তাপস বড়ুয়া
তেলের দাম বাড়তি, চালের দাম বাড়তি, বিদ্যুতের দাম বাড়তি, গ্যাসের দাম বাড়তি, রিকশা ও বাসভাড়া বাড়তি, বাড়িভাড়া বাড়তি, ডাক্তারের ফি বাড়তি ইত্যাদি ইত্যাদি। জীবনের সব ক্ষেত্রে খরচ বাড়ছে। ওদিকে আয় কমছে। করোনার ধাক্কায় চাকরি হারিয়েছেন অনেকে। যাঁরা চাকরি হারিয়েছেন, তাঁদের জন্য চাকরি পাওয়া যারপরনাই কঠিন হয়ে পড়েছে।
সাময়িক বেকার যেসব মানুষ নতুন করে চাকরি পাচ্ছেন, তার একটা বড় অংশই যোগ্যতা অনুযায়ী প্রাপ্যের চেয়ে কম বেতনে কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন। কারণ চাকরির বাজারে যোগ্য, কিন্তু চাকরিহীন মানুষের জোগান এখন বেশি। সব মিলিয়ে নাকাল মানুষের জীবন। ঘরে ঘরে নিত্যদিন হাঁসফাঁস অবস্থা।
এর মধ্যে এল বাজেট নামের ঘটনাটি। প্রতিবছরের বাজেটের পর জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়া একটা রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। এবার বাজেটের আকার ৬ লাখ কোটি টাকার বেশি। বড় বাজেট বড় মূল্যস্ফীতি নিয়ে আসবে—এমন ভয় অমূলক নয়। বাজেটে ঘাটতি থাকবে প্রায় আড়াই লাখ কোটি টাকার। এই অর্থ সরকার ঋণ করবে।
ঋণের একটা বড় খাত সরকারি বন্ড বা সঞ্চয়পত্র বিক্রি। ব্যাংকে রাখা যেকোনো ধরনের আমানতের সুদ গেছে কমে। ফলে মানুষ তার সঞ্চয় সরকারকে ঋণ দিয়ে সঞ্চয়পত্র কিনতে উৎসাহিত হবে। সরকার দিয়েছে সঞ্চয়পত্রের সুদ কমিয়ে। মূল্যস্ফীতিকে হিসাবে ধরলে সঞ্চয়পত্র থেকে আসা লাভ আসলে পিঁপড়েয় খেয়ে যাওয়ার মতো।
ঘাটতি বাজেট প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, ঋণ করে হলেও সরকারকে খরচ করতে হবে। তাহলে বাজারে টাকার লেনদেন হবে। অর্থনীতির গতি সচল থাকবে। এই যে অর্থনীতির গতি সচল থাকা, সেটা কি মূল্যস্ফীতির দামে? এটা কতকটা শ্রমিকের ঘামে মালিকের লাভ বাড়ার মতো। কারণ মূল্যস্ফীতির ঝড়টা যাবে সাধারণ মানুষের ওপর দিয়ে। লাভ করবে ধনিক শ্রেণি। বাজারের বর্তমান অবস্থায় এটা বুঝে নিতে অর্থনীতির জটিল তত্ত্ব বোঝার দরকার হয় না।
ব্যাংকিং খাত থেকেও সরকারের বড় অঙ্কের ঋণ নেওয়ার পরিকল্পনা বাজেট আলোচনায় এসেছে। ঋণ করে ঘি খাওয়া আখেরে কতটা ভালো হবে, সেটা একটা প্রশ্ন। কারণ, আমরা এ বছরই ঋণ শোধ বাবদ খরচ করব একটা বিশাল অঙ্ক (সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকা)।
হাতে পয়সা নেই, তবু খরচ করতে হচ্ছে। এই শহরে যারা একবার এসে পড়েছেন, দায়ে পড়ে অথবা স্বপ্নের মোহে তাঁদের মান্না দের গানের মতো ‘পিছনের পথে উঠেছে ধূলির ঝড়, সমুখে অন্ধকার’। শোনা যায়, করোনার পরে পোশাক কারখানায় নাকি এখন প্রচুর অর্ডার। কিন্তু মালিকেরা নতুন শ্রমিক নিয়োগ দিচ্ছেন না। অজুহাত, আবার যদি অর্ডার কমে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়, তখন কী হবে? অথচ এই পোশাকশিল্প করোনার মধ্যে সরকারি প্রণোদনা পেয়েছে জনগণের টাকায়।
দেড় শ বছর আগে কার্ল মার্ক্স এক অদ্ভুত সমীকরণের কথা বলেছিলেন। যদিও অর্থনৈতিক-সামাজিক সম্পর্কসমূহ আজ আরও বেশি জটিল, সরাসরি দাগ টেনে শ্রমিকে আর মালিকে, বুর্জোয়া আর প্রলেতারিয়েতে ভাগ করা যায় না সমাজকে, তবু মার্কসের সমীকরণটি এই অবস্থায় মনে করে নেওয়াটা কাজের হবে।
মার্কস বলেছিলেন, পুঁজিবাদী ব্যবস্থার মূলে আছে লাভ। মালিক লাভ করতে চায়। সম্ভাব্য সর্বোচ্চ লাভ যে মালিক তুলে নিতে পারবে না, সে প্রতিযোগিতায় হেরে যাবে। তাকে বাজার থেকে সরে যেতে হবে। সে যদি লাভ বেশি করে, তাহলেই সে শ্রমিককে বেশি বেতন দিতে পারবে। আবার শ্রমিককে বেশি বেতন দিলে সেই অঙ্কটা তার লাভ থেকে কমবে। শ্রমিকের সংখ্যা বা জোগান কম থাকলে শ্রমিকের চাহিদা বাড়বে, মালিকেরা বেশি পারিশ্রমিক দিয়ে শ্রমিক নিয়োগ করতে বাধ্য হবে। ফলে তার লাভ কম হবে। অর্থনীতিজুড়ে এই অবস্থা চলতে থাকলে মালিকেরা অনেকে ব্যবসায় ক্ষতির সম্মুখীন হবে এবং প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে ব্যবসা বন্ধ করে দেবে। ফলে শ্রমিকের চাহিদা কমবে। তখন যেসব মালিক ব্যবসায় টিকে থাকবে, তারা কম বেতনে শ্রমিক নিয়োগের সুযোগ পাবে। বিষয়টি যখন খুব খারাপ অবস্থায় গিয়ে দাঁড়াবে, বেকারত্ব যখন খুব বেড়ে যাবে, তখন কম দামে শ্রমিক নিয়োগের সুবিধা নিয়ে মালিকেরা আবার ব্যবসায় ফিরবে। কিন্তু শ্রমিকের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেলে সে বিপ্লবে শামিল হবে। কম বেতন পাওয়া শ্রমিকের হাতে খরচ করার মতো যথেষ্ট টাকা থাকবে না। যথেষ্ট টাকা খরচ না করলে অর্থনীতি নিম্নমুখী টার্ন নেবে। ফলে মালিকের লাভ কমতে শুরু করবে। আবার তার পণ্যের বাজার সৃষ্টির জন্য দরকার হবে বেশি বেতন দেওয়া। এভাবে একসময় পুঁজিবাদ ভেঙে পড়বে। কারণ, শ্রমিকেরা এই শোষণের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করবে।
কিন্তু পুঁজিবাদ অত সহজে দমবার পাত্র নয়। সে বের করেছে এক বিকল্প, যাতে কম আয় করেও মানুষ বেশি খরচ করা চালিয়ে যেতে পারে। সেই পথটি হচ্ছে ক্রেডিট, যার একটা বড় বাহক হচ্ছে ক্রেডিট কার্ড। এতে সমস্যার আপাতত সমাধান হয়। পুঁজিবাদী ব্যবস্থার মোক্ষ যে লাভ, সেটা হতে থাকে। কিন্তু এই সমাধান একেবারেই আপাতত।
সত্তরের দশকে পাশ্চাত্যে শক্তিশালী ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলনের জন্য বেতন কমানো কঠিন ছিল। আশির দশকে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যান আর ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচার মালিকের পক্ষে শক্ত করে নেমে গেলেন। এবং মালিকের পক্ষ নিয়ে শ্রমিক শোষণের ব্যবস্থা করে দিলেন। ফল হয়েছে, সমাজের উঁচুতলার কয়েকজনের আয় ও সম্পদ আকাশ ছুঁয়েছে। বেশির ভাগের আয় সমানুপাতিক বাড়েনি, খরচ বেড়েছে। ফলত তারা নেট হিসেবে গরিব হয়েছে। মুদ্রাস্ফীতি বাদ দিলে সাধারণ মানুষের আয় গত কুড়ি বছরে বাড়েনি। বরং ক্রয়ক্ষমতার নিরিখে কমেছে। কিন্তু বড়লোকদের সম্পদ বেড়েছে মুদ্রাস্ফীতির চেয়ে বহুগুণ। রিগ্যান, থ্যাচারের প্রভাব সারা বিশ্বের অর্থনীতিতে, বিশেষত বাংলাদেশের মতো দেশে প্রকট।
পুঁজি ও লাভ আর শ্রম একদিকে হাত ধরাধরি করে চলে। অন্যদিকে আবার পরস্পর মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড়িয়ে যায়। এই যুগপৎ দ্বৈরথকে সহনীয় পর্যায়ে রাখতে রাষ্ট্রীয় নীতির ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে।
এদিকে বড়লোকদের পুঁজির জোগান দিয়েছে রাষ্ট্র। মানে জনগণের টাকায়। ব্যবসায় লাভ হলে তারা নিয়েছে। ব্যবসায় ক্ষতি হলে সেই দায় ঋণখেলাপি হয়ে আবার রাষ্ট্রের তথা জনগণের ঘাড়ে এসে চেপেছে। তার মানে, গরিবের টাকা নিয়েই বড়লোকের সম্পদ বাড়ছে।
কম মূল্যে শ্রমিক পাওয়ার দিকে ঝুঁকেছে বিশ্ব। বিশ্বায়নের ফলে আমেরিকায় বিক্রির পণ্য বাংলাদেশ বা ইথিওপিয়ায় তৈরি হচ্ছে। ফলে লাভ বাড়ছে শ্রমিক তথা কর্মীদের কম টাকা দেওয়ার ফলাফল হিসেবে। প্রযুক্তি আরও সুযোগ করে দিয়েছে ১০ জনের কাজ এক মেশিনে করে। ব্যবসাকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার কথা অনুযায়ী দক্ষ করে তুলছে প্রযুক্তি। কিন্তু এটিই মানুষের চাকরির সুযোগ কমিয়েছে। ফলে প্রযুক্তি গ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে চাকরির সুবিধা কমবে। মানুষের হাতে টাকা কমবে। এই সংকট মিটছে না। মানুষের হাতে অর্থ না থাকলেও তাকে খরচ বাড়াতে হবে। তা না হলে পণ্য বিক্রি হবে না। মালিকের লাভ হবে না।
ক্রেডিটের অর্থনীতি চলতে থাকে। কিন্তু কতক্ষণ? কয়েক বছর আগের বিশ্বমন্দা পাশ্চাত্যের হাউজিং সেক্টরে মর্টগেজ ঋণের প্রত্যক্ষ অবদান। ক্রেডিটের মাধ্যমে বাজারে অর্থ সরবরাহ বাড়িয়ে দাম বাড়াকে সহনীয় করা হচ্ছে। মানুষ খরচ করা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু একটা সময় এই ফাঁপা অর্থনীতি পড়ে যেতে বাধ্য। অতিরিক্ত ঋণ দেওয়া চলিয়ে গেলে ব্যাংকও একসময় ধসে যেতে বাধ্য। আমরা কি সেদিকে যাচ্ছি? কারণ আমরা প্রবৃদ্ধি চাই। প্রবৃদ্ধির গল্প করা সম্মানের, কৃতিত্বের!
দাস ক্যাপিটালে কার্ল মার্ক্স পুঁজি ও শ্রমের মধ্যে দ্বন্দ্বের বিষয়টি উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, লাভের এবং উৎপাদনশীলতার দৌড় স্বাভাবিকভাবেই কম শ্রমিক নিয়োগ করে বেশি কাজ তুলে নেওয়ার চেষ্টা করবে, যাতে করে দরিদ্র ও বেকার কর্মীর সংখ্যা বাড়বে। মার্কস যাদের বলেছেন ‘ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিজার্ভ আর্মি’। সুতরাং এক মেরুতে সম্পদের সঞ্চয়ন হওয়াটা আসলে একই সঙ্গে অন্য জায়গায় দুর্দশার সঞ্চয়নও।
তাই জনগণের কাজের সুযোগ সৃষ্টির জন্য ব্যবসায় প্রণোদনা দেওয়ার সুযোগ রাখতে হবে বাজেটে। কিন্তু ব্যবসায় প্রণোদনা যেন জনগণের কাজের সুযোগ সৃষ্টি করে, লাভের গুড় যেন ব্যবসায়ীরা এককভাবে খেয়ে না ফেলে, সে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে নিশ্চিত করতে হবে। ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু সেটা একই সঙ্গে কর্মীবান্ধব বা বৃহত্তর অর্থে জনবান্ধবও হতে হবে। রাষ্ট্রীয় কোষাগারের অর্থের যেকোনো ব্যবহার বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর উন্নয়ন নিশ্চিতেই শুধু খরচ করার ব্যবস্থা বাজেটের মধ্যে রাখতে হবে। তা না হলে প্রণোদনাগুলো, ব্যবসাবান্ধব পরিবেশের জন্য বিনিয়োগগুলো রাষ্ট্র থেকে বা জনগণ থেকে গুটি কয়েক মানুষের পকেটে যাবে, যা কখনোই কাম্য নয়।
কাজের বিনিময়ে খাদ্যের মতো প্রকল্পগুলোসহ বড় প্রকল্পগুলোর খরচে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। কাজের বিনিময়ে খাদ্যের মতো গতানুগতিক প্রকল্পগুলো আশু সমাধান দেয়। বড় প্রকল্পগুলো সরাসরি এবং ব্যাকওয়ার্ড ও ফরোয়ার্ড লিঙ্কেজ ব্যবসা ও শিল্পগুলোর মাধ্যমে বড় আকারে কর্মসংস্থান সৃষ্টির সুযোগ থাকে। বড় প্রকল্প হাতে নিয়ে বাজারে অর্থের সরবরাহ বাড়ানোর পরামর্শ ব্রিটিশ অর্থনীতিবিদ ফ্রেডরিখ হায়েক আমেরিকার মন্দার সময় দিয়েছিলেন। তার একটা উদাহরণ আমেরিকার বিখ্যাত হুভার ড্যাম। ত্রাণমুখী সমাধান, খোলাবাজারে নিত্যপণ্য বিক্রির মতো কার্যক্রম চালু রাখতে হবে। পাশাপাশি, বেশি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে বাজারে ন্যায্যমূল্যে নিত্যপণ্যের সরবরাহও নিশ্চিত করা।
জর্জ ম্যাগনাস তাঁর ‘গিভ কার্ল মার্ক্স আ চান্স টু সেভ দি ওয়ার্ল্ড ইকোনমি’ নিবন্ধে (২৯ আগস্ট ২০১১; ব্লুমবার্গ) বলেছেন, ‘গতানুগতিক চর্চার বাইরে গিয়ে কাজের সুযোগ সৃষ্টিকে নীতিনির্ধারকদের অ্যাজেন্ডার শীর্ষে রাখতে হবে।’ এই সমস্যা সাময়িক না এবং গতানুগতিক সমাধান এতে কাজে আসবে না।
জর্জ ম্যাগনাস বলেছেন, চাহিদা ও আয়ের বৃদ্ধি ধরে রাখতে হবে। তা না হলে ঋণের ফাঁদে পড়ে সমাজ গুরুতর পরিণতির দিকে এগিয়ে যাবে। কর্মসংস্থান সৃষ্টিকে পলিসির জন্য লিটমাস টেস্ট হিসেবে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন তিনি।
পিপিআরসি-বিআইজিডির গবেষণায় দেখা গেছে, করোনার এক বছরে দেশে নতুন করে দরিদ্র হয়েছে আড়াই কোটি মানুষ। গবেষণা বাদ দিয়েও পরিচিত ৫০ বা ১০০ জনের দিকে তাকিয়ে দেখলে আমরা ঠিকই দেখতে পাই বেকারত্ব ও প্রচ্ছন্ন দারিদ্র্য এখন কতটা প্রকট।
ম্যাগনাস এমনকি চাকরিদাতাদের পে-রোল ট্যাক্স কমিয়ে এবং অর্থনৈতিক প্রণোদনা দিয়ে হলেও বিনিয়োগ ও কর্মী নিয়োগকে উৎসাহিত করার কথা বলেছিলেন আমেরিকা, ব্রিটেন, জার্মানির মতো দেশগুলোকে।
বলা বাহুল্য, মানুষের আয় কমলে সরকারের রাজস্বও কমবে। ট্যাক্স-ভ্যাটে ভাটা পড়বে। সেটা রাষ্ট্রীয় কোষাগারের জন্য কোনো ভালো খবর হবে না। বাজেটে এসবকে ব্যালেন্স করার কী কী পদক্ষেপ প্রস্তাব করা হয়, কর্মসংস্থান সৃষ্টির কী কী পদক্ষেপ প্রস্তাব করা হয়, সেদিকেই নজর জনগণের।
পত্রিকান্তরে সাক্ষাৎকারে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, এবারের বাজেটের মূল নজর কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে। মানুষ এই কথার প্রতিফলন দেখতে চায় বাজেট বক্তৃতায় এবং বাজেট বাস্তবায়নের পুরো সময়জুড়ে।
লেখক: বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় কর্মরত ও কলাম লেখক
তেলের দাম বাড়তি, চালের দাম বাড়তি, বিদ্যুতের দাম বাড়তি, গ্যাসের দাম বাড়তি, রিকশা ও বাসভাড়া বাড়তি, বাড়িভাড়া বাড়তি, ডাক্তারের ফি বাড়তি ইত্যাদি ইত্যাদি। জীবনের সব ক্ষেত্রে খরচ বাড়ছে। ওদিকে আয় কমছে। করোনার ধাক্কায় চাকরি হারিয়েছেন অনেকে। যাঁরা চাকরি হারিয়েছেন, তাঁদের জন্য চাকরি পাওয়া যারপরনাই কঠিন হয়ে পড়েছে।
সাময়িক বেকার যেসব মানুষ নতুন করে চাকরি পাচ্ছেন, তার একটা বড় অংশই যোগ্যতা অনুযায়ী প্রাপ্যের চেয়ে কম বেতনে কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন। কারণ চাকরির বাজারে যোগ্য, কিন্তু চাকরিহীন মানুষের জোগান এখন বেশি। সব মিলিয়ে নাকাল মানুষের জীবন। ঘরে ঘরে নিত্যদিন হাঁসফাঁস অবস্থা।
এর মধ্যে এল বাজেট নামের ঘটনাটি। প্রতিবছরের বাজেটের পর জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়া একটা রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। এবার বাজেটের আকার ৬ লাখ কোটি টাকার বেশি। বড় বাজেট বড় মূল্যস্ফীতি নিয়ে আসবে—এমন ভয় অমূলক নয়। বাজেটে ঘাটতি থাকবে প্রায় আড়াই লাখ কোটি টাকার। এই অর্থ সরকার ঋণ করবে।
ঋণের একটা বড় খাত সরকারি বন্ড বা সঞ্চয়পত্র বিক্রি। ব্যাংকে রাখা যেকোনো ধরনের আমানতের সুদ গেছে কমে। ফলে মানুষ তার সঞ্চয় সরকারকে ঋণ দিয়ে সঞ্চয়পত্র কিনতে উৎসাহিত হবে। সরকার দিয়েছে সঞ্চয়পত্রের সুদ কমিয়ে। মূল্যস্ফীতিকে হিসাবে ধরলে সঞ্চয়পত্র থেকে আসা লাভ আসলে পিঁপড়েয় খেয়ে যাওয়ার মতো।
ঘাটতি বাজেট প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, ঋণ করে হলেও সরকারকে খরচ করতে হবে। তাহলে বাজারে টাকার লেনদেন হবে। অর্থনীতির গতি সচল থাকবে। এই যে অর্থনীতির গতি সচল থাকা, সেটা কি মূল্যস্ফীতির দামে? এটা কতকটা শ্রমিকের ঘামে মালিকের লাভ বাড়ার মতো। কারণ মূল্যস্ফীতির ঝড়টা যাবে সাধারণ মানুষের ওপর দিয়ে। লাভ করবে ধনিক শ্রেণি। বাজারের বর্তমান অবস্থায় এটা বুঝে নিতে অর্থনীতির জটিল তত্ত্ব বোঝার দরকার হয় না।
ব্যাংকিং খাত থেকেও সরকারের বড় অঙ্কের ঋণ নেওয়ার পরিকল্পনা বাজেট আলোচনায় এসেছে। ঋণ করে ঘি খাওয়া আখেরে কতটা ভালো হবে, সেটা একটা প্রশ্ন। কারণ, আমরা এ বছরই ঋণ শোধ বাবদ খরচ করব একটা বিশাল অঙ্ক (সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকা)।
হাতে পয়সা নেই, তবু খরচ করতে হচ্ছে। এই শহরে যারা একবার এসে পড়েছেন, দায়ে পড়ে অথবা স্বপ্নের মোহে তাঁদের মান্না দের গানের মতো ‘পিছনের পথে উঠেছে ধূলির ঝড়, সমুখে অন্ধকার’। শোনা যায়, করোনার পরে পোশাক কারখানায় নাকি এখন প্রচুর অর্ডার। কিন্তু মালিকেরা নতুন শ্রমিক নিয়োগ দিচ্ছেন না। অজুহাত, আবার যদি অর্ডার কমে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়, তখন কী হবে? অথচ এই পোশাকশিল্প করোনার মধ্যে সরকারি প্রণোদনা পেয়েছে জনগণের টাকায়।
দেড় শ বছর আগে কার্ল মার্ক্স এক অদ্ভুত সমীকরণের কথা বলেছিলেন। যদিও অর্থনৈতিক-সামাজিক সম্পর্কসমূহ আজ আরও বেশি জটিল, সরাসরি দাগ টেনে শ্রমিকে আর মালিকে, বুর্জোয়া আর প্রলেতারিয়েতে ভাগ করা যায় না সমাজকে, তবু মার্কসের সমীকরণটি এই অবস্থায় মনে করে নেওয়াটা কাজের হবে।
মার্কস বলেছিলেন, পুঁজিবাদী ব্যবস্থার মূলে আছে লাভ। মালিক লাভ করতে চায়। সম্ভাব্য সর্বোচ্চ লাভ যে মালিক তুলে নিতে পারবে না, সে প্রতিযোগিতায় হেরে যাবে। তাকে বাজার থেকে সরে যেতে হবে। সে যদি লাভ বেশি করে, তাহলেই সে শ্রমিককে বেশি বেতন দিতে পারবে। আবার শ্রমিককে বেশি বেতন দিলে সেই অঙ্কটা তার লাভ থেকে কমবে। শ্রমিকের সংখ্যা বা জোগান কম থাকলে শ্রমিকের চাহিদা বাড়বে, মালিকেরা বেশি পারিশ্রমিক দিয়ে শ্রমিক নিয়োগ করতে বাধ্য হবে। ফলে তার লাভ কম হবে। অর্থনীতিজুড়ে এই অবস্থা চলতে থাকলে মালিকেরা অনেকে ব্যবসায় ক্ষতির সম্মুখীন হবে এবং প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে ব্যবসা বন্ধ করে দেবে। ফলে শ্রমিকের চাহিদা কমবে। তখন যেসব মালিক ব্যবসায় টিকে থাকবে, তারা কম বেতনে শ্রমিক নিয়োগের সুযোগ পাবে। বিষয়টি যখন খুব খারাপ অবস্থায় গিয়ে দাঁড়াবে, বেকারত্ব যখন খুব বেড়ে যাবে, তখন কম দামে শ্রমিক নিয়োগের সুবিধা নিয়ে মালিকেরা আবার ব্যবসায় ফিরবে। কিন্তু শ্রমিকের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেলে সে বিপ্লবে শামিল হবে। কম বেতন পাওয়া শ্রমিকের হাতে খরচ করার মতো যথেষ্ট টাকা থাকবে না। যথেষ্ট টাকা খরচ না করলে অর্থনীতি নিম্নমুখী টার্ন নেবে। ফলে মালিকের লাভ কমতে শুরু করবে। আবার তার পণ্যের বাজার সৃষ্টির জন্য দরকার হবে বেশি বেতন দেওয়া। এভাবে একসময় পুঁজিবাদ ভেঙে পড়বে। কারণ, শ্রমিকেরা এই শোষণের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করবে।
কিন্তু পুঁজিবাদ অত সহজে দমবার পাত্র নয়। সে বের করেছে এক বিকল্প, যাতে কম আয় করেও মানুষ বেশি খরচ করা চালিয়ে যেতে পারে। সেই পথটি হচ্ছে ক্রেডিট, যার একটা বড় বাহক হচ্ছে ক্রেডিট কার্ড। এতে সমস্যার আপাতত সমাধান হয়। পুঁজিবাদী ব্যবস্থার মোক্ষ যে লাভ, সেটা হতে থাকে। কিন্তু এই সমাধান একেবারেই আপাতত।
সত্তরের দশকে পাশ্চাত্যে শক্তিশালী ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলনের জন্য বেতন কমানো কঠিন ছিল। আশির দশকে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যান আর ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচার মালিকের পক্ষে শক্ত করে নেমে গেলেন। এবং মালিকের পক্ষ নিয়ে শ্রমিক শোষণের ব্যবস্থা করে দিলেন। ফল হয়েছে, সমাজের উঁচুতলার কয়েকজনের আয় ও সম্পদ আকাশ ছুঁয়েছে। বেশির ভাগের আয় সমানুপাতিক বাড়েনি, খরচ বেড়েছে। ফলত তারা নেট হিসেবে গরিব হয়েছে। মুদ্রাস্ফীতি বাদ দিলে সাধারণ মানুষের আয় গত কুড়ি বছরে বাড়েনি। বরং ক্রয়ক্ষমতার নিরিখে কমেছে। কিন্তু বড়লোকদের সম্পদ বেড়েছে মুদ্রাস্ফীতির চেয়ে বহুগুণ। রিগ্যান, থ্যাচারের প্রভাব সারা বিশ্বের অর্থনীতিতে, বিশেষত বাংলাদেশের মতো দেশে প্রকট।
পুঁজি ও লাভ আর শ্রম একদিকে হাত ধরাধরি করে চলে। অন্যদিকে আবার পরস্পর মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড়িয়ে যায়। এই যুগপৎ দ্বৈরথকে সহনীয় পর্যায়ে রাখতে রাষ্ট্রীয় নীতির ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে।
এদিকে বড়লোকদের পুঁজির জোগান দিয়েছে রাষ্ট্র। মানে জনগণের টাকায়। ব্যবসায় লাভ হলে তারা নিয়েছে। ব্যবসায় ক্ষতি হলে সেই দায় ঋণখেলাপি হয়ে আবার রাষ্ট্রের তথা জনগণের ঘাড়ে এসে চেপেছে। তার মানে, গরিবের টাকা নিয়েই বড়লোকের সম্পদ বাড়ছে।
কম মূল্যে শ্রমিক পাওয়ার দিকে ঝুঁকেছে বিশ্ব। বিশ্বায়নের ফলে আমেরিকায় বিক্রির পণ্য বাংলাদেশ বা ইথিওপিয়ায় তৈরি হচ্ছে। ফলে লাভ বাড়ছে শ্রমিক তথা কর্মীদের কম টাকা দেওয়ার ফলাফল হিসেবে। প্রযুক্তি আরও সুযোগ করে দিয়েছে ১০ জনের কাজ এক মেশিনে করে। ব্যবসাকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার কথা অনুযায়ী দক্ষ করে তুলছে প্রযুক্তি। কিন্তু এটিই মানুষের চাকরির সুযোগ কমিয়েছে। ফলে প্রযুক্তি গ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে চাকরির সুবিধা কমবে। মানুষের হাতে টাকা কমবে। এই সংকট মিটছে না। মানুষের হাতে অর্থ না থাকলেও তাকে খরচ বাড়াতে হবে। তা না হলে পণ্য বিক্রি হবে না। মালিকের লাভ হবে না।
ক্রেডিটের অর্থনীতি চলতে থাকে। কিন্তু কতক্ষণ? কয়েক বছর আগের বিশ্বমন্দা পাশ্চাত্যের হাউজিং সেক্টরে মর্টগেজ ঋণের প্রত্যক্ষ অবদান। ক্রেডিটের মাধ্যমে বাজারে অর্থ সরবরাহ বাড়িয়ে দাম বাড়াকে সহনীয় করা হচ্ছে। মানুষ খরচ করা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু একটা সময় এই ফাঁপা অর্থনীতি পড়ে যেতে বাধ্য। অতিরিক্ত ঋণ দেওয়া চলিয়ে গেলে ব্যাংকও একসময় ধসে যেতে বাধ্য। আমরা কি সেদিকে যাচ্ছি? কারণ আমরা প্রবৃদ্ধি চাই। প্রবৃদ্ধির গল্প করা সম্মানের, কৃতিত্বের!
দাস ক্যাপিটালে কার্ল মার্ক্স পুঁজি ও শ্রমের মধ্যে দ্বন্দ্বের বিষয়টি উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, লাভের এবং উৎপাদনশীলতার দৌড় স্বাভাবিকভাবেই কম শ্রমিক নিয়োগ করে বেশি কাজ তুলে নেওয়ার চেষ্টা করবে, যাতে করে দরিদ্র ও বেকার কর্মীর সংখ্যা বাড়বে। মার্কস যাদের বলেছেন ‘ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিজার্ভ আর্মি’। সুতরাং এক মেরুতে সম্পদের সঞ্চয়ন হওয়াটা আসলে একই সঙ্গে অন্য জায়গায় দুর্দশার সঞ্চয়নও।
তাই জনগণের কাজের সুযোগ সৃষ্টির জন্য ব্যবসায় প্রণোদনা দেওয়ার সুযোগ রাখতে হবে বাজেটে। কিন্তু ব্যবসায় প্রণোদনা যেন জনগণের কাজের সুযোগ সৃষ্টি করে, লাভের গুড় যেন ব্যবসায়ীরা এককভাবে খেয়ে না ফেলে, সে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে নিশ্চিত করতে হবে। ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু সেটা একই সঙ্গে কর্মীবান্ধব বা বৃহত্তর অর্থে জনবান্ধবও হতে হবে। রাষ্ট্রীয় কোষাগারের অর্থের যেকোনো ব্যবহার বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর উন্নয়ন নিশ্চিতেই শুধু খরচ করার ব্যবস্থা বাজেটের মধ্যে রাখতে হবে। তা না হলে প্রণোদনাগুলো, ব্যবসাবান্ধব পরিবেশের জন্য বিনিয়োগগুলো রাষ্ট্র থেকে বা জনগণ থেকে গুটি কয়েক মানুষের পকেটে যাবে, যা কখনোই কাম্য নয়।
কাজের বিনিময়ে খাদ্যের মতো প্রকল্পগুলোসহ বড় প্রকল্পগুলোর খরচে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। কাজের বিনিময়ে খাদ্যের মতো গতানুগতিক প্রকল্পগুলো আশু সমাধান দেয়। বড় প্রকল্পগুলো সরাসরি এবং ব্যাকওয়ার্ড ও ফরোয়ার্ড লিঙ্কেজ ব্যবসা ও শিল্পগুলোর মাধ্যমে বড় আকারে কর্মসংস্থান সৃষ্টির সুযোগ থাকে। বড় প্রকল্প হাতে নিয়ে বাজারে অর্থের সরবরাহ বাড়ানোর পরামর্শ ব্রিটিশ অর্থনীতিবিদ ফ্রেডরিখ হায়েক আমেরিকার মন্দার সময় দিয়েছিলেন। তার একটা উদাহরণ আমেরিকার বিখ্যাত হুভার ড্যাম। ত্রাণমুখী সমাধান, খোলাবাজারে নিত্যপণ্য বিক্রির মতো কার্যক্রম চালু রাখতে হবে। পাশাপাশি, বেশি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে বাজারে ন্যায্যমূল্যে নিত্যপণ্যের সরবরাহও নিশ্চিত করা।
জর্জ ম্যাগনাস তাঁর ‘গিভ কার্ল মার্ক্স আ চান্স টু সেভ দি ওয়ার্ল্ড ইকোনমি’ নিবন্ধে (২৯ আগস্ট ২০১১; ব্লুমবার্গ) বলেছেন, ‘গতানুগতিক চর্চার বাইরে গিয়ে কাজের সুযোগ সৃষ্টিকে নীতিনির্ধারকদের অ্যাজেন্ডার শীর্ষে রাখতে হবে।’ এই সমস্যা সাময়িক না এবং গতানুগতিক সমাধান এতে কাজে আসবে না।
জর্জ ম্যাগনাস বলেছেন, চাহিদা ও আয়ের বৃদ্ধি ধরে রাখতে হবে। তা না হলে ঋণের ফাঁদে পড়ে সমাজ গুরুতর পরিণতির দিকে এগিয়ে যাবে। কর্মসংস্থান সৃষ্টিকে পলিসির জন্য লিটমাস টেস্ট হিসেবে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন তিনি।
পিপিআরসি-বিআইজিডির গবেষণায় দেখা গেছে, করোনার এক বছরে দেশে নতুন করে দরিদ্র হয়েছে আড়াই কোটি মানুষ। গবেষণা বাদ দিয়েও পরিচিত ৫০ বা ১০০ জনের দিকে তাকিয়ে দেখলে আমরা ঠিকই দেখতে পাই বেকারত্ব ও প্রচ্ছন্ন দারিদ্র্য এখন কতটা প্রকট।
ম্যাগনাস এমনকি চাকরিদাতাদের পে-রোল ট্যাক্স কমিয়ে এবং অর্থনৈতিক প্রণোদনা দিয়ে হলেও বিনিয়োগ ও কর্মী নিয়োগকে উৎসাহিত করার কথা বলেছিলেন আমেরিকা, ব্রিটেন, জার্মানির মতো দেশগুলোকে।
বলা বাহুল্য, মানুষের আয় কমলে সরকারের রাজস্বও কমবে। ট্যাক্স-ভ্যাটে ভাটা পড়বে। সেটা রাষ্ট্রীয় কোষাগারের জন্য কোনো ভালো খবর হবে না। বাজেটে এসবকে ব্যালেন্স করার কী কী পদক্ষেপ প্রস্তাব করা হয়, কর্মসংস্থান সৃষ্টির কী কী পদক্ষেপ প্রস্তাব করা হয়, সেদিকেই নজর জনগণের।
পত্রিকান্তরে সাক্ষাৎকারে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, এবারের বাজেটের মূল নজর কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে। মানুষ এই কথার প্রতিফলন দেখতে চায় বাজেট বক্তৃতায় এবং বাজেট বাস্তবায়নের পুরো সময়জুড়ে।
লেখক: বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় কর্মরত ও কলাম লেখক
‘গণতন্ত্র মঞ্চ’র অন্যতম নেতা সাইফুল হক বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ছাত্রজীবনে তিনি ছাত্র ঐক্য ফোরামের নেতা ছিলেন। তিনি পত্রিকায় নিয়মিত কলাম লেখেন। এখন পর্যন্ত ২০টি বই লিখেছেন। অন্তর্বর্তী সরকার এবং দেশের রাজনীতি নিয়ে...
৪ ঘণ্টা আগেসদ্য ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে কি না, তা নিয়ে নানা মাত্রিক আলোচনার মধ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম নিজের ফেসবুক ওয়ালে লিখেছেন: ‘গণহত্যার বিচারের আগে আওয়ামী লীগকে কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে দেব না। প্রয়োজনে দ্বিতীয় অভ্যুত্থান হবে।’
৪ ঘণ্টা আগেতিন মাস পার হলো, আমরা একটি অন্তর্বর্তী সরকারের শাসনামলের অধীনে আছি। জুলাই-আগস্টে সংঘটিত অভ্যুত্থানে স্বৈরাচারী সরকারের অবসান ঘটেছে। অভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে জনমনে আশার সঞ্চার হয়েছিল—সামাজিক সব বৈষম্যের অবসান ঘটবে, আমাদের সামগ্রিক অবস্থার ইতিবাচক পরিবর্তন সূচিত হবে, প্রকৃত স্বাধীনতা..
৪ ঘণ্টা আগেচট্টগ্রামের আকবরশাহ থানার নাছিয়াঘোনা এলাকায় যাওয়া-আসা করতে গেলে বোঝা যায় সেটি দুর্গম এলাকা। এ কারণেই সেখানে বসানো হয়েছিল ফাঁড়ি। কিন্তু ৫ আগস্টে ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর পুলিশের থানা ও ফাঁড়িগুলোয় যখন আক্রমণ করা হচ্ছিল, তখন নুরু আলম নুরু নামের এক সন্ত্রাসীও সে সুযোগ নেন। তিনি পুলিশের ফাঁড়ি দখল করে...
৪ ঘণ্টা আগে