শায়লা শারমীন
বয়ঃসন্ধি ও কিশোরীকাল একটি অন্যটির পরিপূরক। বয়ঃসন্ধির এই সময়ে শিশুরা শৈশব পার হয়ে কৈশোরকালে প্রবেশ করে। এ সময় তাদের কিশোর বা কিশোরী বলা হয়। সাধারণত ১০ থেকে ১৯ বছর পর্যন্ত বয়ঃসন্ধিকাল। এই সময়ের মধ্যে কিশোর বা কিশোরীর যে পরিবর্তনগুলো হয়, সেগুলো কৈশোর বা বয়ঃসন্ধিকালীন পরিবর্তন হিসেবে পরিগণিত। এ সময় একদিকে তারা বড় হতে থাকে, আবার শৈশবকেও পুরোপুরি ছেড়ে আসতে পারে না। ফলে এ সময়টাতেই মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে পড়ে তাদের মন। আর সে জন্যই প্রয়োজন তাদের বিশেষ মানসিক যত্নের।
সাধারণত ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের বয়ঃসন্ধিকাল আগে শুরু হয়। মেয়েদের বয়ঃসন্ধিকাল ১০-১১ বছরে শুরু হয়। আর ছেলেদের সেটা হয় ১২-১৩ বছর বয়সে। উভয়েরই বয়ঃসন্ধিকাল ১৮ থেকে ১৯ বছর বয়স পর্যন্ত স্থায়ী হয়। বিকাশমূলক কিছু বৈশিষ্ট্য ও পরিবর্তনের কারণে এই বয়ঃসন্ধিকাল সময় তাদের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়। মনোবিজ্ঞানীরা এ সময়টিকে ‘ঝড়ঝঞ্ঝা’র কাল বলেও আখ্যায়িত করেন।
এ সময় শিশু প্রাপ্তবয়স্ক মানুষে পরিণত হয়ে ওঠে এবং তার মধ্যে প্রজননক্ষমতা তৈরি হয়ে থাকে। ফলে তারা একটা ক্রান্তিকাল অতিক্রম করে। এ সময় তাদের মধ্যে তিন ধরনের পরিবর্তন দেখা যায়। সেগুলো হলো:
কিশোরী বয়সের পরিবর্তন
নানান হরমোন নিঃসরণের প্রভাবে এ সময় কিশোরীরা ঋতুমতী হয়। এই সময়ের দৈহিক পরিবর্তনগুলোর মধ্যে তাদের ওজন ও উচ্চতা বাড়ে, মুখে
ব্রণ আসে এবং সৌন্দর্য বাড়ে। ফলে নিজেদের বড়দের মতো ভাবতে থাকে তারা। কিন্তু মাত্র শৈশব ছেড়ে আসার কারণে তারা বড়দের মতোও পুরোপুরি
হয়ে উঠতে পারে না। ফলে মানসিক পরিবর্তনগুলো আরও দৃঢ়ভাবে দেখা দেয়। যেমন:
ওপরের বিষয়গুলো যখন একটি কিশোরী নিজের চাওয়ার মতো করে পূরণ করতে না পারে, তখনই তার মধ্যে দেখা দেয় আচরণগত পরিবর্তন। যেমন:
বয়ঃসন্ধিকালে কিশোরী দেহের আরও কিছু পরিবর্তন তার মনোজগতের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে। ফলে কিশোরী মনে এক আলোড়নের সৃষ্টি হয়, অলীক চিন্তা হয় কখনো কখনো। নিজেরা নিজস্ব সিদ্ধান্ত গ্রহণের জায়গা তৈরি করে। নিজেদের ভালো-মন্দ, পছন্দ-অপছন্দের মূল্যায়ন করতে গিয়ে কখনো পরিবারের, বিশেষ করে মা-বাবার অবাধ্য হয়। ভুল পথ বেছে নেয়, নেশাগ্রস্তও হয়। শিশুকালের মতো এ সময়েও পরিচিতজনদের মাধ্যমে নিপীড়নের শিকার হওয়ার আশঙ্কা থাকে কিশোরীদের।
অভিভাবকদের করণীয়
বয়ঃসন্ধিকালে তীব্র আবেগ কাজ করে। তাই অভিভাবকদের উচিত এ সময়ে পরিবারের কিশোরীটির মানসিক নির্ভরতার জায়গা হয়ে ওঠা; বিশেষ করে মা-বাবা। মাকে অবশ্যই তাঁর মেয়ের মানসিক, শারীরিক অবস্থা বুঝে আচরণ করতে হবে। বকাবকি না করে বুঝিয়ে, আলোচনার মাধ্যমে যেকোনো পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার মতো মানসিকতা তৈরি করতে হবে।
এই কৈশোরে এসে মেয়েরা ঋতুমতী হয়। এ জন্য মা কিংবা বড় বোনদের অনেক বেশি সহনশীলতার পরিচয় দিয়ে কিশোরীটির এই পরিবর্তন সম্পর্কে বোঝাতে হবে। সেই সঙ্গে তার ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা বিষয়েও সুস্পষ্ট ধারণা দিতে হবে।
কৈশোরকাল শরীর গঠনের গুরুত্বপূর্ণ সময় বলে দৈনিক পুষ্টির চাহিদা পূরণ, সুষম খাদ্যাভ্যাস গঠন, ভিটামিন সি-জাতীয় খাবার খাওয়া, নিয়মিত ব্যায়াম প্রভৃতি বিষয়ে কিশোরীটিকে আগ্রহী করে তুলতে হবে পরিবারের সদস্যদের।
বয়ঃসন্ধিকালের এই সময়টাতে মা-বাবা ও পরিবারের সবার বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণই পারে একটি কিশোরীর সঠিক শারীরিক, মানসিক ও আচরণগত বর্ধনের পরিপূরক হতে; বিশেষ করে বিভিন্ন মুড-সুইংয়ের সময়। মা-বাবার সঙ্গে সুন্দর সম্পর্ক পারে একটি কিশোর বা কিশোরীর ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রবণতাকে বদলে দিতে।
কিশোরীদের সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য, তাদের মনোবল, নিজের প্রতি ধারণা সুস্পষ্ট হওয়ার জন্য এবং তাদের আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর জন্য পরিবারের সদস্যদের সুন্দর ব্যবহার, সহযোগিতা, সহমর্মিতা, সহনশীলতা, বিচক্ষণতা আর ‘শারীরিক-মানসিক’ যত্নই পারে তা পরিবারের কিশোরীদের একটি সুস্থ ও সুন্দর ভবিষ্যৎ উপহার দিতে।
লেখক: সিনিয়র পুষ্টিবিদ, ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতাল, শাহবাগ, ঢাকা
বয়ঃসন্ধি ও কিশোরীকাল একটি অন্যটির পরিপূরক। বয়ঃসন্ধির এই সময়ে শিশুরা শৈশব পার হয়ে কৈশোরকালে প্রবেশ করে। এ সময় তাদের কিশোর বা কিশোরী বলা হয়। সাধারণত ১০ থেকে ১৯ বছর পর্যন্ত বয়ঃসন্ধিকাল। এই সময়ের মধ্যে কিশোর বা কিশোরীর যে পরিবর্তনগুলো হয়, সেগুলো কৈশোর বা বয়ঃসন্ধিকালীন পরিবর্তন হিসেবে পরিগণিত। এ সময় একদিকে তারা বড় হতে থাকে, আবার শৈশবকেও পুরোপুরি ছেড়ে আসতে পারে না। ফলে এ সময়টাতেই মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে পড়ে তাদের মন। আর সে জন্যই প্রয়োজন তাদের বিশেষ মানসিক যত্নের।
সাধারণত ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের বয়ঃসন্ধিকাল আগে শুরু হয়। মেয়েদের বয়ঃসন্ধিকাল ১০-১১ বছরে শুরু হয়। আর ছেলেদের সেটা হয় ১২-১৩ বছর বয়সে। উভয়েরই বয়ঃসন্ধিকাল ১৮ থেকে ১৯ বছর বয়স পর্যন্ত স্থায়ী হয়। বিকাশমূলক কিছু বৈশিষ্ট্য ও পরিবর্তনের কারণে এই বয়ঃসন্ধিকাল সময় তাদের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়। মনোবিজ্ঞানীরা এ সময়টিকে ‘ঝড়ঝঞ্ঝা’র কাল বলেও আখ্যায়িত করেন।
এ সময় শিশু প্রাপ্তবয়স্ক মানুষে পরিণত হয়ে ওঠে এবং তার মধ্যে প্রজননক্ষমতা তৈরি হয়ে থাকে। ফলে তারা একটা ক্রান্তিকাল অতিক্রম করে। এ সময় তাদের মধ্যে তিন ধরনের পরিবর্তন দেখা যায়। সেগুলো হলো:
কিশোরী বয়সের পরিবর্তন
নানান হরমোন নিঃসরণের প্রভাবে এ সময় কিশোরীরা ঋতুমতী হয়। এই সময়ের দৈহিক পরিবর্তনগুলোর মধ্যে তাদের ওজন ও উচ্চতা বাড়ে, মুখে
ব্রণ আসে এবং সৌন্দর্য বাড়ে। ফলে নিজেদের বড়দের মতো ভাবতে থাকে তারা। কিন্তু মাত্র শৈশব ছেড়ে আসার কারণে তারা বড়দের মতোও পুরোপুরি
হয়ে উঠতে পারে না। ফলে মানসিক পরিবর্তনগুলো আরও দৃঢ়ভাবে দেখা দেয়। যেমন:
ওপরের বিষয়গুলো যখন একটি কিশোরী নিজের চাওয়ার মতো করে পূরণ করতে না পারে, তখনই তার মধ্যে দেখা দেয় আচরণগত পরিবর্তন। যেমন:
বয়ঃসন্ধিকালে কিশোরী দেহের আরও কিছু পরিবর্তন তার মনোজগতের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে। ফলে কিশোরী মনে এক আলোড়নের সৃষ্টি হয়, অলীক চিন্তা হয় কখনো কখনো। নিজেরা নিজস্ব সিদ্ধান্ত গ্রহণের জায়গা তৈরি করে। নিজেদের ভালো-মন্দ, পছন্দ-অপছন্দের মূল্যায়ন করতে গিয়ে কখনো পরিবারের, বিশেষ করে মা-বাবার অবাধ্য হয়। ভুল পথ বেছে নেয়, নেশাগ্রস্তও হয়। শিশুকালের মতো এ সময়েও পরিচিতজনদের মাধ্যমে নিপীড়নের শিকার হওয়ার আশঙ্কা থাকে কিশোরীদের।
অভিভাবকদের করণীয়
বয়ঃসন্ধিকালে তীব্র আবেগ কাজ করে। তাই অভিভাবকদের উচিত এ সময়ে পরিবারের কিশোরীটির মানসিক নির্ভরতার জায়গা হয়ে ওঠা; বিশেষ করে মা-বাবা। মাকে অবশ্যই তাঁর মেয়ের মানসিক, শারীরিক অবস্থা বুঝে আচরণ করতে হবে। বকাবকি না করে বুঝিয়ে, আলোচনার মাধ্যমে যেকোনো পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার মতো মানসিকতা তৈরি করতে হবে।
এই কৈশোরে এসে মেয়েরা ঋতুমতী হয়। এ জন্য মা কিংবা বড় বোনদের অনেক বেশি সহনশীলতার পরিচয় দিয়ে কিশোরীটির এই পরিবর্তন সম্পর্কে বোঝাতে হবে। সেই সঙ্গে তার ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা বিষয়েও সুস্পষ্ট ধারণা দিতে হবে।
কৈশোরকাল শরীর গঠনের গুরুত্বপূর্ণ সময় বলে দৈনিক পুষ্টির চাহিদা পূরণ, সুষম খাদ্যাভ্যাস গঠন, ভিটামিন সি-জাতীয় খাবার খাওয়া, নিয়মিত ব্যায়াম প্রভৃতি বিষয়ে কিশোরীটিকে আগ্রহী করে তুলতে হবে পরিবারের সদস্যদের।
বয়ঃসন্ধিকালের এই সময়টাতে মা-বাবা ও পরিবারের সবার বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণই পারে একটি কিশোরীর সঠিক শারীরিক, মানসিক ও আচরণগত বর্ধনের পরিপূরক হতে; বিশেষ করে বিভিন্ন মুড-সুইংয়ের সময়। মা-বাবার সঙ্গে সুন্দর সম্পর্ক পারে একটি কিশোর বা কিশোরীর ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রবণতাকে বদলে দিতে।
কিশোরীদের সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য, তাদের মনোবল, নিজের প্রতি ধারণা সুস্পষ্ট হওয়ার জন্য এবং তাদের আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর জন্য পরিবারের সদস্যদের সুন্দর ব্যবহার, সহযোগিতা, সহমর্মিতা, সহনশীলতা, বিচক্ষণতা আর ‘শারীরিক-মানসিক’ যত্নই পারে তা পরিবারের কিশোরীদের একটি সুস্থ ও সুন্দর ভবিষ্যৎ উপহার দিতে।
লেখক: সিনিয়র পুষ্টিবিদ, ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতাল, শাহবাগ, ঢাকা
নড়াইল শহরের সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের খেলার মাঠের দক্ষিণ দিকে রাস্তার পাশে চারতলা ভবন। নাম ‘অন্তি কটেজ’। এ ভবনের ৩ হাজার বর্গফুট ছাদজুড়ে তনিমা আফরিনের বাগান। তিনতলায় স্বামী ও দুই মেয়ে নিয়ে বসবাস করছেন জাতীয় কৃষি পুরস্কার পাওয়া তনিমা।
১৬ ঘণ্টা আগেঘড়িতে তখন কাঁটায় কাঁটায় ৮টা ৫০ মিনিট। শিক্ষার্থীসহ অন্যদের উপস্থিতি তেমন চোখে পড়ছে না। কিন্তু এরই মধ্যে উপজেলা পরিষদ থেকে ১১ কিলোমিটার দূরে একটি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে পৌঁছে গেছেন তিনি। সকাল ৯টায় ওই বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠান হওয়ার কথা, সেখানে তিনি প্রধান অতিথি।
১৭ ঘণ্টা আগেদিন যত যাচ্ছে, গৃহকর্মী নির্যাতন যেন বাড়ছেই। বাংলাদেশ শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ী, দেশে ২৫ লাখ গৃহকর্মী কাজ করে। আর বাংলাদেশ অভিবাসী মহিলা শ্রমিক অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, দেশের ৮০ শতাংশ গৃহকর্মী নারী।
১৭ ঘণ্টা আগেহতে চেয়েছিলেন বিজ্ঞানী। কিন্তু হলেন অনুসন্ধানী সাংবাদিক। নাম তাঁর ইডা টারবেল। উনিশ শতকে পৃথিবীময় তেল ব্যবসার ৯০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করত রকফেলারদের প্রতিষ্ঠান স্ট্যান্ডার্ড অয়েল কোম্পানি। সেই প্রতিষ্ঠানের কালো দিক উন্মোচন করে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন ইডা।
১৭ ঘণ্টা আগে