Ajker Patrika

জনকল্যাণের বাজেট না হলে গণ অসন্তোষ ঠেকানো যাবে না: সিপিবি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
জনকল্যাণের বাজেট না হলে গণ অসন্তোষ ঠেকানো যাবে না: সিপিবি

একদিকে দ্রব্যমূল্য ও মূল্যস্ফীতির অস্বাভাবিক বৃদ্ধি অন্যদিকে চরম ডলার সংকট—এমন প্রেক্ষাপটে প্রণীত হতে যাচ্ছে প্রায় ৮ লাখ কোটি টাকার বাজেট। এই বাজেটে যদি জনকল্যাণ অথবা সাধারণের সুরক্ষার ব্যবস্থা না থাকে তাহলে আগামীতে গণ অসন্তোষ ঠেকানো যাবে না বলে জানিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)।

আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনে সিপিবির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত ‘বাজেটঃ গণমানুষের ভাবনা’—শীর্ষক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন বক্তারা। সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এম এম আকাশ।

এম এম আকাশ বলেন, ‘বাজেটে পরিপূরক সুরক্ষার ব্যবস্থা না থাকলে, খাদ্য ও জ্বালানির দাম যদি নাগালের মধ্যে রাখার ব্যবস্থা না থাকে এবং যারা দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে যাবেন বা যাচ্ছেন, চাকরি হারাচ্ছেন, আয় বা প্রবৃদ্ধি যাদের ঋণাত্মক হচ্ছে, তাদের জন্য ভর্তুকি বা সুরক্ষামূলক রেশনের ব্যবস্থা না করলে আগামীতে গণ অসন্তোষ ঠেকানো যাবে না।’

সূচনা বক্তব্যে দলের সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘যতক্ষণ পর্যন্ত বাজেটে অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত গণমানুষের বাজেট হবে না।’ বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘অর্থনীতি ধার করে চলছে। ধার শোধ করতে আবার ধার করতে হচ্ছে।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর বলেন, ‘মূল সমস্যাটা হচ্ছে, মানুষের আয় কমেছে, দায় বেড়েছে। সরকারেরও তাই। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরে ৩২২ শতাংশ বৈদেশিক ঋণ বেড়েছে।’ বিভিন্ন অর্থনৈতিক অপরাধ যাচাইয়ের জন্য ফরেনসিক অডিটের আহ্বান জানান তিনি। একই সঙ্গে সর্বজনীন সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি গ্রহণের দাবি জানান।

অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক তাজুল ইসলাম বলেন, ‘দ্রব্যমূল্য এবং ডলার সংকট হলো আসল সংকটের বহিঃপ্রকাশ। আসল সংকট রাজনৈতিক। দেশের সংসদ যদি ঋণখেলাপিদের রক্ষক হয় তাহলে রাজনৈতিক আন্দোলন ছাড়া বিকল্প নেই।’

সভায় কৃষক, গার্মেন্টস শ্রমিক, শিক্ষক, আদিবাসী, সংস্কৃতিকর্মী, পরিবহনসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিরা বাজেট নিয়ে তাদের প্রত্যাশার কথা তুলে ধরেন।

গার্মেন্টস শ্রমিক সোমা আক্তার বলেন, ‘আমরা সকল কারখানা এলাকায় রেশনিং ব্যবস্থা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও হাসপাতাল চাই।’ আদিবাসী ইউনিয়নের নেত্রী রাখী মং বলেন, ‘৩০ লাখ আদিবাসীর জন্য গত বাজেটে ছিল ১০০ কোটি টাকা। আদিবাসীদের জন্য আসন্ন বাজেটে অন্তত ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখতে হবে।’

সভায় সিপিবির সভাপতি মো. শাহ আলম বলেন, ‘দেশের ৯০ শতাংশ মানুষের স্বার্থ বর্তমান সংসদ রক্ষা করছে না। বাজেটে কেবল একটা নির্দিষ্ট শ্রেণির দর্শনের প্রতিফলন ঘটছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত