ড. আমিরা আবো এল-ফেতুহ
জনমত জরিপগুলো তাদের ইচ্ছাকৃত এবং ভুল ভবিষ্যদ্বাণী দিয়ে পুরো বিশ্বকে বিভ্রান্ত করেছে। তারা বলেছিল, হোয়াইট হাউসে যাওয়ার দৌড়ে কমলা হ্যারিস তাঁর প্রতিপক্ষ ডোনাল্ড ট্রাম্পের চেয়ে এগিয়ে আছেন। নির্বাচনের ফল হয়েছে তার উল্টো। ট্রাম্প জিতেছেন এবং মার্কিন কংগ্রেসের উভয় কক্ষ প্রতিনিধি পরিষদ ও সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন জিতেছেন রিপাবলিকানরা। ডেমোক্রেটিক পার্টি কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। ট্রাম্প এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিরঙ্কুশ প্রেসিডেন্ট হয়ে উঠেছেন, কংগ্রেসের উভয় কক্ষ তাঁর বর্ণবাদী, ফ্যাসিবাদী সিদ্ধান্তের সমর্থক হয়ে উঠেছে। তাঁর ধ্বংসাত্মক প্রকল্প, ‘শতাব্দীর চুক্তি’র প্রথম শিকার হবে আমাদের আরব অঞ্চল।
ট্রাম্প বা কমলা হ্যারিস—যে-ই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হোন না কেন, আরবের জনগণ তাঁদের কাছ থেকে ভালো কোনো কিছু আশা করেনি। কারণ, তাঁরা উভয়েই ইহুদিবাদী শত্রুকে সমর্থন করেন। প্রথমজন ইহুদিবাদী সত্তাকে ভালোবাসেন এবং পরেরজন এর বন্দনা করেন। তাঁরা দুজনেই এটির পূজা করেন। এ কারণে এই প্রথমবারের মতো আরবরা মার্কিন নির্বাচনকে পাত্তা দেয়নি। তারা নির্বাচনের প্রার্থীদের সম্পর্কে উৎসাহী ছিল না। টেলিভিশনে ফলাফল দেখতেও যায়নি, যেমনটি তারা সাধারণত করে থাকে। তারা এমনও বলেছে, আমরা একটি পাথর এবং একটি কঠিন জায়গার মধ্যে আছি। কারণ ট্রাম্প বা হ্যারিস কেউই ফিলিস্তিনিদের প্রতি ন্যায়বিচার করবেন না। তাদের অধিকার দেবেন না। কারণ, তাঁরা জায়নবাদী সত্তাকে রক্ষা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এমনকি পুরো ফিলিস্তিনির রক্তের বিনিময়ে হলেও। তাঁরাই জাতির হৃদয়ে এই ক্যানসার সৃষ্টিকারী সত্তাকে এই অঞ্চলে তাঁদের প্রতিনিধি হওয়ার জন্য তৈরি করেছে এবং এটি তাঁদের প্রকল্প, যা তাঁরা কখনোই ত্যাগ করবেন না, তাতে যা-ই হোক না কেন।
একই সময়ে, আমাদের অঞ্চলে সংঘাতের ব্যাপারে ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়া এবং তাঁর অবস্থানের প্রকৃতি সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী করা কঠিন। যা-ই হোক, এখানে সবচেয়ে সুস্পষ্ট বিষয় হলো জায়নবাদী সত্তা এবং যুক্তরাষ্ট্রের সব যুক্তিবাদী লোকজন তাঁর বিজয়ের বিরুদ্ধে ছিলেন। নিউইয়র্কের ইহুদি জনগোষ্ঠীও ট্রাম্পকে ভোট দেয়নি, তার পরিবর্তে তারা কমলা হ্যারিসকে ভোট দিয়েছে। তারা বিশ্বাস করে যে তাঁর নীতিগুলো ইহুদিবাদী সত্তার ভবিষ্যৎকে সুরক্ষিত করবে না ‘শতাব্দীর চুক্তি’র প্রমাণ। এমনকি যদি এটি সংশোধনও করা হয়, যেমনটি তারা দাবি করে, এটির পরিণতি আগের মতোই হবে।
যদিও জনগণ ট্রাম্প বা হ্যারিসের বিষয়ে আগ্রহী না, তবে ইহুদিবাদী আরব শাসকেরা ট্রাম্পকে জয়ী করার জন্য প্রাণপাত করেছেন এবং তাঁর হোয়াইট হাউসে আসার জন্য অধৈর্য হয়ে অপেক্ষা করছেন। ট্রাম্প শুধু এসব স্বৈরশাসকের বন্ধুই নন, তিনি তাঁদের ত্রাণকর্তা। জনগণের ঘৃণার পাত্র এই স্বৈরাচারী শাসকদের দেশের মানুষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সমর্থন দেন। আমরা এখনো সেই ঘটনার কথা স্মরণ করি, যখন তিনি মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসিকে স্বাগত জানিয়েছিলেন এবং তাঁকে তাঁর ‘প্রিয় একনায়ক’ বলে অভিহিত করেছিলেন।
আমি আসলে এটা গুনতে ভুলেই গেছি যে ট্রাম্প রাশিয়ার ভ্লাদিমির পুতিন, চীনের সি চিন পিং এবং উত্তর কোরিয়ার কিম জং-উনের মতো অত্যাচারীদের কতবার প্রশংসা করেছেন। যেহেতু তিনি তাঁদের মতোই একজন স্বৈরশাসক ও অত্যাচারী, তাই সাংবাদিকদের হত্যা করতে, নির্দিষ্ট টেলিভিশন চ্যানেল বন্ধ করার হুমকি দেওয়ার বিষয়ে আপত্তি করেন না। সেই সঙ্গে ২০২০ সালের নির্বাচনে তিনি জয়ী হননি বলে যেসব প্রশাসন, নিরাপত্তা ও বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন। যাঁরা তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের করা অনেক দুর্নীতির মামলায় তদন্ত করেছিলেন, তাঁদেরও ছাড় না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। অথচ এসব মামলায় এখন পর্যন্ত ৩৪টি ফৌজদারি অভিযোগে তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। এমনকি এমন দাবিও রয়েছে যে ট্রাম্পের ইচ্ছা ছিল অ্যাডলফ হিটলারের মতো অনুগত ও সেবায় নিবেদিত উপদেষ্টা থাকবে তাঁর। আর যেহেতু তিনি একজন বর্ণবাদী, তাই তিনি রক্ষণশীল এবং ধর্মীয় খ্রিষ্টানদের নির্বাচনে যেতে এবং তাঁকে ভোট দেওয়ার চেষ্টা করার জন্য অনুরোধ করেছিলেন, কারণ তারা শতাব্দী ধরে নিপীড়নের শিকার হয়েছে।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশের আদর্শগত গডফাদার রবার্ট কাগান ২০২৩ সালের নভেম্বরে একটি নিবন্ধে লিখেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্পের নেতৃত্বে একনায়কত্বের পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। তিনি জনসাধারণের রাজনৈতিক বিরক্তির প্রতি ইঙ্গিত করেছেন এবং বলেছেন যে ট্রাম্প এই পরিস্থিতির একমাত্র সুবিধাভোগী হিসেবে উদ্ভূত হচ্ছেন, সেই সঙ্গে জনগণের কাছে সমাধান হিসেবে তাঁর উপস্থিতি প্রাধান্য পাচ্ছে।
তাহলে সমাধান কী? ট্রাম্পের রাজনৈতিক অবস্থানের আলোকে, তাঁর উপস্থিতি অনেকের কাছে আশ্বাসের প্রতীক হয়ে দেখা দিচ্ছে। তিনি নিজেকে শক্তিশালী, ধনী এবং মহান আমেরিকার পুনরুদ্ধারের প্রতিজ্ঞা করেছেন, যা নাগরিকদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করবে।
কাগান ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনে জয়ী হলে, তিনি অবিলম্বে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে অতুলনীয় ক্ষমতা অর্জন করবেন। এটি ট্রাম্পের প্রশাসনের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে গুরুতর হবে, যেখানে তিনি আগের প্রেসিডেন্টদের তুলনায় কম সীমাবদ্ধতার মধ্যে কাজ করবেন।
কী সেই ক্ষমতাগুলোকে সীমাবদ্ধ করে? কাগান নিজেই এর উত্তর দিয়েছেন, ন্যায়বিচারের প্রতিষ্ঠানগুলো, যেমন আদালতব্যবস্থা এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থা—মূলত ক্ষমতাধর ব্যক্তিদের ক্ষমতা সীমাবদ্ধ করতে পারে। তবে, যখন একজন ব্যক্তি প্রেসিডেন্ট পদে অধিষ্ঠিত হন এবং নিজেই বিচার বিভাগের কর্মকর্তাদের নিয়োগ করেন, তখন তাঁদের (প্রেসিডেন্টকে) নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা কমে যায়।
যা-ই হোক, আমি অবশ্যই কাগানের সঙ্গে একমত নই। যুক্তরাষ্ট্র তার আগের গৌরব ফিরে পাবে না এবং এটি আবার ভালো কিছু হবে না, যেমনটি ট্রাম্পের স্লোগানে দাবি করা হয়েছে। আমেরিকা আর বিশ্বের একমাত্র মেরু হিসেবে থাকবে না। সময়ের হাত ফেরানো হবে না, কারণ বহুমুখিতা একটি প্রতিষ্ঠিত সত্য হয়ে উঠেছে। পশ্চিমা জোটকে নাড়া দিয়ে তিনি এর প্রভাবের পতন বাড়াবেন—এমন সম্ভাবনা বেশি।
হয়তো ট্রাম্পের উন্মাদনা ও দুঃসাহসিকতার জন্য নির্বাচনের বিজয় যুক্তরাষ্ট্রের পতনের আশঙ্কাকে বাড়িয়ে তুলবে এবং ক্ষমতায় তাঁর উপস্থিতি ইহুদিবাদী সত্তার স্বার্থে কাজ করবে না। যদিও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এমন বিভ্রমে ভোগেন যে তাঁর নিরঙ্কুশ বিজয় হবে। আর এ অঞ্চলে তাঁর আধিপত্যের কারণে নতুন এক মধ্যপ্রাচ্য গড়ে উঠবে।
(মিডল ইস্ট মনিটরে প্রকাশিত লেখাটি ইংরেজি থেকে অনূদিত)
লেখক: চিকিৎসক ও রাজনৈতিক ভাষ্যকার
জনমত জরিপগুলো তাদের ইচ্ছাকৃত এবং ভুল ভবিষ্যদ্বাণী দিয়ে পুরো বিশ্বকে বিভ্রান্ত করেছে। তারা বলেছিল, হোয়াইট হাউসে যাওয়ার দৌড়ে কমলা হ্যারিস তাঁর প্রতিপক্ষ ডোনাল্ড ট্রাম্পের চেয়ে এগিয়ে আছেন। নির্বাচনের ফল হয়েছে তার উল্টো। ট্রাম্প জিতেছেন এবং মার্কিন কংগ্রেসের উভয় কক্ষ প্রতিনিধি পরিষদ ও সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন জিতেছেন রিপাবলিকানরা। ডেমোক্রেটিক পার্টি কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। ট্রাম্প এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিরঙ্কুশ প্রেসিডেন্ট হয়ে উঠেছেন, কংগ্রেসের উভয় কক্ষ তাঁর বর্ণবাদী, ফ্যাসিবাদী সিদ্ধান্তের সমর্থক হয়ে উঠেছে। তাঁর ধ্বংসাত্মক প্রকল্প, ‘শতাব্দীর চুক্তি’র প্রথম শিকার হবে আমাদের আরব অঞ্চল।
ট্রাম্প বা কমলা হ্যারিস—যে-ই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হোন না কেন, আরবের জনগণ তাঁদের কাছ থেকে ভালো কোনো কিছু আশা করেনি। কারণ, তাঁরা উভয়েই ইহুদিবাদী শত্রুকে সমর্থন করেন। প্রথমজন ইহুদিবাদী সত্তাকে ভালোবাসেন এবং পরেরজন এর বন্দনা করেন। তাঁরা দুজনেই এটির পূজা করেন। এ কারণে এই প্রথমবারের মতো আরবরা মার্কিন নির্বাচনকে পাত্তা দেয়নি। তারা নির্বাচনের প্রার্থীদের সম্পর্কে উৎসাহী ছিল না। টেলিভিশনে ফলাফল দেখতেও যায়নি, যেমনটি তারা সাধারণত করে থাকে। তারা এমনও বলেছে, আমরা একটি পাথর এবং একটি কঠিন জায়গার মধ্যে আছি। কারণ ট্রাম্প বা হ্যারিস কেউই ফিলিস্তিনিদের প্রতি ন্যায়বিচার করবেন না। তাদের অধিকার দেবেন না। কারণ, তাঁরা জায়নবাদী সত্তাকে রক্ষা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এমনকি পুরো ফিলিস্তিনির রক্তের বিনিময়ে হলেও। তাঁরাই জাতির হৃদয়ে এই ক্যানসার সৃষ্টিকারী সত্তাকে এই অঞ্চলে তাঁদের প্রতিনিধি হওয়ার জন্য তৈরি করেছে এবং এটি তাঁদের প্রকল্প, যা তাঁরা কখনোই ত্যাগ করবেন না, তাতে যা-ই হোক না কেন।
একই সময়ে, আমাদের অঞ্চলে সংঘাতের ব্যাপারে ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়া এবং তাঁর অবস্থানের প্রকৃতি সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী করা কঠিন। যা-ই হোক, এখানে সবচেয়ে সুস্পষ্ট বিষয় হলো জায়নবাদী সত্তা এবং যুক্তরাষ্ট্রের সব যুক্তিবাদী লোকজন তাঁর বিজয়ের বিরুদ্ধে ছিলেন। নিউইয়র্কের ইহুদি জনগোষ্ঠীও ট্রাম্পকে ভোট দেয়নি, তার পরিবর্তে তারা কমলা হ্যারিসকে ভোট দিয়েছে। তারা বিশ্বাস করে যে তাঁর নীতিগুলো ইহুদিবাদী সত্তার ভবিষ্যৎকে সুরক্ষিত করবে না ‘শতাব্দীর চুক্তি’র প্রমাণ। এমনকি যদি এটি সংশোধনও করা হয়, যেমনটি তারা দাবি করে, এটির পরিণতি আগের মতোই হবে।
যদিও জনগণ ট্রাম্প বা হ্যারিসের বিষয়ে আগ্রহী না, তবে ইহুদিবাদী আরব শাসকেরা ট্রাম্পকে জয়ী করার জন্য প্রাণপাত করেছেন এবং তাঁর হোয়াইট হাউসে আসার জন্য অধৈর্য হয়ে অপেক্ষা করছেন। ট্রাম্প শুধু এসব স্বৈরশাসকের বন্ধুই নন, তিনি তাঁদের ত্রাণকর্তা। জনগণের ঘৃণার পাত্র এই স্বৈরাচারী শাসকদের দেশের মানুষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সমর্থন দেন। আমরা এখনো সেই ঘটনার কথা স্মরণ করি, যখন তিনি মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসিকে স্বাগত জানিয়েছিলেন এবং তাঁকে তাঁর ‘প্রিয় একনায়ক’ বলে অভিহিত করেছিলেন।
আমি আসলে এটা গুনতে ভুলেই গেছি যে ট্রাম্প রাশিয়ার ভ্লাদিমির পুতিন, চীনের সি চিন পিং এবং উত্তর কোরিয়ার কিম জং-উনের মতো অত্যাচারীদের কতবার প্রশংসা করেছেন। যেহেতু তিনি তাঁদের মতোই একজন স্বৈরশাসক ও অত্যাচারী, তাই সাংবাদিকদের হত্যা করতে, নির্দিষ্ট টেলিভিশন চ্যানেল বন্ধ করার হুমকি দেওয়ার বিষয়ে আপত্তি করেন না। সেই সঙ্গে ২০২০ সালের নির্বাচনে তিনি জয়ী হননি বলে যেসব প্রশাসন, নিরাপত্তা ও বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন। যাঁরা তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের করা অনেক দুর্নীতির মামলায় তদন্ত করেছিলেন, তাঁদেরও ছাড় না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। অথচ এসব মামলায় এখন পর্যন্ত ৩৪টি ফৌজদারি অভিযোগে তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। এমনকি এমন দাবিও রয়েছে যে ট্রাম্পের ইচ্ছা ছিল অ্যাডলফ হিটলারের মতো অনুগত ও সেবায় নিবেদিত উপদেষ্টা থাকবে তাঁর। আর যেহেতু তিনি একজন বর্ণবাদী, তাই তিনি রক্ষণশীল এবং ধর্মীয় খ্রিষ্টানদের নির্বাচনে যেতে এবং তাঁকে ভোট দেওয়ার চেষ্টা করার জন্য অনুরোধ করেছিলেন, কারণ তারা শতাব্দী ধরে নিপীড়নের শিকার হয়েছে।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশের আদর্শগত গডফাদার রবার্ট কাগান ২০২৩ সালের নভেম্বরে একটি নিবন্ধে লিখেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্পের নেতৃত্বে একনায়কত্বের পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। তিনি জনসাধারণের রাজনৈতিক বিরক্তির প্রতি ইঙ্গিত করেছেন এবং বলেছেন যে ট্রাম্প এই পরিস্থিতির একমাত্র সুবিধাভোগী হিসেবে উদ্ভূত হচ্ছেন, সেই সঙ্গে জনগণের কাছে সমাধান হিসেবে তাঁর উপস্থিতি প্রাধান্য পাচ্ছে।
তাহলে সমাধান কী? ট্রাম্পের রাজনৈতিক অবস্থানের আলোকে, তাঁর উপস্থিতি অনেকের কাছে আশ্বাসের প্রতীক হয়ে দেখা দিচ্ছে। তিনি নিজেকে শক্তিশালী, ধনী এবং মহান আমেরিকার পুনরুদ্ধারের প্রতিজ্ঞা করেছেন, যা নাগরিকদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করবে।
কাগান ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনে জয়ী হলে, তিনি অবিলম্বে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে অতুলনীয় ক্ষমতা অর্জন করবেন। এটি ট্রাম্পের প্রশাসনের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে গুরুতর হবে, যেখানে তিনি আগের প্রেসিডেন্টদের তুলনায় কম সীমাবদ্ধতার মধ্যে কাজ করবেন।
কী সেই ক্ষমতাগুলোকে সীমাবদ্ধ করে? কাগান নিজেই এর উত্তর দিয়েছেন, ন্যায়বিচারের প্রতিষ্ঠানগুলো, যেমন আদালতব্যবস্থা এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থা—মূলত ক্ষমতাধর ব্যক্তিদের ক্ষমতা সীমাবদ্ধ করতে পারে। তবে, যখন একজন ব্যক্তি প্রেসিডেন্ট পদে অধিষ্ঠিত হন এবং নিজেই বিচার বিভাগের কর্মকর্তাদের নিয়োগ করেন, তখন তাঁদের (প্রেসিডেন্টকে) নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা কমে যায়।
যা-ই হোক, আমি অবশ্যই কাগানের সঙ্গে একমত নই। যুক্তরাষ্ট্র তার আগের গৌরব ফিরে পাবে না এবং এটি আবার ভালো কিছু হবে না, যেমনটি ট্রাম্পের স্লোগানে দাবি করা হয়েছে। আমেরিকা আর বিশ্বের একমাত্র মেরু হিসেবে থাকবে না। সময়ের হাত ফেরানো হবে না, কারণ বহুমুখিতা একটি প্রতিষ্ঠিত সত্য হয়ে উঠেছে। পশ্চিমা জোটকে নাড়া দিয়ে তিনি এর প্রভাবের পতন বাড়াবেন—এমন সম্ভাবনা বেশি।
হয়তো ট্রাম্পের উন্মাদনা ও দুঃসাহসিকতার জন্য নির্বাচনের বিজয় যুক্তরাষ্ট্রের পতনের আশঙ্কাকে বাড়িয়ে তুলবে এবং ক্ষমতায় তাঁর উপস্থিতি ইহুদিবাদী সত্তার স্বার্থে কাজ করবে না। যদিও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এমন বিভ্রমে ভোগেন যে তাঁর নিরঙ্কুশ বিজয় হবে। আর এ অঞ্চলে তাঁর আধিপত্যের কারণে নতুন এক মধ্যপ্রাচ্য গড়ে উঠবে।
(মিডল ইস্ট মনিটরে প্রকাশিত লেখাটি ইংরেজি থেকে অনূদিত)
লেখক: চিকিৎসক ও রাজনৈতিক ভাষ্যকার
আমার যখন জন্ম হয়, সেই বছরই পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঘোষণা করেছেন উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা। ক্ষুব্ধ স্বদেশ তখন আন্দোলনে ফেটে পড়েছিল। তৃণমূল থেকে একেবারে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত কেঁপে উঠেছিল।
১৪ ঘণ্টা আগে১৬ নভেম্বর কতগুলো ভারতীয় মিডিয়া একযোগে খবর ছেপেছে, ‘ইন্ডিয়ান আমেরিকানস টু আর্জ ট্রাম্প অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ফর স্যাংশন অ্যাগেইনস্ট বাংলাদেশ’। অর্থাৎ ভারতীয় আমেরিকানরা ট্রাম্প প্রশাসনকে বাংলাদেশের ওপর বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানাবেন।
১৪ ঘণ্টা আগেসরকার পরিবর্তনের ঘটনাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে কিছু প্রতারক চক্র দুস্থ, দরিদ্র ও অসহায় মানুষের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
১৪ ঘণ্টা আগেযেকোনো সামাজিক বিষয় বা সামাজিক সমস্যা নিয়ে আমরা যখন আলোচনা করি, তখন কখনো কখনো তত্ত্ব দিয়ে তার ব্যাখ্যা করি, আবার কখনো কখনো বাস্তব অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে সে বিষয় বা সমস্যার বিশ্লেষণ করি। তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা...
২ দিন আগে