লাল-সবুজ জার্সি পান, খেলা হয় না তাঁর

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১১ মে ২০২১, ১৫: ১৯

ঢাকা: বয়স একটু কম বলে নেপালে সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ মূল দলে খেলা হয়নি মো. জুয়েলের। সময়টা ২০১৩। আট বছর পর এই নেপালেই আরেকবার হৃদয় ভাঙল জুয়েলের। এবার জায়গা হলো না জাতীয় দলে। গত মার্চে কাঠমান্ডুর ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্টে দলের আশপাশেই থাকলেন। কিন্তু এক মিনিটের জন্যও মাঠে নামা হলো না জাতীয় দলের জার্সি গায়ে।

বয়সভিত্তিক ও জাতীয় দল—স্কোয়াডে ছিলেন দুবারই। আরেকবার ডাক পেয়েছিলেন অনূর্ধ্ব-২৩ দলে, সেবারও মূল দলে জায়গা হয়নি। দলে থাকেন কিন্তু একাদশে ঠাঁই মেলে না—এ চক্র ঘুরে জুয়েল এবারও ডাক পেয়েছেন জাতীয় দলের প্রাথমিক দলে। জায়গা হয়েছে কাতারে বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের প্রাথমিক দলে। কাল উঠে গেছেন আবাসিক ক্যাম্পেও।

প্রাথমিক দলে জায়গা হওয়ার আনন্দে জুয়েল হাসেন। আনন্দিত হন। একই সঙ্গে পোড়েন আফসোসে। প্রাথমিক দলে জায়গা পেয়েছেন। মূল দলে তো নয়! মূল দলে সুযোগ হলেও যে খেলতে পারবেন, তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। সব আফসোস ভুলে বাংলাদেশ পুলিশে খেলা এই স্ট্রাইকার ডুবে আছেন জাতীয় দলের জার্সির জড়ানের স্বপ্নে, ‘ভীষণ আফসোস হয় ম্যাচ খেলতে না পেরে। তিনবার দলে ছিলাম। জার্সিও পেয়েছি, কিন্তু পরে মাঠে নামতে পারিনি। জাতীয় দলের হয়ে খেলতে পারার যে স্বপ্ন–আনন্দ, সেটি কখনো পাইনি। একবার জাতীয় দলের হয়ে মাঠে নামতে পারলে কেউ আমাকে বলতে পারবে না ছেলেটা খারাপ খেলে।’

আরামবাগের সাবেক কোচ ইব্রাহিম খলিল কালা ভাইয়ের হাত ধরে ফুটবলে পথচলা জুয়েলের। সুনামগঞ্জের ছেলে হলেও ঢাকাতেই বেড়ে ওঠা। বিদ্যা-শিক্ষা অর্জন বিকেএসপিতে। তবু জুয়েল তাঁর উঠে আসার সমস্ত কৃতিত্বই দেন কালা ভাইকে। বয়সভিত্তিক ফুটবলে বিশ্বনাথ ঘোষ, সোহেল রানা, সাদ উদ্দিনদের সঙ্গে খেলেছেন যাঁরা এখন জাতীয় দলের নিয়মিত ফুটবলার, খেলছেন বড় বড় ক্লাবে। আর আরামবাগ হয়ে জুয়েল সবে খেলছেন বাংলাদেশ পুলিশে।

স্বাধীনতা কাপে চার গোল করেছিলেন। এবারের লিগে এখন পর্যন্ত গোল মাত্র তিনটি। প্রথম পর্বে এক গোলের পর কেবল উত্তর বারিধারার বিপক্ষেই জোড়া গোল। একজন দেশি স্ট্রাইকারের গোল এত কম কেন? জুয়েল বলছেন, তাঁরা সুযোগ পান বড্ড কম, ‘লিগের প্রতিটি দলের মূল স্ট্রাইকার একজন বিদেশি। দলগুলো দেশি স্ট্রাইকারদের তেমন ভরসা করে না। আমি খেলি ক্রিস্টিয়ান কোকুর (আইভরিয়ান স্ট্রাইকার) সহকারী স্ট্রাইকার হিসেবে। বড় ম্যাচে আমার কাজ হলো কোকুকে বল বানিয়ে দেওয়া, নিচে গিয়ে আক্রমণ শাণানো। ছোট দলগুলোর বিপক্ষে চেষ্টা করি গোল করতে।’

জুয়েলের তাই প্রশ্ন, ‘যদি বড় ম্যাচে গোল করারই সুযোগ না পাই তাহলে মানুষ আমাকে চিনবে কেমন করে? জাতীয় দলেই বা সুযোগ হবে কীভাবে?’ উত্তরটা কি জানা আছে সংশ্লিষ্টদের?

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত