চোট, বাজে পারফরম্যান্স, অবসর ঘোষণা, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আবারও ফেরা, পরবর্তীতে ওয়ানডে অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেওয়া—দুই মাসের মধ্যে কত কিছুই না ঘটে গেল তামিম ইকবালের সঙ্গে। এই বাঁহাতি ব্যাটারের ক্রিকেট ক্যারিয়ারে এমন কঠিন সময় এর আগে আসেনি বললেই চলে। 

তামিম নিজেও একাধিকবার সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছিলেন, খুব কঠিন সময় ছিল সেটি। সর্বশেষ নিজেদের মাঠে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ চলাকালীন চট্টগ্রাম থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি। তাঁর এই সিদ্ধান্ত সমর্থকদের বড় অংশই মেনে নিতে পারছিলেন না। 

তামিমকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আবেগী পোস্টে ঢেউ তোলেন সমর্থকেরা। অবসরে ভেঙে ফেরার পরও ছিল একই দৃশ্য। তামিমের ফেরার অপেক্ষায় আছেন তাঁরা। সমর্থকদের এমন ভালোবাসা পেয়ে রীতিমতো মুগ্ধতা প্রকাশ করলেন তামিমও। বাংলাদেশ দলের এই ওপেনার জানিয়েছেন, সমর্থকদের এমন ভালোবাসার প্রতিদান এবার রানের ফুলকি ছুটিয়ে দিতে চান তিনি। 

আজ মিরপুরে একটি শো-রুম উদ্বোধনে গিয়ে সংবাদমাধ্যমকে তামিম বলেন, ‘মানুষের সাড়া ছিল অসাধারণ। এটা অনুপ্রেরণা জোগায়, চেষ্টা করছি যত তাড়াতাড়ি খেলায় ফিরে আসতে পারি। যে ভালোবাসা তারা দেখাচ্ছে, ওই ভালোবাসাটা আবারও যেন ফিরিয়ে দিতে পারি।’ 

লন্ডনের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শে চোট থেকে পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় আছেন তামিম। ফিট হয়ে ফেরার জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন এশিয়া কাপে না খেলার। তবে তামিম আশাবাদী নিউজিল্যান্ডের পুরো সিরিজেই খেলতে পারবেন, ‘আমাকে যে প্রোগ্রামটা দেওয়া হয়েছে, আল্লাহর রহমতে প্রতিটা প্রোগ্রামে টিক দিয়েছি ভালোভাবে। খুব ভালোভাবে আমার উন্নতি হচ্ছে। বিশেষত ১০ সেপ্টেম্বরের পর থেকে ১০ দিনের মতো সময় আছে, তখন পুরোদমে অনুশীলন করার পরিকল্পনা আছে। এখন অবধি কোনো সেট ব্যাক হয়নি। কিছু জিনিস থাকেই। কিন্তু ওই পর্যায়ের ব্যথা অনুভব করিনি। পরের এক সপ্তাহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ কারণ, পুরোদমে অনুশীলন করার পরিকল্পনা আছে। আমি খুব আশাবাদী ও ইতিবাচক যে, নিউজিল্যান্ড সিরিজের শুরু থেকে খেলতে পারব।’ 

এশিয়া কাপে বাংলাদেশ মূল ওপেনারদের ব্যাট এখনো অনুজ্জ্বল। তামিমের জায়গায় যারা খেলছেন, তাঁরাও সেভাবে নিজেদের মেলে ধরতে পারেননি। অন্যান্য পজিশনে তরুণ ব্যাটাররা ভালো অবদান রাখতে ব্যর্থ হয়েছেন। তবে তামিম এসব নিয়ে একদমই মন্তব্য করতে নারাজ, ‘খেলা নিয়ে এখান থেকে মন্তব্য করা উচিত হবে না। কারণ যারা ওখানে আছে, আমি নিশ্চিত তারা তাদের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করছে। কেবল আমি দলে নাই, বাইরে আছি দেখে একটা মন্তব্য করে দিলাম, আমি তেমন লোক না। আমিও দলেরই অংশ। নিজেকে তাড়াতাড়ি তৈরি করার চেষ্টা করছি যেন সুযোগ এলে সেরাটা দিতে পারি। খারাপ পারফরম্যান্স নিয়ে মন্তব্য করা উচিত না বলে মনে করি।’

এক-দুই ম্যাচে হারে ঘাবড়ানোর কিছু নেই মনে করেন তামিম। তাই বললেন, ‘দেখা তো হচ্ছে খেলা। ভালো না খেললে হতাশ অবশ্যই হই। আমার মনে হয় না একটা-দুইটা খারাপ পারফরম্যান্সের কারণে গত পাঁচ-ছয় বছরের কঠিন পরিশ্রম ভুলে যাবো, এটা হতেই পারে। আমার মনে হয়, আমরা এখনো খুব ভালো দল ওয়ানডেতে। একটা দুটা ম্যাচে হতেই পারে। আর এটা হলেও ঘাবড়ানোর কিছু নেই। ড্রেসিংরুমে যারা আছে, তারা সবাই বিশ্বাস করে আমরা গত দুই তিন ম্যাচে যা হয়েছে তার চেয়ে ভালো দল।’