Ajker Patrika

ট্রলার ছিনতাই

সম্পাদকীয়
ট্রলার ছিনতাই

বেছে বেছে এ বিষয়টি নিয়ে সম্পাদকীয় লেখার একটা বিশেষ কারণ আছে। ‘স্বাধীনতা’ শব্দটি কী করে আমাদের হয়েছিল, সে কথা প্রত্যেকে বুঝতে পারলে ভালো হতো। দুঃখের বিষয় হলো, সেটা সবাই বুঝতে পারে না। ‘স্বাধীনতা’ শব্দটি যদি হৃদয়কে স্পর্শ না করে, তাহলে প্রতিটি দিনকেই নতুন নতুন করে স্বাধীনতা দিবস হিসেবে ঘোষণা দিলেও কিছু আসে-যায় না। শব্দটি তখন হয়ে যায় নিছক বারোয়ারি এক শব্দ। কোনো সচেতন মানুষ সত্যিকারের স্বাধীনতা পেলে এ রকম ছেলেমানুষি করে না। তবে এটাও বলা প্রয়োজন, স্বাধীনতার কথা বলে ফায়দা লোটার মানুষের যে কমতি নেই, তারই একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ দেওয়া যাবে সাভারের কাতলাপুরের বংশী নদীর মিলন ঘাটে।

যাত্রী পারাপারের জন্য যে দুটি ট্রলার এখানে ব্যবহৃত হতো, সেই ট্রলার দুটি নিয়েই কাহিনি। ইজারাদারের কাছে ‘মাত্র’ ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছেন খান বংশীয় কয়েকজন। এ দেশ থেকে আইয়ুব খান, ইয়াহিয়া খানদের হটিয়ে দেওয়া হলেও অন্তর খান, মোর্শেদ খানেরা রয়ে গেছেন। সাভারের ওই এলাকায় তাঁরা এখন কিছু ‘করে’ খেতে চাইছেন। বিএনপির এই নেতাদের খায়েশ হয়েছে চাঁদাবাজির, সে কথাই জানিয়েছেন ইজারাদারের ছেলে। চাঁদা না পেয়ে ইজারাদারকে মারধরও করেছেন তাঁরা। এবং নগদ অর্থ না পাওয়ায় অস্ত্রের মুখে স্থানীয় মানুষদের ভয় দেখিয়ে নিয়ে গেছেন ট্রলার দুটি! নিশ্চয়ই তাঁরা ভাবছেন, ‘টাকা তো দিলি না, এখন বোঝ, কত ধানে কত চাল!’

আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটেছে দম্ভের কারণে আর কাউকে কোনো রকম ‘স্পেস’ না দেওয়ার কারণে। সব প্রতিষ্ঠান ভেঙে ফেলা বা প্রতিষ্ঠানগুলোর বড় ধরনের ক্ষতি ডেকে আনার কারণে। অথচ এখনো সেই একই ট্র্যাডিশনে চলছে দেশ। শুধু ক্ষমতার পালাবদল হয়েছে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির নাজুক অবস্থার সুযোগে যে যেখানে পারছে লুটেপুটে খাচ্ছে। সবার মুখে মুক্তির বার্তা, কিন্তু সাধারণ জনগণ সেই মুক্তির ঠিকানা পায়নি। নতুন ও পুরোনো রাজনৈতিক দলগুলোর আচরণেই বোঝা যাচ্ছে—দেশ সেই তিমিরেই রয়ে গেছে, যে তিমিরে ছিল।

বিএনপির নামেই সবচেয়ে বেশি লুটপাট, চাঁদাবাজির অভিযোগ আসছে। তাই বলে অন্য দলগুলো নীরব দর্শক হয়ে আছে—এ রকম ভাববার কোনো কারণ নেই। ওয়াসার নিয়োগের ব্যাপারে শিক্ষার্থীদের তৈরি করা নতুন দলটির সম্পৃক্তির কথাও শোনা যাচ্ছে। সরকারি কর্মচারীদের রদবদলে কারা ঘুঁটি নাড়ছে, সে ব্যাপারেও বহু কথা শোনা যায়। আমরা সেসব বিষয়ে বিশদ আলোচনায় যাব না। আমরা এখন ওই অন্তর খান ও মোর্শেদ খানেরা যেন সাভার গিলে ‘খেতে’ না পারেন, সেদিকে নজর দিতে পারি। ট্রলার দুটো মটর দানার মতো ছোট নয় বলেই ওগুলো খুঁজে পাওয়া গেছে। খানেরা বেশি দূর নিয়ে যেতে পারেনি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এই দৃর্বৃত্তদের গ্রেপ্তার করতে না পারলেও ট্রলার দুটি একদিন পরই উদ্ধার করতে পেরেছে। এখন দুর্বৃত্তদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে। সময় এসেছে, জনগণের ভেতর থেকেও প্রতিরোধ জেগে উঠতে হবে। রাজনীতির নামে চাঁদাবাজি-লুটপাট দেশকে অন্ধকারের দিকেই নিয়ে যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ডিএনসিসির পদ ছাড়লেন এস্তোনিয়ার নাগরিক আমিনুল ইসলাম

ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল নিয়ে ভারতের সঙ্গে উত্তেজনা, চ্যালেঞ্জের মুখে বাংলাদেশ

এনআইডির নাম ও জন্মতারিখ সংশোধনের দায়িত্বে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা

পদত্যাগ করব না, আলোচনা করে সমাধান করব: কুয়েট উপাচার্য

কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর অতর্কিত গুলি, নিহত ২৬

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত