‘এখন আর কেউ ছেঁড়া জুতা সেলাই করে পরে না’

মো. মাসুম, টঙ্গিবাড়ী (মুন্সিগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৭ নভেম্বর ২০২১, ২০: ১৩
আপডেট : ২৭ নভেম্বর ২০২১, ২০: ৩০

বাপ-দাদারা জুতা সেলাই করতেন তাঁদের পরে আমিও একই পেশায় কাজ করছি। এই পেশায় কাজ করে পাঁচ সদস্যের পরিবার এখন আর চলে না। অন্য কোনো কাজও করতে পারি না। মানুষের এখন টাকা হয়ে গেছে, কেউ ছেঁড়া জুতা সেলাই করে পরে না। আমাদের কেউ সাহায্যও করে না। আক্ষেপের সঙ্গে এই কথাগুলো বলছিলেন ২০ বছর ধরে মুচি পেশায় নিয়োজিত মুন্সিগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার বালিগাঁও বাজারের রঞ্জন দাস। 

মুন্সিগঞ্জ জেলার টঙ্গিবাড়ী উপজেলার বিভিন্ন বাজারে রাস্তার পাশে দেখা যায় মুচি সম্প্রদায়ের লোকজনকে। ছেঁড়া জুতাকে চলার উপযোগী করে দিলেও তাঁদের ভাগ্যের নেই কোনো  পরিবর্তন। খেয়ে না খেয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে কোনোরকমে চলছে তাঁদের জীবন।

উপজেলার বালিগাঁও বাজারের এক পাশে বসে থাকা বেশ কয়েকজন কর্মকার মুচি সম্প্রদায়ের সঙ্গে কথা হলে তাঁরা বলেন, ‘আমাদের মাঝে অনেকেই এই পেশা এখন ছেড়ে দিয়েছেন, সারা দিন কাজ করে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা আয় হয়। এই টাকা দিয়ে কীভাবে পাঁচ থেকে ছয়জনের পরিবার চালাব।’

উপজেলার বড়লিয়া, বালিগাঁও ও দিঘিরপাড় দাসপাড়া এবং ঋষিবাড়ি এলাকার কয়েকজন মুচি সম্প্রদায়ের লোকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জুতা সেলাই কাজ করে এখন আর তাঁদের সংসার চলে না তাই অনেকেই এই পেশা ছেড়ে দিয়ে অন্য কাজ বেছে নিয়েছে। যারা ছোটবেলা থেকে এ কাজ করে আসছেন এখন অন্য কোনো কাজ করতে পারেন না শুধু তাঁরাই এখনো এই কাজ করছেন। এখন আর কেউ তাঁদের সন্তানদের এই কাজ শেখান না। 

দিঘিরপাড় ঋষিবাড়ির জন্টু দাস বলেন, ‘৪০ বছর ধরে এই কাজ করে সংসার চালিয়েছি কিন্তু এখন আর পারছি না, সারা দিন কাজ করে বাড়িতে যাওয়ার সময় চাল-ডাল নিয়ে যেতে পারি না’ 

বালিগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী দুলাল হোসেন বলেন, মুচি সম্প্রদায়ের বেশ কয়েকটি পরিবারকে সব সময় সরকারি সাহায্য সহযোগিতা করা হয়। যদি কেউ বাকি থাকে তাঁদেরও  সহযোগিতার আওতায় আনা হবে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত