শিশুদের জন্য এআই নিরাপদ তো

ফিচার ডেস্ক 
Thumbnail image

এআই নিঃসন্দেহে একটি নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে মানুষের জন্য। তবে এই প্রযুক্তির শুরুর দিকেই গবেষকেরা মনে করছেন, এখানে দায়িত্বের সঙ্গে উদ্ভাবনকাজ সম্পন্ন করা প্রয়োজন। এখন অনেক কারণে বিভিন্ন ডিভাইস শিশুদের হাতের নাগালে পৌঁছে যাচ্ছে দ্রুত। আর তারাও নিজেদের অজান্তে এআইয়ের জগতে নিজেদের ডুবিয়ে দিচ্ছে। গবেষক ও সচেতন মানুষ ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলেছেন, এআইয়ের এই বিশাল জগৎটি কি শিশুদের জন্য প্রস্তুত? কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা অনুষদের গবেষক ড. কুরিয়ান বলছেন, ‘শিশুরা সম্ভবত এআইয়ের সবচেয়ে উপেক্ষিত স্টেকহোল্ডার।’ 

সমীক্ষায় উঠে এসেছে, এআই চ্যাট বোটগুলোয় প্রায়ই একটি ‘এম্পটি গ্যাপ’ থাকে। এটি তরুণ ব্যবহারকারীদের ক্ষতির কারণ হতে পারে। গবেষণায় শিশুদের জন্য নিরাপদ এআইয়ের বিকাশের ওপর জোর দেওয়া হয়। ড. কুরিয়ান শিশুর সুস্থতার ওপর পিএইচডি করার সময় একটি গবেষণা পরিচালনা করেন। তিনি বর্তমানে কেমব্রিজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগে কাজ করছেন। লার্নিং, মিডিয়া এবং টেকনোলজি জার্নালে প্রকাশিত তাঁর একটি লেখায় তিনি বলেছেন, এআই বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশাল সম্ভাবনা তৈরি করছে। তবে এ ক্ষেত্রে আরও দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কাজ করতে হবে।

ড. কুরিয়ান বলেছেন, ‘বর্তমানে খুব কম ডেভেলপার ও প্রতিষ্ঠানে শিশুর নিরাপদ এআইভিত্তিক সুপ্রতিষ্ঠিত নীতি রয়েছে। কারণ, সম্প্রতি সাধারণ মানুষ প্রযুক্তিটি বিনা মূল্যে ব্যবহার করা শুরু করেছে।’ তিনি মনে করছেন, এখন যেহেতু শিশুরাও এর কারণে ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে, সে ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানগুলোর উচিত নিজেদের নীতিগত দিকগুলো শুধরে নেওয়া। গবেষণায় এর ভয়াবহতার উদাহরণও টেনেছেন এই গবেষক। উল্লেখ করেছেন ২০২১ সালের একটি ঘটনার ভয়াবহতা। যেখানে আমাজনের এআই ভয়েস সহকারী অ্যালেক্সা ১০ ​​বছর বয়সী এক শিশুকে একটি মুদ্রা দিয়ে সচল বৈদ্যুতিক প্লাগ স্পর্শ করার নির্দেশ দিয়েছিল। 

এআই কণ্ঠ বুঝে বয়স নির্ধারণ করতে পারে না। একটি নির্দেশনা কোনো শিশু দিয়েছে, নাকি কোনো প্রাপ্তবয়স্ক কেউ দিয়েছেন, তা বোঝার ক্ষমতা তার নেই। ফলে পরামর্শ দেওয়ার ক্ষেত্রে এআই শিশু ও প্রাপ্তবয়স্ক নির্দিষ্ট করতে পারে না বলে সবার জন্য একই ধরনের পরামর্শ দিয়ে থাকে। এতে শিশুরা যেকোনো সময় সমস্যা বা বিপদের মুখে পড়তে পারে। আর চ্যাট বটগুলো সাধারণত শিশুরাই বেশি ব্যবহার করে। 

সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, শিশুরা তাদের মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে প্রাপ্তবয়স্কদের চেয়ে বন্ধুত্বপূর্ণ চেহারার রোবটের কাছে মনের ভাব বেশি প্রকাশ করে। কুরিয়ানের গবেষণায় বলা হয়েছে, অনেক চ্যাট বটের বন্ধুত্বপূর্ণ ও প্রাণবন্ত ডিজাইনের কারণে শিশুরা তাদের দ্রুত বিশ্বাস করে। যদিও এআই তাদের অনুভূতি বা চাহিদা কোনোটাই বুঝতে পারে না। 

গবেষণায় ডিজাইনের ওপর শিশুকেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গিকে গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ড. কুরিয়ান। এ জন্য শিক্ষাবিদ, শিশু সুরক্ষা বিশেষজ্ঞ এবং তরুণদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার আহ্বান জানানো হয়। গবেষণায় বলা হয়, প্রযুক্তিগুলোকে আগে থেকে মূল্যায়ন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নেতিবাচক অভিজ্ঞতা হওয়ার আগেই সক্রিয় পদ্ধতির মাধ্যমে এগুলোকে উন্নত করার কথা উল্লেখ করা হয় গবেষণাটিতে।

সূত্র: সাই টেক ডেইলি ডট কম

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত