Ajker Patrika

প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে স্বামী ও ছেলের হাতে খুন হলেন গৃহবধূ

কালাই (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৮ মে ২০২২, ১৯: ১২
প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে স্বামী ও ছেলের হাতে খুন হলেন গৃহবধূ

প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে জয়পুরহাটের কালাই উপজেলায় শিপন বেগম (৪২) নামের এক গৃহবধূকে গলা কেটে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামী ও ছেলের বিরুদ্ধে। এ ঘটনার পর আজ শনিবার দুপুরে নিহত গৃহবধূর স্বামী তোজাম্মেল ও ছেলে শিহাবকে আটক করেছে পুলিশ। এর আগে সকালে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে। 

গতকাল শুক্রবার রাত ৩টায় উপজেলার উদয়পুর ইউনিয়নের দুধাইল নয়াপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত শিপন বেগম একই গ্রামের তোজাম্মেল সরকারের স্ত্রী।

স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিনের মতো ঘরের দরজা খোলা রেখে শিপন বেগম এক ঘরে তাঁর ছোট ছেলে তুহিনকে (৮) নিয়ে এবং বড় ছেলে শিহাব হোসেন (২০) ও ছাব্বির হোসেন (১৬) একটি ঘরে ঘুমিয়ে পড়েন। বাবা অন্য ঘরে শুয়ে পড়েন। রাতেই গলাকাটা অবস্থায় শিপনের মরদেহ দেখে থানায় খবর দেন স্থানীয়রা।

এ বিষয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন জয়পুরহাট জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম ও অপস) ফারজানা হোসেন, সিআইডি অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার শহীদ সোহরাওয়ার্দী, সহকারী পুলিশ সুপার ইশতিয়াক হোসেন, কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মঈনুদ্দীন, সিআইডি ক্রাইম সিন ইউনিট। 

নিহত ব্যক্তির বড় মেয়ে সুলতানা আক্তার (২২) বলেন, ‘জমিজমা নিয়ে তাঁদের সঙ্গে প্রতিপক্ষ রাব্বিউল ইসলামের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এ ঘটনার জেরে দুর্বৃত্তরা আমার মাকে হত্যা করে থাকতে পারে। এই হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাই।’

এ নিয়ে রাব্বিউল ইসলামের মা আবেদা বেগম (৫০) বলেন, ‘আমার ছেলে রাব্বিউল ইসলাম জায়গাটি বিক্রি করছেন তোজাম্মেল হোসেনের কাছে। ছেলের আইডি কার্ড হারানোর জন্য এখন পর্যন্ত জায়গাটির দলিল করে দিতে পারে নাই। আমার ছেলে ঢাকায় থাকে আর তাঁদের সাথে আমাদের কোনো ঝগড়া বিবাদ হয় নাই। যড়যন্ত্রমূলকভাবে আমাদের ওপর দোষ চাপানো হচ্ছে। এই ঘটনার জন্য পুলিশ আসে আমার ছোট ছেলেকে থানায় নিয়ে গেছে।’

এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য নুরনবী সরকার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শুক্রবার রাত ৩টায় শিপন বেগমের মেজো ছেলে ছাব্বির হোসেন রাস্তায় এসে চিল্লাচিল্লি করছে ‘‘আমার মাকে হত্যা করেছে।’’ এ সময় চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা আসার পরে দেখতে পায় গৃহবধূর স্বামী রক্ত বন্ধের জন্য কাপড় দিয়ে গলা চেপে ধরে ছিলেন। তখনো গৃহবধূ বেঁচে ছিলেন এ সময় গৃহবধূকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাস্তায় মারা যায়। আলামত হিসেবে পুলিশ বাড়ি থেকে বড় ছুরি উদ্ধার করেছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমি এই হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাই।’ 

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মঈনুউদ্দীন আজকের পত্রিকাকে বলেন, এই হত্যার বিষয়ে গৃহবধূর স্বামী ও ছেলে শিহাবকে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য জয়পুরহাট জেলা আধুনিক হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে এবং মামলার প্রস্তুতি চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত