চিনির ২৭ টাকা কারা খাচ্ছে?

সম্পাদকীয়
প্রকাশ : ০৪ অক্টোবর ২০২১, ০৮: ৩০

ভোক্তার আর শান্তি নেই! তাঁরা যেন শাঁখের করাতের নিচে; দুদিক দিয়ে কাটে! নানান অজুহাতে ভোক্তার পকেট কাটার আয়োজন সব দিকে। এমনিতেই করোনার কারণে ভোক্তার পকেট  খালি। তার মধ্যে বাজার গরম। এমন কোনো পণ্য নেই যার দাম বাড়েনি। শুধু বাড়েইনি; বলা যায় কিছু কিছু পণ্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। ভোক্তারা যখন কায়ক্লেশে বেঁচে থাকার লড়াই করছেন, তখনই জানা গেল দেশীয় চিনির দামে নৈরাজ্যের কথা।

চিনির বাজারে কারসাজি করে দাম বাড়ানোর ঘটনা নতুন নয়। বিভিন্ন সময়ে বৈশ্বিক বাজারে দাম বৃদ্ধি, শুল্ক বেশিসহ নানান অজুহাতে পণ্যটির দাম বাড়ানোর প্রতিযোগিতা কিছুদিন ধরেই চলছে। চিনির বাজারটি বলা যায় রীতিমতো করপোরেটদের দখলে চলে গেছে। তাতেও সমস্যা হতো না, যদি তারা অতিমুনাফা না করত। একসময়ের দেশীয় উৎপাদননির্ভর পণ্যটি এখন তাদের দখলে এবং বলা যায় চাহিদার প্রায় পুরোটাই আমদানিনির্ভর। মাত্র অল্প কিছু পরিমাণ স্থানীয়ভাবে সরকারি চিনিকলের মাধ্যমে উৎপাদন হলেও নতুন করে এখানেও একটি অতিমুনাফালোভী চক্রের কারসাজি দেখা যাচ্ছে।

আজকের পত্রিকায় খবর এসেছে, দেশীয় চিনির বাজারও অস্থির করার অপচেষ্টা চলছে। প্রতি কেজি চিনির পাইকারি ও খুচরা দামে ব্যাপক পার্থক্য ধরা পড়েছে। সরকার ডিলারদের কাছে রাষ্ট্রায়ত্ত চিনিকলে উৎপাদিত প্রতি কেজি খোলা চিনি বিক্রি করছে ৬৩ টাকায়। অথচ খুচরা বাজারে একজন ভোক্তাকে তা কিনতে হচ্ছে ৯০ টাকায়। প্রশ্ন উঠেছে, কেজিতে অতিরিক্ত ২৭ টাকা যাচ্ছে কার পকেটে?

প্রতিবেদন বলছে, বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের অধীনে সক্রিয় ডিলার আছেন ২ হাজার ৯০০ জন। একজন ডিলার মিল থেকে ৫০০ কেজি করে চিনি সরবরাহ পান। ৫০০ কেজি চিনি মিল থেকে সরাসরি তুলতে গেলে তাঁদের খরচ বেশি পড়ে—এ অজুহাতে তাঁরা নিজেদের নামে বরাদ্দের চিনি নিজেরা না তুলে তা অন্যের কাছে বিক্রি করে দিচ্ছেন। এতে বিভিন্ন হাত ঘুরে পণ্যটির দাম বেড়ে যাচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ভোক্তা। বাড়তি দামে চিনি বিক্রি করলেও ডিলারদের বিরুদ্ধে কিছু করার নেই বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অসহায়ত্ব প্রকাশ করছে।

চিনির ডিলারদের এ দৌরাত্ম্য এখনই বন্ধ করতে হবে। সরকারি চিনি যদি ডিলাররা নিজেদের অতিমুনাফার লোভে এভাবে অন্যের কাছে বিক্রি করে দেন, আর তাঁদের বিরুদ্ধে কিছু করার নেই বলে করপোরেশন অসহায়ত্ব প্রকাশ করে, এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়।

যারা এসব করছে তারা অজানা কেউ নয় নিশ্চয়ই। করপোরেশনের কাজ কী? কোন কোন ডিলার নিজের বরাদ্দের চিনি হস্তান্তর করে বাজারে অতিমুনাফাকে উসকে দিচ্ছেন, তা তাদেরই খুঁজে বের করতে হবে। যেহেতু করপোরেশন লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ, সুতরাং তাদেরই বিষয়টি তদন্ত করে যারা এ অপকর্মে লিপ্ত, তাদের লাইসেন্স বাতিল করতে হবে। না হলে করপোরেটরাও তাদের আমদানি করা চিনির দাম আরেক দফা বাড়ানোর সুযোগ খুঁজবে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আবু সাঈদকে ৪–৫ ঘণ্টা পরে হাসপাতালে নেওয়া হয়—শেখ হাসিনার দাবির সত্যতা কতটুকু

মেট্রোরেল থেকে আমলাদের বিদায়, অগ্রাধিকার প্রকৌশলীদের

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

বিমানবন্দরে সাংবাদিক নূরুল কবীরকে হয়রানির তদন্তের নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

কবি নজরুল ও সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ৩৫ কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত