দেখতে কেমন ছিলেন ৭৫ হাজার বছর আগের নিয়ান্ডারথাল মানবী

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ০৪ মে ২০২৪, ১১: ৩০

আজ থেকে ৭৫ হাজার বছর আগে, পৃথিবীর বুকে টিকে থাকা মানুষের এক প্রজাতি নিয়ান্ডারথালরা দেখতে ঠিক কেমন ছিলেন তার ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন আন্তর্জাতিক একদল বিজ্ঞানী। নিয়ান্ডারথাল প্রজাতির অবশিষ্ট কঙ্কালের ওপর কারিকুরি ফলিয়ে তাঁরা সেটিকে মানুষের রূপ দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। এ ধরনের প্রচেষ্টা এই প্রথম। 

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একদল প্যালিওআর্টিস্ট বা প্রাগৈতিহাসিক যুগের বৈজ্ঞানিক প্রমাণাদির চিত্র তৈরিতে বিশেষজ্ঞরা ওই নিয়ান্ডারথাল নারীর একটি ত্রি-মাত্রিক মডেল তৈরি করেছেন। 

এ বিষয়ে যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব ক্যামব্রিজের প্যালিওঅ্যানথ্রোপোলজিস্ট বা প্রাগৈতিহাসিক আমলের নৃতত্ত্ব বিশেষজ্ঞ ড. এমা পোমরয় বিবিসিকে বলেন, ‘আমি মনে করি, তিনি (নিয়ান্ডারথাল মানবীর ত্রি-মাত্রিক মডেল) আমাদের জানতে সহায়তা করবেন, তাঁরা আসলে কেমন ছিলেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘যেকোনো ব্যক্তির দেহাবশেষের সঙ্গে কাজ করতে পারাটা আসলে খুবই উত্তেজনাপূর্ণ এবং এটি একটি বিশাল সুযোগ, বিশেষ করে তাঁর মতো বিশেষ একজন।’ 
 
যে কঙ্কাল বা দেহাবশেষের ওপর ভিত্তি করে ওই নিয়ান্ডারথাল মানবীর ত্রিমাত্রিক মডেল তৈরি করা হয়েছে, তা উদ্ধার করা হয়েছে ইরাকের কুর্দিস্থানে অবস্থিত শানিদার গুহা থেকে। ১৯৫০—এর দশকে এই গুহা থেকেই অন্তত ১০ জন নিয়ান্ডারথাল মানব, মানবী ও শিশুর দেহাবশেষ উদ্ধার করা হয়েছে। 

সর্বশেষ, ২০১৫ সালে ইরাকের কুর্দিস্তানের প্রশাসন একদল ব্রিটিশ নৃবিজ্ঞানীকে আমন্ত্রণ জানায় গুহাটি দেখতে। সেই অভিযানে গিয়েই তাঁরা এই নিয়ান্ডারথাল মানবীর দেহাবশেষ খুঁজে পান। তাঁরা এর নামকরণ করেন, শানিদার-জেড নামে। মূলত, গবেষকেরা ওই নারীর শরীরে ঊর্ধ্বাংশ—মেরুদণ্ড, কাঁধ, বাহু ও হাতের অবশেষ উদ্ধার করতে পেরেছিলেন। 
 
পরে কুর্দি প্রশাসনের অনুমতিতে সেই দেহাবশেষ ব্রিটেনে নেওয়া হয় এবং সেগুলোকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার প্রাণান্ত প্রচেষ্টা শুরু করেন বিজ্ঞানীরা। সব মিলিয়ে সেটি করতে এক বছরেরও বেশি সময় লেগে যায়। পরে পুনঃসংযোজিত সেই কঙ্কালকে তুলে দেওয়া হয় নেদারল্যান্ডসে প্যালিওআর্টিস্ট আদ্রিয়ে অ্যান্ড আলফঁস কেনিসের হাতে। তাঁরা মূলত, প্রাচীন দেহাবশেষের জীবিত রূপ কেমন ছিল তার প্রতিকৃতি তৈরিতে স্বনামধন্য। পরে তাঁরা ত্রি-মাত্রিক স্ক্যানারের সহায়তাও ওই নারীর মুখচ্ছবি ফুটিয়ে তোলেন। 

প্রথমদিকে, বিজ্ঞানীরা দেহাবশেষটির কঙ্কালটির লিঙ্গ নিয়ে চিন্তিত ছিলেন। কিন্তু পেলভিক বোনের বা শ্রোণিচক্রের হাড়ের নমুনাসহ অন্যান্য নমুনা বিশ্লেষণ করে তাঁরা নিশ্চিত হন যে, এই কঙ্কালটি একজন নারীরা। এ ছাড়া, দাঁতে এনামেল থেকেও বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত হন যে, এটি একজন নারীর দাঁত। 

বিজ্ঞানীদের অনুমান, ওই নারী তাঁর জীবনের ৪০ এর দশকের মাঝামাঝি মারা গেছেন। কারণ, তাঁর দাঁতগুলো অনেকটাই ক্ষয়ে গিয়েছিল। দাঁতের অবস্থা বিশ্লেষণের ফলাফলের বিষয়ে ড. পোমরয় বলেন, সম্ভবত তিনি স্বাভাবিকভাবেই মারা গিয়েছিলেন।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত