কণ্ঠ শুনেই ছাগল বুঝতে পারে আপনি সুখী নাকি রাগী: গবেষণা 

অনলাইন ডেস্ক
Thumbnail image

সামনে যা পায় তাই খেয়ে ফেলে ছাগল। এমন স্বভাবের কারণে মানুষের কাছে প্রাণীজগতের সবচেয়ে নির্বোধ বা বোকার তকমা পেয়েছে প্রাণীটি। যদিও বিভিন্ন গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে ছাগলের বুদ্ধিমত্তা স্তর বেশ ওপরের দিকে। এবার আরেক গবেষণায় বিজ্ঞানীরা বলছেন, ছাগলেরা মানুষের কণ্ঠস্বর শুনেই বুঝতে পারে কেউ সুখী নাকি রাগী।

গবেষকেরা বলছেন, ছাগল মানুষের অনুভূতি বুঝতে শিখে গেছে; কারণ প্রাণীটি প্রায় ১০ হাজার বছর ধরে মানবজাতির সঙ্গে রয়েছে। ছাগলের মানসিক বুদ্ধি রয়েছে এবং তাঁরা মানুষের উপস্থিতি টের পায়। কণ্ঠস্বরের পাশাপাশি ছাগল শারীরিক অঙ্গভঙ্গি বোঝে। এমনকি হাসি এবং গোমড়া মুখের পার্থক্যও বোঝে।

বিজ্ঞানীরা কী খুঁজে পেয়েছেন?
ছাগলের ওপর এই গবেষণাটি চালিয়েছে প্রফেসর অ্যালান ম্যাকএলিগোটের নেতৃত্বাধীন একটি দল। তিনি হংকং সিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পশু আচরণ এবং কল্যাণ বিষয়ক বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করছেন। গবেষণাটি ‘অ্যানিমেল বিহ্যাভিয়র’ জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।

এই গবেষণায় ব্যবহার করা হয়েছে ভিন্ন প্রজাতি ও ভিন্ন ভিন্ন বয়সের ২৭টি ছাগল। যার সবগুলোই সাধারণ মানুষের পোষা।

একটি স্পিকারের মাধ্যমে ওই ছাগলগুলোর সামনে ‘এই এদিকে তাকাও’ একটি বাক্য বাজানো হয়। একই বাক্য রাগী এবং কোমল কণ্ঠে বাজানো হয়েছে।

এই পরীক্ষা চালানোর সময় গবেষকরা দেখতে পেয়েছেন—কোমল থেকে যখন রাগী কণ্ঠ বাজানো হয়েছে, তখন এতে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে ছাগলগুলো। একইভাবে যখন আবার রাগী থেকে কোমল কণ্ঠে বাক্যটি বাজানো হয়েছে তখনও ছাগলগুলো প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। ওই সময় ছাগলগুলো স্পিকারের দিকে দীর্ঘ সময় তাকিয়ে ছিল।

প্রফেসর ম্যাকএলিগট বলেছেন, ‘ছাগল এবং অন্যান্য গৃহপালিত প্রজাতির মানসিক স্বাস্থ্যর ওপর মানুষের কণ্ঠের গুরুত্ব বোঝার জন্য আরও গবেষণা প্রয়োজন।’

প্রফেসর ম্যাকএলিগট এবং সহকর্মীরা দেখিয়েছেন, ছাগল হাসিমুখ এবং গোমড়া মুখের মধ্যে পার্থক্য নির্ণয়ের মাধ্যমে মানুষের মানসিক অভিব্যক্তি বুঝতে পারে।

২০১৮ সালের সমীক্ষায় দেখা গেছে, সামগ্রিকভাবে ছাগলেরা গোমড়ামুখের চেয়ে হাসিমুখের মানুষের ছবির সঙ্গে বেশি সময় কাটায়।

রোহ্যাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও গবেষণাপত্রের লেখক ড. মারিয়ান মেসন ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য মেইলকে বলেছেন, অডিওর ধরন পরিবর্তনের পরে ছাগলগুলো দীর্ঘ সময় ধরে তাকিয়ে ছিল। এতে বোঝা যায় ছাগলগুলো আবেগের পার্থক্য লক্ষ্য করেছে এবং প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে।

এখান থেকে বিশেষজ্ঞরা গবেষণাপত্রে বলেছেন, প্রাণীরা মানুষের কণ্ঠে ‘আবেগীয় বিষয়বস্তুর পরিবর্তন’ বুঝতে সক্ষম।

এর আগে আরেকটি গবেষণায় প্রফেসর অ্যালান ম্যাকএলিগোট খুঁজে পেয়েছিলেন; কুকুর এবং ঘোড়ার মতো ছাগলও মানুষের মুখের অভিব্যক্তি বুঝতে পারে। তবে এই গবেষকরা জানিয়েছেন, কীভাবে মানুষের কণ্ঠস্বর এসব প্রাণীর ওপর প্রভাব রাখে সেটি জানতে হলে আরও গবেষণার প্রয়োজন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত