নাসিম আহমেদ
ঢাকা: দেহতাত্ত্বিকেরা বলেন—‘যা নেই ভাণ্ডে, তা নেই ব্রহ্মাণ্ডে।’ কথাটা একটু হেঁয়ালিপূর্ণ নিশ্চিতভাবে। কিন্তু এই হেঁয়ালির জটগুলো খুলতে শুরু করলেই নড়চড়ে বসতে হয়। এই যেমন আজকের দিনের সবচেয়ে আলোচিত করোনাভাইরাসের টিকা বা ভ্যাকসিন, তার যে কর্মপন্থা, তার মূল নির্দেশনা আদতে আছে দেহের ভেতরেই।
মানুষের দেহ এমন এক দুর্গ, যেখানে বাইরে থেকে আসা যেকোনো কিছুকেই সন্দেহের চোখে দেখা হয়; চেষ্টা করা হয় প্রতিহতের। কিন্তু যদি এমন কোনো শত্রু এসে ঢুকে পড়ে, যার সম্পর্কে আগে থেকে জানা–বোঝা নেই, তবে পড়তে হয় বিপাকে। করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রেও ঠিক এমনটিই হয়েছে। পাহারাদারদের চোখ ফাঁকি দিয়ে এই ভাইরাস ঢুকে পড়েছে মূল দেহ–দুর্গে। শুধু ঢুকেই ক্ষান্ত হয়নি সে। অতি ধুরন্ধর এই ভাইরাস প্রতিনিয়ত নিজেকে বদলে নিয়ে নাকাল করছে দেহের ভেতরে থাকা নিরাপত্তারক্ষীদের।
কথা হলো এই প্রহরী বা নিরাপত্তারক্ষী আদতে কারা? রক্তের মধ্যেই আছে এই পাহারাদারেরা। এই রক্তের কাজকর্ম অনেকটা যুদ্ধক্ষেত্রে থাকা নানা বাহিনীর মতোই। এর মধ্যে থাকা তিন ধরনের কোষের কাজ একেবারে নির্দিষ্ট। এই তিন ধরনের কোষ হচ্ছে শ্বেত রক্তকণিকা, লোহিত রক্তকণিকা ও অনুচক্রিকা। এর মধ্যে শ্বেত রক্তকণিকাকে নিখাদ সৈনিক বলা যায়। শরীরকে বহিঃশত্রু থেকে রক্ষা করাই তার একমাত্র ব্রত। আর লোহিত রক্তকণিকাকে বলা যায়, যুদ্ধক্ষেত্রে থাকা সেই দল, যে খাবারসহ নানা রসদ সরবরাহের বিষয়টি নিশ্চিত করে। শরীরের কোষে কোষে অক্সিজেন সরবরাহ থেকে শুরু করে শরীরের জন্য অতি জরুরি কিছু উপাদান বহনের কাজটি এই রক্তকণিকা করে। বাকি থাকে অণুচক্রিকা। এই রক্তকণিকা হচ্ছে সেই জরুরি সেবা ইউনিট, যে ক্ষত সারাতে এবং শরীরের শুশ্রূষা দিতে নিযুক্ত থাকে সব সময়।
করোনাভাইরাস থেকে শুরু করে যেকোনো ভাইরাস বা জীবাণু প্রতিরোধের ক্ষেত্রে যে মুখ্য ভূমিকাটি রাখে, সে হলো শ্বেত রক্তকণিকা। এই শ্বেত রক্তকণিকারও আবার আছে নানা প্রকারভেদ। এগুলো হলো নিউট্রোফিল, লিম্ফোসাইট, ইওসিনোফিল, মনোসাইট ও ব্যাসোফিল। এদের একেকজনের দক্ষতা একেক রকম। এদের লড়াইয়ের কৌশলও আলাদা। অনেকটা ওই যুদ্ধক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের সেনা সমাবেশের মতো বিষয়।
স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট হেলথলাইনের তথ্যমতে, ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাককে নিকেশ করার দায়িত্বটি নিউট্রোফিলের ওপর। বাইরে থেকে কোনো শত্রু শরীরে প্রবেশ করতে চাইলে শ্বেত রক্তকণিকার এই অগণিত সেনা সমাবেশকে ডিঙিয়েই যেতে হবে। এর পরেই রয়েছে লিম্ফোসাইটের প্রাচীর। এরা অ্যান্টিবডি তৈরি করে ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাসসহ সম্ভাব্য সব ক্ষতিকর কোষের বিরুদ্ধে লড়াই করে। রয়েছে ইওসিনোফিলের মতো অভিজ্ঞ কোষেরা, যারা বিভিন্ন অণুজীব ও ক্যানসার কোষকে হত্যা করে। বাকি থাকল মনোসাইট ও ব্যাসোফিল। শ্বেতকণিকায় থাকা পাঁচ ধরনের কোষের মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘ আয়ুষ্কাল রয়েছে মনোসাইটের। এরা মুখ্যত ব্যাকটেরিয়া প্রতিহতে কাজ করে। আর ব্যাসোফিল মূলত সেই ঘণ্টাবাদক, যে যেকোনো বহিঃশত্রুর অণুপ্রবেশ টের পেলেই নিজের সবটা শক্তি দিয়ে সতর্ক সংকেতটি বাজায়।
তাহলে এই যে শরীর, তা এই বাইরের দুনিয়া থেকে আলাদা হলো কী প্রকারে? এই শরীরে ভেতরে থাকা নিরাপত্তারক্ষীরাও কাজ করে চেনা পৃথিবীর অন্যসব নিরাপত্তা ব্যবস্থার মতো করেই। বিভিন্ন ধরনের শ্বেত রক্তকোষ বিভিন্ন পদ্ধতিতে প্রতিরক্ষা গড়ে তোলে। বর্তমান পরিস্থিতিতে শ্বেত রক্তকণার লিম্ফোসাইট কোষগুলোই সবচেয়ে ব্যস্ত সময় পার করছে। সঙ্গে মনোসাইট ও নিউট্রোফিলসের ব্যস্ততাও কম নয়। এই মূল পাঁচ ধরনের কোষের মধ্যে কিছু কোষ আবার বহিঃশত্রুকে একেবারে গিলে ফেলতে ভালোবাসে। এরা হলো ম্যাক্রোফাজ।
জীবাণুর সঙ্গে লড়াই–টড়াই নয়, ম্যাক্রাফাজ জীবাণুকে একেবারে গিলে ফেলে। এখানেই ক্ষান্ত হয় না তারা। জীবাণুর একটি উপাদানকে রক্তে ছড়িয়ে দেয় ম্যাক্রোফাজ, যাকে বলা হয় অ্যান্টিজেন। শরীর অ্যান্টিজেনকে বিপজ্জনক বিবেচনা করে এর বিপক্ষে প্রতিরক্ষা গড়ে তোলার জন্য অ্যান্টিবডিগুলোকে সক্রিয় করে তোলে। আর এই সক্রিয় করার কাজটি করে বি লিম্ফোসাইট। রক্তে ছড়িয়ে পড়া অ্যান্টিজেনকে ধ্বংসের জন্য অ্যান্টিবডি তৈরি করে বি–লিম্ফোসাইট। এই কাজ যখন চলে, ঠিক তখন গোটা দেহে সাঁড়াশি অভিযান চালায় টি–লিম্ফোসাইট। এটি এরই মধ্যে আক্রান্ত কোষকে মেরে ফেলে।
আমরা কখন কোনো একটি ভাইরাসে আক্রান্ত হলে কাবু হই? এর উত্তর খুব সোজা। এই বি–লিম্ফোসাইট ও টি–লিম্ফোসাইট কোষগুলো যদি অ্যান্টিজেন ও ভাইরাসের কারণে আক্রান্ত কোষগুলোকে চিনতে না পারে, তবেই আমরা কাবু হই। করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রেও ঠিক এ ঘটনাই ঘটেছে। অধিকাংশ মানুষের শরীরের সুরক্ষা প্রাচীরকে ফাঁকি দিতে পেরেছে এই নতুন করোনাভাইরাস। ফলে শরীরের প্রতিরক্ষার দায়িত্বে থাকা কোষগুলোকে এখন প্রশিক্ষণ দেওয়া জরুরি। এই প্রশিক্ষণের কাজটি করার জন্যই আনা হচ্ছে ভ্যাকসিন।
ভ্যাকসিন বা টিকা কীভাবে কাজ করে?
প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করে দেওয়ার জন্য একেক ধরনের ভ্যাকসিন একেকভাবে কাজ করে। তবে সব ধরনের ভ্যাকসিন একটি সাধারণ কাজ করে। সেই সাধারণ কাজটি হলো– ভ্যাকসিন শরীরে মেমোরি টি–লিম্ফোসাইট ও মেমরি বি–লিম্ফোাসাইট কোষ তৈরি করে রাখে। ফলে ভাইরাসটির বিপক্ষে ভবিষ্যতে কীভাবে লড়াই করতে হবে, তা শরীরের জানা থাকে।
যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের (সিডিসি) ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এ সম্পর্কিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, টিকা নেওয়ার পর শরীরের টি–লিম্ফোসাইট ও বি–লিম্ফোসাইট তৈরি করার জন্য কয়েক সপ্তাহ সময় লাগে। ফলে করোনা ভ্যাকসিন নেওয়ার কিছু আগে বা কিছু পরেও করোনা হতে পারে। কারণ ভ্যাকসিন শরীরে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করে দেওয়ার মতো যথেষ্ট সময় তখনো পায়নি। অনেক সময় প্রতিরক্ষা তৈরির সময় কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও হতে পারে। যেমন জ্বর হতে পারে। এটা নির্দেশ করে যে শরীরে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি হচ্ছে। তাই টিকা নেওয়ার পর গা–ব্যথা বা জ্বর হলে ঘাবড়ানোর কিছু নেই।
কত ধরনের ভ্যাকসিন?
কর্মপদ্ধতি ভেদে ভ্যাকসিন বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। এর মধ্যে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে এখন পর্যন্ত চার ধরনের ভ্যাকসিন এসেছে। গোটা বিশ্বে করোনা টিকাগুলোর মধ্যে ভেক্টর ভ্যাকসিনই এখন সবচেয়ে বেশি অনুমোদন পেয়েছে এবং প্রয়োগও হচ্ছে।
ভেক্টর ভ্যাকসিন
এ ধরনের ভ্যাকসিন বিভিন্ন ধরনের ভাইরাসের রূপান্তরিত ধরন ধারণ করে। কোভিড–১৯ রোগ সৃষ্টিকারী ভাইরাসের জেনেটিক ম্যাটেরিয়াল এই মডিফায়েড ভার্সনের ভাইরাসের শেলের মধ্যে থাকে। একে বলা হয় ভাইরাল ভেক্টর। সিডিসি বলছে, টিকা গ্রহণের মধ্য দিয়ে এই ভাইরাল ভেক্টর আমাদের শরীরে প্রবেশ করে। এটি শরীরের এক–একটি কোষের কোষীয় জৈব প্রক্রিয়ায় ঢুকে পড়ে এবং কোভিড–১৯ সৃষ্টিকারী স্পাইক প্রোটিন তৈরি করে। এই প্রোটিন কোষটির গায়ে লেবেল আকারে যুক্ত হয়ে যায়। এই চিহ্ন দেখে শরীরের প্রতিরক্ষা কোষগুলো একে বহিঃশত্রু হিসেবে বিবেচনা করে। এই প্রোটিনগুলোকে ধ্বংসের জন্য শরীর টি–লিম্ফোসাইট ও বি–লিম্ফোসাইট তৈরি করে।
এই স্মৃতি ভ্যাকসিনের মাধ্যমে পেয়ে শরীরে তৈরি হয় মেমোরি টি–লিম্ফোসাইট ও মেমোরি বি–লিম্ফোসাইট কোষ। ফলে ভবিষ্যতে যখন স্পাইক প্রোটিনসমৃদ্ধ কোভিড–১৯ ভাইরাস আক্রমণ করে, তখন এই কোষগুলো তা প্রতিহত করে।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তৈরি অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা, রাশিয়ার স্পুটনিক–ভি, জনসন অ্যান্ড জনসনের তৈরি টিকা— এ সবগুলোই ভাইরাল ভেক্টর ধরনের।
এদিকে চীনের সিনোফার্মের তৈরি সিনোভ্যাক টিকাটি মূলত মৃত ভাইরাসের সমষ্টি। শরীরে মৃত ভাইরাস ঢুকিয়ে এর তথ্যটি নিরাপত্তারক্ষীদের জানা দেওয়া হয়। ভারতের ভারত বায়োটেক কোম্পানির তৈরি কোভ্যাকসিনও মৃত ভাইরাস ব্যবহার করা হয়েছে। এগুলোও আদতে ভাইরাল ভেক্টর ধরনের ভ্যাকসিন।
এমআরএনএ ভ্যাকসিন
মেসেঞ্জার আরএনএ বা এমআরএনএ ভ্যাকসিন প্রযুক্তি তুলনামূলক বেশ নতুন। ফাইজার এবং মডার্নার তৈরি কোভিড–১৯ ভ্যাকসিনই প্রথম এমআরএনএ প্রযুক্তির ভ্যাকসিন হিসেবে মানুষের শরীরে প্রয়োগের অনুমোদন পেয়েছে।
এমআরএনএ ভ্যাকসিন নিলে এটি কোষের মধ্যে ঢুকে চাতুরি করে শরীরকে নির্দোষ বা নিরীহ স্পাইক প্রোটিন তৈরি করতে উৎসাহিত করে। এই প্রোটিন কোষের গায়ে লেবেল আকারে থাকে। প্রতিরক্ষা কোষগুলো তখন একে বহিরাগত পদার্থ (ফরেন বডি) হিসেবে বিবেচনা করে এবং এই প্রোটিনগুলোকে ধ্বংসের জন্য শরীর টি–লিম্ফোসাইট ও বি–লিম্ফোসাইট তৈরি করে। যেহেতু কোষটির গায়ে লেবেল আকারে প্রোটিনগুলো থাকে, তাই টি–লিম্ফোসাইট ও বি–লিম্ফোসাইট সংশ্লিষ্ট কোষটিকে ধ্বংস করে। এই কার্যক্রমের স্মৃতি আবার মেমোরি টি–লিম্ফোসাইট ও মেমোরি বি–লিম্ফোসাইট কোষে সংরক্ষিত থাকে, যা ভাইরাসটির পরবর্তী সংক্রমণ থেকে শরীরকে রক্ষা করে।
ফাইজার–বায়োএনটেক, মডার্না এবং বাংলাদেশের গ্লোব বায়োটেকের বঙ্গটেক এমআরএনএ প্রযুক্তির ভ্যাকসিন।
প্রোটিন সাব–ইউনিট ভ্যাকসিন
এই ভ্যাকসিন ভাইরাসের সেই প্রোটিন দিয়ে তৈরি, যা কোনো ক্ষতি করে না। টিকার মধ্য দিয়ে শরীরে এই প্রোটিন ঢুকে যায়। তখন শরীর সিদ্ধান্ত নেয় এই প্রোটিন শরীরে থাকা যাবে না। ফলে শরীর টি–লিম্ফোসাইট ও অ্যান্টিবডি তৈরি করে। এই টি–লিম্ফোসাইট ও অ্যান্টিবডি ভবিষ্যতে করোনাভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হলে প্রতিরক্ষা দেবে। যুক্তরাষ্ট্রের নোভাভ্যাক্স হচ্ছে প্রোটিনের ওপর ভিত্তি করে তৈরি ভ্যাকসিন। সানোফি–গ্লাক্সোস্মিথক্লাইনের যৌথ উদ্যোগে আরেকটি প্রোটিনভিত্তিক ভ্যাকসিন তৈরি হচ্ছে।
তবুও স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে
নিজেকে ও অন্যকে কোভিড–১৯ থেকে সুরক্ষিত রাখতে ভ্যাকসিনেশন অনেকগুলো উপায়ের একটি। টিকা নিলেও ভিড় এড়ানো, নিয়মিত সাবান বা স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধোয়া, মাস্ক পরা অব্যাহত রাখতে হবে। কারণ, এই কোভিড–১৯ বিষয়টি এখনো নতুন। মানুষ গবেষণার মাধ্যমে প্রতিনিয়তই শিখছে এই রোগটির বিষয়ে। তাই টিকা নেওয়ার পরও সব ধরনের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নীতি মেনে চলার ওপর জোর দিচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
বিভিন্ন নতুন ধরনের (ভ্যারিয়েন্ট) বিরুদ্ধে ভ্যাকসিন কাজ করে কি?
আরএনএ কোড, ভাইরাসের জেনেটিক কোড, প্রোটিনের কোড— এই পুরো ভ্যাকসিনেশন প্রক্রিয়ায় সম্মিলিতভাবে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলে ভাইরাস ধ্বংসে ভূমিকা রাখে। মিউটেশনের কারণে ভাইরাসের জেনেটিক কোড বা সিকোয়েন্সে পরিবর্তন হয়। ফলে এই পুরো প্রক্রিয়া তখন ব্যাহত হতে পারে। সে ক্ষেত্রে ভাইরাসটির বিপক্ষে টিকার কার্যকারিতা কমে যায়। অনেক ক্ষেত্রে ভ্যাকসিনটি একেবারেই অকার্যকর হয়ে পড়ে।
ঢাকা: দেহতাত্ত্বিকেরা বলেন—‘যা নেই ভাণ্ডে, তা নেই ব্রহ্মাণ্ডে।’ কথাটা একটু হেঁয়ালিপূর্ণ নিশ্চিতভাবে। কিন্তু এই হেঁয়ালির জটগুলো খুলতে শুরু করলেই নড়চড়ে বসতে হয়। এই যেমন আজকের দিনের সবচেয়ে আলোচিত করোনাভাইরাসের টিকা বা ভ্যাকসিন, তার যে কর্মপন্থা, তার মূল নির্দেশনা আদতে আছে দেহের ভেতরেই।
মানুষের দেহ এমন এক দুর্গ, যেখানে বাইরে থেকে আসা যেকোনো কিছুকেই সন্দেহের চোখে দেখা হয়; চেষ্টা করা হয় প্রতিহতের। কিন্তু যদি এমন কোনো শত্রু এসে ঢুকে পড়ে, যার সম্পর্কে আগে থেকে জানা–বোঝা নেই, তবে পড়তে হয় বিপাকে। করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রেও ঠিক এমনটিই হয়েছে। পাহারাদারদের চোখ ফাঁকি দিয়ে এই ভাইরাস ঢুকে পড়েছে মূল দেহ–দুর্গে। শুধু ঢুকেই ক্ষান্ত হয়নি সে। অতি ধুরন্ধর এই ভাইরাস প্রতিনিয়ত নিজেকে বদলে নিয়ে নাকাল করছে দেহের ভেতরে থাকা নিরাপত্তারক্ষীদের।
কথা হলো এই প্রহরী বা নিরাপত্তারক্ষী আদতে কারা? রক্তের মধ্যেই আছে এই পাহারাদারেরা। এই রক্তের কাজকর্ম অনেকটা যুদ্ধক্ষেত্রে থাকা নানা বাহিনীর মতোই। এর মধ্যে থাকা তিন ধরনের কোষের কাজ একেবারে নির্দিষ্ট। এই তিন ধরনের কোষ হচ্ছে শ্বেত রক্তকণিকা, লোহিত রক্তকণিকা ও অনুচক্রিকা। এর মধ্যে শ্বেত রক্তকণিকাকে নিখাদ সৈনিক বলা যায়। শরীরকে বহিঃশত্রু থেকে রক্ষা করাই তার একমাত্র ব্রত। আর লোহিত রক্তকণিকাকে বলা যায়, যুদ্ধক্ষেত্রে থাকা সেই দল, যে খাবারসহ নানা রসদ সরবরাহের বিষয়টি নিশ্চিত করে। শরীরের কোষে কোষে অক্সিজেন সরবরাহ থেকে শুরু করে শরীরের জন্য অতি জরুরি কিছু উপাদান বহনের কাজটি এই রক্তকণিকা করে। বাকি থাকে অণুচক্রিকা। এই রক্তকণিকা হচ্ছে সেই জরুরি সেবা ইউনিট, যে ক্ষত সারাতে এবং শরীরের শুশ্রূষা দিতে নিযুক্ত থাকে সব সময়।
করোনাভাইরাস থেকে শুরু করে যেকোনো ভাইরাস বা জীবাণু প্রতিরোধের ক্ষেত্রে যে মুখ্য ভূমিকাটি রাখে, সে হলো শ্বেত রক্তকণিকা। এই শ্বেত রক্তকণিকারও আবার আছে নানা প্রকারভেদ। এগুলো হলো নিউট্রোফিল, লিম্ফোসাইট, ইওসিনোফিল, মনোসাইট ও ব্যাসোফিল। এদের একেকজনের দক্ষতা একেক রকম। এদের লড়াইয়ের কৌশলও আলাদা। অনেকটা ওই যুদ্ধক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের সেনা সমাবেশের মতো বিষয়।
স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট হেলথলাইনের তথ্যমতে, ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাককে নিকেশ করার দায়িত্বটি নিউট্রোফিলের ওপর। বাইরে থেকে কোনো শত্রু শরীরে প্রবেশ করতে চাইলে শ্বেত রক্তকণিকার এই অগণিত সেনা সমাবেশকে ডিঙিয়েই যেতে হবে। এর পরেই রয়েছে লিম্ফোসাইটের প্রাচীর। এরা অ্যান্টিবডি তৈরি করে ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাসসহ সম্ভাব্য সব ক্ষতিকর কোষের বিরুদ্ধে লড়াই করে। রয়েছে ইওসিনোফিলের মতো অভিজ্ঞ কোষেরা, যারা বিভিন্ন অণুজীব ও ক্যানসার কোষকে হত্যা করে। বাকি থাকল মনোসাইট ও ব্যাসোফিল। শ্বেতকণিকায় থাকা পাঁচ ধরনের কোষের মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘ আয়ুষ্কাল রয়েছে মনোসাইটের। এরা মুখ্যত ব্যাকটেরিয়া প্রতিহতে কাজ করে। আর ব্যাসোফিল মূলত সেই ঘণ্টাবাদক, যে যেকোনো বহিঃশত্রুর অণুপ্রবেশ টের পেলেই নিজের সবটা শক্তি দিয়ে সতর্ক সংকেতটি বাজায়।
তাহলে এই যে শরীর, তা এই বাইরের দুনিয়া থেকে আলাদা হলো কী প্রকারে? এই শরীরে ভেতরে থাকা নিরাপত্তারক্ষীরাও কাজ করে চেনা পৃথিবীর অন্যসব নিরাপত্তা ব্যবস্থার মতো করেই। বিভিন্ন ধরনের শ্বেত রক্তকোষ বিভিন্ন পদ্ধতিতে প্রতিরক্ষা গড়ে তোলে। বর্তমান পরিস্থিতিতে শ্বেত রক্তকণার লিম্ফোসাইট কোষগুলোই সবচেয়ে ব্যস্ত সময় পার করছে। সঙ্গে মনোসাইট ও নিউট্রোফিলসের ব্যস্ততাও কম নয়। এই মূল পাঁচ ধরনের কোষের মধ্যে কিছু কোষ আবার বহিঃশত্রুকে একেবারে গিলে ফেলতে ভালোবাসে। এরা হলো ম্যাক্রোফাজ।
জীবাণুর সঙ্গে লড়াই–টড়াই নয়, ম্যাক্রাফাজ জীবাণুকে একেবারে গিলে ফেলে। এখানেই ক্ষান্ত হয় না তারা। জীবাণুর একটি উপাদানকে রক্তে ছড়িয়ে দেয় ম্যাক্রোফাজ, যাকে বলা হয় অ্যান্টিজেন। শরীর অ্যান্টিজেনকে বিপজ্জনক বিবেচনা করে এর বিপক্ষে প্রতিরক্ষা গড়ে তোলার জন্য অ্যান্টিবডিগুলোকে সক্রিয় করে তোলে। আর এই সক্রিয় করার কাজটি করে বি লিম্ফোসাইট। রক্তে ছড়িয়ে পড়া অ্যান্টিজেনকে ধ্বংসের জন্য অ্যান্টিবডি তৈরি করে বি–লিম্ফোসাইট। এই কাজ যখন চলে, ঠিক তখন গোটা দেহে সাঁড়াশি অভিযান চালায় টি–লিম্ফোসাইট। এটি এরই মধ্যে আক্রান্ত কোষকে মেরে ফেলে।
আমরা কখন কোনো একটি ভাইরাসে আক্রান্ত হলে কাবু হই? এর উত্তর খুব সোজা। এই বি–লিম্ফোসাইট ও টি–লিম্ফোসাইট কোষগুলো যদি অ্যান্টিজেন ও ভাইরাসের কারণে আক্রান্ত কোষগুলোকে চিনতে না পারে, তবেই আমরা কাবু হই। করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রেও ঠিক এ ঘটনাই ঘটেছে। অধিকাংশ মানুষের শরীরের সুরক্ষা প্রাচীরকে ফাঁকি দিতে পেরেছে এই নতুন করোনাভাইরাস। ফলে শরীরের প্রতিরক্ষার দায়িত্বে থাকা কোষগুলোকে এখন প্রশিক্ষণ দেওয়া জরুরি। এই প্রশিক্ষণের কাজটি করার জন্যই আনা হচ্ছে ভ্যাকসিন।
ভ্যাকসিন বা টিকা কীভাবে কাজ করে?
প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করে দেওয়ার জন্য একেক ধরনের ভ্যাকসিন একেকভাবে কাজ করে। তবে সব ধরনের ভ্যাকসিন একটি সাধারণ কাজ করে। সেই সাধারণ কাজটি হলো– ভ্যাকসিন শরীরে মেমোরি টি–লিম্ফোসাইট ও মেমরি বি–লিম্ফোাসাইট কোষ তৈরি করে রাখে। ফলে ভাইরাসটির বিপক্ষে ভবিষ্যতে কীভাবে লড়াই করতে হবে, তা শরীরের জানা থাকে।
যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের (সিডিসি) ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এ সম্পর্কিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, টিকা নেওয়ার পর শরীরের টি–লিম্ফোসাইট ও বি–লিম্ফোসাইট তৈরি করার জন্য কয়েক সপ্তাহ সময় লাগে। ফলে করোনা ভ্যাকসিন নেওয়ার কিছু আগে বা কিছু পরেও করোনা হতে পারে। কারণ ভ্যাকসিন শরীরে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করে দেওয়ার মতো যথেষ্ট সময় তখনো পায়নি। অনেক সময় প্রতিরক্ষা তৈরির সময় কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও হতে পারে। যেমন জ্বর হতে পারে। এটা নির্দেশ করে যে শরীরে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি হচ্ছে। তাই টিকা নেওয়ার পর গা–ব্যথা বা জ্বর হলে ঘাবড়ানোর কিছু নেই।
কত ধরনের ভ্যাকসিন?
কর্মপদ্ধতি ভেদে ভ্যাকসিন বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। এর মধ্যে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে এখন পর্যন্ত চার ধরনের ভ্যাকসিন এসেছে। গোটা বিশ্বে করোনা টিকাগুলোর মধ্যে ভেক্টর ভ্যাকসিনই এখন সবচেয়ে বেশি অনুমোদন পেয়েছে এবং প্রয়োগও হচ্ছে।
ভেক্টর ভ্যাকসিন
এ ধরনের ভ্যাকসিন বিভিন্ন ধরনের ভাইরাসের রূপান্তরিত ধরন ধারণ করে। কোভিড–১৯ রোগ সৃষ্টিকারী ভাইরাসের জেনেটিক ম্যাটেরিয়াল এই মডিফায়েড ভার্সনের ভাইরাসের শেলের মধ্যে থাকে। একে বলা হয় ভাইরাল ভেক্টর। সিডিসি বলছে, টিকা গ্রহণের মধ্য দিয়ে এই ভাইরাল ভেক্টর আমাদের শরীরে প্রবেশ করে। এটি শরীরের এক–একটি কোষের কোষীয় জৈব প্রক্রিয়ায় ঢুকে পড়ে এবং কোভিড–১৯ সৃষ্টিকারী স্পাইক প্রোটিন তৈরি করে। এই প্রোটিন কোষটির গায়ে লেবেল আকারে যুক্ত হয়ে যায়। এই চিহ্ন দেখে শরীরের প্রতিরক্ষা কোষগুলো একে বহিঃশত্রু হিসেবে বিবেচনা করে। এই প্রোটিনগুলোকে ধ্বংসের জন্য শরীর টি–লিম্ফোসাইট ও বি–লিম্ফোসাইট তৈরি করে।
এই স্মৃতি ভ্যাকসিনের মাধ্যমে পেয়ে শরীরে তৈরি হয় মেমোরি টি–লিম্ফোসাইট ও মেমোরি বি–লিম্ফোসাইট কোষ। ফলে ভবিষ্যতে যখন স্পাইক প্রোটিনসমৃদ্ধ কোভিড–১৯ ভাইরাস আক্রমণ করে, তখন এই কোষগুলো তা প্রতিহত করে।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তৈরি অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা, রাশিয়ার স্পুটনিক–ভি, জনসন অ্যান্ড জনসনের তৈরি টিকা— এ সবগুলোই ভাইরাল ভেক্টর ধরনের।
এদিকে চীনের সিনোফার্মের তৈরি সিনোভ্যাক টিকাটি মূলত মৃত ভাইরাসের সমষ্টি। শরীরে মৃত ভাইরাস ঢুকিয়ে এর তথ্যটি নিরাপত্তারক্ষীদের জানা দেওয়া হয়। ভারতের ভারত বায়োটেক কোম্পানির তৈরি কোভ্যাকসিনও মৃত ভাইরাস ব্যবহার করা হয়েছে। এগুলোও আদতে ভাইরাল ভেক্টর ধরনের ভ্যাকসিন।
এমআরএনএ ভ্যাকসিন
মেসেঞ্জার আরএনএ বা এমআরএনএ ভ্যাকসিন প্রযুক্তি তুলনামূলক বেশ নতুন। ফাইজার এবং মডার্নার তৈরি কোভিড–১৯ ভ্যাকসিনই প্রথম এমআরএনএ প্রযুক্তির ভ্যাকসিন হিসেবে মানুষের শরীরে প্রয়োগের অনুমোদন পেয়েছে।
এমআরএনএ ভ্যাকসিন নিলে এটি কোষের মধ্যে ঢুকে চাতুরি করে শরীরকে নির্দোষ বা নিরীহ স্পাইক প্রোটিন তৈরি করতে উৎসাহিত করে। এই প্রোটিন কোষের গায়ে লেবেল আকারে থাকে। প্রতিরক্ষা কোষগুলো তখন একে বহিরাগত পদার্থ (ফরেন বডি) হিসেবে বিবেচনা করে এবং এই প্রোটিনগুলোকে ধ্বংসের জন্য শরীর টি–লিম্ফোসাইট ও বি–লিম্ফোসাইট তৈরি করে। যেহেতু কোষটির গায়ে লেবেল আকারে প্রোটিনগুলো থাকে, তাই টি–লিম্ফোসাইট ও বি–লিম্ফোসাইট সংশ্লিষ্ট কোষটিকে ধ্বংস করে। এই কার্যক্রমের স্মৃতি আবার মেমোরি টি–লিম্ফোসাইট ও মেমোরি বি–লিম্ফোসাইট কোষে সংরক্ষিত থাকে, যা ভাইরাসটির পরবর্তী সংক্রমণ থেকে শরীরকে রক্ষা করে।
ফাইজার–বায়োএনটেক, মডার্না এবং বাংলাদেশের গ্লোব বায়োটেকের বঙ্গটেক এমআরএনএ প্রযুক্তির ভ্যাকসিন।
প্রোটিন সাব–ইউনিট ভ্যাকসিন
এই ভ্যাকসিন ভাইরাসের সেই প্রোটিন দিয়ে তৈরি, যা কোনো ক্ষতি করে না। টিকার মধ্য দিয়ে শরীরে এই প্রোটিন ঢুকে যায়। তখন শরীর সিদ্ধান্ত নেয় এই প্রোটিন শরীরে থাকা যাবে না। ফলে শরীর টি–লিম্ফোসাইট ও অ্যান্টিবডি তৈরি করে। এই টি–লিম্ফোসাইট ও অ্যান্টিবডি ভবিষ্যতে করোনাভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হলে প্রতিরক্ষা দেবে। যুক্তরাষ্ট্রের নোভাভ্যাক্স হচ্ছে প্রোটিনের ওপর ভিত্তি করে তৈরি ভ্যাকসিন। সানোফি–গ্লাক্সোস্মিথক্লাইনের যৌথ উদ্যোগে আরেকটি প্রোটিনভিত্তিক ভ্যাকসিন তৈরি হচ্ছে।
তবুও স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে
নিজেকে ও অন্যকে কোভিড–১৯ থেকে সুরক্ষিত রাখতে ভ্যাকসিনেশন অনেকগুলো উপায়ের একটি। টিকা নিলেও ভিড় এড়ানো, নিয়মিত সাবান বা স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধোয়া, মাস্ক পরা অব্যাহত রাখতে হবে। কারণ, এই কোভিড–১৯ বিষয়টি এখনো নতুন। মানুষ গবেষণার মাধ্যমে প্রতিনিয়তই শিখছে এই রোগটির বিষয়ে। তাই টিকা নেওয়ার পরও সব ধরনের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নীতি মেনে চলার ওপর জোর দিচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
বিভিন্ন নতুন ধরনের (ভ্যারিয়েন্ট) বিরুদ্ধে ভ্যাকসিন কাজ করে কি?
আরএনএ কোড, ভাইরাসের জেনেটিক কোড, প্রোটিনের কোড— এই পুরো ভ্যাকসিনেশন প্রক্রিয়ায় সম্মিলিতভাবে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলে ভাইরাস ধ্বংসে ভূমিকা রাখে। মিউটেশনের কারণে ভাইরাসের জেনেটিক কোড বা সিকোয়েন্সে পরিবর্তন হয়। ফলে এই পুরো প্রক্রিয়া তখন ব্যাহত হতে পারে। সে ক্ষেত্রে ভাইরাসটির বিপক্ষে টিকার কার্যকারিতা কমে যায়। অনেক ক্ষেত্রে ভ্যাকসিনটি একেবারেই অকার্যকর হয়ে পড়ে।
এক্সের (সাবেক টুইটার) প্রতিদ্বন্দ্বী মাইক্রোব্লগিং প্ল্যাটফর্ম থ্রেডসের অ্যালগরিদম পরিবর্তন করল মেটা। এর ফলে যেসব অ্যাকাউন্ট ব্যবহারকারীরা ফলো করেন সেগুলোর কনটেন্টই বেশি দেখানো হবে। গত বৃহস্পতিবার থেকে ফিচারটি চালু হয়।
৭ ঘণ্টা আগেযুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী পত্রিকা টাইম ম্যাগাজিন–এর কভারে ধনকুবের ইলন মাস্কের ‘টু ডু লিস্ট’ বা দিনের কাজের তালিকা প্রকাশ করেছে। তবে এটি মাস্কের ব্যক্তিগত চেকলিস্ট নয় বলে স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন মাস্ক।
৮ ঘণ্টা আগেটাইপ করার চেয়ে ভয়েস মেসেজ পাঠানো বেশ সহজ। তবে অনেক সময় ভয়েস মেসেজ সবার সামনে শোনা যায় না। সে ক্ষেত্রে মেসেজ না শুনে রিপ্লাই–ও দেওয়া যায়না। এই সমস্যা থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য মেসেজ ট্রান্সক্রাইব ফিচার যুক্ত করল হোয়াটসঅ্যাপ। এই ফিচারের মাধ্যমে ভয়েস মেসেজগুলো সহজে টেক্সটে রূপান্তর করা যাবে।
১০ ঘণ্টা আগেনিয়মিত নতুন উদ্ভাবনী ধারণা ও প্রযুক্তি দিয়ে বিশ্বকে চমকে দেওয়ার জন্য পরিচিত জাপান। এবার ‘মানুষ ধোয়ার মেশিন’ তৈরি করে তাক লাগিয়ে দিল দেশটি। এটি মানুষ গোসলের জন্য ব্যবহার করতে পারবে। যন্ত্রটির কার্যকারিতা ও ডিজাইন দেখে একে ‘মানুষ ধোয়ার ওয়াশিং মেশিন’ বলে আখ্যা দিয়েছে অনেকই।
১০ ঘণ্টা আগে