অবশেষে মিরাজের স্বপ্নপূরণ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ১১ নভেম্বর ২০২৪, ২১: ৫৬
প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক ম্যাচে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ছবি: এসিবি

এই স্বপ্নটা তিনি দেখছেন কৈশোর থেকে। মেহেদী হাসান মিরাজের মধ্যে নেতৃত্বগুণ বিসিবি খুঁজে পেয়েছিল অনেক আগেই। বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে তাঁকে দলের অধিনায়ক করা সে কারণই। ২০১৬ সালে যুব বিশ্বকাপ বাংলাদেশ খেলেছে তাঁরই নেতৃত্বে। যে মিরাজের মধ্যে ভবিষ্যতের নেতা খোঁজা হচ্ছিল, সেই তিনি বাংলাদেশ দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ পেলেন ক্যারিয়ারের ৮ বছর কাটিয়ে দেওয়ার পর, ১৭৬তম আন্তর্জাতিক ম্যাচে।

মিরাজ কতবারই বলেছেন, ছোটবেলা থেকে স্বপ্ন দেখেছেন বাংলাদেশ দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার। হতে পারে ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক, তবু জাতীয় দলকে অধিনায়কত্ব করার স্বপ্ন কিছুটা হলেও পূরণ তো হয়েছে। সেটিও এমন এক ম্যাচে, যেটিতে বাংলাদেশ খেলতে নেমেছে সিরিজ জয়ের লক্ষ্যে। অলিখিত ফাইনালে তাঁর হাতে নেতৃত্বের ব্যাটন এসেছে দৈবচক্রে। নিয়মিত অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত হঠাৎ চোটে পড়ায় দলের অধিনায়কত্বের ভার তাঁর কাঁধে বর্তেছে। কদিন ধরেই শান্তর বিকল্প হিসেবে মিরাজকে অধিনায়ক হিসেবে চিন্তা করতে শুরু করেছে বিসিবি। সেটির একটা রিহার্সাল যেন আজ শারজায় হয়ে যাচ্ছে।

শারজার ঝকঝক রোদ্দুরে আজ যখন তিনি টস করতে নামলেন প্রতিপক্ষের অধিনায়ক হাসমতউল্লাহ শাহিদির সঙ্গে, রোদচশমার ফাঁকে চিকচিক করছিল মুখে ছড়িয়ে থাকা উজ্জ্বল হাসি। ভাগ্যের খেলায় নেমেই জিতলেন মিরাজ। টস জিতেই নিলেন ব্যাটিং। আর ব্যাটিংয়ে যথারীতি সেই একই চিত্র—হঠাৎ ধসে বিপদে বাংলাদেশ। ১ উইকেটে ৫৩ রান থেকে হুট করে হয়ে গেল ৪ উইকেটে ৭২। বিরুদ্ধে স্রোতে লড়াইয়ের অভিজ্ঞতা মিরাজের ভালোই আছে। আজও নেতৃত্বের প্রথম প্রহরে কঠিন পরিস্থিতিতে ধরলেন দলের হাল।

বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহকে যোগ্য সঙ্গ দিতে মিরাজ এগিয়েছেন ঠান্ডা মাথায়, অতিরক্ষণাত্মক ব্যাটিংয়ে। ফিফটি করতে নিয়েছেন ১০৬ বল। ওয়ানডেতে বাংলাদেশের ব্যাটারদের এ রকম মন্থর ফিফটি শুধু জুনায়েদ সিদ্দিকীর আছে। ২০১০ সালে চট্টগ্রামে জুনায়েদও ফিফটি করেছিলেন ১০৬ বলে। মিরাজ চেয়েছেন মাঝ ইনিংসে আর কোনো উইকেট না হারিয়ে স্লগ ওভারে গিয়ে চালিয়ে ২৫০‍ পেরোনো একটা স্কোর গড়া। মাহমুদউল্লাহ-মিরাজের পঞ্চম উইকেটে যোগ করা ১৪৫ রানের জুটি মূলত বাংলাদেশের ইনিংসের হাইলাইট। ৪৫.৬ ওভারে ওমরজাইকে তুলে মারতে গিয়ে যখন ফিরছেন, নামের পাশে সময়োপযোগী ৬৬ রান।

ম্যাচের ফল যেটাই হোক, প্রথম ম্যাচেই অধিনায়ক মিরাজ অন্তত বার্তা দিয়েছেন জাতীয় দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়ার সামর্থ্য তাঁর আছে। তাঁর অধিনায়কত্বের আরেকটি পরীক্ষা হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজে। নিয়মিত টেস্ট অধিনায়ক শান্ত কুঁচকির চোটে পড়ে নেই ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে। টেস্টে অধিনায়ক মিরাজের যাত্রা শুরু হতে পারে অ্যান্টিগাতে। বয়সভিত্তিক ক্রিকেট আর ঘরোয়া ক্রিকেটে নেতৃত্বের পরীক্ষায় পরীক্ষিত মিরাজের এ এক দারুণ সুযোগ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নেতৃত্বের প্রশ্নে নিজেকে প্রমাণ করার।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত