‘ইন্টারনেট প্যাকেজের ফাঁদে গ্রাহকের পকেট কাটছে অপারেটরগুলো’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
Thumbnail image

অত্যন্ত চতুরতার সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের লোভনীয় ইন্টারনেট প্যাকেজের ফাঁদে ফেলে দেশের মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটরেরা সাধারণ গ্রাহকদের পকেট কাটছে বলে অভিযোগ করেছে টেলি কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টিক্যাব)। 

আজ রোববার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ অভিযোগ করেন টিক্যাবের আহ্বায়ক মুর্শিদুল হক। 

তিনি বলেন, আমরা মোবাইল অপারেটরগুলোর ইন্টারনেট প্যাকেজ পর্যালোচনা করে দেখতে পেয়েছি, তারা নির্দিষ্ট কিছু প্ল্যাটফর্মের জন্য বিভিন্ন প্যাকেজ বিক্রি করছে। যেমন গ্রামীণফোন-জি৫, হইচই, বায়োস্কোপ, স্কাইপ, জুম, টিমস, ডুয়ো, সোশ্যাল প্যাক, ইউটিউব, টিকটক, জিপি মিউজিক; বাংলালিংক-টফি অ্যাপ, ফেসবুক, ইমো, টিকটক, ইউটিউব, বিপ, স্টুডেন্ট প্যাক; রবি-সোশ্যাল, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ, জুম, টিমস, গুগল ক্লাসরুম, স্কাইপ, ইমো; টেলিটক-শুধু বিভিন্ন অ্যাপের জন্য এবং এয়ারটেল-লাইকি, ফেসবুক মেসেঞ্জার, গুগল ক্লাসরুম ইত্যাদি অ্যাপগুলোতে শুধু ব্রাউজ করার শর্তে ইন্টারনেট প্যাকেজ বিক্রি করছে। এতে অনেক গ্রাহক প্যাকেজের বিস্তারিত না জেনে অফারের ফাঁদে পড়ে প্যাকেজ নিচ্ছেন। পরে দেখা যাচ্ছে নির্দিষ্ট অ্যাপ ছাড়া ইন্টারনেট কাজ করছে না। ফলে তা অনেকাংশে অব্যবহৃত অবস্থাতেই মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে। আবার অনেকে জেনে প্যাকেজ নিলেও পুরো প্যাকেজ ব্যবহারের আগেই মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে। ফলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পুরোপুরি ব্যবহার না করেই গ্রাহকদের সম্পূর্ণ প্যাকেজের টাকা পরিশোধ করতে হচ্ছে। 

মুর্শিদুল হক বলেন, অপারেটরগুলো ফোরজি ডাটা প্যাকেজ বিক্রি করছে, কিন্তু গ্রাহকেরা ফোরজি নেটওয়ার্কই পাচ্ছেন না। অনেক গ্রাহক নিজের হ্যান্ডসেটটি ফোরজি না হলেও ভুলবশত ফোরজি ডাটা কিনে ফেলছেন। আবার ফোরজি হ্যান্ডসেট হলেও গ্রামাঞ্চলে ফোরজি নেটওয়ার্ক ঠিকঠাক পাওয়া যাচ্ছে না। আবার শহরাঞ্চলেও অনেক বাসার ভেতরে মিলছে না ফোরজি নেটওয়ার্ক। ডাটা প্যাকেজটি বাধ্যতামূলক ফোরজি হওয়ায় দেখা যাচ্ছে গ্রাহকেরা তা ব্যবহার করতে পারছেন না। কিন্তু ব্যবহার না করেও তাদের ঠিকই প্যাকেজের পুরো অর্থ পরিশোধ করতে হচ্ছে। 

বান্ডেল অফারেও গ্রাহক ঠকছেন বলে অভিযোগ করেন টিক্যাবের আহ্বায়ক। তিনি বলেন, অপারেটরগুলো বান্ডেল অফার নামে ইন্টারনেট, টকটাইম ও এসএমএস-এর সমন্বয়ে বিভিন্ন প্যাকেজ গ্রাহকদের কাছে বিক্রি করছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে অনেক বেশি ডাটা, মিনিট ও এসএমএস দেওয়া হলেও মেয়াদ দেওয়া হচ্ছে কম। ফলে ৩ দিন, ৭ দিন, ১৫ দিন বা ৩০ দিনের মধ্যে সিংহভাগ গ্রাহকই তাঁদের বান্ডেল অফারের পুরোটা ব্যবহার করতে পারছেন না। অব্যবহৃত থেকে যাচ্ছে প্যাকেজের বড় একটি অংশ। কিন্তু অপারেটরগুলো মেয়াদোত্তীর্ণ সেই ডাটা চক্রাকারে পুনরায় গ্রাহকদের কাছে বিক্রি করে হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। 

অবিলম্বে গ্রাহকদের লোভনীয় প্যাকেজের ফাঁদে ফেলে পকেট কাটা বন্ধ করার দাবি জানিয়ে মুর্শিদুল হক বলেন, নির্দিষ্ট অ্যাপ ব্যবহার ও প্যাকেজের মেয়াদ বেঁধে দিয়ে গ্রাহকদের টাকা কেটে নেওয়ার এ ফর্মুলা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ও অনৈতিক বলে আমরা মনে করি। টিক্যাবের পক্ষ থেকে গ্রাহকদের স্বার্থ রক্ষায় যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) আহ্বান জানাচ্ছি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত