির মধ্যে। তামাক ব্যবহারে জনগণ অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত হচ্ছে এবং এর ফলে তাদের চিকিৎসা বাবদ বিপুল পরিমাণ অর্থ সরকারকে ব্যয় করতে হচ্ছে। নাগরিকদের নিজেদের পকেট থেকেও টাকা খরচ হচ্ছে। ফলে তামাক ব্যবহারের ব্যাপকতার কারণে বাংলাদেশ বিপুল অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়েছে।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশে তামাক ব্যবহারের হার সবচেয়ে বেশি (৩৫.৩%, গ্যাটস, ২০১৭)। তামাক ব্যবহারজনিত রোগে বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে তামাক ব্যবহারের অর্থনৈতিক ক্ষতির (চিকিৎসা ব্যয় এবং উৎপাদনশীলতা হারানো) পরিমাণ ছিল ৩০ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা।
তামাক ব্যবহার নিরুৎসাহিত করার জন্য কর বৃদ্ধির মাধ্যমে তামাক পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি আন্তর্জাতিকভাবে অনুসৃত পদ্ধতি। কিন্তু বাংলাদেশে তামাকের যে করহার আছে, তা তামাক ব্যবহার কমাতে ভূমিকা রাখতে পারছে না। কার্যকর করারোপের অভাবে দেশে তামাকপণ্য অত্যন্ত সস্তা ও সহজলভ্য হয়ে যাচ্ছে। সিগারেটের চারটি স্তর থাকার ফলে সিগারেট ব্যবহারকারী সিগারেট ছেড়ে দেওয়ার পরিবর্তে তুলনামূলকভাবে কম দামি সিগারেট বেছে নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে।
বাংলাদেশে তামাকের ভয়াবহতা উপলব্ধি করে ২০১৬ সালে ঢাকায় এসডিজি অর্জন নিয়ে সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে তামাকের ব্যবহার সম্পূর্ণ নির্মূল করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। এই ঈপ্সিত লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য তিনি যে বিষয়গুলোর ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন, সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো বর্তমান তামাকের করকাঠামো সহজ করা, যার উদ্দেশ্য হবে দেশে তামাকজাত পণ্যের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস ও সরকারের শুল্ক আয় বৃদ্ধি করা।
এই অবস্থায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে এবং তামাকের নেতিবাচক প্রভাব থেকে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার নিমিত্ত আসন্ন ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে তামাকবিরোধী সংগঠনসমূহ, অর্থনীতিবিদ, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এবং সুশীল সমাজের পক্ষ থেকে তামাক-কর ও মূল্যবৃদ্ধির জন্য সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব করা হয়।
১। সকল সিগারেটের ব্র্যান্ডে অভিন্ন করভারসহ (সম্পূরক শুল্ক চূড়ান্ত খুচরা মূল্যের ৬৫%) মূল্যস্তরভিত্তিক সুনির্দিষ্ট এক্সাইজ (সম্পূরক) শুল্ক প্রচলন করা অর্থাৎ, নিম্ন স্তরে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা মূল্য ৫৫ টাকা নির্ধারণ করে ৩৫.৭৫ টাকা সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক আরোপ; মধ্যম স্তরে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা মূল্য ৭০ টাকা নির্ধারণ করে ৪৫.৫০ টাকা সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক আরোপ; উচ্চ স্তরে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা মূল্য ১২০ টাকা নির্ধারণ করে ৭৮ টাকা সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক আরোপ; এবং প্রিমিয়াম স্তরে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা মূল্য ১৫০ টাকা নির্ধারণ করে ৯৭.৫০ টাকা সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা।
২। ফিল্টারযুক্ত ও ফিল্টারবিহীন বিড়িতে অভিন্ন করভারসহ (সম্পূরক শুল্ক চূড়ান্ত খুচরা মূল্যের ৪৫%) সুনির্দিষ্ট এক্সাইজ (সম্পূরক) শুল্ক প্রচলন করা অর্থাৎ, ফিল্টারবিহীন ২৫ শলাকা বিড়ির খুচরা মূল্য ২৫ টাকা নির্ধারণ করে ১১.২৫ টাকা সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক আরোপ; এবং ফিল্টারযুক্ত ২০ শলাকা বিড়ির খুচরা মূল্য ২০ টাকা নির্ধারণ করে ৯.০০ টাকা সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা।
৩। জর্দা ও গুলের কর ও দামবৃদ্ধিসহ সুনির্দিষ্ট এক্সাইজ শুল্ক (সম্পূরক শুল্ক চূড়ান্ত খুচরা মূল্যের ৬০%) প্রচলন করা অর্থাৎ, প্রতি ১০ গ্রাম জর্দার খুচরা মূল্য ৪৫ টাকা নির্ধারণ করে ২৭.০০ টাকা সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক আরোপ; এবং প্রতি ১০ গ্রাম গুলের খুচরা মূল্য ২৫ টাকা নির্ধারণ করে ১৫.০০ টাকা সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে তামাকপণ্যে করারোপে উল্লিখিত প্রস্তাবসমূহ বাস্তবায়ন করা হলে কেবল সিগারেট খাত থেকেই প্রায় ৪২ হাজার ৩০০ কোটি টাকা রাজস্ব আয় হবে, যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ৩০ শতাংশ বেশি। এ ছাড়া প্রায় ১৪ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ ধূমপান থেকে বিরত থাকতে উৎসাহিত হবে, ১০ লাখ তরুণ ধূমপান শুরু করতে নিরুৎসাহিত হবে, এবং দীর্ঘ মেয়াদে প্রায় ১০ লাখ জনগোষ্ঠীর তামাক ব্যবহারজনিত অকালমৃত্যু রোধ করা সম্ভব হবে। এটি সুস্পষ্টভাবে সরকার ও জনগণ—উভয়ের জন্যই লাভজনক। সর্বোপরি, এটি ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
তামাক পণ্যে কার্যকর করারোপ এখন সময়ের দাবি এবং এগুলোর কর ও মূল্যবৃদ্ধির সমর্থনে রয়েছে যথেষ্ট গবেষণালব্ধ তথ্য ও প্রমাণ। এগুলো বাস্তবায়ন করা গেলে উপকৃত হবে সব শ্রেণির মানুষ। তাই এ লক্ষ্যে সব অংশীজনের সম্মিলিত প্রচেষ্টাই এই মুহূর্তে সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ।
লেখক: বিভাগীয় প্রধান, অর্থোপেডিকস, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
মাঝে মাঝে মনে হয় দেশটা বুঝি ট্রায়াল অ্যান্ড এররের ভিত্তিতে চলছে। রাজনীতি, অর্থনীতি, সংস্কৃতি, এমনকি আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়েও নানা ধরনের পরীক্ষামূলক তত্ত্ব দেখতে পাচ্ছি। প্রথমে নতুন কিছু একটা বলা হয় বা চালু করা হয়। তারপর দেখা হয়—কতটা বিতর্ক হয় সেটা নিয়ে।
১ ঘণ্টা আগেসম্প্রতি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীকে দেওয়া ও অস্থায়ী আবাসনসহ বিভিন্ন দাবিতে শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলনের ফলে কর্তৃপক্ষ আন্দোলনের দাবি মেনে নিয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, কর্তৃপক্ষ দাবি মেনে নেওয়ার পরও প্রত্যাশিত দাবির বাস্তবায়ন না দেখে আবারও...
১ ঘণ্টা আগেআকৃষ্ট করেছিল, সে বাণী যেন কথার কথায় পরিণত হওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে। ভালো একটি ভবিষ্যতের আশা ক্রমেই ধূসরতার দিকে যাচ্ছে। শীর্ষ সন্ত্রাসীরা রাজধানীর নিউ এলিফ্যান্ট রোড ও নিউমার্কেট এলাকার মধ্যে থাকা ৫৭টি মার্কেটের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে। এই মার্কেটগুলো থেকে প্রতি মাসে সেবা খাত...
২ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশ যখন সম্পর্ক উন্নয়নে আগ্রহী তখন যুক্তরাষ্ট্র যদি বাংলাদেশে তার ভূমিকা কার্যত পরিত্যাগ করে সে ক্ষেত্রে ঢাকা চীনের গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত অংশীদার হয়ে উঠতে পারে এবং তাহলে বেইজিং নিশ্চিতভাবেই বাংলাদেশকে আরও বেশি অর্থায়ন ও ঋণ দেবে।
১৩ ঘণ্টা আগে