
পিঁপড়া থেকে মাছ, কাক, অনেক প্রাণী হাতিয়ার হিসেবে পাথর ব্যবহার করে। কিন্তু সাম্প্রতিক কাল পর্যন্ত শুধু মানুষ এবং মানুষের পূর্বপুরুষদের (আত্মীয় প্রজাতি) পাথরের হাতিয়ার ব্যবহারের একটি স্বীকৃত প্রত্নতাত্ত্বিক রেকর্ড ছিল। এখন বিজ্ঞানীরা স্বীকার করছেন, এ ধরনের হাতিয়ার ব্যবহারে দক্ষ শুধু হোমিনিনরাই ছিল না। অর্থাৎ, শুধু মানুষ বা তাদের আত্মীয় প্রজাতিই নয়, অন্য প্রজাতিও ‘প্রস্তর যুগে’ প্রবেশ করেছিল!
সাম্প্রতিক গবেষণা দেখা গেছে, প্রস্তর যুগ মানুষের একচেটিয়া সভ্যতা নয়। শিম্পাঞ্জি, ক্যাপুচিন বানর এবং লম্বা লেজওয়ালা ম্যাকাকও প্রস্তর যুগ পার করেছে। প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমাণ রয়েছে যে, এসব প্রজাতি অতীতে পাথরের সরঞ্জাম ব্যবহার করত। সামুদ্রিক ভোঁদড়ও সম্ভবত পরবর্তীতে এই ক্লাবে যোগ দিয়েছে।
প্রাইমেট প্রজাতির প্রতিটিরই হাতিয়ার ব্যবহারের দক্ষতা আছে। এটি সামাজিকভাবে শেখা একটি আচরণ। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাইমেট প্রত্নতাত্ত্বিক ক্যাটারিনা আলমেদা–ওয়ারেন বলেন, এটি ওদের সংস্কৃতির অংশ হয়ে উঠেছে। ক্যাটারিনা শিম্পাঞ্জি নিয়ে গবেষণা করেন।
তিনি বলেন, বিভিন্ন গ্রুপ বিভিন্ন টুল ব্যবহার করে। উদাহরণস্বরূপ কিছু শিম্পাঞ্জি গোষ্ঠী নারিকেল জাতীয় ফল ভাঙার জন্য একটি সমতল পৃষ্ঠ বিশিষ্ট পাথরের ওপর রেখে আরেকটি ভারী পাথর বা শিলা দিয়ে আঘাত করার কৌশল জানে।
শিম্পাঞ্জিরা (প্যান ট্রোগ্লোডাইটস) হাজার বছর ধরে হাতুড়ি এবং পাথর বা শিলার মুগুরের মতো হাতিয়ার ব্যবহার করে আসছে। প্রসিডিংস অব দ্য ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্সেস জার্নালে ২০০৭ সালে প্রকাশিত গবেষণা অনুসারে, আইভরি কোস্টের শিম্পাঞ্জিরা ৪ হাজার ৩০০ বছর আগেও শিম্পাঞ্জিরা এ ধরনের ব্যবহার করত। তথাকথিত এই ‘শিম্পাঞ্জি প্রস্তর যুগ’ আফ্রিকার চিরহরিৎ অংশে বসতি স্থাপনকারী মানুষের আগমনেরও অনেক আগের ঘটনা।
ব্রাজিলের ক্যাপুচিন বানর (সাপাজুস লিবিডিনোসাস) নারিকেল জাতীয় ফল ফাটানোর জন্য পাথরের হাতিয়ার ব্যবহার করে। গবেষকেরা ৩ হাজার বছর আগে ক্যাপুচিনদের ব্যবহৃত নারিকেল ফাটার কাজে ব্যবহৃত পাথর আবিষ্কার করেছেন। নেচার ইকোলজি অ্যান্ড ইভোলিউশন জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, বিভিন্ন খাবার সংগ্রহ ও প্রক্রিয়ার ভিত্তিতে এদের সরঞ্জামের শৈলীগুলোতেও হাজার হাজার বছর ধরে পরিবর্তিত হয়ে এসেছে।
থাইল্যান্ডের একটি সমুদ্র সৈকতে একটি গবেষক দল পাথরের হাতিয়ার খুঁজে পেয়েছেন। বলা হচ্ছে, একসময় বার্মিজ লম্ব লেজ বিশিষ্ট ম্যাকাক নারিকেল জাতীয় ফলের খোলস ছাড়ানোর জন্য এটি ব্যবহার করত। জার্নাল অব হিউম্যান ইভোলিউশনে ২০১৩ সালের একটি গবেষণাপত্র অনুসারে, এই সরঞ্জামগুলো সম্ভবত ১৯৫০ এবং ২০০৪ সালের এর মধ্যে ব্যবহার করা হয়েছে।
এই প্রাইমেটরা কীভাবে পাথরের সরঞ্জাম ব্যবহার করতে শিখেছিল তা স্পষ্ট নয়। শিম্পাঞ্জিদের ক্ষেত্রে একেবারে প্রাথমিককালের পাথরের সরঞ্জামগুলো থেকে ধারণা করা যায়, এরা ‘মুগুরের মতো বস্তু ব্যবহারের সংস্কৃতি’ মানুষ এবং শিম্পাঞ্জিদের একটি সাধারণ পূর্বপুরুষ থেকে উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছিল।
তবে এটাও সম্ভব যে, মানুষ এবং শিম্পাঞ্জিরা একে অপরের থেকে স্বাধীনভাবে পাথরের হাতিয়ার ব্যবহার করতে শিখেছে। পাথরের হাতিয়ার ব্যবহারে দক্ষ অন্যান্য প্রাণীর ক্ষেত্রেও সেটিই হতে পারে।
সাও পাওলো বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞানী এবং প্রাইমাটোলজিস্ট তিয়াগো ফালোতিকো বলেন, পাথরের সরঞ্জামগুলো একটা অস্পষ্টতা রয়েছে। ফালোতিকো ক্যাপুচিন টুলস গবেষণার সহ–লেখক ছিলেন। তিনি বলেন, কিন্তু কোনো প্রাণী প্রজাতির ‘প্রস্তর যুগে’ প্রবেশ করার অর্থ এই নয় যে, সেই প্রজাতি শিগগিরই যে কোনও সময় মানব প্রজাতিতে উন্নীত হওয়ার পথ অনুসরণ করবে। এর অর্থ এই নয় যে, পাথরের সরঞ্জাম ব্যবহারকারীরা অন্যান্য সরঞ্জাম ব্যবহারকারী প্রাণীর তুলনায় বুদ্ধিমান।
২০২২ সালে আর্জেন্টিনার একটি গবেষক দল অনুমান করেছিলেন, ব্রাজিলে ৫০ হাজার বছর আগের ‘মানব বসতি’ আসলে ক্যাপুচিন বানরেরাই পত্তন করেছিল। দ্য হোলোসিন জার্নালে এই গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছিল। গবেষকেরা দেখেছেন, পাথরের সরঞ্জামগুলো কোয়ার্টজাইট এবং কোয়ার্টজ কোবল থেকে তৈরি। এগুলো ব্রাজিলের দ্য গ্রেট ক্যাপিভারা ন্যাশনাল পার্কে বর্তমানের ক্যাপুচিন বানরদের তৈরি সরঞ্জামগুলোর মতোই।
এ ব্যাপারে ফালোতিকো বলেন, এই গবেষণাটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিতে পারে না। এটি নিয়ে আরও অনুসন্ধান ও বিশ্লেষণ প্রয়োজন। কিন্তু যদি এটি সত্য হয় তাহলে, হাজার হাজার বছর ধরে পাথরের হাতিয়ার ব্যবহারে দক্ষ ক্যাপুচিন বানরের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলো সপক্ষেই শক্ত ভিত্তি তৈরি করবে এবং ওই সময় মানুষের দক্ষিণ আমেরিকায় বসতি স্থাপন নিয়ে যে বিতর্ক রয়েছে সেটিই জারি থাকবে।
কোন সরঞ্জামগুলো কোন প্রজাতি ব্যবহার করত এটি জানা গেলে, অন্য প্রজাতির তৈরি সরঞ্জামগুলো পরোক্ষভাবে মানব প্রত্নতত্ত্ব সম্পর্কেও ধারণা দিতে পারে। আলমেইদা–ওয়ারেন বলেন, ৩৩ লাখ বছর আগের প্রাচীনতম হোমিনিন–নির্মিত সরঞ্জাম আংশিকভাবে পাওয়া যায়। কারণ প্রাইমেটদের তৈরি সরঞ্জামগুলো প্রত্নতাত্ত্বিকদের ধারণা দিতে পারে মানুষের প্রাচীন হাতিয়ার খুঁজতে তাঁদের কী সন্ধান করতে হবে।
এই গবেষক আরও বলেন, শুধু মানুষের জন্য ‘প্রস্তর যুগ’ বলে একটি নির্দিষ্ট সময়ে পাথরের হাতিয়ার ব্যবহারকে বোঝানো হয়। কিন্তু মানুষ তো শুধু পাথরের হাতিয়ার ব্যবহার করেনি। অন্য প্রজাতিগুলোর ‘প্রস্তর যুগ’ও তেমনি। বর্তমান সময়ে প্রাইমেটদের ব্যবহৃত সরঞ্জামগুলোর অধ্যয়ন গবেষকদের মানব সরঞ্জামগুলো সম্পর্কে ধারণা দিতে পারে। সেগুলোর অস্তিত্ব হয়তো এখন অনেকখানিই বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
উদাহরণস্বরূপ, শিম্পাঞ্জিরা মাছ ধরতে গাছের লম্বা ছাল ব্যবহার করে যেগুলোর মধ্যে শুঁয়োপোকা থাকত। শুঁয়োপোকা এরা টোপ হিসেবে ব্যবহার করে। এ ছাড়া ক্ষত সারানোর জন্য এরা ঔষধি লতাপাতাও ব্যবহার করে। অনেক ক্ষেত্রে উদ্ভিদের ব্যবহার আরও জটিল বলে উল্লেখ করেন আলমেইদা–ওয়ারেন।
মানুষ ছাড়া অন্য প্রজাতির প্রত্নতত্ত্বও সময়ের সঙ্গে এই প্রজাতির আচরণের বিবর্তনের ওপর আলোকপাত করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, প্রাচীন ক্যাপুচিন বানর অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে দেখা যায়, বিভিন্ন খাবার সংগ্রহের জন্য এই বানরেরা শতাব্দী ধরে এদের হাতিয়ারগুলোতেও পরিবর্তন এনেছে।
ক্যালিফোর্নিয়ার গবেষকেরা দেখেছেন, সামুদ্রিক ভোঁদড়েরা পাথরের ওপর রেখে ঝিনুকের খোলস ফাটিয়ে নেয়। সায়েন্টিফিক রিপোর্ট জার্নালে ২০১৯ সালে প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুসারে, গবেষকেরা সামুদ্রিক ভোঁদড়ের ব্যবহৃত পাথর শনাক্ত করতে পেরেছেন।
উত্তর আমেরিকার পশ্চিম উপকূল বরাবর সামুদ্রিক ভোঁদড়ের সংখ্যা কমে গেছে। এখন যেহেতু গবেষকেরা জানেন তাঁদের কী অনুসন্ধান করতে হবে, সেহেতু ভোঁদড়ের বসতিগুলোর ইতিহাস এবং এরা যে বাস্তুতন্ত্রকে প্রভাবিত করেছে সেগুলো খুঁজে বের করতে পারার আশা করছেন।

পিঁপড়া থেকে মাছ, কাক, অনেক প্রাণী হাতিয়ার হিসেবে পাথর ব্যবহার করে। কিন্তু সাম্প্রতিক কাল পর্যন্ত শুধু মানুষ এবং মানুষের পূর্বপুরুষদের (আত্মীয় প্রজাতি) পাথরের হাতিয়ার ব্যবহারের একটি স্বীকৃত প্রত্নতাত্ত্বিক রেকর্ড ছিল। এখন বিজ্ঞানীরা স্বীকার করছেন, এ ধরনের হাতিয়ার ব্যবহারে দক্ষ শুধু হোমিনিনরাই ছিল না। অর্থাৎ, শুধু মানুষ বা তাদের আত্মীয় প্রজাতিই নয়, অন্য প্রজাতিও ‘প্রস্তর যুগে’ প্রবেশ করেছিল!
সাম্প্রতিক গবেষণা দেখা গেছে, প্রস্তর যুগ মানুষের একচেটিয়া সভ্যতা নয়। শিম্পাঞ্জি, ক্যাপুচিন বানর এবং লম্বা লেজওয়ালা ম্যাকাকও প্রস্তর যুগ পার করেছে। প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমাণ রয়েছে যে, এসব প্রজাতি অতীতে পাথরের সরঞ্জাম ব্যবহার করত। সামুদ্রিক ভোঁদড়ও সম্ভবত পরবর্তীতে এই ক্লাবে যোগ দিয়েছে।
প্রাইমেট প্রজাতির প্রতিটিরই হাতিয়ার ব্যবহারের দক্ষতা আছে। এটি সামাজিকভাবে শেখা একটি আচরণ। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাইমেট প্রত্নতাত্ত্বিক ক্যাটারিনা আলমেদা–ওয়ারেন বলেন, এটি ওদের সংস্কৃতির অংশ হয়ে উঠেছে। ক্যাটারিনা শিম্পাঞ্জি নিয়ে গবেষণা করেন।
তিনি বলেন, বিভিন্ন গ্রুপ বিভিন্ন টুল ব্যবহার করে। উদাহরণস্বরূপ কিছু শিম্পাঞ্জি গোষ্ঠী নারিকেল জাতীয় ফল ভাঙার জন্য একটি সমতল পৃষ্ঠ বিশিষ্ট পাথরের ওপর রেখে আরেকটি ভারী পাথর বা শিলা দিয়ে আঘাত করার কৌশল জানে।
শিম্পাঞ্জিরা (প্যান ট্রোগ্লোডাইটস) হাজার বছর ধরে হাতুড়ি এবং পাথর বা শিলার মুগুরের মতো হাতিয়ার ব্যবহার করে আসছে। প্রসিডিংস অব দ্য ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্সেস জার্নালে ২০০৭ সালে প্রকাশিত গবেষণা অনুসারে, আইভরি কোস্টের শিম্পাঞ্জিরা ৪ হাজার ৩০০ বছর আগেও শিম্পাঞ্জিরা এ ধরনের ব্যবহার করত। তথাকথিত এই ‘শিম্পাঞ্জি প্রস্তর যুগ’ আফ্রিকার চিরহরিৎ অংশে বসতি স্থাপনকারী মানুষের আগমনেরও অনেক আগের ঘটনা।
ব্রাজিলের ক্যাপুচিন বানর (সাপাজুস লিবিডিনোসাস) নারিকেল জাতীয় ফল ফাটানোর জন্য পাথরের হাতিয়ার ব্যবহার করে। গবেষকেরা ৩ হাজার বছর আগে ক্যাপুচিনদের ব্যবহৃত নারিকেল ফাটার কাজে ব্যবহৃত পাথর আবিষ্কার করেছেন। নেচার ইকোলজি অ্যান্ড ইভোলিউশন জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, বিভিন্ন খাবার সংগ্রহ ও প্রক্রিয়ার ভিত্তিতে এদের সরঞ্জামের শৈলীগুলোতেও হাজার হাজার বছর ধরে পরিবর্তিত হয়ে এসেছে।
থাইল্যান্ডের একটি সমুদ্র সৈকতে একটি গবেষক দল পাথরের হাতিয়ার খুঁজে পেয়েছেন। বলা হচ্ছে, একসময় বার্মিজ লম্ব লেজ বিশিষ্ট ম্যাকাক নারিকেল জাতীয় ফলের খোলস ছাড়ানোর জন্য এটি ব্যবহার করত। জার্নাল অব হিউম্যান ইভোলিউশনে ২০১৩ সালের একটি গবেষণাপত্র অনুসারে, এই সরঞ্জামগুলো সম্ভবত ১৯৫০ এবং ২০০৪ সালের এর মধ্যে ব্যবহার করা হয়েছে।
এই প্রাইমেটরা কীভাবে পাথরের সরঞ্জাম ব্যবহার করতে শিখেছিল তা স্পষ্ট নয়। শিম্পাঞ্জিদের ক্ষেত্রে একেবারে প্রাথমিককালের পাথরের সরঞ্জামগুলো থেকে ধারণা করা যায়, এরা ‘মুগুরের মতো বস্তু ব্যবহারের সংস্কৃতি’ মানুষ এবং শিম্পাঞ্জিদের একটি সাধারণ পূর্বপুরুষ থেকে উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছিল।
তবে এটাও সম্ভব যে, মানুষ এবং শিম্পাঞ্জিরা একে অপরের থেকে স্বাধীনভাবে পাথরের হাতিয়ার ব্যবহার করতে শিখেছে। পাথরের হাতিয়ার ব্যবহারে দক্ষ অন্যান্য প্রাণীর ক্ষেত্রেও সেটিই হতে পারে।
সাও পাওলো বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞানী এবং প্রাইমাটোলজিস্ট তিয়াগো ফালোতিকো বলেন, পাথরের সরঞ্জামগুলো একটা অস্পষ্টতা রয়েছে। ফালোতিকো ক্যাপুচিন টুলস গবেষণার সহ–লেখক ছিলেন। তিনি বলেন, কিন্তু কোনো প্রাণী প্রজাতির ‘প্রস্তর যুগে’ প্রবেশ করার অর্থ এই নয় যে, সেই প্রজাতি শিগগিরই যে কোনও সময় মানব প্রজাতিতে উন্নীত হওয়ার পথ অনুসরণ করবে। এর অর্থ এই নয় যে, পাথরের সরঞ্জাম ব্যবহারকারীরা অন্যান্য সরঞ্জাম ব্যবহারকারী প্রাণীর তুলনায় বুদ্ধিমান।
২০২২ সালে আর্জেন্টিনার একটি গবেষক দল অনুমান করেছিলেন, ব্রাজিলে ৫০ হাজার বছর আগের ‘মানব বসতি’ আসলে ক্যাপুচিন বানরেরাই পত্তন করেছিল। দ্য হোলোসিন জার্নালে এই গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছিল। গবেষকেরা দেখেছেন, পাথরের সরঞ্জামগুলো কোয়ার্টজাইট এবং কোয়ার্টজ কোবল থেকে তৈরি। এগুলো ব্রাজিলের দ্য গ্রেট ক্যাপিভারা ন্যাশনাল পার্কে বর্তমানের ক্যাপুচিন বানরদের তৈরি সরঞ্জামগুলোর মতোই।
এ ব্যাপারে ফালোতিকো বলেন, এই গবেষণাটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিতে পারে না। এটি নিয়ে আরও অনুসন্ধান ও বিশ্লেষণ প্রয়োজন। কিন্তু যদি এটি সত্য হয় তাহলে, হাজার হাজার বছর ধরে পাথরের হাতিয়ার ব্যবহারে দক্ষ ক্যাপুচিন বানরের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলো সপক্ষেই শক্ত ভিত্তি তৈরি করবে এবং ওই সময় মানুষের দক্ষিণ আমেরিকায় বসতি স্থাপন নিয়ে যে বিতর্ক রয়েছে সেটিই জারি থাকবে।
কোন সরঞ্জামগুলো কোন প্রজাতি ব্যবহার করত এটি জানা গেলে, অন্য প্রজাতির তৈরি সরঞ্জামগুলো পরোক্ষভাবে মানব প্রত্নতত্ত্ব সম্পর্কেও ধারণা দিতে পারে। আলমেইদা–ওয়ারেন বলেন, ৩৩ লাখ বছর আগের প্রাচীনতম হোমিনিন–নির্মিত সরঞ্জাম আংশিকভাবে পাওয়া যায়। কারণ প্রাইমেটদের তৈরি সরঞ্জামগুলো প্রত্নতাত্ত্বিকদের ধারণা দিতে পারে মানুষের প্রাচীন হাতিয়ার খুঁজতে তাঁদের কী সন্ধান করতে হবে।
এই গবেষক আরও বলেন, শুধু মানুষের জন্য ‘প্রস্তর যুগ’ বলে একটি নির্দিষ্ট সময়ে পাথরের হাতিয়ার ব্যবহারকে বোঝানো হয়। কিন্তু মানুষ তো শুধু পাথরের হাতিয়ার ব্যবহার করেনি। অন্য প্রজাতিগুলোর ‘প্রস্তর যুগ’ও তেমনি। বর্তমান সময়ে প্রাইমেটদের ব্যবহৃত সরঞ্জামগুলোর অধ্যয়ন গবেষকদের মানব সরঞ্জামগুলো সম্পর্কে ধারণা দিতে পারে। সেগুলোর অস্তিত্ব হয়তো এখন অনেকখানিই বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
উদাহরণস্বরূপ, শিম্পাঞ্জিরা মাছ ধরতে গাছের লম্বা ছাল ব্যবহার করে যেগুলোর মধ্যে শুঁয়োপোকা থাকত। শুঁয়োপোকা এরা টোপ হিসেবে ব্যবহার করে। এ ছাড়া ক্ষত সারানোর জন্য এরা ঔষধি লতাপাতাও ব্যবহার করে। অনেক ক্ষেত্রে উদ্ভিদের ব্যবহার আরও জটিল বলে উল্লেখ করেন আলমেইদা–ওয়ারেন।
মানুষ ছাড়া অন্য প্রজাতির প্রত্নতত্ত্বও সময়ের সঙ্গে এই প্রজাতির আচরণের বিবর্তনের ওপর আলোকপাত করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, প্রাচীন ক্যাপুচিন বানর অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে দেখা যায়, বিভিন্ন খাবার সংগ্রহের জন্য এই বানরেরা শতাব্দী ধরে এদের হাতিয়ারগুলোতেও পরিবর্তন এনেছে।
ক্যালিফোর্নিয়ার গবেষকেরা দেখেছেন, সামুদ্রিক ভোঁদড়েরা পাথরের ওপর রেখে ঝিনুকের খোলস ফাটিয়ে নেয়। সায়েন্টিফিক রিপোর্ট জার্নালে ২০১৯ সালে প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুসারে, গবেষকেরা সামুদ্রিক ভোঁদড়ের ব্যবহৃত পাথর শনাক্ত করতে পেরেছেন।
উত্তর আমেরিকার পশ্চিম উপকূল বরাবর সামুদ্রিক ভোঁদড়ের সংখ্যা কমে গেছে। এখন যেহেতু গবেষকেরা জানেন তাঁদের কী অনুসন্ধান করতে হবে, সেহেতু ভোঁদড়ের বসতিগুলোর ইতিহাস এবং এরা যে বাস্তুতন্ত্রকে প্রভাবিত করেছে সেগুলো খুঁজে বের করতে পারার আশা করছেন।

পিঁপড়া থেকে মাছ, কাক, অনেক প্রাণী হাতিয়ার হিসেবে পাথর ব্যবহার করে। কিন্তু সাম্প্রতিক কাল পর্যন্ত শুধু মানুষ এবং মানুষের পূর্বপুরুষদের (আত্মীয় প্রজাতি) পাথরের হাতিয়ার ব্যবহারের একটি স্বীকৃত প্রত্নতাত্ত্বিক রেকর্ড ছিল। এখন বিজ্ঞানীরা স্বীকার করছেন, এ ধরনের হাতিয়ার ব্যবহারে দক্ষ শুধু হোমিনিনরাই ছিল না। অর্থাৎ, শুধু মানুষ বা তাদের আত্মীয় প্রজাতিই নয়, অন্য প্রজাতিও ‘প্রস্তর যুগে’ প্রবেশ করেছিল!
সাম্প্রতিক গবেষণা দেখা গেছে, প্রস্তর যুগ মানুষের একচেটিয়া সভ্যতা নয়। শিম্পাঞ্জি, ক্যাপুচিন বানর এবং লম্বা লেজওয়ালা ম্যাকাকও প্রস্তর যুগ পার করেছে। প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমাণ রয়েছে যে, এসব প্রজাতি অতীতে পাথরের সরঞ্জাম ব্যবহার করত। সামুদ্রিক ভোঁদড়ও সম্ভবত পরবর্তীতে এই ক্লাবে যোগ দিয়েছে।
প্রাইমেট প্রজাতির প্রতিটিরই হাতিয়ার ব্যবহারের দক্ষতা আছে। এটি সামাজিকভাবে শেখা একটি আচরণ। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাইমেট প্রত্নতাত্ত্বিক ক্যাটারিনা আলমেদা–ওয়ারেন বলেন, এটি ওদের সংস্কৃতির অংশ হয়ে উঠেছে। ক্যাটারিনা শিম্পাঞ্জি নিয়ে গবেষণা করেন।
তিনি বলেন, বিভিন্ন গ্রুপ বিভিন্ন টুল ব্যবহার করে। উদাহরণস্বরূপ কিছু শিম্পাঞ্জি গোষ্ঠী নারিকেল জাতীয় ফল ভাঙার জন্য একটি সমতল পৃষ্ঠ বিশিষ্ট পাথরের ওপর রেখে আরেকটি ভারী পাথর বা শিলা দিয়ে আঘাত করার কৌশল জানে।
শিম্পাঞ্জিরা (প্যান ট্রোগ্লোডাইটস) হাজার বছর ধরে হাতুড়ি এবং পাথর বা শিলার মুগুরের মতো হাতিয়ার ব্যবহার করে আসছে। প্রসিডিংস অব দ্য ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্সেস জার্নালে ২০০৭ সালে প্রকাশিত গবেষণা অনুসারে, আইভরি কোস্টের শিম্পাঞ্জিরা ৪ হাজার ৩০০ বছর আগেও শিম্পাঞ্জিরা এ ধরনের ব্যবহার করত। তথাকথিত এই ‘শিম্পাঞ্জি প্রস্তর যুগ’ আফ্রিকার চিরহরিৎ অংশে বসতি স্থাপনকারী মানুষের আগমনেরও অনেক আগের ঘটনা।
ব্রাজিলের ক্যাপুচিন বানর (সাপাজুস লিবিডিনোসাস) নারিকেল জাতীয় ফল ফাটানোর জন্য পাথরের হাতিয়ার ব্যবহার করে। গবেষকেরা ৩ হাজার বছর আগে ক্যাপুচিনদের ব্যবহৃত নারিকেল ফাটার কাজে ব্যবহৃত পাথর আবিষ্কার করেছেন। নেচার ইকোলজি অ্যান্ড ইভোলিউশন জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, বিভিন্ন খাবার সংগ্রহ ও প্রক্রিয়ার ভিত্তিতে এদের সরঞ্জামের শৈলীগুলোতেও হাজার হাজার বছর ধরে পরিবর্তিত হয়ে এসেছে।
থাইল্যান্ডের একটি সমুদ্র সৈকতে একটি গবেষক দল পাথরের হাতিয়ার খুঁজে পেয়েছেন। বলা হচ্ছে, একসময় বার্মিজ লম্ব লেজ বিশিষ্ট ম্যাকাক নারিকেল জাতীয় ফলের খোলস ছাড়ানোর জন্য এটি ব্যবহার করত। জার্নাল অব হিউম্যান ইভোলিউশনে ২০১৩ সালের একটি গবেষণাপত্র অনুসারে, এই সরঞ্জামগুলো সম্ভবত ১৯৫০ এবং ২০০৪ সালের এর মধ্যে ব্যবহার করা হয়েছে।
এই প্রাইমেটরা কীভাবে পাথরের সরঞ্জাম ব্যবহার করতে শিখেছিল তা স্পষ্ট নয়। শিম্পাঞ্জিদের ক্ষেত্রে একেবারে প্রাথমিককালের পাথরের সরঞ্জামগুলো থেকে ধারণা করা যায়, এরা ‘মুগুরের মতো বস্তু ব্যবহারের সংস্কৃতি’ মানুষ এবং শিম্পাঞ্জিদের একটি সাধারণ পূর্বপুরুষ থেকে উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছিল।
তবে এটাও সম্ভব যে, মানুষ এবং শিম্পাঞ্জিরা একে অপরের থেকে স্বাধীনভাবে পাথরের হাতিয়ার ব্যবহার করতে শিখেছে। পাথরের হাতিয়ার ব্যবহারে দক্ষ অন্যান্য প্রাণীর ক্ষেত্রেও সেটিই হতে পারে।
সাও পাওলো বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞানী এবং প্রাইমাটোলজিস্ট তিয়াগো ফালোতিকো বলেন, পাথরের সরঞ্জামগুলো একটা অস্পষ্টতা রয়েছে। ফালোতিকো ক্যাপুচিন টুলস গবেষণার সহ–লেখক ছিলেন। তিনি বলেন, কিন্তু কোনো প্রাণী প্রজাতির ‘প্রস্তর যুগে’ প্রবেশ করার অর্থ এই নয় যে, সেই প্রজাতি শিগগিরই যে কোনও সময় মানব প্রজাতিতে উন্নীত হওয়ার পথ অনুসরণ করবে। এর অর্থ এই নয় যে, পাথরের সরঞ্জাম ব্যবহারকারীরা অন্যান্য সরঞ্জাম ব্যবহারকারী প্রাণীর তুলনায় বুদ্ধিমান।
২০২২ সালে আর্জেন্টিনার একটি গবেষক দল অনুমান করেছিলেন, ব্রাজিলে ৫০ হাজার বছর আগের ‘মানব বসতি’ আসলে ক্যাপুচিন বানরেরাই পত্তন করেছিল। দ্য হোলোসিন জার্নালে এই গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছিল। গবেষকেরা দেখেছেন, পাথরের সরঞ্জামগুলো কোয়ার্টজাইট এবং কোয়ার্টজ কোবল থেকে তৈরি। এগুলো ব্রাজিলের দ্য গ্রেট ক্যাপিভারা ন্যাশনাল পার্কে বর্তমানের ক্যাপুচিন বানরদের তৈরি সরঞ্জামগুলোর মতোই।
এ ব্যাপারে ফালোতিকো বলেন, এই গবেষণাটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিতে পারে না। এটি নিয়ে আরও অনুসন্ধান ও বিশ্লেষণ প্রয়োজন। কিন্তু যদি এটি সত্য হয় তাহলে, হাজার হাজার বছর ধরে পাথরের হাতিয়ার ব্যবহারে দক্ষ ক্যাপুচিন বানরের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলো সপক্ষেই শক্ত ভিত্তি তৈরি করবে এবং ওই সময় মানুষের দক্ষিণ আমেরিকায় বসতি স্থাপন নিয়ে যে বিতর্ক রয়েছে সেটিই জারি থাকবে।
কোন সরঞ্জামগুলো কোন প্রজাতি ব্যবহার করত এটি জানা গেলে, অন্য প্রজাতির তৈরি সরঞ্জামগুলো পরোক্ষভাবে মানব প্রত্নতত্ত্ব সম্পর্কেও ধারণা দিতে পারে। আলমেইদা–ওয়ারেন বলেন, ৩৩ লাখ বছর আগের প্রাচীনতম হোমিনিন–নির্মিত সরঞ্জাম আংশিকভাবে পাওয়া যায়। কারণ প্রাইমেটদের তৈরি সরঞ্জামগুলো প্রত্নতাত্ত্বিকদের ধারণা দিতে পারে মানুষের প্রাচীন হাতিয়ার খুঁজতে তাঁদের কী সন্ধান করতে হবে।
এই গবেষক আরও বলেন, শুধু মানুষের জন্য ‘প্রস্তর যুগ’ বলে একটি নির্দিষ্ট সময়ে পাথরের হাতিয়ার ব্যবহারকে বোঝানো হয়। কিন্তু মানুষ তো শুধু পাথরের হাতিয়ার ব্যবহার করেনি। অন্য প্রজাতিগুলোর ‘প্রস্তর যুগ’ও তেমনি। বর্তমান সময়ে প্রাইমেটদের ব্যবহৃত সরঞ্জামগুলোর অধ্যয়ন গবেষকদের মানব সরঞ্জামগুলো সম্পর্কে ধারণা দিতে পারে। সেগুলোর অস্তিত্ব হয়তো এখন অনেকখানিই বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
উদাহরণস্বরূপ, শিম্পাঞ্জিরা মাছ ধরতে গাছের লম্বা ছাল ব্যবহার করে যেগুলোর মধ্যে শুঁয়োপোকা থাকত। শুঁয়োপোকা এরা টোপ হিসেবে ব্যবহার করে। এ ছাড়া ক্ষত সারানোর জন্য এরা ঔষধি লতাপাতাও ব্যবহার করে। অনেক ক্ষেত্রে উদ্ভিদের ব্যবহার আরও জটিল বলে উল্লেখ করেন আলমেইদা–ওয়ারেন।
মানুষ ছাড়া অন্য প্রজাতির প্রত্নতত্ত্বও সময়ের সঙ্গে এই প্রজাতির আচরণের বিবর্তনের ওপর আলোকপাত করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, প্রাচীন ক্যাপুচিন বানর অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে দেখা যায়, বিভিন্ন খাবার সংগ্রহের জন্য এই বানরেরা শতাব্দী ধরে এদের হাতিয়ারগুলোতেও পরিবর্তন এনেছে।
ক্যালিফোর্নিয়ার গবেষকেরা দেখেছেন, সামুদ্রিক ভোঁদড়েরা পাথরের ওপর রেখে ঝিনুকের খোলস ফাটিয়ে নেয়। সায়েন্টিফিক রিপোর্ট জার্নালে ২০১৯ সালে প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুসারে, গবেষকেরা সামুদ্রিক ভোঁদড়ের ব্যবহৃত পাথর শনাক্ত করতে পেরেছেন।
উত্তর আমেরিকার পশ্চিম উপকূল বরাবর সামুদ্রিক ভোঁদড়ের সংখ্যা কমে গেছে। এখন যেহেতু গবেষকেরা জানেন তাঁদের কী অনুসন্ধান করতে হবে, সেহেতু ভোঁদড়ের বসতিগুলোর ইতিহাস এবং এরা যে বাস্তুতন্ত্রকে প্রভাবিত করেছে সেগুলো খুঁজে বের করতে পারার আশা করছেন।

পিঁপড়া থেকে মাছ, কাক, অনেক প্রাণী হাতিয়ার হিসেবে পাথর ব্যবহার করে। কিন্তু সাম্প্রতিক কাল পর্যন্ত শুধু মানুষ এবং মানুষের পূর্বপুরুষদের (আত্মীয় প্রজাতি) পাথরের হাতিয়ার ব্যবহারের একটি স্বীকৃত প্রত্নতাত্ত্বিক রেকর্ড ছিল। এখন বিজ্ঞানীরা স্বীকার করছেন, এ ধরনের হাতিয়ার ব্যবহারে দক্ষ শুধু হোমিনিনরাই ছিল না। অর্থাৎ, শুধু মানুষ বা তাদের আত্মীয় প্রজাতিই নয়, অন্য প্রজাতিও ‘প্রস্তর যুগে’ প্রবেশ করেছিল!
সাম্প্রতিক গবেষণা দেখা গেছে, প্রস্তর যুগ মানুষের একচেটিয়া সভ্যতা নয়। শিম্পাঞ্জি, ক্যাপুচিন বানর এবং লম্বা লেজওয়ালা ম্যাকাকও প্রস্তর যুগ পার করেছে। প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমাণ রয়েছে যে, এসব প্রজাতি অতীতে পাথরের সরঞ্জাম ব্যবহার করত। সামুদ্রিক ভোঁদড়ও সম্ভবত পরবর্তীতে এই ক্লাবে যোগ দিয়েছে।
প্রাইমেট প্রজাতির প্রতিটিরই হাতিয়ার ব্যবহারের দক্ষতা আছে। এটি সামাজিকভাবে শেখা একটি আচরণ। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাইমেট প্রত্নতাত্ত্বিক ক্যাটারিনা আলমেদা–ওয়ারেন বলেন, এটি ওদের সংস্কৃতির অংশ হয়ে উঠেছে। ক্যাটারিনা শিম্পাঞ্জি নিয়ে গবেষণা করেন।
তিনি বলেন, বিভিন্ন গ্রুপ বিভিন্ন টুল ব্যবহার করে। উদাহরণস্বরূপ কিছু শিম্পাঞ্জি গোষ্ঠী নারিকেল জাতীয় ফল ভাঙার জন্য একটি সমতল পৃষ্ঠ বিশিষ্ট পাথরের ওপর রেখে আরেকটি ভারী পাথর বা শিলা দিয়ে আঘাত করার কৌশল জানে।
শিম্পাঞ্জিরা (প্যান ট্রোগ্লোডাইটস) হাজার বছর ধরে হাতুড়ি এবং পাথর বা শিলার মুগুরের মতো হাতিয়ার ব্যবহার করে আসছে। প্রসিডিংস অব দ্য ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্সেস জার্নালে ২০০৭ সালে প্রকাশিত গবেষণা অনুসারে, আইভরি কোস্টের শিম্পাঞ্জিরা ৪ হাজার ৩০০ বছর আগেও শিম্পাঞ্জিরা এ ধরনের ব্যবহার করত। তথাকথিত এই ‘শিম্পাঞ্জি প্রস্তর যুগ’ আফ্রিকার চিরহরিৎ অংশে বসতি স্থাপনকারী মানুষের আগমনেরও অনেক আগের ঘটনা।
ব্রাজিলের ক্যাপুচিন বানর (সাপাজুস লিবিডিনোসাস) নারিকেল জাতীয় ফল ফাটানোর জন্য পাথরের হাতিয়ার ব্যবহার করে। গবেষকেরা ৩ হাজার বছর আগে ক্যাপুচিনদের ব্যবহৃত নারিকেল ফাটার কাজে ব্যবহৃত পাথর আবিষ্কার করেছেন। নেচার ইকোলজি অ্যান্ড ইভোলিউশন জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, বিভিন্ন খাবার সংগ্রহ ও প্রক্রিয়ার ভিত্তিতে এদের সরঞ্জামের শৈলীগুলোতেও হাজার হাজার বছর ধরে পরিবর্তিত হয়ে এসেছে।
থাইল্যান্ডের একটি সমুদ্র সৈকতে একটি গবেষক দল পাথরের হাতিয়ার খুঁজে পেয়েছেন। বলা হচ্ছে, একসময় বার্মিজ লম্ব লেজ বিশিষ্ট ম্যাকাক নারিকেল জাতীয় ফলের খোলস ছাড়ানোর জন্য এটি ব্যবহার করত। জার্নাল অব হিউম্যান ইভোলিউশনে ২০১৩ সালের একটি গবেষণাপত্র অনুসারে, এই সরঞ্জামগুলো সম্ভবত ১৯৫০ এবং ২০০৪ সালের এর মধ্যে ব্যবহার করা হয়েছে।
এই প্রাইমেটরা কীভাবে পাথরের সরঞ্জাম ব্যবহার করতে শিখেছিল তা স্পষ্ট নয়। শিম্পাঞ্জিদের ক্ষেত্রে একেবারে প্রাথমিককালের পাথরের সরঞ্জামগুলো থেকে ধারণা করা যায়, এরা ‘মুগুরের মতো বস্তু ব্যবহারের সংস্কৃতি’ মানুষ এবং শিম্পাঞ্জিদের একটি সাধারণ পূর্বপুরুষ থেকে উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছিল।
তবে এটাও সম্ভব যে, মানুষ এবং শিম্পাঞ্জিরা একে অপরের থেকে স্বাধীনভাবে পাথরের হাতিয়ার ব্যবহার করতে শিখেছে। পাথরের হাতিয়ার ব্যবহারে দক্ষ অন্যান্য প্রাণীর ক্ষেত্রেও সেটিই হতে পারে।
সাও পাওলো বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞানী এবং প্রাইমাটোলজিস্ট তিয়াগো ফালোতিকো বলেন, পাথরের সরঞ্জামগুলো একটা অস্পষ্টতা রয়েছে। ফালোতিকো ক্যাপুচিন টুলস গবেষণার সহ–লেখক ছিলেন। তিনি বলেন, কিন্তু কোনো প্রাণী প্রজাতির ‘প্রস্তর যুগে’ প্রবেশ করার অর্থ এই নয় যে, সেই প্রজাতি শিগগিরই যে কোনও সময় মানব প্রজাতিতে উন্নীত হওয়ার পথ অনুসরণ করবে। এর অর্থ এই নয় যে, পাথরের সরঞ্জাম ব্যবহারকারীরা অন্যান্য সরঞ্জাম ব্যবহারকারী প্রাণীর তুলনায় বুদ্ধিমান।
২০২২ সালে আর্জেন্টিনার একটি গবেষক দল অনুমান করেছিলেন, ব্রাজিলে ৫০ হাজার বছর আগের ‘মানব বসতি’ আসলে ক্যাপুচিন বানরেরাই পত্তন করেছিল। দ্য হোলোসিন জার্নালে এই গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছিল। গবেষকেরা দেখেছেন, পাথরের সরঞ্জামগুলো কোয়ার্টজাইট এবং কোয়ার্টজ কোবল থেকে তৈরি। এগুলো ব্রাজিলের দ্য গ্রেট ক্যাপিভারা ন্যাশনাল পার্কে বর্তমানের ক্যাপুচিন বানরদের তৈরি সরঞ্জামগুলোর মতোই।
এ ব্যাপারে ফালোতিকো বলেন, এই গবেষণাটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিতে পারে না। এটি নিয়ে আরও অনুসন্ধান ও বিশ্লেষণ প্রয়োজন। কিন্তু যদি এটি সত্য হয় তাহলে, হাজার হাজার বছর ধরে পাথরের হাতিয়ার ব্যবহারে দক্ষ ক্যাপুচিন বানরের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলো সপক্ষেই শক্ত ভিত্তি তৈরি করবে এবং ওই সময় মানুষের দক্ষিণ আমেরিকায় বসতি স্থাপন নিয়ে যে বিতর্ক রয়েছে সেটিই জারি থাকবে।
কোন সরঞ্জামগুলো কোন প্রজাতি ব্যবহার করত এটি জানা গেলে, অন্য প্রজাতির তৈরি সরঞ্জামগুলো পরোক্ষভাবে মানব প্রত্নতত্ত্ব সম্পর্কেও ধারণা দিতে পারে। আলমেইদা–ওয়ারেন বলেন, ৩৩ লাখ বছর আগের প্রাচীনতম হোমিনিন–নির্মিত সরঞ্জাম আংশিকভাবে পাওয়া যায়। কারণ প্রাইমেটদের তৈরি সরঞ্জামগুলো প্রত্নতাত্ত্বিকদের ধারণা দিতে পারে মানুষের প্রাচীন হাতিয়ার খুঁজতে তাঁদের কী সন্ধান করতে হবে।
এই গবেষক আরও বলেন, শুধু মানুষের জন্য ‘প্রস্তর যুগ’ বলে একটি নির্দিষ্ট সময়ে পাথরের হাতিয়ার ব্যবহারকে বোঝানো হয়। কিন্তু মানুষ তো শুধু পাথরের হাতিয়ার ব্যবহার করেনি। অন্য প্রজাতিগুলোর ‘প্রস্তর যুগ’ও তেমনি। বর্তমান সময়ে প্রাইমেটদের ব্যবহৃত সরঞ্জামগুলোর অধ্যয়ন গবেষকদের মানব সরঞ্জামগুলো সম্পর্কে ধারণা দিতে পারে। সেগুলোর অস্তিত্ব হয়তো এখন অনেকখানিই বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
উদাহরণস্বরূপ, শিম্পাঞ্জিরা মাছ ধরতে গাছের লম্বা ছাল ব্যবহার করে যেগুলোর মধ্যে শুঁয়োপোকা থাকত। শুঁয়োপোকা এরা টোপ হিসেবে ব্যবহার করে। এ ছাড়া ক্ষত সারানোর জন্য এরা ঔষধি লতাপাতাও ব্যবহার করে। অনেক ক্ষেত্রে উদ্ভিদের ব্যবহার আরও জটিল বলে উল্লেখ করেন আলমেইদা–ওয়ারেন।
মানুষ ছাড়া অন্য প্রজাতির প্রত্নতত্ত্বও সময়ের সঙ্গে এই প্রজাতির আচরণের বিবর্তনের ওপর আলোকপাত করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, প্রাচীন ক্যাপুচিন বানর অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে দেখা যায়, বিভিন্ন খাবার সংগ্রহের জন্য এই বানরেরা শতাব্দী ধরে এদের হাতিয়ারগুলোতেও পরিবর্তন এনেছে।
ক্যালিফোর্নিয়ার গবেষকেরা দেখেছেন, সামুদ্রিক ভোঁদড়েরা পাথরের ওপর রেখে ঝিনুকের খোলস ফাটিয়ে নেয়। সায়েন্টিফিক রিপোর্ট জার্নালে ২০১৯ সালে প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুসারে, গবেষকেরা সামুদ্রিক ভোঁদড়ের ব্যবহৃত পাথর শনাক্ত করতে পেরেছেন।
উত্তর আমেরিকার পশ্চিম উপকূল বরাবর সামুদ্রিক ভোঁদড়ের সংখ্যা কমে গেছে। এখন যেহেতু গবেষকেরা জানেন তাঁদের কী অনুসন্ধান করতে হবে, সেহেতু ভোঁদড়ের বসতিগুলোর ইতিহাস এবং এরা যে বাস্তুতন্ত্রকে প্রভাবিত করেছে সেগুলো খুঁজে বের করতে পারার আশা করছেন।

কোনো বড় ধরনের সৌরঝড় বা প্রযুক্তিগত বিপর্যয়ের কারণে যদি পৃথিবীর কক্ষপথে থাকা স্যাটেলাইটগুলো হঠাৎ নিজেদের গতিপথ পরিবর্তনের সক্ষমতা হারায়, তবে মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই ভয়াবহ সংঘর্ষ শুরু হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিজ্ঞানীরা।
২ দিন আগে
উত্তর ইতালির একটি ন্যাশনাল পার্কে ২১ কোটি বছর আগের ডাইনোসরের পায়ের ছাপ পাওয়া গেছে। তাও আবার একটি-দুটি নয়, হাজার হাজার। এই পায়ের ছাপগুলোর কয়েকটির ব্যাস ১৫ ইঞ্চি পর্যন্ত। আর এগুলো সমান্তরাল সারিতে সাজানো। এসবের মধ্যে অনেকগুলোতে আঙুল ও নখের ছাপ স্পষ্ট বোঝা গেছে
৩ দিন আগে
ব্রিটিশ কলম্বিয়ার উপকূলে একদিন। স্যামন মাছের ঝাঁক পড়িমড়ি করে ছুটতে দেখা গেল। তাদের পিছেই চোখে পড়ল কিলার হোয়েল নামে পরিচিত অরকা ও হোয়াইট–সাইডেড ডলফিনের দলকে। তাও আবার একসঙ্গে! এই দুই শিকারী প্রাণীকে জোটবেঁধে স্যামন শিকারে ছুটতে দেখে যারপরনাই বিস্মিত বিজ্ঞানীরা।
৬ দিন আগে
ফ্রান্সের ব্রিতানি উপকূলের কাছে সমুদ্রের গভীরে এক বিশাল পাথরের প্রাচীরের সন্ধান মিলেছে। এই প্রাচীন প্রায় ৭ হাজার বছর আগে—অর্থাৎ ৫ হাজার খ্রিষ্টপূর্বাব্দে নির্মিত বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফরাসি সামুদ্রিক প্রত্নতাত্ত্বিকেরা ধারণা করছেন, সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধির কারণে যে প্রস্তর যুগের সমাজ এই এলাকা...
৮ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

কোনো বড় ধরনের সৌরঝড় বা প্রযুক্তিগত বিপর্যয়ের কারণে যদি পৃথিবীর কক্ষপথে থাকা স্যাটেলাইটগুলো হঠাৎ নিজেদের গতিপথ পরিবর্তনের সক্ষমতা হারায়, তবে মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই ভয়াবহ সংঘর্ষ শুরু হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিজ্ঞানীরা। নতুন এক গবেষণা বলছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে সব স্যাটেলাইট একযোগে অচল হয়ে পড়লে প্রথম সংঘর্ষ ঘটতে সময় লাগবে গড়ে মাত্র ২.৮ দিন।
গত সাত বছরে পৃথিবীর কক্ষপথে স্যাটেলাইটের সংখ্যা তিনগুণেরও বেশি বেড়েছে। ২০১৮ সালে যেখানে প্রায় ৪ হাজার স্যাটেলাইট ছিল, এখন সেই সংখ্যা প্রায় ১৪ হাজারে পৌঁছেছে। এই বিস্ফোরণধর্মী বৃদ্ধির পেছনে প্রধান ভূমিকা রেখেছে স্পেসএক্সের স্টারলিংক প্রকল্প। নিম্ন-পৃথিবী কক্ষপথে (৩৪০ থেকে ৫৫০ কিলোমিটার উচ্চতায়) বর্তমানে স্টারলিংকের স্যাটেলাইটই রয়েছে ৯ হাজারের বেশি।
কক্ষপথে এত বেশি স্যাটেলাইট থাকার কারণে নিয়মিত সংঘর্ষ এড়াতে ‘কলিশন অ্যাভয়ডেন্স ম্যানুভার’ বা গতিপথ পরিবর্তনের কৌশল নিতে হয়। স্পেসএক্স জানিয়েছে, ২০২৪ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে ২০২৫ সালের ৩১ মে পর্যন্ত মাত্র ছয় মাসে তারা ১ লাখ ৪৪ হাজারেরও বেশি সংঘর্ষ এড়ানোর কৌশল প্রয়োগ করেছে।
গত মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) এই বিষয়ে এক প্রতিবেদনে নিও সায়েন্টিস্ট জানিয়েছে, প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের সারা থিয়েল ও তাঁর সহকর্মীরা স্যাটেলাইটের অবস্থানসংক্রান্ত উন্মুক্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে সংঘর্ষ ঝুঁকি পরিমাপের জন্য নতুন একটি সূচক তৈরি করেছেন। এই সূচকের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ক্র্যাশ ক্লক’।
গবেষণায় দেখা গেছে, ২০১৮ সালে যদি সব স্যাটেলাইট হঠাৎ নিয়ন্ত্রণ হারাত, তবে প্রথম সংঘর্ষ হতে সময় লাগত প্রায় ১২১ দিন। কিন্তু বর্তমানে সেই সময় নেমে এসেছে মাত্র ২.৮ দিনে। এই তথ্য বিজ্ঞানীদেরও বিস্মিত করেছে।
সব স্যাটেলাইট একসঙ্গে অচল হয়ে পড়ার সম্ভাবনা কম হলেও ২০২৪ সালের মে মাসে শক্তিশালী সৌরঝড়ে স্টারলিংক স্যাটেলাইটগুলোতে অস্বাভাবিক ঢেউয়ের মতো প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছিল। ভবিষ্যতে আরও শক্তিশালী সৌরঝড় হলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন—আগামী বছরগুলোতে স্পেসএক্স, অ্যামাজন ও চীনের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান আরও হাজার হাজার স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করতে যাচ্ছে। ফলে কক্ষপথে ভিড় আরও বাড়বে, আর ‘ক্র্যাশ ক্লক’-এর সময়সীমা আরও এগিয়ে আসবে। এই পরিস্থিতি মহাকাশ ব্যবস্থাপনা নিয়ে নতুন করে ভাবার প্রয়োজনীয়তা সামনে আনছে।

কোনো বড় ধরনের সৌরঝড় বা প্রযুক্তিগত বিপর্যয়ের কারণে যদি পৃথিবীর কক্ষপথে থাকা স্যাটেলাইটগুলো হঠাৎ নিজেদের গতিপথ পরিবর্তনের সক্ষমতা হারায়, তবে মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই ভয়াবহ সংঘর্ষ শুরু হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিজ্ঞানীরা। নতুন এক গবেষণা বলছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে সব স্যাটেলাইট একযোগে অচল হয়ে পড়লে প্রথম সংঘর্ষ ঘটতে সময় লাগবে গড়ে মাত্র ২.৮ দিন।
গত সাত বছরে পৃথিবীর কক্ষপথে স্যাটেলাইটের সংখ্যা তিনগুণেরও বেশি বেড়েছে। ২০১৮ সালে যেখানে প্রায় ৪ হাজার স্যাটেলাইট ছিল, এখন সেই সংখ্যা প্রায় ১৪ হাজারে পৌঁছেছে। এই বিস্ফোরণধর্মী বৃদ্ধির পেছনে প্রধান ভূমিকা রেখেছে স্পেসএক্সের স্টারলিংক প্রকল্প। নিম্ন-পৃথিবী কক্ষপথে (৩৪০ থেকে ৫৫০ কিলোমিটার উচ্চতায়) বর্তমানে স্টারলিংকের স্যাটেলাইটই রয়েছে ৯ হাজারের বেশি।
কক্ষপথে এত বেশি স্যাটেলাইট থাকার কারণে নিয়মিত সংঘর্ষ এড়াতে ‘কলিশন অ্যাভয়ডেন্স ম্যানুভার’ বা গতিপথ পরিবর্তনের কৌশল নিতে হয়। স্পেসএক্স জানিয়েছে, ২০২৪ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে ২০২৫ সালের ৩১ মে পর্যন্ত মাত্র ছয় মাসে তারা ১ লাখ ৪৪ হাজারেরও বেশি সংঘর্ষ এড়ানোর কৌশল প্রয়োগ করেছে।
গত মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) এই বিষয়ে এক প্রতিবেদনে নিও সায়েন্টিস্ট জানিয়েছে, প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের সারা থিয়েল ও তাঁর সহকর্মীরা স্যাটেলাইটের অবস্থানসংক্রান্ত উন্মুক্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে সংঘর্ষ ঝুঁকি পরিমাপের জন্য নতুন একটি সূচক তৈরি করেছেন। এই সূচকের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ক্র্যাশ ক্লক’।
গবেষণায় দেখা গেছে, ২০১৮ সালে যদি সব স্যাটেলাইট হঠাৎ নিয়ন্ত্রণ হারাত, তবে প্রথম সংঘর্ষ হতে সময় লাগত প্রায় ১২১ দিন। কিন্তু বর্তমানে সেই সময় নেমে এসেছে মাত্র ২.৮ দিনে। এই তথ্য বিজ্ঞানীদেরও বিস্মিত করেছে।
সব স্যাটেলাইট একসঙ্গে অচল হয়ে পড়ার সম্ভাবনা কম হলেও ২০২৪ সালের মে মাসে শক্তিশালী সৌরঝড়ে স্টারলিংক স্যাটেলাইটগুলোতে অস্বাভাবিক ঢেউয়ের মতো প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছিল। ভবিষ্যতে আরও শক্তিশালী সৌরঝড় হলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন—আগামী বছরগুলোতে স্পেসএক্স, অ্যামাজন ও চীনের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান আরও হাজার হাজার স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করতে যাচ্ছে। ফলে কক্ষপথে ভিড় আরও বাড়বে, আর ‘ক্র্যাশ ক্লক’-এর সময়সীমা আরও এগিয়ে আসবে। এই পরিস্থিতি মহাকাশ ব্যবস্থাপনা নিয়ে নতুন করে ভাবার প্রয়োজনীয়তা সামনে আনছে।

পিঁপড়া থেকে মাছ, কাক, অনেক প্রাণী হাতিয়ার হিসেবে পাথর ব্যবহার করে। কিন্তু সাম্প্রতিক কাল পর্যন্ত শুধু মানুষ এবং মানুষের পূর্বপুরুষদের (আত্মীয় প্রজাতি) পাথরের হাতিয়ার ব্যবহারের একটি স্বীকৃত প্রত্নতাত্ত্বিক রেকর্ড ছিল। এখন বিজ্ঞানীরা স্বীকার করছেন, এ ধরনের হাতিয়ার ব্যবহারে দক্ষ শুধু হোমিনিনরাই ছিল না।
১২ মার্চ ২০২৪
উত্তর ইতালির একটি ন্যাশনাল পার্কে ২১ কোটি বছর আগের ডাইনোসরের পায়ের ছাপ পাওয়া গেছে। তাও আবার একটি-দুটি নয়, হাজার হাজার। এই পায়ের ছাপগুলোর কয়েকটির ব্যাস ১৫ ইঞ্চি পর্যন্ত। আর এগুলো সমান্তরাল সারিতে সাজানো। এসবের মধ্যে অনেকগুলোতে আঙুল ও নখের ছাপ স্পষ্ট বোঝা গেছে
৩ দিন আগে
ব্রিটিশ কলম্বিয়ার উপকূলে একদিন। স্যামন মাছের ঝাঁক পড়িমড়ি করে ছুটতে দেখা গেল। তাদের পিছেই চোখে পড়ল কিলার হোয়েল নামে পরিচিত অরকা ও হোয়াইট–সাইডেড ডলফিনের দলকে। তাও আবার একসঙ্গে! এই দুই শিকারী প্রাণীকে জোটবেঁধে স্যামন শিকারে ছুটতে দেখে যারপরনাই বিস্মিত বিজ্ঞানীরা।
৬ দিন আগে
ফ্রান্সের ব্রিতানি উপকূলের কাছে সমুদ্রের গভীরে এক বিশাল পাথরের প্রাচীরের সন্ধান মিলেছে। এই প্রাচীন প্রায় ৭ হাজার বছর আগে—অর্থাৎ ৫ হাজার খ্রিষ্টপূর্বাব্দে নির্মিত বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফরাসি সামুদ্রিক প্রত্নতাত্ত্বিকেরা ধারণা করছেন, সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধির কারণে যে প্রস্তর যুগের সমাজ এই এলাকা...
৮ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

উত্তর ইতালির একটি ন্যাশনাল পার্কে ২১ কোটি বছর আগের ডাইনোসরের পায়ের ছাপ পাওয়া গেছে। তাও আবার একটি-দুটি নয়, হাজার হাজার। এই পায়ের ছাপগুলোর কয়েকটির ব্যাস ১৫ ইঞ্চি পর্যন্ত। আর এগুলো সমান্তরাল সারিতে সাজানো। এসবের মধ্যে অনেকগুলোতে আঙুল ও নখের ছাপ স্পষ্ট বোঝা গেছে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে জানা গেছে।
ধারণা করা হচ্ছে, এই ডাইনোসরগুলো ছিল ‘প্রোসাওরোপড’ (prosauropod) প্রজাতির। এ প্রজাতির ডাইনোসরের গলা লম্বা ও মাথা ছোট এবং ধারালো নখবিশিষ্ট তৃণভোজী প্রাণী ছিল।
মিলানভিত্তিক জীবাশ্মবিদ ক্রিস্টিয়ানো ডাল সাসো বলেন, ‘কখনো কল্পনাও করিনি, আমি যে অঞ্চলে বাস করি, সেখানেই এমন এক যুগান্তকারী আবিষ্কারের দেখা পাব।’
গত সেপ্টেম্বরে মিলানের উত্তর-পূর্বে অবস্থিত স্টেলভিও ন্যাশনাল পার্কের একটি খাঁড়া পাহাড়ের গায়ে কয়েক শ মিটার পর্যন্ত বিস্তৃত এই পায়ের ছাপগুলো একজন আলোকচিত্রীর চোখে ধরা পড়ে।
বিবিসির প্রতিবেদনে জানা যায়, ২০ থেকে ২৫ কোটি বছর আগে ট্রায়াসিক যুগে এই পাহাড়ের অংশটি ছিল একটি সমুদ্র তীরবর্তী সমতল ভূমি, যা পরে আল্পাইন পর্বতমালায় রূপান্তরিত হয়।
ডাল সাসো আরও বলেন, এই জায়গা ডাইনোসরে পরিপূর্ণ ছিল; এটি একটি বিশাল বৈজ্ঞানিক সম্পদ।
ডাল সাসো আরও যোগ করেন, ডাইনোসরের দলগুলো সুশৃঙ্খলভাবে চলাচল করত এবং সেখানে আরও কিছু চিহ্ন পাওয়া গেছে, যেগুলো থেকে মনে হয়, পশুরা আত্মরক্ষার উদ্দেশ্যে দলবদ্ধ হয়ে বৃত্তাকারে অবস্থান নিত।
আবিষ্কারকেরা বলছেন, প্রোসাওরোপডগুলো ১০ মিটার বা ৩৩ ফুট পর্যন্ত লম্বা হতে পারত। তারা সাধারণত দুই পায়ে হাঁটত, তবে কিছু ক্ষেত্রে পায়ের ছাপের সামনে হাতের ছাপও পাওয়া গেছে। এটি ইঙ্গিত দেয় যে, তারা সম্ভবত মাঝেমধ্যে থেমে বিশ্রাম নেওয়ার সময় তাদের সামনের পা মাটিতে রাখত।
আলোকচিত্রী এলিয়ো ডেলা ফেরেরা এই স্থান আবিষ্কার করেছিলেন। তিনি বলেন, ‘এই আবিষ্কার আমাদের সবার মধ্যে ভাবনার খোরাক জোগাবে এবং আমরা যেখানে বাস করি, আমাদের ঘর, আমাদের পৃথিবী, এই জায়গাগুলো সম্পর্কে আমরা কতটা কম জানি, তা বোঝায়।’
ইতালির সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, এলাকাটি অত্যন্ত দুর্গম এবং যাতায়াতের কোনো পথ নেই। তাই গবেষণার কাজে ড্রোনের পাশাপাশি রিমোট সেন্সিং প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে।
উল্লেখ্য, আগামী বছর ইতালিতে শীতকালীন অলিম্পিক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আর ডাইনোসরের পায়ের ছাপ পাওয়া স্টেলভিও ন্যাশনাল পার্কটি সুইজারল্যান্ডের সঙ্গে ইতালির সীমান্তবর্তী ফ্রায়েল উপত্যকায় অবস্থিত। মন্ত্রণালয় জানায়, এটি যেন অনেকটা এমন যে, স্বয়ং ইতিহাসই বিশ্বের সর্ববৃহৎ এই ক্রীড়া ইভেন্টকে শ্রদ্ধা জানাতে চেয়েছে; প্রকৃতি ও ক্রীড়ার মধ্যে এক প্রতীকী সেতুবন্ধনের মাধ্যমে অতীত ও বর্তমানকে এক সুতায় গেঁথেছে।

উত্তর ইতালির একটি ন্যাশনাল পার্কে ২১ কোটি বছর আগের ডাইনোসরের পায়ের ছাপ পাওয়া গেছে। তাও আবার একটি-দুটি নয়, হাজার হাজার। এই পায়ের ছাপগুলোর কয়েকটির ব্যাস ১৫ ইঞ্চি পর্যন্ত। আর এগুলো সমান্তরাল সারিতে সাজানো। এসবের মধ্যে অনেকগুলোতে আঙুল ও নখের ছাপ স্পষ্ট বোঝা গেছে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে জানা গেছে।
ধারণা করা হচ্ছে, এই ডাইনোসরগুলো ছিল ‘প্রোসাওরোপড’ (prosauropod) প্রজাতির। এ প্রজাতির ডাইনোসরের গলা লম্বা ও মাথা ছোট এবং ধারালো নখবিশিষ্ট তৃণভোজী প্রাণী ছিল।
মিলানভিত্তিক জীবাশ্মবিদ ক্রিস্টিয়ানো ডাল সাসো বলেন, ‘কখনো কল্পনাও করিনি, আমি যে অঞ্চলে বাস করি, সেখানেই এমন এক যুগান্তকারী আবিষ্কারের দেখা পাব।’
গত সেপ্টেম্বরে মিলানের উত্তর-পূর্বে অবস্থিত স্টেলভিও ন্যাশনাল পার্কের একটি খাঁড়া পাহাড়ের গায়ে কয়েক শ মিটার পর্যন্ত বিস্তৃত এই পায়ের ছাপগুলো একজন আলোকচিত্রীর চোখে ধরা পড়ে।
বিবিসির প্রতিবেদনে জানা যায়, ২০ থেকে ২৫ কোটি বছর আগে ট্রায়াসিক যুগে এই পাহাড়ের অংশটি ছিল একটি সমুদ্র তীরবর্তী সমতল ভূমি, যা পরে আল্পাইন পর্বতমালায় রূপান্তরিত হয়।
ডাল সাসো আরও বলেন, এই জায়গা ডাইনোসরে পরিপূর্ণ ছিল; এটি একটি বিশাল বৈজ্ঞানিক সম্পদ।
ডাল সাসো আরও যোগ করেন, ডাইনোসরের দলগুলো সুশৃঙ্খলভাবে চলাচল করত এবং সেখানে আরও কিছু চিহ্ন পাওয়া গেছে, যেগুলো থেকে মনে হয়, পশুরা আত্মরক্ষার উদ্দেশ্যে দলবদ্ধ হয়ে বৃত্তাকারে অবস্থান নিত।
আবিষ্কারকেরা বলছেন, প্রোসাওরোপডগুলো ১০ মিটার বা ৩৩ ফুট পর্যন্ত লম্বা হতে পারত। তারা সাধারণত দুই পায়ে হাঁটত, তবে কিছু ক্ষেত্রে পায়ের ছাপের সামনে হাতের ছাপও পাওয়া গেছে। এটি ইঙ্গিত দেয় যে, তারা সম্ভবত মাঝেমধ্যে থেমে বিশ্রাম নেওয়ার সময় তাদের সামনের পা মাটিতে রাখত।
আলোকচিত্রী এলিয়ো ডেলা ফেরেরা এই স্থান আবিষ্কার করেছিলেন। তিনি বলেন, ‘এই আবিষ্কার আমাদের সবার মধ্যে ভাবনার খোরাক জোগাবে এবং আমরা যেখানে বাস করি, আমাদের ঘর, আমাদের পৃথিবী, এই জায়গাগুলো সম্পর্কে আমরা কতটা কম জানি, তা বোঝায়।’
ইতালির সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, এলাকাটি অত্যন্ত দুর্গম এবং যাতায়াতের কোনো পথ নেই। তাই গবেষণার কাজে ড্রোনের পাশাপাশি রিমোট সেন্সিং প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে।
উল্লেখ্য, আগামী বছর ইতালিতে শীতকালীন অলিম্পিক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আর ডাইনোসরের পায়ের ছাপ পাওয়া স্টেলভিও ন্যাশনাল পার্কটি সুইজারল্যান্ডের সঙ্গে ইতালির সীমান্তবর্তী ফ্রায়েল উপত্যকায় অবস্থিত। মন্ত্রণালয় জানায়, এটি যেন অনেকটা এমন যে, স্বয়ং ইতিহাসই বিশ্বের সর্ববৃহৎ এই ক্রীড়া ইভেন্টকে শ্রদ্ধা জানাতে চেয়েছে; প্রকৃতি ও ক্রীড়ার মধ্যে এক প্রতীকী সেতুবন্ধনের মাধ্যমে অতীত ও বর্তমানকে এক সুতায় গেঁথেছে।

পিঁপড়া থেকে মাছ, কাক, অনেক প্রাণী হাতিয়ার হিসেবে পাথর ব্যবহার করে। কিন্তু সাম্প্রতিক কাল পর্যন্ত শুধু মানুষ এবং মানুষের পূর্বপুরুষদের (আত্মীয় প্রজাতি) পাথরের হাতিয়ার ব্যবহারের একটি স্বীকৃত প্রত্নতাত্ত্বিক রেকর্ড ছিল। এখন বিজ্ঞানীরা স্বীকার করছেন, এ ধরনের হাতিয়ার ব্যবহারে দক্ষ শুধু হোমিনিনরাই ছিল না।
১২ মার্চ ২০২৪
কোনো বড় ধরনের সৌরঝড় বা প্রযুক্তিগত বিপর্যয়ের কারণে যদি পৃথিবীর কক্ষপথে থাকা স্যাটেলাইটগুলো হঠাৎ নিজেদের গতিপথ পরিবর্তনের সক্ষমতা হারায়, তবে মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই ভয়াবহ সংঘর্ষ শুরু হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিজ্ঞানীরা।
২ দিন আগে
ব্রিটিশ কলম্বিয়ার উপকূলে একদিন। স্যামন মাছের ঝাঁক পড়িমড়ি করে ছুটতে দেখা গেল। তাদের পিছেই চোখে পড়ল কিলার হোয়েল নামে পরিচিত অরকা ও হোয়াইট–সাইডেড ডলফিনের দলকে। তাও আবার একসঙ্গে! এই দুই শিকারী প্রাণীকে জোটবেঁধে স্যামন শিকারে ছুটতে দেখে যারপরনাই বিস্মিত বিজ্ঞানীরা।
৬ দিন আগে
ফ্রান্সের ব্রিতানি উপকূলের কাছে সমুদ্রের গভীরে এক বিশাল পাথরের প্রাচীরের সন্ধান মিলেছে। এই প্রাচীন প্রায় ৭ হাজার বছর আগে—অর্থাৎ ৫ হাজার খ্রিষ্টপূর্বাব্দে নির্মিত বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফরাসি সামুদ্রিক প্রত্নতাত্ত্বিকেরা ধারণা করছেন, সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধির কারণে যে প্রস্তর যুগের সমাজ এই এলাকা...
৮ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ব্রিটিশ কলম্বিয়ার উপকূলে একদিন। স্যামন মাছের ঝাঁক পড়িমড়ি করে ছুটতে দেখা গেল। তাদের পিছেই চোখে পড়ল কিলার হোয়েল নামে পরিচিত অরকা ও হোয়াইট–সাইডেড ডলফিনের দলকে। তাও আবার একসঙ্গে! এই দুই শিকারী প্রাণীকে জোটবেঁধে স্যামন শিকারে ছুটতে দেখে যারপরনাই বিস্মিত বিজ্ঞানীরা। শিকার একই হওয়ায় দুই শিকারী জোট বেঁধেছে বলে মনে করছেন তাঁরা।
এ নিয়ে একটি গবেষণাও প্রকাশিত হয়েছে। সায়েন্টিফিক রিপোর্টস সাময়িকীতে প্রকাশিত ওই গবেষণায় বলা হয়েছে, এই দুই শিকারি প্রাণীর মধ্যে হয়তো একটি সহযোগিতামূলক সম্পর্ক গড়ে উঠেছে।
গবেষকেরা বলছেন, ‘কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়া উপকূলে প্যাসিফিক হোয়াইট–সাইডেড ডলফিন ও নর্দার্ন রেসিডেন্ট কিলার হোয়েলের মধ্যে এ ধরনের একটি রহস্যজনক সম্পর্ক দেখা যায়, যেখানে এই দুই সিটাসিয়ান প্রজাতিকে প্রায়ই একে অপরের কয়েক মিটারের মধ্যেই দেখা যায়।’
ব্রিটিশ কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, লাইবনিজ ইনস্টিটিউট ও হাকাই ইনস্টিটিউটের সঙ্গে কাজ করা বিজ্ঞানীরা ড্রোন ভিডিও ও শব্দগত রেকর্ডিং সংগ্রহ করে তার ভিত্তিতে জানান, এই প্রথম অরকা ও ডলফিনের এভাবে খাদ্য চাহিদা পূরণে যৌথভাবে কাজ করতে দেখা গেল।
গবেষণার প্রধান লেখক সারা ফরচুন দ্য গার্ডিয়ানকে বলেন, ‘স্যামন শিকারের পারদর্শিতায় শীর্ষস্থানে রয়েছে এই তিমিগুলো। তারা অত্যন্ত দক্ষ ও বিশেষায়িত শিকারি। মনে হচ্ছিল ডলফিনগুলো তাদের নেতৃত্ব দিচ্ছে। অরকাদের এভাবে ডলফিনের অনুসরণ করতে দেখা ছিল একেবারেই অপ্রত্যাশিত আর ভীষণ রোমাঞ্চকর।’
দুই শিকারির মধ্যে সদ্য গড়ে ওঠা এই সম্পর্কের কারণ নিয়ে বিজ্ঞানীরা এখনো নিশ্চিত নন। একটি সম্ভাবনা হলো ক্লেপ্টোপ্যারাসিটিজম, যেখানে ডলফিনেরা অরকার শিকার ছিনিয়ে নিতে পারে।
আরেকটি ব্যাখ্যা হতে পারে, ডলফিনেরা স্তন্যপায়ীভোজী ট্রানসিয়েন্ট কিলার হোয়েল এবং কিছুটা কম মাত্রায় বড় হাঙরের হাত থেকে সুরক্ষা পেতে এই সম্পর্ক গড়ে তুলছে।
তবে সারা ফরচুনের মতে, যদি ডলফিনেরা পরজীবীর মতো আচরণ করত, তাহলে সদ্য ধরা শিকার নিয়ে সাধারণত অত্যন্ত রক্ষণশীল কিলার হোয়েলেরা এতটা শান্ত থাকত না, যেমনটি পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে। এতে গবেষকদের সামনে সবচেয়ে জোরালো ব্যাখ্যাটি উঠে এসেছে, এই দুই শিকারি আসলে পরস্পরকে সহযোগিতা করছে।
সারা ফরচুন আরও বলেন, ‘অরকাগুলো নিজেদের অবস্থান এমনভাবে নিচ্ছিল, যেন তারা ডলফিনদের অনুসরণ করছে। ফলে ডলফিনদেরই নেতৃত্বের ভূমিকায় দেখা যাচ্ছিল। বিষয়টি আমাদের আরও গভীরভাবে তথ্য বিশ্লেষণ করতে এবং আসলে কী ঘটছে তা বোঝার চেষ্টা করতে আগ্রহী করে তোলে।’
এই সহযোগিতা নিয়ে রহস্য আরও ঘনীভূত হচ্ছে, কারণ নর্দার্ন রেসিডেন্ট অরকারা মূলত স্যামন শিকারে বিশেষজ্ঞ আর হোয়াইট–সাইডেড ডলফিন সাধারণত হেরিং ও অ্যাঙ্কোভির মতো ছোট মাছ খেয়ে থাকে।

ব্রিটিশ কলম্বিয়ার উপকূলে একদিন। স্যামন মাছের ঝাঁক পড়িমড়ি করে ছুটতে দেখা গেল। তাদের পিছেই চোখে পড়ল কিলার হোয়েল নামে পরিচিত অরকা ও হোয়াইট–সাইডেড ডলফিনের দলকে। তাও আবার একসঙ্গে! এই দুই শিকারী প্রাণীকে জোটবেঁধে স্যামন শিকারে ছুটতে দেখে যারপরনাই বিস্মিত বিজ্ঞানীরা। শিকার একই হওয়ায় দুই শিকারী জোট বেঁধেছে বলে মনে করছেন তাঁরা।
এ নিয়ে একটি গবেষণাও প্রকাশিত হয়েছে। সায়েন্টিফিক রিপোর্টস সাময়িকীতে প্রকাশিত ওই গবেষণায় বলা হয়েছে, এই দুই শিকারি প্রাণীর মধ্যে হয়তো একটি সহযোগিতামূলক সম্পর্ক গড়ে উঠেছে।
গবেষকেরা বলছেন, ‘কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়া উপকূলে প্যাসিফিক হোয়াইট–সাইডেড ডলফিন ও নর্দার্ন রেসিডেন্ট কিলার হোয়েলের মধ্যে এ ধরনের একটি রহস্যজনক সম্পর্ক দেখা যায়, যেখানে এই দুই সিটাসিয়ান প্রজাতিকে প্রায়ই একে অপরের কয়েক মিটারের মধ্যেই দেখা যায়।’
ব্রিটিশ কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, লাইবনিজ ইনস্টিটিউট ও হাকাই ইনস্টিটিউটের সঙ্গে কাজ করা বিজ্ঞানীরা ড্রোন ভিডিও ও শব্দগত রেকর্ডিং সংগ্রহ করে তার ভিত্তিতে জানান, এই প্রথম অরকা ও ডলফিনের এভাবে খাদ্য চাহিদা পূরণে যৌথভাবে কাজ করতে দেখা গেল।
গবেষণার প্রধান লেখক সারা ফরচুন দ্য গার্ডিয়ানকে বলেন, ‘স্যামন শিকারের পারদর্শিতায় শীর্ষস্থানে রয়েছে এই তিমিগুলো। তারা অত্যন্ত দক্ষ ও বিশেষায়িত শিকারি। মনে হচ্ছিল ডলফিনগুলো তাদের নেতৃত্ব দিচ্ছে। অরকাদের এভাবে ডলফিনের অনুসরণ করতে দেখা ছিল একেবারেই অপ্রত্যাশিত আর ভীষণ রোমাঞ্চকর।’
দুই শিকারির মধ্যে সদ্য গড়ে ওঠা এই সম্পর্কের কারণ নিয়ে বিজ্ঞানীরা এখনো নিশ্চিত নন। একটি সম্ভাবনা হলো ক্লেপ্টোপ্যারাসিটিজম, যেখানে ডলফিনেরা অরকার শিকার ছিনিয়ে নিতে পারে।
আরেকটি ব্যাখ্যা হতে পারে, ডলফিনেরা স্তন্যপায়ীভোজী ট্রানসিয়েন্ট কিলার হোয়েল এবং কিছুটা কম মাত্রায় বড় হাঙরের হাত থেকে সুরক্ষা পেতে এই সম্পর্ক গড়ে তুলছে।
তবে সারা ফরচুনের মতে, যদি ডলফিনেরা পরজীবীর মতো আচরণ করত, তাহলে সদ্য ধরা শিকার নিয়ে সাধারণত অত্যন্ত রক্ষণশীল কিলার হোয়েলেরা এতটা শান্ত থাকত না, যেমনটি পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে। এতে গবেষকদের সামনে সবচেয়ে জোরালো ব্যাখ্যাটি উঠে এসেছে, এই দুই শিকারি আসলে পরস্পরকে সহযোগিতা করছে।
সারা ফরচুন আরও বলেন, ‘অরকাগুলো নিজেদের অবস্থান এমনভাবে নিচ্ছিল, যেন তারা ডলফিনদের অনুসরণ করছে। ফলে ডলফিনদেরই নেতৃত্বের ভূমিকায় দেখা যাচ্ছিল। বিষয়টি আমাদের আরও গভীরভাবে তথ্য বিশ্লেষণ করতে এবং আসলে কী ঘটছে তা বোঝার চেষ্টা করতে আগ্রহী করে তোলে।’
এই সহযোগিতা নিয়ে রহস্য আরও ঘনীভূত হচ্ছে, কারণ নর্দার্ন রেসিডেন্ট অরকারা মূলত স্যামন শিকারে বিশেষজ্ঞ আর হোয়াইট–সাইডেড ডলফিন সাধারণত হেরিং ও অ্যাঙ্কোভির মতো ছোট মাছ খেয়ে থাকে।

পিঁপড়া থেকে মাছ, কাক, অনেক প্রাণী হাতিয়ার হিসেবে পাথর ব্যবহার করে। কিন্তু সাম্প্রতিক কাল পর্যন্ত শুধু মানুষ এবং মানুষের পূর্বপুরুষদের (আত্মীয় প্রজাতি) পাথরের হাতিয়ার ব্যবহারের একটি স্বীকৃত প্রত্নতাত্ত্বিক রেকর্ড ছিল। এখন বিজ্ঞানীরা স্বীকার করছেন, এ ধরনের হাতিয়ার ব্যবহারে দক্ষ শুধু হোমিনিনরাই ছিল না।
১২ মার্চ ২০২৪
কোনো বড় ধরনের সৌরঝড় বা প্রযুক্তিগত বিপর্যয়ের কারণে যদি পৃথিবীর কক্ষপথে থাকা স্যাটেলাইটগুলো হঠাৎ নিজেদের গতিপথ পরিবর্তনের সক্ষমতা হারায়, তবে মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই ভয়াবহ সংঘর্ষ শুরু হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিজ্ঞানীরা।
২ দিন আগে
উত্তর ইতালির একটি ন্যাশনাল পার্কে ২১ কোটি বছর আগের ডাইনোসরের পায়ের ছাপ পাওয়া গেছে। তাও আবার একটি-দুটি নয়, হাজার হাজার। এই পায়ের ছাপগুলোর কয়েকটির ব্যাস ১৫ ইঞ্চি পর্যন্ত। আর এগুলো সমান্তরাল সারিতে সাজানো। এসবের মধ্যে অনেকগুলোতে আঙুল ও নখের ছাপ স্পষ্ট বোঝা গেছে
৩ দিন আগে
ফ্রান্সের ব্রিতানি উপকূলের কাছে সমুদ্রের গভীরে এক বিশাল পাথরের প্রাচীরের সন্ধান মিলেছে। এই প্রাচীন প্রায় ৭ হাজার বছর আগে—অর্থাৎ ৫ হাজার খ্রিষ্টপূর্বাব্দে নির্মিত বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফরাসি সামুদ্রিক প্রত্নতাত্ত্বিকেরা ধারণা করছেন, সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধির কারণে যে প্রস্তর যুগের সমাজ এই এলাকা...
৮ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ফ্রান্সের ব্রিতানি উপকূলের কাছে সমুদ্রের গভীরে এক বিশাল পাথরের প্রাচীরের সন্ধান মিলেছে। এই প্রাচীন প্রায় ৭ হাজার বছর আগে—অর্থাৎ ৫ হাজার খ্রিষ্টপূর্বাব্দে নির্মিত বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফরাসি সামুদ্রিক প্রত্নতাত্ত্বিকেরা ধারণা করছেন, সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধির কারণে যে প্রস্তর যুগের সমাজ এই এলাকা থেকে অদৃশ্য হয়ে গিয়েছিল, এই আবিষ্কার হয়তো সেই সমাজেরই প্রতিনিধিত্ব করছে। সেখানে তলিয়ে যাওয়া শহরের প্রচলিত কিংবদন্তির নিদর্শনও হতে পারে এই প্রাচীর।
১২০ মিটার দীর্ঘ এই প্রাচীর ফ্রান্সের জলসীমায় পাওয়া সমুদ্রতলের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো। প্রত্নতাত্ত্বিকদের অনুমান, এটি হয়তো মাছ ধরার জন্য এক ধরনের ফাঁদ হিসেবে ব্যবহৃত হতো, অথবা সমুদ্রের ক্রমবর্ধমান জলস্তর থেকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য বাঁধ হিসেবে নির্মিত হয়েছিল।
প্রাচীরটি ব্রিতানির পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত ইলে দে সঁ-এর উপকূলে আবিষ্কৃত হয়েছে। সমুদ্র সৈকতে জোয়ারের চিহ্ন এখনো বহন করছে এই প্রাচীর। বর্তমানে প্রাচীরটি প্রায় নয় মিটার গভীরে ডুবে আছে। দ্বীপটি আগের আকারের তুলনায় অনেকটাই ছোট হয়ে গেছে, সমুদ্রের পানিস্তর বৃদ্ধির এটি বড় প্রমাণ।
প্রাচীরটির গড় প্রস্থ প্রায় ২০ মিটার এবং উচ্চতা দুই মিটার। নিয়মিত ব্যবধানে ডুবুরিরা এর মধ্যে বড় গ্রানাইট পাথর বা মনোলিথ-এর অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছেন। এগুলো দুটি সমান্তরাল রেখায় প্রাচীরের ওপরে উঁচু হয়ে আছে। মনে করা হচ্ছে, এই মনোলিথগুলোই প্রাচীরের মূল ভিত্তি হিসেবে শিলাস্তরের ওপর স্থাপন করা হয়েছিল এবং পরবর্তীতে স্ল্যাব ও ছোট পাথর দিয়ে তাদের ঘিরে প্রাচীর নির্মাণ করা হয়। যদি মাছ ধরার ফাঁদ হিসেবে ব্যবহারের অনুমানটি সঠিক হয়, তাহলে বলা যায়, মনোলিথগুলোতে জোয়ারের পানি নেমে যাওয়ার সময় মাছ ধরার জাল বেঁধে রাখা হতো।
প্রাচীরটির মোট ভর প্রায় ৩ হাজার ৩০০ টন। প্রত্নতাত্ত্বিক ইভান পাইয়ার বলেন, এই বিশাল নির্মাণ একটি সুসংগঠিত সমাজের কাজ হতে পারে। মূলত শিকারি-সংগ্রাহক (হান্টার গ্যাদারার) জনগোষ্ঠী এটি নির্মাণ করেছে, যারা সম্পদের প্রাচুর্য থাকায় স্থিতিশীল জীবনযাপন শুরু করেছিল। অথবা, এটি ছিল ৫ হাজার খ্রিষ্টপূর্বাব্দে এই অঞ্চলে আসা নব্যপ্রস্তর যুগের জনগোষ্ঠীর নির্মাণ।
পাইয়ারের মতে, মনোলিথগুলো নব্যপ্রস্তর যুগের বিখ্যাত মেনহিরগুলোর চেয়েও প্রাচীন। ফলে এটি পাথর উত্তোলন, কাটা এবং পরিবহনের জ্ঞান তৎকালীন শিকারি-সংগ্রাহক সমাজ থেকে পরবর্তী নব্যপ্রস্তর যুগের কৃষকদের কাছে স্থানান্তরিত হওয়ার ইঙ্গিত দেয়।
ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব নটিক্যাল আর্কিওলজিতে প্রকাশিত গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, এই আবিষ্কার স্থানীয় ব্রেটোন কিংবদন্তিগুলোর উৎস হতে পারে। যেমন, ব্রিতানির উপকূলে অবস্থিত বে অব দোয়ারনেনেজ-এর আশপাশে ডুবে যাওয়া শহর ইশ (Ys)-এর কিংবদন্তি। গবেষকদের মতে, একটি অত্যন্ত সুসংগঠিত সমাজ দ্বারা গঠিত অঞ্চলের বিলুপ্তি মানুষের স্মৃতিতে গভীরভাবে প্রোথিত হয়েছে। সমুদ্রের জলস্তর দ্রুত বৃদ্ধির ফলে মাছ ধরার কাঠামো, প্রতিরক্ষামূলক কাজ এবং বাস্তুচ্যুতির ঘটনাগুলো সম্ভবত স্থানীয় মানুষের মনে দীর্ঘস্থায়ী ছাপ ফেলেছিল।

ফ্রান্সের ব্রিতানি উপকূলের কাছে সমুদ্রের গভীরে এক বিশাল পাথরের প্রাচীরের সন্ধান মিলেছে। এই প্রাচীন প্রায় ৭ হাজার বছর আগে—অর্থাৎ ৫ হাজার খ্রিষ্টপূর্বাব্দে নির্মিত বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফরাসি সামুদ্রিক প্রত্নতাত্ত্বিকেরা ধারণা করছেন, সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধির কারণে যে প্রস্তর যুগের সমাজ এই এলাকা থেকে অদৃশ্য হয়ে গিয়েছিল, এই আবিষ্কার হয়তো সেই সমাজেরই প্রতিনিধিত্ব করছে। সেখানে তলিয়ে যাওয়া শহরের প্রচলিত কিংবদন্তির নিদর্শনও হতে পারে এই প্রাচীর।
১২০ মিটার দীর্ঘ এই প্রাচীর ফ্রান্সের জলসীমায় পাওয়া সমুদ্রতলের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো। প্রত্নতাত্ত্বিকদের অনুমান, এটি হয়তো মাছ ধরার জন্য এক ধরনের ফাঁদ হিসেবে ব্যবহৃত হতো, অথবা সমুদ্রের ক্রমবর্ধমান জলস্তর থেকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য বাঁধ হিসেবে নির্মিত হয়েছিল।
প্রাচীরটি ব্রিতানির পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত ইলে দে সঁ-এর উপকূলে আবিষ্কৃত হয়েছে। সমুদ্র সৈকতে জোয়ারের চিহ্ন এখনো বহন করছে এই প্রাচীর। বর্তমানে প্রাচীরটি প্রায় নয় মিটার গভীরে ডুবে আছে। দ্বীপটি আগের আকারের তুলনায় অনেকটাই ছোট হয়ে গেছে, সমুদ্রের পানিস্তর বৃদ্ধির এটি বড় প্রমাণ।
প্রাচীরটির গড় প্রস্থ প্রায় ২০ মিটার এবং উচ্চতা দুই মিটার। নিয়মিত ব্যবধানে ডুবুরিরা এর মধ্যে বড় গ্রানাইট পাথর বা মনোলিথ-এর অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছেন। এগুলো দুটি সমান্তরাল রেখায় প্রাচীরের ওপরে উঁচু হয়ে আছে। মনে করা হচ্ছে, এই মনোলিথগুলোই প্রাচীরের মূল ভিত্তি হিসেবে শিলাস্তরের ওপর স্থাপন করা হয়েছিল এবং পরবর্তীতে স্ল্যাব ও ছোট পাথর দিয়ে তাদের ঘিরে প্রাচীর নির্মাণ করা হয়। যদি মাছ ধরার ফাঁদ হিসেবে ব্যবহারের অনুমানটি সঠিক হয়, তাহলে বলা যায়, মনোলিথগুলোতে জোয়ারের পানি নেমে যাওয়ার সময় মাছ ধরার জাল বেঁধে রাখা হতো।
প্রাচীরটির মোট ভর প্রায় ৩ হাজার ৩০০ টন। প্রত্নতাত্ত্বিক ইভান পাইয়ার বলেন, এই বিশাল নির্মাণ একটি সুসংগঠিত সমাজের কাজ হতে পারে। মূলত শিকারি-সংগ্রাহক (হান্টার গ্যাদারার) জনগোষ্ঠী এটি নির্মাণ করেছে, যারা সম্পদের প্রাচুর্য থাকায় স্থিতিশীল জীবনযাপন শুরু করেছিল। অথবা, এটি ছিল ৫ হাজার খ্রিষ্টপূর্বাব্দে এই অঞ্চলে আসা নব্যপ্রস্তর যুগের জনগোষ্ঠীর নির্মাণ।
পাইয়ারের মতে, মনোলিথগুলো নব্যপ্রস্তর যুগের বিখ্যাত মেনহিরগুলোর চেয়েও প্রাচীন। ফলে এটি পাথর উত্তোলন, কাটা এবং পরিবহনের জ্ঞান তৎকালীন শিকারি-সংগ্রাহক সমাজ থেকে পরবর্তী নব্যপ্রস্তর যুগের কৃষকদের কাছে স্থানান্তরিত হওয়ার ইঙ্গিত দেয়।
ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব নটিক্যাল আর্কিওলজিতে প্রকাশিত গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, এই আবিষ্কার স্থানীয় ব্রেটোন কিংবদন্তিগুলোর উৎস হতে পারে। যেমন, ব্রিতানির উপকূলে অবস্থিত বে অব দোয়ারনেনেজ-এর আশপাশে ডুবে যাওয়া শহর ইশ (Ys)-এর কিংবদন্তি। গবেষকদের মতে, একটি অত্যন্ত সুসংগঠিত সমাজ দ্বারা গঠিত অঞ্চলের বিলুপ্তি মানুষের স্মৃতিতে গভীরভাবে প্রোথিত হয়েছে। সমুদ্রের জলস্তর দ্রুত বৃদ্ধির ফলে মাছ ধরার কাঠামো, প্রতিরক্ষামূলক কাজ এবং বাস্তুচ্যুতির ঘটনাগুলো সম্ভবত স্থানীয় মানুষের মনে দীর্ঘস্থায়ী ছাপ ফেলেছিল।

পিঁপড়া থেকে মাছ, কাক, অনেক প্রাণী হাতিয়ার হিসেবে পাথর ব্যবহার করে। কিন্তু সাম্প্রতিক কাল পর্যন্ত শুধু মানুষ এবং মানুষের পূর্বপুরুষদের (আত্মীয় প্রজাতি) পাথরের হাতিয়ার ব্যবহারের একটি স্বীকৃত প্রত্নতাত্ত্বিক রেকর্ড ছিল। এখন বিজ্ঞানীরা স্বীকার করছেন, এ ধরনের হাতিয়ার ব্যবহারে দক্ষ শুধু হোমিনিনরাই ছিল না।
১২ মার্চ ২০২৪
কোনো বড় ধরনের সৌরঝড় বা প্রযুক্তিগত বিপর্যয়ের কারণে যদি পৃথিবীর কক্ষপথে থাকা স্যাটেলাইটগুলো হঠাৎ নিজেদের গতিপথ পরিবর্তনের সক্ষমতা হারায়, তবে মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই ভয়াবহ সংঘর্ষ শুরু হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিজ্ঞানীরা।
২ দিন আগে
উত্তর ইতালির একটি ন্যাশনাল পার্কে ২১ কোটি বছর আগের ডাইনোসরের পায়ের ছাপ পাওয়া গেছে। তাও আবার একটি-দুটি নয়, হাজার হাজার। এই পায়ের ছাপগুলোর কয়েকটির ব্যাস ১৫ ইঞ্চি পর্যন্ত। আর এগুলো সমান্তরাল সারিতে সাজানো। এসবের মধ্যে অনেকগুলোতে আঙুল ও নখের ছাপ স্পষ্ট বোঝা গেছে
৩ দিন আগে
ব্রিটিশ কলম্বিয়ার উপকূলে একদিন। স্যামন মাছের ঝাঁক পড়িমড়ি করে ছুটতে দেখা গেল। তাদের পিছেই চোখে পড়ল কিলার হোয়েল নামে পরিচিত অরকা ও হোয়াইট–সাইডেড ডলফিনের দলকে। তাও আবার একসঙ্গে! এই দুই শিকারী প্রাণীকে জোটবেঁধে স্যামন শিকারে ছুটতে দেখে যারপরনাই বিস্মিত বিজ্ঞানীরা।
৬ দিন আগে