Ajker Patrika

যুক্তরাষ্ট্রের টেলিযোগাযোগ কোম্পানিতে চীনা হ্যাকারদের হামলা 

আপডেট : ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ১৩: ১৫
যুক্তরাষ্ট্রের টেলিযোগাযোগ কোম্পানিতে চীনা হ্যাকারদের হামলা 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টেলিযোগাযোগ খাতের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কোম্পানিতে হামলা করছে চীনের রাষ্ট্রীয় মদদপুষ্ট হ্যাকারদের একটি দল। গত কয়েক মাসে দলটি কোম্পানিগুলোর কম্পিউটার সিস্টেমের সফলভাবে অনুপ্রবেশ করেছে বলে জানিয়েছে সিএনএন। 

হ্যাকাররা ওয়্যারট্যাপ সংক্রান্ত তথ্যে অনুপ্রবেশ করতে পেরেছিল বলে মনে করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের তদন্তকারীরা। এই অনুপ্রবেশের ফলে কোন নির্দিষ্ট তথ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তা এখনো তদন্তাধীন। 

উল্লেখ্য, ওয়্যারট্যাপের ওয়ারেন্ট রিকোয়েস্ট হলো একটি গোপন নজরদারি প্রযুক্তি যার মাধ্যমে সরকারি সংস্থা কোনো ব্যক্তির কমিউনিকেশনগুলো (ফোন কল, মেসেজ বা অন্যান্য ডিজিটাল ডেটা) পর্যবেক্ষণ করতে পারে। তবে এই কাজটি আইনানুগভাবে করতে হয় এবং আদালতের অনুমতি থাকতে হয়। 

যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান ব্রডব্যান্ড ও ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলোকে লক্ষ্য করেছে চীনের হ্যাকাররা, যার মধ্যে এটিঅ্যান্ডটি, ভেরাইজন ও লুমেন অন্তর্ভুক্ত। এগুলো মার্কিন টেলিযোগাযোগ খাতের গুরুত্বপূর্ণ কোম্পানি। 

নতুন শনাক্ত হওয়া সাইবার গুপ্তচরবৃত্তির অভিযানটি মার্কিন কর্মকর্তাদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। কারণ চীনের হ্যাকারদের সফলতা যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য বিপদ সৃষ্টি করতে পারে। এই অনুপ্রবেশটি চীনা সাইবার অপারেটিভদের আরেকটি জটিল হামলা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। বিষয়টি ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের মধ্যে সাইবার গুপ্তচরবৃত্তি এবং বৃহত্তর নিরাপত্তা ইস্যু নিয়ে উত্তেজনা আরও বাড়াবে। 

যুক্তরাষ্ট্রের ইন্টারনেট এবং ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগের মূল ভিত্তি গঠন করে মার্কিন টেলিযোগাযোগ শিল্প। তাই এটি যেকোনো রাষ্ট্র-সমর্থিত হ্যাকারদের প্রধান লক্ষ্য হয়ে ওঠে। টেলিযোগাযোগ কোম্পানিগুলোর কাছে কলার এবং ব্যবহারকারীর বিশাল পরিমাণ তথ্য থাকে এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো প্রায়ই জাতীয় নিরাপত্তা তদন্তের অংশ হিসেবে এই তথ্যের নির্দিষ্ট অংশে প্রবেশাধিকার চাইতে থাকে। 

এটিঅ্যান্ডটি এবং লুমেন চলমান তদন্ত সম্পর্কে মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছে। ভেরাইজনও সিএনএনের কোনো প্রশ্নের উত্তর দেয়নি। তদন্তে জড়িত মার্কিন সংস্থাগুলো, যেমন আইন মন্ত্রণালয় এবং এফবিআইও সরকারি মন্তব্য দিতে অস্বীকার করেছে। 

বেইজিং সমর্থিত হ্যাকারদের এই অনুপ্রবেশে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এদিকে ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত চীনের দূতাবাসের মুখপাত্র লিউ পেংইউ এসব অভিযোগকে ‘তথ্যের বিকৃতি’বলে মন্তব্য করেছেন। সাইবার নিরাপত্তা বিষয়কে রাজনৈতিক করে চীনকে কলঙ্কিত করার চেষ্টা করছে বলে তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে অভিযুক্ত করেছেন। 

সিএনএনের প্রতিবেদনে অনুযায়ী, মার্কিন কংগ্রেসকে পরিস্থিতির গুরুত্ব সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে, এবং হাউস ও সেনেটের গোয়েন্দা কমিটি উভয়েই হ্যাকিং অভিযান সম্পর্কে অবগত হয়েছে। চীনের এই হামলা তদন্তে সাহায্য করার জন্য মাইক্রোসফট ও ম্যান্ডিয়েন্টসহ প্রধান সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠানগুলোও যুক্ত করা হয়েছে। 

সাইবার নিরাপত্তা মহলে চীনের হ্যাকিং দলটি ‘সল্ট টাইফুন’ নামে পরিচিত। এফবিআই এর পরিচালক ক্রিস্টোফার রে এমনকি বলেন, চীনা সরকার-সমর্থিত হ্যাকারদের সংখ্যা এফবিআই এর সাইবার কর্মীদের চেয়ে প্রায় ৫০ গুণ বেশি। 

এর আগে মার্কিন পরিবহন এবং যোগাযোগ নেটওয়ার্কে লুকিয়ে রয়েছে আরেকটি চীনা হ্যাকিং গ্রুপ লুকিয়ে রয়েছে বলে জানা গিয়েছিল। এটি চীনের তাইওয়ান আক্রমণের ক্ষেত্রে যেকোনো মার্কিন হস্তক্ষেপ ব্যাহত করবে। 

গত বছর চীনা হ্যাকাররা একটি বড় হামলা চালায়, যেখানে তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ পদস্থ কূটনীতিকদের ইমেইল অ্যাকাউন্টে অনুপ্রবেশ করে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন চীনে একটি গুরুত্বপূর্ণ সফরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেওয়ার সময় এই ঘটনা ঘটে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত