বল-জার্সি, সবই লুটেছেন বাফুফের এই কর্তা

ক্রীড়া ডেস্ক
আপডেট : ১৫ এপ্রিল ২০২৩, ১৪: ২৫
Thumbnail image

বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) বিরুদ্ধে আকণ্ঠ দুর্নীতির অভিযোগ বারবার হেলায় উড়িয়ে দিতেন ফেডারেশনের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন। এখন ফিফার তদন্ত শেষে দেখা যাচ্ছে, রীতিমতো ‘পুকুরচুরি’র ঘটনায় অভিযুক্ত বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ। বল থেকে জার্সি—ফিফা সোহাগের বিরুদ্ধে দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে সবকিছুতেই ৷

গতকাল সোহাগকে দুই বছরের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ফিফা। একই সঙ্গে ১০ হাজার সুইস ফ্রাঁ জরিমানা করা হয়েছে, যেটা বাংলাদেশি টাকায় ১২ লাখ। ফিফা তহবিল নিয়ে মিথ্যা তথ্য দেওয়া ও অনিয়ম করায় বাফুফের সাধারণ সম্পাদককে এই শাস্তি দিয়েছে বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা। কেনাকাটা ও ফিফার তহবিল অপব্যবহার নিয়ে সোহাগকে পাঠানো ৫১ পৃষ্ঠার চিঠি ফিফার ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। বাফুফে ও এএফসিকেও এই চিঠির কপি দেওয়া হয়েছে। বাফুফের সাধারণ সম্পাদকের কেনাকাটায় চারটি অনিয়মের কথা বিস্তারিত উল্লেখ করেছে ফিফা। ঘটনাগুলো ঘটেছে ২০১৭-এর জানুয়ারি থেকে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরের মধ্যে।

কীভাবে ফিফার ফান্ড থেকে ও ক্রীড়াসামগ্রী কেনাকাটায় অর্থ আত্মসাৎ করেছেন সোহাগ, ফিফার চিঠিতে উঠে এসেছে সেসব। ২০২০-এর জুনে আবাসিক ক্যাম্প ও বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের ম্যাচের ক্রীড়াসামগ্রী কেনার জন্য দরপত্র আহ্বান করেছিল ন্যাশনাল টিমস কমিটি। স্পোর্টস লিংক, স্পোর্টস কর্নার, রবিন এন্টারপ্রাইজ নামের যে তিনটি প্রতিষ্ঠান দরপত্র জমা দিয়েছিল, ফিফার অনুসন্ধানে উঠে এসেছে তিনটি প্রতিষ্ঠানই নামহীন ও ভুয়া। তিনটি প্রতিষ্ঠানের একটিও সিল ব্যবহার করেনি। তিনটি প্রতিষ্ঠানেরই লেখার ধরন ছিল এক। ২০২১ এর ৫ মার্চ ফিফার নিয়োগ করা বিডিও এলএলপির নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, তিনটি দরপত্রের ডিজাইন একই রকম। ফিফার বুঝতে সমস্যা হয়নি, নামে আলাদা হলেও এই তিন প্রতিষ্ঠানই মূলত এক! তিনটি প্রতিষ্ঠানই ‘কোটেশন’ শব্দটি ব্যবহার করেছিল একই ফন্ট ও একইভাবে। কোনোটিতেই প্রতিষ্ঠানের সিল দেওয়া ছিল না।

সোহাগের দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া গেছে ঘাস কাটার যন্ত্র থেকেও। ১৪০০ ডলারের ঘাস কাটার মেশিন কেনার যে তিনটি প্রতিষ্ঠানের দরপত্র পাওয়া গেছে, তিনটি প্রতিষ্ঠানের লেখার ধরনও ছিল এক। ভুল ছিল বানানেও।

প্রায় একইভাবে বল কেনাতেও দুর্নীতি হয়েছে বাফুফেতে। এখানেও দরপত্র দিয়েছে তিনটি প্রতিষ্ঠান। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে বাফুফের দেওয়া ৪০০ বল কেনার দরপত্র জিতে নেয় ওফেলিয়াস ক্লোজেট। দরপত্র পাওয়ার দৌড়ে ছিল মারিয়া ইন্টারন্যাশনাল, এইচ ইউ জামান ট্রেডিং নামের দুটি প্রতিষ্ঠানও। ফিফার নিরীক্ষায় উঠে আসে, তিনটি দরপত্র জমা হয়েছে একই জায়গা থেকে।

ফিফা ইনভেস্টিগেটরি চেম্বার কিছু লেনদেন বিশ্লেষণ করে ৫ লাখ ৯৭ হাজার ৮৪ মার্কিন ডলার লেনদেনে আর্থিক অসংগতি খুঁজে পেয়েছে, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৬ কোটি ৩৫ লাখ টাকার বেশি। ফিফা বারংবার তাদের আর্থিক ফান্ডে বাফুফের নগদ উত্তোলনের প্রমাণ পেয়েছে। সতর্ক ও নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পরও বাফুফের হস্তক্ষেপ দেখেছে ফিফা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত