Ajker Patrika

মস্তিষ্কে মাইক্রোচিপ প্রতিস্থাপন, ‘সম্পূর্ণ বাক্যে’ যোগাযোগ করতে পারবেন পক্ষাঘাতগ্রস্ত ব্যক্তিরা

আপডেট : ২৩ মার্চ ২০২২, ১৭: ৪২
মস্তিষ্কে মাইক্রোচিপ প্রতিস্থাপন, ‘সম্পূর্ণ বাক্যে’ যোগাযোগ করতে পারবেন পক্ষাঘাতগ্রস্ত ব্যক্তিরা

সম্পূর্ণ পক্ষাঘাতগ্রস্ত বা পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে গেলেও এখন থেকে আক্রান্ত ব্যক্তিরা সম্পূর্ণ বাক্যের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে সক্ষম হবেন। প্যারালাইসিস বা অ্যামিওট্রফিক ল্যাটারাল স্ক্লেরোসিস রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি তাঁর স্নায়ুকোষ, মস্তিষ্ক, স্পাইনাল কর্ডের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। ফলে তাঁর শরীরের পেশিকোষগুলো আর কাজ করতে সক্ষম হন না। কিন্তু সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা পক্ষাঘাতগ্রস্ত মানুষের মস্তিষ্কে এমন একটি মাইক্রোচিপ স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছেন যা দিয়ে পক্ষাঘাতগ্রস্ত মানুষ তাঁর পরিবারের সঙ্গে সম্পূর্ণ বাক্য যোগাযোগ করতে পারবেন।

বিজ্ঞান সাময়িকী নেচার কমিউনিকেশনস জার্নালে প্রকাশিত এক নিবন্ধে বলা হয়েছে, এই প্রথমবারের মতো সম্পূর্ণরূপে পক্ষাঘাতগ্রস্ত কোনো ব্যক্তি—যার মস্তিষ্ক কর্মক্ষম কিন্তু শরীর সম্পূর্ণরূপে পক্ষাঘাতগ্রস্ত তিনি ওই মাইক্রোচিপ সম্পূর্ণ বাক্যে যোগাযোগ করতে সক্ষম হয়েছেন। ৩৬ বছর বয়সী এক জার্মান ব্যক্তি যিনি ২০১৫ সালে পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে যান। তাঁর মস্তিষ্কে মাইক্রোচিপ স্থাপনের পর তিনি তাঁর পরিবারের সঙ্গে সম্পূর্ণ বাক্য দিয়ে যোগাযোগ করতে সক্ষম হন। 

চিকিৎসকেরা ওই ব্যক্তির মস্তিষ্কের মোটর কর্টেক্সে দুটি মাইক্রোচিপ স্থাপন করেছেন। প্রতিটি মাইক্রোচিপের আকার প্রায় দেড় মিলিমিটার। মস্তিষ্কের শীর্ষে অবস্থিত মোটর কর্টেক্স অঞ্চলটি মানুষের পেশির নড়াচড়া ও নিয়ন্ত্রণের জন্য দায়ী। মাইক্রোচিপ স্থাপনের পর গবেষকেরা ওই ব্যক্তিকে শারীরিক নড়াচড়া কল্পনা করতে প্রশিক্ষণ দেন। গবেষকেরা মস্তিষ্ক থেকে একটি নির্ভরযোগ্য সংকেত পাওয়ার চেষ্টায় এই পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। এর পর, তাঁরা প্রাপ্ত সংকেতটিকে এক ধরনের কমান্ডে অনুবাদ করার চেষ্টা করেন এবং তাঁরা অনেকাংশে সফল হন। 

নেদারল্যান্ডসের ইউনিভার্সিটি মেডিকেল সেন্টার ইউট্রেক্টের গবেষক ও মাইক্রোচিপ প্রতিস্থাপনকারী দলের সদস্য মারিস্কা ভ্যানস্টিনসেল সায়েন্স ডট অর্গকে বলেছেন, ‘লোকজন সত্যিই সন্দেহ করছে যে—এটি সম্ভব ছিল কিনা।’ 

সাধারণত একজন পক্ষাঘাতগ্রস্ত লোক কথা বলতে পারেন না। তাই তাঁরা যোগাযোগের বেলায় একটি আই-ট্র্যাকিং ডিভাইস ব্যবহার করে ডিজিটাল স্ক্রিনে অক্ষর নির্বাচন করে চোখের ইশারায় তাঁকে করা প্রশ্নের হ্যাঁ বা না উত্তর দিতে পারেন। প্রখ্যাত বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিংও এ পদ্ধতি অনুসরণ করে যোগাযোগ করে থাকেন। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত