বিচিত্র /দেখতে সুন্দর, ছুঁলেই সর্বনাশ! এমন ৫ প্রাণী

অনলাইন ডেস্ক    
আপডেট : ০৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২: ১৪
Thumbnail image
সব জাতের ব্লু-রিংড বা নীল-বলয় অক্টোপাসই বিষধর। ছবি: উইকিপিডিয়া

সুন্দর কোনো প্রাণী দেখলে স্বাভাবিকভাবেই আপনি কাছে যেতে চাইবেন। এমনকি ছুঁয়েও দেখার ইচ্ছা জাগতে পারে। তবে পৃথিবীতে এমন কিছু প্রাণী আছে যেগুলা দেখতে অদ্ভুত সুন্দর, চেহারায়ও বড্ড নিরীহ, কিন্তু ভয়ানক বিপজ্জনক। সাগর ও ডাঙার এমনই পাঁচটি প্রাণীর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেব আজ। বুঝতেই পারছেন, কাছে যাওয়া কিংবা ছুঁয়ে দেখাটা ঝুঁকিপূর্ণ হলেও এদের লেখা পড়তে বা ছবি দেখতে বাধা নেই।

গোল্ডেন ফ্রগের কাছে গিয়েছেন তো মরেছেন। ছবি: উইকিপিডিয়া
গোল্ডেন ফ্রগের কাছে গিয়েছেন তো মরেছেন। ছবি: উইকিপিডিয়া

গোল্ডেন পয়জন ডার্ট ফ্রগ

এর সোনালি রং আপনাকে মুগ্ধ করবে। তবে সে মোটেই বন্ধুভাবাপন্ন প্রাণী নয়। এর পাশাপাশি তাঁর ভান্ডারের অস্ত্র মিলিয়ে ‘আমাকে ছুঁলেই মৃত্যু অনিবার্য’ এমন ধরনের প্রাণী গোল্ডেন পয়জন ডার্ট ফ্রগ ।

এদের মূলত দেখা মেলে কলম্বিয়ার প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলের চিরসবুজ বা বৃষ্টি বনে। এই ব্যাঙের ত্বকের গ্রন্থিতে থাকে বিষ। অবশ্য এই বিষ মূলত কোনো শিকারকে হত্যা করার পরিবর্তে শিকারি প্রাণী বা শত্রুদের থেকে নিজেদের রক্ষায় ব্যবহার করে।

তবে কথা হলো ভুলক্রমে এর কোনোটিকে ছুঁয়ে ফেললেই বিপদে পড়ে যাবেন। আক্রান্ত হতে যাচ্ছে আশঙ্কা করে আপনার শরীরে বেশ ভালো মাত্রায় অ্যালকালয়েড বিষ প্রবেশ করিয়ে দেবে। যা আপনার হৃৎপিণ্ডের স্পন্দন চিরতরে থামিয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। আরও ভয়ংকর ব্যাপার হলো ছোট্ট একটি ব্যাঙের শরীরে ২০ জন পর্যন্ত মানুষকে মারার মতো বিষ থাকে।

কয়েক ধরনের ব্লু-রিংড বা নীল-বলয় অক্টোপাস আছে। ছবি: উইকিপিডিয়া
কয়েক ধরনের ব্লু-রিংড বা নীল-বলয় অক্টোপাস আছে। ছবি: উইকিপিডিয়া

ব্লু-রিংড অক্টোপাস

অন্তত চার ধরনের ব্লু-রিংড বা নীল-বলয় অক্টোপাস আছে। এর সবগুলোই বিষধর, আর প্রত্যেকের শরীরেই আশ্চর্য সুন্দর সেই নীল বলয় আছে। যখনই বিপদে পড়েছে বলে মনে করে বদলে যায় এই বলয়ের রং।

অন্য অক্টোপাসগুলোর মতো এরাও বিভিন্ন ফাঁক-ফোকর দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার কিংবা সেখানে অবস্থান করার জন্য শরীরের আকৃতি বদলাতে পারে। জীবনের বেশির ভাগ সময় প্রবাল প্রাচীর ও পাথরের মধ্যে লবণাক্ত পানির ছোট পুকুরে লুকিয়ে থাকে।

যদি এমন কোনো একটি নীল-বলয় অক্টোপাসের কাছে চলে আসেন তবে দ্রুত কিছুটা দূরত্ব তৈরি করাই মঙ্গল। কারণ না হলে কামড় খাওয়ার আশঙ্কা আছে। প্রকৃতপক্ষে, বেশির ভাগ কামড় ব্যথাহীন হলেও ফলাফল মোটেই শুভ নয়। একটি ব্লু রিং অক্টোপাসের থলেতে ২৬ জনকে হত্যা করার জন্য যথেষ্ট বিষ রয়েছে। কাজে এদের একাকী থাকতে দেওয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে, কি বলেন?

রেড উইডো স্পাইডার। ছবি: ইউএসও-সায়েন্স ফটো লাইব্রেরি
রেড উইডো স্পাইডার। ছবি: ইউএসও-সায়েন্স ফটো লাইব্রেরি

রেড উইডো স্পাইডার

মাকড়সা আপনার পছন্দ না হলেও এই মাকড়সাদের সুন্দর চেহারা দেখে আকৃষ্ট হতে পারেন। যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় পাওয়া যায় রেড উইডো মাকড়সাদের। প্রকৃতপক্ষে ব্ল্যাক উইডো মাকড়সাদের নিকটাত্মীয় এরা। আর ব্ল্যাক উইডোদের মতো রেড উইডোরাও বিপজ্জনক। তবে তালিকার প্রথম দুই প্রাণীর মতো এরা অতটা ভয়ংকর নয়। মানে হুল ফুটালে মারা যাওয়ার আশংকা নেই।

স্ত্রী রেড উইডো মাকড়সারা পুরুষদের তুলনায় দ্বিগুণ হয় আকারে। মধ্য এবং দক্ষিণ ফ্লোরিডার বিভিন্ন বালুর ঢিবিতে লুকিয়ে থাকে। এ কারণে এরা আরও কম ঝুঁকি সৃষ্টি করে মানুষের জন্য। তারপরও ফ্লোরিডা বেড়াতে গিয়ে সৈকতে একটি বালুর প্রাসাদ বানাতে গেলে সাবধান। বলা তো যায় না ভুল করে যদি কোনো ব্ল্যাক উইডো সৈকতের বালুর রাজ্যে আস্তানা গেড়ে থাকে!

কোন স্নেল মোটেই নিরীহ কোনো প্রাণী নয়। ছবি: উইকিপিডিয়া
কোন স্নেল মোটেই নিরীহ কোনো প্রাণী নয়। ছবি: উইকিপিডিয়া

কোন স্নেল

সুন্দর সুন্দর শামুক বা ঝিনুকের খোল সংগ্রহ করা যদি অভ্যাস হয় আপনার তবে এই প্রাণীটির বিষয়ে সতর্ক থাকাটা জরুরি। সাধারণত এই প্রাণীটি তার এই ক্ষমতা ব্যবহার করে। তবে তাদের এই অস্ত্র ছুড়েও মারতে পারে। এটি এতটা শক্তিশালী যে আপনার শরীরের সুইম স্যুটও ছিদ্র করে দিতে পারে। এতে শরীরে যন্ত্রণাদায়ক একটা হুল ফুটবে আপনার।

বেশির ভাগ কোন স্নেলই মানুষের জন্য সে অর্থে ক্ষতিকর নয়। তবে ‘কোনাস জিওগ্রাফাসেবভ’ একটু বেশি মারাত্মক। এমনকি এর হুল একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষেরও মৃত্যু ডেকে আনতে পারে।

বেশির ভাগ পাফার ফিশে থাকা নিউরোটক্সিন। ছবি: উইকিপিডিয়া
বেশির ভাগ পাফার ফিশে থাকা নিউরোটক্সিন। ছবি: উইকিপিডিয়া

পাফার ফিশ

প্রায় সব পাফার ফিশে থাকে নিউরোটক্সিন টেট্রোডটক্সিন। যা মানুষের জন্য খুব খুব বিপজ্জনক। এই বিষ সায়ানাইড থেকে এক হাজার ২০০ গুণ বেশি ক্ষমতাধর। ৩০ জন পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তিকে মারার মতো বিষ থাকে একটি পাফার ফিশের শরীরে।

কাজেই এ মাছটি খাওয়াটাও বুদ্ধিমানের কাজ হওয়ার কথা নয়। তবে জাপানে এটি একটি সুস্বাদু খাবার হিসেবে পরিচিত। সেখানে এর নাম ফুগু। কিন্তু সবচেয়ে দক্ষ এবং প্রশিক্ষিত রাঁধুনিও এটি খাওয়ার পর আপনার সুস্থতার গ্যারান্টি দিতে পারে না। জানা যায়, ১৯৫৮ সালে ১৫৮ জন মানুষের মৃত্যু হয় এ মাছ খেয়ে।

আশা করি এখন আর পাফার ফিশ খাওয়ার কোনো আগ্রহ আপনার মনে জাগছে না।

সূত্র: বিবিসি সায়েন্স ফোকাস ম্যাগাজিন

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কারা পরিদর্শক হলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক

ট্রাম্পের অভিষেক: সি আমন্ত্রণ পেলেও পাননি মোদি, থাকছেন আরও যাঁরা

ট্রাম্পের শপথের আগেই বার্নিকাটসহ তিন কূটনীতিককে পদত্যাগের নির্দেশ

কিশোরগঞ্জে বিএনপি নেতা হত্যা: সাবেক চেয়ারম্যানসহ গ্রেপ্তার ৪

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে: সলিমুল্লাহ খান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত