মুহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ঢাকা

তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির ক্ষেত্রে ‘দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি’ বা লং-টার্ম কন্ট্রাক্ট আন্তর্জাতিক বাজারে একটি অতি পরিচিত পদ্ধতি। এই পদ্ধতির বড় সুবিধা হলো, বাজারে স্বল্প মেয়াদে দাম ওঠানামা করলেও চুক্তিতে নির্ধারিত দামেই গ্যাস পাবে ক্রেতা। কিন্তু এই সুযোগ হেলায় ফেলে স্পট মার্কেট থেকে চার গুণ বেশি দামে এলএনজি আমদানি করছে পেট্রোবাংলা। বেশি দামে এলএনজি কেনার প্রভাব এরই মধ্যে পড়তে শুরু করেছে দেশের গ্যাস ও বিদ্যুৎ খাতে। ভর্তুকির চাপ কমাতে সরকার গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে, যার কারণে ফিরে আসছে লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণা। শুধু তা-ই নয়, এলএনজির পেছনে ব্যয় হওয়া অতিরিক্ত খরচ পুষিয়ে নিতে গ্যাসের দামও বাড়াতে চায় সরকার।
পেট্রোবাংলার তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ২০২১ সালের জুলাই মাসে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় প্রতি মিলিয়ন ব্রিটিশ থারমাল ইউনিট (এমএমবিটিইউ) এলএনজি ৯ দশমিক ২০ মার্কিন ডলারে কিনেছিল পেট্রোবাংলা। তবে চলতি বছরের এপ্রিল মাসে তা কিনতে হয়েছে ১৩ দশমিক ৩২ ডলারে। ইউনিটপ্রতি দাম বেড়েছে ৪ দশমিক ১২ ডলার।
অন্যদিকে একই সময়ে এশিয়ার স্পট মার্কেটে এলএনজির দাম বেড়েছে প্রায় চার গুণ। স্পট মার্কেটে গত বছরের জুলাই মাসে প্রতি এমএমবিটিইউ গ্যাসের দাম ছিল ১০ দশমিক ৯৯ মার্কিন ডলার। অথচ চলতি বছরের এপ্রিল মাসে সেই দাম বেড়ে হয়েছে প্রতি ইউনিট ৩৮ দশমিক ৯৩ মার্কিন ডলার। আমদানি-নির্ভরতার কারণে এই দামেই এলএনজি কিনতে হয়েছে পেট্রোবাংলাকেও।
গ্যাসের সমস্যা সমাধানে এলএনজির ওপর অতিরিক্ত নির্ভরশীলতার জন্য নীতিনির্ধারকদের অদূরদর্শিতা ও পরিকল্পনার অভাবকেই দায়ী করেছেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ইজাজ হোসেন। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘স্পট মার্কেটে এলএনজির দাম একসময় কম থাকায় নীতিনির্ধারকেরা দীর্ঘমেয়াদি সরবরাহ চুক্তিতে অবহেলা করেছিলেন। স্পট মার্কেটে কম দামে পেলে কেন আমরা বেশি দামে দীর্ঘমেয়াদি টার্মে এলএনজি কিনতে যাব—এমনই ছিল তাঁদের মনোভাব। তাঁরা তখন বুঝতেই পারেননি যে স্পট মার্কেটের কম দাম ক্ষণস্থায়ী। স্পট মার্কেটের দামের ওপর নির্ভর না করতে আমরা বারবার বললেও পেট্রোবাংলা আমাদের কথায় কর্ণপাত করেনি। এখন তাঁরা এলএনজি আমদানিতে ব্যয় হওয়া অতিরিক্ত খরচ ওঠাতে গ্যাসের দাম বাড়াতে চায়। কিছু কিছু বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহও বন্ধ করে দিয়েছে।’
সুযোগ থাকা সত্ত্বেও কেন দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি না করে স্পট মার্কেট থেকে বেশি দামে এলএনজি ক্রয় করছেন? এই প্রশ্নের জবাবে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা যখন এলএনজি সরবরাহের জন্য দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করি, তখন স্পট মার্কেটের দাম দীর্ঘমেয়াদি সরবরাহের চেয়ে অনেক কম ছিল। আমাদের অভিজ্ঞতার ঘাটতি বলেন বা যা-ই বলেন স্পট মার্কেটের দাম বেড়ে আকাশে উঠবে –এটা আমাদের ধারণার বাইরে ছিল।’
স্থানীয় উৎস থেকে গ্যাস অনুসন্ধানের ব্যাপারে জানতে চাইলে নাজমুল আহসান বলেন, ‘অতীতে অফশোর ও অনশোরে গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য আমরা বিভিন্ন সময় টেন্ডার আহ্বান করলেও প্রত্যাশিত সাড়া পাইনি। অনশোরে গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য আমরা কিছু পদক্ষেপ নিয়েছি, যা শিগগিরই দৃশ্যমান হবে।’
দেশের অর্থনীতির আকার বড় হওয়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে গ্যাসের চাহিদা। গ্যাসের জোগানদাতা প্রতিষ্ঠান পেট্রোবাংলা ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণে অভ্যন্তরীণ উৎস খোঁজার পরিবর্তে ঝুঁকছে আমদানিনির্ভর এলএনজির দিকে। এই আমদানিনির্ভরতা দেশের সার্বিক অর্থনীতির ওপর ভালো ফল বয়ে আনবে না–এমন সতর্কবার্তা শুরু থেকেই দিয়ে এসেছেন বিশ্লেষকেরা। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে প্রকাশিত ইনস্টিটিউট ফর এনার্জি ইকোনমিকস অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল অ্যানালাইসিসের এক গবেষণা প্রতিবেদনে বিশ্ববাজারে এলএনজির দাম বাড়ার কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘এলএনজির দাম বাড়ার কারণে গ্যাসের ওপর নির্ভরশীল দেশীয় রপ্তানিমুখী খাতগুলো আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতার সক্ষমতা হারাবে এবং সর্বোপরি জ্বালানি সরবরাহে অনিশ্চয়তা দেখা দেবে।’
বাংলাদেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়বে। বেশি দামে গ্যাস ক্রয় করতে গিয়ে একদিকে সরকারের ওপর ভর্তুকির চাপ বাড়বে, অন্যদিকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে টান পড়বে—এমন সতর্কবার্তাও দেওয়া হয়েছিল ওই প্রতিবেদনে।
বর্তমান পরিস্থিতি তাদের সতর্কবার্তারই প্রতিফলন বলা যায়। বিশ্ববাজারে এলএনজির দাম বাড়ার কারণে পেট্রোবাংলার অবস্থা এখন চিড়েচেপ্টা। সংস্থাটি একদিকে সরকারের দিক থেকে ভর্তুকির কমানোর চাপে আছে। অন্যদিকে বেশি দামে এলএনজি ক্রয় করতে হচ্ছে তাদের। ২০২১-২২ অর্থবছরে এলএনজি আমদানির জন্য পেট্রোবাংলাকে দেওয়া সরকারের ভর্তুকির পরিমাণ ছিল ৪ হাজার কোটি টাকা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে পেট্রোবাংলার এক কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেন, সামনের অর্থবছরে ভর্তুকির পরিমাণ আরও বাড়বে।
স্পট মার্কেটে এলএনজির দাম বাড়ার মধ্যেই মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে এসেছে কাতারের রাসগ্যাস এবং ওমানের ওমান ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনাল এলএনজি কর্তৃক কার্গো সরবরাহ কমানোর আভাস। মধ্যপ্রাচ্যের এই দুই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ১৫ বছর মেয়াদি এলএনজি সরবরাহ চুক্তি করেছিল পেট্রোবাংলা।
চুক্তির আওতায় প্রতিষ্ঠান দুটি পেট্রোবাংলাকে বছরে ৩২ লাখ এমএমবিটিইউ ধারণক্ষমতাসম্পন্ন ৬৪ কার্গো এলএনজি সরবরাহ করার কথা। চলতি বছরের এপ্রিল মাস পর্যন্ত সরবরাহ করেছে ৫৩ কার্গো। এর আগে এলএনজির বাজার স্থিতিশীল থাকায় ২০২০-২১ অর্থবছরে ৬৮ কার্গো এলএনজি সরবরাহ করেছিল তারা।
পেট্রোবাংলা গ্যাসের বড় অংশই সরবরাহ করে বিদ্যুৎ খাতে। বিদ্যুৎ বিভাগ জানিয়েছে, মোট উৎপাদিত বিদ্যুতের ৪২ শতাংশ আসে গ্যাসচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে। গ্যাসের ওপর চাপ কমাতে সরকার গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে। এ কারণে দেশের বিভিন্ন জায়গায় লোডশেডিং করতে হচ্ছে।
পেট্রোবাংলা এলএনজি গ্যাস আমদানি শুরু করে ২০১৮ সালের ৯ সেপ্টেম্বরে। বিশ্ববাজারে এলএনজির দাম বাড়তে শুরু করে ২০২১ সাল থেকে। গত বছরের শেষের দিকে করোনা মহামারির অভিঘাত কাটিয়ে ওঠার চেষ্টায় বিশ্ব অর্থনীতির চাকা আবারও ঘুরতে শুরু করলে এলএনজির দাম চড়তে শুরু করে।
জ্বালানি তেল ও গ্যাসের তথ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল কমোডটি ইনসাইটসের মতে, ২০২০ সালের অক্টোবরে এশিয়ার বাজারে স্পট মার্কেটে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির দাম ছিল মাত্র ৬ মার্কিন ডলার। পরবর্তী সময়ে দাম বাড়তে বাড়তে ২০২১ সালের অক্টোবরে প্রতি এমএমবিটিইউ ৫৬ দশমিক ৩২৬ মার্কিন ডলারে ঠেকে। আর ২০২২ সালের এপ্রিলে দাম বেড়ে দাঁড়ায় প্রতি এমএমবিটিইউ ৫৯ ডলার। স্পট মার্কেট থেকে গ্যাস কেনার কারণে দাম বাড়ার ঘা সইতে হচ্ছে পেট্রোবাংলাকেও।
দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতে এলএনজি ক্রয়
পেট্রোবাংলা ২০২১ সালের জুলাই থেকে ২০২২ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ১০ মাসে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় কাতার রাসগ্যাস এবং ওমান ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনাল থেকে ৫৩টি কার্গোতে করে ১৬ কোটি ৮৭ লাখ ৩৩ হাজার ৪৫৮ এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানি করে। এতে খরচ পড়ে ১৭৭ কোটি ৪৮ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার। এর মধ্যে কাতারের রাসগ্যাস থেকে ৩৭টি কার্গোতে করে ১১ কোটি ৭৭ লাখ ৮৫ হাজার ৯৫৪ এমএমবিটিইউ এলএনজি কেনা হয়। এতে খরচ পড়ে ১২৮ কোটি ৭৭ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার। অন্যদিকে ওমানের ওমান ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনাল থেকে ১৬টি কার্গোতে করে ৫ কোটি ৯ লাখ ৪৭ হাজার ৫০৪ এমএমবিটিইউ গ্যাস আমদানি করা হয়। এ জন্য পেট্রোবাংলাকে গুনতে হয় ৪৮ কোটি ৭১ লাখ মার্কিন ডলার।
স্পট মার্কেট থেকে ক্রয়
স্পট মার্কেটে ২০২১ সালের জুলাই মাসে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির মূল্য ছিল ১০ দশমিক ৯৯ মার্কিন ডলার। কিন্তু ৯ মাসের ব্যবধানে চলতি বছরের এপ্রিলে এসে প্রতি ইউনিট এলএনজির দাম বেড়ে দাঁড়ায় ৩৮ দশমিক ৯৩ মার্কিন ডলার।
স্পট মার্কেটে পেট্রোবাংলাকে এলএনজি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে ভিটল এশিয়া, এক্সিলারেট এনার্জি এলপি, এওটি ট্রেডিং এজি এবং টোটাল এনার্জিস গ্যাস অ্যান্ড পাওয়ার। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে ৪ কোটি ২৩ লাখ ৪৮ হাজার ৩০৩ এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানি করেছে পেট্রোবাংলা। ১৩টি কার্গোতে করে এসব গ্যাস আসে। এতে আমদানি খরচ পড়ে ১৪৩ কোটি ৩৫ লাখ ৩০ হাজার ডলার। আরও চারটি এলএনজি কার্গো স্পট মার্কেট থেকে ক্রয় করার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করে ফেলেছে পেট্রোবাংলা। সংস্থাটি জানিয়েছে, জুন ও জুলাই মাসে এই চার কার্গো পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
হুমকির মুখে পড়বে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি
স্পট মার্কেট থেকে বেশি দামে এলএনজি ক্রয়ের কারণে বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হুমকির মুখে পড়তে পারে—এমন আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে ইনডিপেনডেন্ট কমোডটি ইন্টেলিজেন্স সার্ভিসেসের আইসিআইএস এলএনজি গ্লোবাল সাপ্লাই অ্যান্ড ডিমান্ড আউটলুক-২০২২ প্রতিবেদনে।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ‘২০২২ সালে এই তিন দেশে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজির চাহিদা ৪ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়ে ৩৯ দশমিক ৪ মিলিয়ন টন হবে। কাতারের রাসগ্যাস ও ওমান ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনাল চুক্তি অনুযায়ী এলএনজি সরবরাহ করতে না চাওয়ায় বাংলাদেশে গ্যাস-সংকট দেখা দেবে।’
চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি প্রকাশিত শুক্রবার ইন্টেলিজেন্স প্রকাশিত ‘২০২২ আউটলুক: গ্লোবাল লিকুইফাইড ন্যাচারাল গ্যাস’ রিপোর্টে বলা হয় বাংলাদেশে দিন দিন গ্যাসের মজুত কমে যাওয়ায় ও বিদ্যুৎ উৎপাদনে তেল ও কয়লার ওপর নির্ভরশীলতা কমানোর ফলে আমদানি করা গ্যাসের দাম বাড়বে।

তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির ক্ষেত্রে ‘দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি’ বা লং-টার্ম কন্ট্রাক্ট আন্তর্জাতিক বাজারে একটি অতি পরিচিত পদ্ধতি। এই পদ্ধতির বড় সুবিধা হলো, বাজারে স্বল্প মেয়াদে দাম ওঠানামা করলেও চুক্তিতে নির্ধারিত দামেই গ্যাস পাবে ক্রেতা। কিন্তু এই সুযোগ হেলায় ফেলে স্পট মার্কেট থেকে চার গুণ বেশি দামে এলএনজি আমদানি করছে পেট্রোবাংলা। বেশি দামে এলএনজি কেনার প্রভাব এরই মধ্যে পড়তে শুরু করেছে দেশের গ্যাস ও বিদ্যুৎ খাতে। ভর্তুকির চাপ কমাতে সরকার গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে, যার কারণে ফিরে আসছে লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণা। শুধু তা-ই নয়, এলএনজির পেছনে ব্যয় হওয়া অতিরিক্ত খরচ পুষিয়ে নিতে গ্যাসের দামও বাড়াতে চায় সরকার।
পেট্রোবাংলার তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ২০২১ সালের জুলাই মাসে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় প্রতি মিলিয়ন ব্রিটিশ থারমাল ইউনিট (এমএমবিটিইউ) এলএনজি ৯ দশমিক ২০ মার্কিন ডলারে কিনেছিল পেট্রোবাংলা। তবে চলতি বছরের এপ্রিল মাসে তা কিনতে হয়েছে ১৩ দশমিক ৩২ ডলারে। ইউনিটপ্রতি দাম বেড়েছে ৪ দশমিক ১২ ডলার।
অন্যদিকে একই সময়ে এশিয়ার স্পট মার্কেটে এলএনজির দাম বেড়েছে প্রায় চার গুণ। স্পট মার্কেটে গত বছরের জুলাই মাসে প্রতি এমএমবিটিইউ গ্যাসের দাম ছিল ১০ দশমিক ৯৯ মার্কিন ডলার। অথচ চলতি বছরের এপ্রিল মাসে সেই দাম বেড়ে হয়েছে প্রতি ইউনিট ৩৮ দশমিক ৯৩ মার্কিন ডলার। আমদানি-নির্ভরতার কারণে এই দামেই এলএনজি কিনতে হয়েছে পেট্রোবাংলাকেও।
গ্যাসের সমস্যা সমাধানে এলএনজির ওপর অতিরিক্ত নির্ভরশীলতার জন্য নীতিনির্ধারকদের অদূরদর্শিতা ও পরিকল্পনার অভাবকেই দায়ী করেছেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ইজাজ হোসেন। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘স্পট মার্কেটে এলএনজির দাম একসময় কম থাকায় নীতিনির্ধারকেরা দীর্ঘমেয়াদি সরবরাহ চুক্তিতে অবহেলা করেছিলেন। স্পট মার্কেটে কম দামে পেলে কেন আমরা বেশি দামে দীর্ঘমেয়াদি টার্মে এলএনজি কিনতে যাব—এমনই ছিল তাঁদের মনোভাব। তাঁরা তখন বুঝতেই পারেননি যে স্পট মার্কেটের কম দাম ক্ষণস্থায়ী। স্পট মার্কেটের দামের ওপর নির্ভর না করতে আমরা বারবার বললেও পেট্রোবাংলা আমাদের কথায় কর্ণপাত করেনি। এখন তাঁরা এলএনজি আমদানিতে ব্যয় হওয়া অতিরিক্ত খরচ ওঠাতে গ্যাসের দাম বাড়াতে চায়। কিছু কিছু বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহও বন্ধ করে দিয়েছে।’
সুযোগ থাকা সত্ত্বেও কেন দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি না করে স্পট মার্কেট থেকে বেশি দামে এলএনজি ক্রয় করছেন? এই প্রশ্নের জবাবে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা যখন এলএনজি সরবরাহের জন্য দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করি, তখন স্পট মার্কেটের দাম দীর্ঘমেয়াদি সরবরাহের চেয়ে অনেক কম ছিল। আমাদের অভিজ্ঞতার ঘাটতি বলেন বা যা-ই বলেন স্পট মার্কেটের দাম বেড়ে আকাশে উঠবে –এটা আমাদের ধারণার বাইরে ছিল।’
স্থানীয় উৎস থেকে গ্যাস অনুসন্ধানের ব্যাপারে জানতে চাইলে নাজমুল আহসান বলেন, ‘অতীতে অফশোর ও অনশোরে গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য আমরা বিভিন্ন সময় টেন্ডার আহ্বান করলেও প্রত্যাশিত সাড়া পাইনি। অনশোরে গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য আমরা কিছু পদক্ষেপ নিয়েছি, যা শিগগিরই দৃশ্যমান হবে।’
দেশের অর্থনীতির আকার বড় হওয়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে গ্যাসের চাহিদা। গ্যাসের জোগানদাতা প্রতিষ্ঠান পেট্রোবাংলা ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণে অভ্যন্তরীণ উৎস খোঁজার পরিবর্তে ঝুঁকছে আমদানিনির্ভর এলএনজির দিকে। এই আমদানিনির্ভরতা দেশের সার্বিক অর্থনীতির ওপর ভালো ফল বয়ে আনবে না–এমন সতর্কবার্তা শুরু থেকেই দিয়ে এসেছেন বিশ্লেষকেরা। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে প্রকাশিত ইনস্টিটিউট ফর এনার্জি ইকোনমিকস অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল অ্যানালাইসিসের এক গবেষণা প্রতিবেদনে বিশ্ববাজারে এলএনজির দাম বাড়ার কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘এলএনজির দাম বাড়ার কারণে গ্যাসের ওপর নির্ভরশীল দেশীয় রপ্তানিমুখী খাতগুলো আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতার সক্ষমতা হারাবে এবং সর্বোপরি জ্বালানি সরবরাহে অনিশ্চয়তা দেখা দেবে।’
বাংলাদেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়বে। বেশি দামে গ্যাস ক্রয় করতে গিয়ে একদিকে সরকারের ওপর ভর্তুকির চাপ বাড়বে, অন্যদিকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে টান পড়বে—এমন সতর্কবার্তাও দেওয়া হয়েছিল ওই প্রতিবেদনে।
বর্তমান পরিস্থিতি তাদের সতর্কবার্তারই প্রতিফলন বলা যায়। বিশ্ববাজারে এলএনজির দাম বাড়ার কারণে পেট্রোবাংলার অবস্থা এখন চিড়েচেপ্টা। সংস্থাটি একদিকে সরকারের দিক থেকে ভর্তুকির কমানোর চাপে আছে। অন্যদিকে বেশি দামে এলএনজি ক্রয় করতে হচ্ছে তাদের। ২০২১-২২ অর্থবছরে এলএনজি আমদানির জন্য পেট্রোবাংলাকে দেওয়া সরকারের ভর্তুকির পরিমাণ ছিল ৪ হাজার কোটি টাকা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে পেট্রোবাংলার এক কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেন, সামনের অর্থবছরে ভর্তুকির পরিমাণ আরও বাড়বে।
স্পট মার্কেটে এলএনজির দাম বাড়ার মধ্যেই মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে এসেছে কাতারের রাসগ্যাস এবং ওমানের ওমান ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনাল এলএনজি কর্তৃক কার্গো সরবরাহ কমানোর আভাস। মধ্যপ্রাচ্যের এই দুই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ১৫ বছর মেয়াদি এলএনজি সরবরাহ চুক্তি করেছিল পেট্রোবাংলা।
চুক্তির আওতায় প্রতিষ্ঠান দুটি পেট্রোবাংলাকে বছরে ৩২ লাখ এমএমবিটিইউ ধারণক্ষমতাসম্পন্ন ৬৪ কার্গো এলএনজি সরবরাহ করার কথা। চলতি বছরের এপ্রিল মাস পর্যন্ত সরবরাহ করেছে ৫৩ কার্গো। এর আগে এলএনজির বাজার স্থিতিশীল থাকায় ২০২০-২১ অর্থবছরে ৬৮ কার্গো এলএনজি সরবরাহ করেছিল তারা।
পেট্রোবাংলা গ্যাসের বড় অংশই সরবরাহ করে বিদ্যুৎ খাতে। বিদ্যুৎ বিভাগ জানিয়েছে, মোট উৎপাদিত বিদ্যুতের ৪২ শতাংশ আসে গ্যাসচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে। গ্যাসের ওপর চাপ কমাতে সরকার গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে। এ কারণে দেশের বিভিন্ন জায়গায় লোডশেডিং করতে হচ্ছে।
পেট্রোবাংলা এলএনজি গ্যাস আমদানি শুরু করে ২০১৮ সালের ৯ সেপ্টেম্বরে। বিশ্ববাজারে এলএনজির দাম বাড়তে শুরু করে ২০২১ সাল থেকে। গত বছরের শেষের দিকে করোনা মহামারির অভিঘাত কাটিয়ে ওঠার চেষ্টায় বিশ্ব অর্থনীতির চাকা আবারও ঘুরতে শুরু করলে এলএনজির দাম চড়তে শুরু করে।
জ্বালানি তেল ও গ্যাসের তথ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল কমোডটি ইনসাইটসের মতে, ২০২০ সালের অক্টোবরে এশিয়ার বাজারে স্পট মার্কেটে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির দাম ছিল মাত্র ৬ মার্কিন ডলার। পরবর্তী সময়ে দাম বাড়তে বাড়তে ২০২১ সালের অক্টোবরে প্রতি এমএমবিটিইউ ৫৬ দশমিক ৩২৬ মার্কিন ডলারে ঠেকে। আর ২০২২ সালের এপ্রিলে দাম বেড়ে দাঁড়ায় প্রতি এমএমবিটিইউ ৫৯ ডলার। স্পট মার্কেট থেকে গ্যাস কেনার কারণে দাম বাড়ার ঘা সইতে হচ্ছে পেট্রোবাংলাকেও।
দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতে এলএনজি ক্রয়
পেট্রোবাংলা ২০২১ সালের জুলাই থেকে ২০২২ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ১০ মাসে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় কাতার রাসগ্যাস এবং ওমান ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনাল থেকে ৫৩টি কার্গোতে করে ১৬ কোটি ৮৭ লাখ ৩৩ হাজার ৪৫৮ এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানি করে। এতে খরচ পড়ে ১৭৭ কোটি ৪৮ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার। এর মধ্যে কাতারের রাসগ্যাস থেকে ৩৭টি কার্গোতে করে ১১ কোটি ৭৭ লাখ ৮৫ হাজার ৯৫৪ এমএমবিটিইউ এলএনজি কেনা হয়। এতে খরচ পড়ে ১২৮ কোটি ৭৭ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার। অন্যদিকে ওমানের ওমান ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনাল থেকে ১৬টি কার্গোতে করে ৫ কোটি ৯ লাখ ৪৭ হাজার ৫০৪ এমএমবিটিইউ গ্যাস আমদানি করা হয়। এ জন্য পেট্রোবাংলাকে গুনতে হয় ৪৮ কোটি ৭১ লাখ মার্কিন ডলার।
স্পট মার্কেট থেকে ক্রয়
স্পট মার্কেটে ২০২১ সালের জুলাই মাসে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির মূল্য ছিল ১০ দশমিক ৯৯ মার্কিন ডলার। কিন্তু ৯ মাসের ব্যবধানে চলতি বছরের এপ্রিলে এসে প্রতি ইউনিট এলএনজির দাম বেড়ে দাঁড়ায় ৩৮ দশমিক ৯৩ মার্কিন ডলার।
স্পট মার্কেটে পেট্রোবাংলাকে এলএনজি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে ভিটল এশিয়া, এক্সিলারেট এনার্জি এলপি, এওটি ট্রেডিং এজি এবং টোটাল এনার্জিস গ্যাস অ্যান্ড পাওয়ার। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে ৪ কোটি ২৩ লাখ ৪৮ হাজার ৩০৩ এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানি করেছে পেট্রোবাংলা। ১৩টি কার্গোতে করে এসব গ্যাস আসে। এতে আমদানি খরচ পড়ে ১৪৩ কোটি ৩৫ লাখ ৩০ হাজার ডলার। আরও চারটি এলএনজি কার্গো স্পট মার্কেট থেকে ক্রয় করার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করে ফেলেছে পেট্রোবাংলা। সংস্থাটি জানিয়েছে, জুন ও জুলাই মাসে এই চার কার্গো পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
হুমকির মুখে পড়বে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি
স্পট মার্কেট থেকে বেশি দামে এলএনজি ক্রয়ের কারণে বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হুমকির মুখে পড়তে পারে—এমন আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে ইনডিপেনডেন্ট কমোডটি ইন্টেলিজেন্স সার্ভিসেসের আইসিআইএস এলএনজি গ্লোবাল সাপ্লাই অ্যান্ড ডিমান্ড আউটলুক-২০২২ প্রতিবেদনে।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ‘২০২২ সালে এই তিন দেশে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজির চাহিদা ৪ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়ে ৩৯ দশমিক ৪ মিলিয়ন টন হবে। কাতারের রাসগ্যাস ও ওমান ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনাল চুক্তি অনুযায়ী এলএনজি সরবরাহ করতে না চাওয়ায় বাংলাদেশে গ্যাস-সংকট দেখা দেবে।’
চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি প্রকাশিত শুক্রবার ইন্টেলিজেন্স প্রকাশিত ‘২০২২ আউটলুক: গ্লোবাল লিকুইফাইড ন্যাচারাল গ্যাস’ রিপোর্টে বলা হয় বাংলাদেশে দিন দিন গ্যাসের মজুত কমে যাওয়ায় ও বিদ্যুৎ উৎপাদনে তেল ও কয়লার ওপর নির্ভরশীলতা কমানোর ফলে আমদানি করা গ্যাসের দাম বাড়বে।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চালিত ডেটা সেন্টারগুলোর ক্রমবর্ধমান চাহিদা এবং বৈশ্বিক সরবরাহ সংকটের কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে তামার দাম দ্রুত বেড়ে প্রতি টন প্রায় ১২ হাজার ডলারে পৌঁছেছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে তামার ঘাটতি পরিস্থিতিকে আরও ঘনীভূত করেছে।
৩ ঘণ্টা আগে
জুনিয়র চেম্বার ইন্টারন্যাশনাল (জেসিআই) বাংলাদেশের ২০২৬ সালের ন্যাশনাল প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন আরেফিন রাফি আহমেদ। সম্প্রতি রাজধানীর হোটেল র্যাডিসনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত জেসিআই নেতারা অংশ নেন।
৩ ঘণ্টা আগে
বাজারে পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে দৈনিক আমদানির অনুমতি চার গুণ বাড়িয়েছে সরকার। আজ শনিবার থেকে প্রতিদিন ৬ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তবে ব্যাংক বন্ধ থাকায় প্রথম দিনে ব্যবসায়ীরা ঋণপত্র খুলতে না পারলেও আগামীকাল রোববার থেকে মোট ১২ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানি করতে পারবেন।
৩ ঘণ্টা আগে
স্বাস্থ্য খাতের ব্যয়ে বাংলাদেশ পিছিয়ে আছে। বাংলাদেশে স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে কম। স্বাস্থ্যসেবায় মাথাপিছু সরকারি খরচ মাত্র ১ হাজার ৭০ টাকা। স্বাস্থ্য খাতে জিডিপির মাত্র ১ শতাংশ বরাদ্দ। দেশের ৪৯ শতাংশ মানুষ এখনো মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা পায় না। বিদেশে চিকিৎসায় প্রতিবছর প্রায় পাঁচ বিলিয়ন
৫ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চালিত ডেটা সেন্টারগুলোর ক্রমবর্ধমান চাহিদা এবং বৈশ্বিক সরবরাহ সংকটের কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে তামার দাম দ্রুত বেড়ে প্রতি টন প্রায় ১২ হাজার ডলারে পৌঁছেছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে তামার ঘাটতি পরিস্থিতিকে আরও ঘনীভূত করেছে।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরে তামার দাম ইতিমধ্যে ৩৫ শতাংশ বেড়েছে, যা ২০০৯ সালের পর সর্বোচ্চ বার্ষিক প্রবৃদ্ধির পথে। গত শুক্রবার প্রতি টন তামার দাম ১১ হাজার ৯৫২ ডলার উঠে যায়।
উচ্চ বিদ্যুৎ পরিবাহিতার কারণে তামা ডেটা সেন্টার, বৈদ্যুতিক যান, বিদ্যুৎ গ্রিড এবং জ্বালানি রূপান্তর অবকাঠামোর জন্য অপরিহার্য কাঁচামাল। বিশ্বজুড়ে ডেটা সেন্টার সম্প্রসারণ ও পরিচ্ছন্ন জ্বালানিতে বিপুল বিনিয়োগ তামার চাহিদাকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাচ্ছে।
বেঞ্চমার্ক মিনারেল ইনটেলিজেন্সের বিশ্লেষক দান ডে ইয়ং বলেন, এআই খাতকে কেন্দ্র করে যাঁরা বিনিয়োগ করছেন, তাঁরা এমন পণ্য বেছে নিচ্ছেন, যেখানে ডেটা সেন্টারের জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামাল অন্তর্ভুক্ত। ফলে তামাভিত্তিক ইটিএফসহ সংশ্লিষ্ট সম্পদে বিনিয়োগ বাড়ছে।
এ প্রবণতার অংশ হিসেবে কানাডার স্প্রট অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট ২০২৪ সালের মাঝামাঝি বিশ্বের প্রথম বাস্তব তামাসমর্থিত এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড (ইটিএফ) চালু করে। প্রায় ১০ হাজার টন তামা সংরক্ষিত এই তহবিলের ইউনিট মূল্য চলতি বছরে ৪৬ শতাংশ বেড়ে প্রায় ১৪ কানাডিয়ান ডলারে পৌঁছেছে।
রয়টার্সের এক জরিপে বিশ্লেষকেরা জানিয়েছেন, চলতি বছরে বৈশ্বিক তামার বাজারে ১ লাখ ২৪ হাজার টন এবং আগামী বছরে ১ লাখ ৫০ হাজার টনের ঘাটতি দেখা দিতে পারে।
অস্ট্রেলিয়ার আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং ও আর্থিক পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থা ম্যাকোয়ারির পূর্বাভাস অনুযায়ী, চলতি বছরে বিশ্বে তামার চাহিদা দাঁড়াবে প্রায় ২ কোটি ৭০ লাখ টনে, যা আগের বছরের তুলনায় ২ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি। বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভোক্তা দেশ চীনে চাহিদা বাড়বে ৩ দশমিক ৭ শতাংশ, আর চীনের বাইরে আগামী বছর চাহিদা বাড়তে পারে ৩ শতাংশ।
ম্যাকোয়ারির বিশ্লেষক অ্যালিস ফক্স বলেন, কঠোর সরবরাহ পরিস্থিতি নিয়ে বাজারে যে আলোচনা চলছে, সেটিই তামার দামে ঊর্ধ্বমুখী চাপ সৃষ্টি করছে।
সরবরাহ সংকটের পেছনে রয়েছে ইন্দোনেশিয়ায় ফ্রিপোর্ট ম্যাকমোরানের গ্রাসবার্গ খনিতে দুর্ঘটনা, গ্লেনকোরসহ বড় খনি কোম্পানির উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা কমানোর সিদ্ধান্ত।
লন্ডন মেটাল এক্সচেঞ্জ, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কমেক্স ও সাংহাই ফিউচার্স এক্সচেঞ্জে মোট তামার মজুত চলতি বছরে ৫৪ শতাংশ বেড়ে ৬ লাখ ৬১ হাজার টনে দাঁড়িয়েছে। তবে এর বড় অংশ যুক্তরাষ্ট্রে চলে যাচ্ছে।
কমেক্সে তামার মজুত রেকর্ড ৪ লাখ ৫ হাজার ৭৮২ টনে পৌঁছেছে, যা মোট বৈশ্বিক এক্সচেঞ্জ মজুতের ৬১ শতাংশ। বছরের শুরুতে যা ছিল মাত্র ২০ শতাংশ।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চালিত ডেটা সেন্টারগুলোর ক্রমবর্ধমান চাহিদা এবং বৈশ্বিক সরবরাহ সংকটের কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে তামার দাম দ্রুত বেড়ে প্রতি টন প্রায় ১২ হাজার ডলারে পৌঁছেছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে তামার ঘাটতি পরিস্থিতিকে আরও ঘনীভূত করেছে।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরে তামার দাম ইতিমধ্যে ৩৫ শতাংশ বেড়েছে, যা ২০০৯ সালের পর সর্বোচ্চ বার্ষিক প্রবৃদ্ধির পথে। গত শুক্রবার প্রতি টন তামার দাম ১১ হাজার ৯৫২ ডলার উঠে যায়।
উচ্চ বিদ্যুৎ পরিবাহিতার কারণে তামা ডেটা সেন্টার, বৈদ্যুতিক যান, বিদ্যুৎ গ্রিড এবং জ্বালানি রূপান্তর অবকাঠামোর জন্য অপরিহার্য কাঁচামাল। বিশ্বজুড়ে ডেটা সেন্টার সম্প্রসারণ ও পরিচ্ছন্ন জ্বালানিতে বিপুল বিনিয়োগ তামার চাহিদাকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাচ্ছে।
বেঞ্চমার্ক মিনারেল ইনটেলিজেন্সের বিশ্লেষক দান ডে ইয়ং বলেন, এআই খাতকে কেন্দ্র করে যাঁরা বিনিয়োগ করছেন, তাঁরা এমন পণ্য বেছে নিচ্ছেন, যেখানে ডেটা সেন্টারের জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামাল অন্তর্ভুক্ত। ফলে তামাভিত্তিক ইটিএফসহ সংশ্লিষ্ট সম্পদে বিনিয়োগ বাড়ছে।
এ প্রবণতার অংশ হিসেবে কানাডার স্প্রট অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট ২০২৪ সালের মাঝামাঝি বিশ্বের প্রথম বাস্তব তামাসমর্থিত এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড (ইটিএফ) চালু করে। প্রায় ১০ হাজার টন তামা সংরক্ষিত এই তহবিলের ইউনিট মূল্য চলতি বছরে ৪৬ শতাংশ বেড়ে প্রায় ১৪ কানাডিয়ান ডলারে পৌঁছেছে।
রয়টার্সের এক জরিপে বিশ্লেষকেরা জানিয়েছেন, চলতি বছরে বৈশ্বিক তামার বাজারে ১ লাখ ২৪ হাজার টন এবং আগামী বছরে ১ লাখ ৫০ হাজার টনের ঘাটতি দেখা দিতে পারে।
অস্ট্রেলিয়ার আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং ও আর্থিক পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থা ম্যাকোয়ারির পূর্বাভাস অনুযায়ী, চলতি বছরে বিশ্বে তামার চাহিদা দাঁড়াবে প্রায় ২ কোটি ৭০ লাখ টনে, যা আগের বছরের তুলনায় ২ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি। বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভোক্তা দেশ চীনে চাহিদা বাড়বে ৩ দশমিক ৭ শতাংশ, আর চীনের বাইরে আগামী বছর চাহিদা বাড়তে পারে ৩ শতাংশ।
ম্যাকোয়ারির বিশ্লেষক অ্যালিস ফক্স বলেন, কঠোর সরবরাহ পরিস্থিতি নিয়ে বাজারে যে আলোচনা চলছে, সেটিই তামার দামে ঊর্ধ্বমুখী চাপ সৃষ্টি করছে।
সরবরাহ সংকটের পেছনে রয়েছে ইন্দোনেশিয়ায় ফ্রিপোর্ট ম্যাকমোরানের গ্রাসবার্গ খনিতে দুর্ঘটনা, গ্লেনকোরসহ বড় খনি কোম্পানির উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা কমানোর সিদ্ধান্ত।
লন্ডন মেটাল এক্সচেঞ্জ, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কমেক্স ও সাংহাই ফিউচার্স এক্সচেঞ্জে মোট তামার মজুত চলতি বছরে ৫৪ শতাংশ বেড়ে ৬ লাখ ৬১ হাজার টনে দাঁড়িয়েছে। তবে এর বড় অংশ যুক্তরাষ্ট্রে চলে যাচ্ছে।
কমেক্সে তামার মজুত রেকর্ড ৪ লাখ ৫ হাজার ৭৮২ টনে পৌঁছেছে, যা মোট বৈশ্বিক এক্সচেঞ্জ মজুতের ৬১ শতাংশ। বছরের শুরুতে যা ছিল মাত্র ২০ শতাংশ।

তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির ক্ষেত্রে ‘দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি’ বা লং-টার্ম কন্ট্রাক্ট আন্তর্জাতিক বাজারে একটি অতি পরিচিত পদ্ধতি। এই পদ্ধতির বড় সুবিধা হলো, বাজারে স্বল্প মেয়াদে দাম ওঠানামা করলেও চুক্তিতে নির্ধারিত দামেই গ্যাস পাবে ক্রেতা। কিন্তু এই সুযোগ হেলায় ফেলে স্পট মার্কেট থেকে চার গুণ ব
০৪ জুন ২০২২
জুনিয়র চেম্বার ইন্টারন্যাশনাল (জেসিআই) বাংলাদেশের ২০২৬ সালের ন্যাশনাল প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন আরেফিন রাফি আহমেদ। সম্প্রতি রাজধানীর হোটেল র্যাডিসনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত জেসিআই নেতারা অংশ নেন।
৩ ঘণ্টা আগে
বাজারে পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে দৈনিক আমদানির অনুমতি চার গুণ বাড়িয়েছে সরকার। আজ শনিবার থেকে প্রতিদিন ৬ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তবে ব্যাংক বন্ধ থাকায় প্রথম দিনে ব্যবসায়ীরা ঋণপত্র খুলতে না পারলেও আগামীকাল রোববার থেকে মোট ১২ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানি করতে পারবেন।
৩ ঘণ্টা আগে
স্বাস্থ্য খাতের ব্যয়ে বাংলাদেশ পিছিয়ে আছে। বাংলাদেশে স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে কম। স্বাস্থ্যসেবায় মাথাপিছু সরকারি খরচ মাত্র ১ হাজার ৭০ টাকা। স্বাস্থ্য খাতে জিডিপির মাত্র ১ শতাংশ বরাদ্দ। দেশের ৪৯ শতাংশ মানুষ এখনো মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা পায় না। বিদেশে চিকিৎসায় প্রতিবছর প্রায় পাঁচ বিলিয়ন
৫ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুনিয়র চেম্বার ইন্টারন্যাশনাল (জেসিআই) বাংলাদেশের ২০২৬ সালের ন্যাশনাল প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন আরেফিন রাফি আহমেদ। সম্প্রতি রাজধানীর হোটেল র্যাডিসনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত জেসিআই নেতারা অংশ নেন।
বিভিন্ন খাতে এক দশকেরও বেশি সময়ের অভিজ্ঞ আরেফিন রাফি আহমেদ জেসিআই বাংলাদেশে ধারাবাহিকভাবে নানা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০২৫ সালে ডেপুটি ন্যাশনাল প্রেসিডেন্টসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করার অভিজ্ঞতার ভিত্তিতেই তাঁর নির্বাচনে সংগঠনের সদস্যদের আস্থা স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়েছে।
অনুষ্ঠানে আরেফিন রাফি আহমেদ বলেন, ‘ভিশন ২০২৬-এর মূল কথা হলো মন দিয়ে শোনা, সাহসের সঙ্গে কাজ করা এবং সততা ও নতুন চিন্তার মাধ্যমে তরুণদের সমাজের সেবায় সক্ষম করে তোলা। একই সঙ্গে সংগঠনের স্থানীয় ইউনিটগুলোকে আরও শক্তিশালী করা এবং ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব গড়ে তোলাই আমার প্রধান লক্ষ্য।’

জুনিয়র চেম্বার ইন্টারন্যাশনাল (জেসিআই) বাংলাদেশের ২০২৬ সালের ন্যাশনাল প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন আরেফিন রাফি আহমেদ। সম্প্রতি রাজধানীর হোটেল র্যাডিসনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত জেসিআই নেতারা অংশ নেন।
বিভিন্ন খাতে এক দশকেরও বেশি সময়ের অভিজ্ঞ আরেফিন রাফি আহমেদ জেসিআই বাংলাদেশে ধারাবাহিকভাবে নানা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০২৫ সালে ডেপুটি ন্যাশনাল প্রেসিডেন্টসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করার অভিজ্ঞতার ভিত্তিতেই তাঁর নির্বাচনে সংগঠনের সদস্যদের আস্থা স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়েছে।
অনুষ্ঠানে আরেফিন রাফি আহমেদ বলেন, ‘ভিশন ২০২৬-এর মূল কথা হলো মন দিয়ে শোনা, সাহসের সঙ্গে কাজ করা এবং সততা ও নতুন চিন্তার মাধ্যমে তরুণদের সমাজের সেবায় সক্ষম করে তোলা। একই সঙ্গে সংগঠনের স্থানীয় ইউনিটগুলোকে আরও শক্তিশালী করা এবং ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব গড়ে তোলাই আমার প্রধান লক্ষ্য।’

তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির ক্ষেত্রে ‘দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি’ বা লং-টার্ম কন্ট্রাক্ট আন্তর্জাতিক বাজারে একটি অতি পরিচিত পদ্ধতি। এই পদ্ধতির বড় সুবিধা হলো, বাজারে স্বল্প মেয়াদে দাম ওঠানামা করলেও চুক্তিতে নির্ধারিত দামেই গ্যাস পাবে ক্রেতা। কিন্তু এই সুযোগ হেলায় ফেলে স্পট মার্কেট থেকে চার গুণ ব
০৪ জুন ২০২২
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চালিত ডেটা সেন্টারগুলোর ক্রমবর্ধমান চাহিদা এবং বৈশ্বিক সরবরাহ সংকটের কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে তামার দাম দ্রুত বেড়ে প্রতি টন প্রায় ১২ হাজার ডলারে পৌঁছেছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে তামার ঘাটতি পরিস্থিতিকে আরও ঘনীভূত করেছে।
৩ ঘণ্টা আগে
বাজারে পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে দৈনিক আমদানির অনুমতি চার গুণ বাড়িয়েছে সরকার। আজ শনিবার থেকে প্রতিদিন ৬ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তবে ব্যাংক বন্ধ থাকায় প্রথম দিনে ব্যবসায়ীরা ঋণপত্র খুলতে না পারলেও আগামীকাল রোববার থেকে মোট ১২ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানি করতে পারবেন।
৩ ঘণ্টা আগে
স্বাস্থ্য খাতের ব্যয়ে বাংলাদেশ পিছিয়ে আছে। বাংলাদেশে স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে কম। স্বাস্থ্যসেবায় মাথাপিছু সরকারি খরচ মাত্র ১ হাজার ৭০ টাকা। স্বাস্থ্য খাতে জিডিপির মাত্র ১ শতাংশ বরাদ্দ। দেশের ৪৯ শতাংশ মানুষ এখনো মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা পায় না। বিদেশে চিকিৎসায় প্রতিবছর প্রায় পাঁচ বিলিয়ন
৫ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বাজারে পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে দৈনিক আমদানির অনুমতি চার গুণ বাড়িয়েছে সরকার। আজ শনিবার থেকে প্রতিদিন ৬ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তবে ব্যাংক বন্ধ থাকায় প্রথম দিনে ব্যবসায়ীরা ঋণপত্র খুলতে না পারলেও আগামীকাল রোববার থেকে মোট ১২ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানি করতে পারবেন।
চলতি মাসের শুরুতে হঠাৎ পেঁয়াজের দাম বেড়ে তিন দিনের মধ্যে ১২০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৭ ডিসেম্বর কৃষি মন্ত্রণালয় আমদানি অনুমোদন দিতে শুরু করে। ওই দিনই দীর্ঘ ৩ মাস পর দিনাজপুরের হিলি দিয়ে ভারত থেকে প্রথম চালান বাংলাদেশে প্রবেশ করে। প্রথম চালানে ৩০ টন পেঁয়াজ আমদানি করা হয়।
প্রথমে দৈনিক মোট ৫০ জন আমদানিকারককে ৩০ টন করে পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়। ৭ ডিসেম্বর থেকে গত বৃহস্পতিবার ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত দৈনিক ১ হাজার ৫০০ টন করে মোট ৭ হাজার ৫০০ টন পেঁয়াজের অনুমোদন দেওয়া হয়। আমদানি শুরুর দিকে দাম অনেকটাই কমে আসে। কিন্তু এক-দুই দিনের মধ্যে আবার বেড়ে যায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমদানি আরও বাড়ানো হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ উইংয়ের অতিরিক্ত উপপরিচালক (আমদানি) বনি আমিন খান বলেন, ‘শনিবার অফিস বন্ধ থাকলেও আমরা পেঁয়াজের আমদানি অনুমতি (আইপি) দিতে কিছু কর্মকর্তা অফিসে ছিলাম। শনিবার থেকেই প্রতিদিন ৬ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেওয়া শুরু হয়েছে। রোববার ১২ হাজার টন পেঁয়াজ বাজারে এলে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে আশা করি।’
শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কৃষি মন্ত্রণালয় জানায়, প্রতিদিন ২০০টি করে আইপি (আমদানি অনুমতি) ইস্যু করা হবে। আগে ছিল ৫০টি করে। প্রতিটি আইপিতে সর্বোচ্চ ৩০ টন পেঁয়াজের অনুমোদন দেওয়া হবে। তবে আবেদনের বিষয় আগের মতোই থাকবে। অর্থাৎ ১ আগস্ট ২০২৫ থেকে যে সকল আমদানিকারক আমদানি অনুমতির জন্য আবেদন করেছেন, তাঁরাই কেবল আবেদন পুনরায় দাখিল করতে পারবেন।

বাজারে পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে দৈনিক আমদানির অনুমতি চার গুণ বাড়িয়েছে সরকার। আজ শনিবার থেকে প্রতিদিন ৬ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তবে ব্যাংক বন্ধ থাকায় প্রথম দিনে ব্যবসায়ীরা ঋণপত্র খুলতে না পারলেও আগামীকাল রোববার থেকে মোট ১২ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানি করতে পারবেন।
চলতি মাসের শুরুতে হঠাৎ পেঁয়াজের দাম বেড়ে তিন দিনের মধ্যে ১২০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৭ ডিসেম্বর কৃষি মন্ত্রণালয় আমদানি অনুমোদন দিতে শুরু করে। ওই দিনই দীর্ঘ ৩ মাস পর দিনাজপুরের হিলি দিয়ে ভারত থেকে প্রথম চালান বাংলাদেশে প্রবেশ করে। প্রথম চালানে ৩০ টন পেঁয়াজ আমদানি করা হয়।
প্রথমে দৈনিক মোট ৫০ জন আমদানিকারককে ৩০ টন করে পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়। ৭ ডিসেম্বর থেকে গত বৃহস্পতিবার ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত দৈনিক ১ হাজার ৫০০ টন করে মোট ৭ হাজার ৫০০ টন পেঁয়াজের অনুমোদন দেওয়া হয়। আমদানি শুরুর দিকে দাম অনেকটাই কমে আসে। কিন্তু এক-দুই দিনের মধ্যে আবার বেড়ে যায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমদানি আরও বাড়ানো হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ উইংয়ের অতিরিক্ত উপপরিচালক (আমদানি) বনি আমিন খান বলেন, ‘শনিবার অফিস বন্ধ থাকলেও আমরা পেঁয়াজের আমদানি অনুমতি (আইপি) দিতে কিছু কর্মকর্তা অফিসে ছিলাম। শনিবার থেকেই প্রতিদিন ৬ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেওয়া শুরু হয়েছে। রোববার ১২ হাজার টন পেঁয়াজ বাজারে এলে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে আশা করি।’
শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কৃষি মন্ত্রণালয় জানায়, প্রতিদিন ২০০টি করে আইপি (আমদানি অনুমতি) ইস্যু করা হবে। আগে ছিল ৫০টি করে। প্রতিটি আইপিতে সর্বোচ্চ ৩০ টন পেঁয়াজের অনুমোদন দেওয়া হবে। তবে আবেদনের বিষয় আগের মতোই থাকবে। অর্থাৎ ১ আগস্ট ২০২৫ থেকে যে সকল আমদানিকারক আমদানি অনুমতির জন্য আবেদন করেছেন, তাঁরাই কেবল আবেদন পুনরায় দাখিল করতে পারবেন।

তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির ক্ষেত্রে ‘দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি’ বা লং-টার্ম কন্ট্রাক্ট আন্তর্জাতিক বাজারে একটি অতি পরিচিত পদ্ধতি। এই পদ্ধতির বড় সুবিধা হলো, বাজারে স্বল্প মেয়াদে দাম ওঠানামা করলেও চুক্তিতে নির্ধারিত দামেই গ্যাস পাবে ক্রেতা। কিন্তু এই সুযোগ হেলায় ফেলে স্পট মার্কেট থেকে চার গুণ ব
০৪ জুন ২০২২
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চালিত ডেটা সেন্টারগুলোর ক্রমবর্ধমান চাহিদা এবং বৈশ্বিক সরবরাহ সংকটের কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে তামার দাম দ্রুত বেড়ে প্রতি টন প্রায় ১২ হাজার ডলারে পৌঁছেছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে তামার ঘাটতি পরিস্থিতিকে আরও ঘনীভূত করেছে।
৩ ঘণ্টা আগে
জুনিয়র চেম্বার ইন্টারন্যাশনাল (জেসিআই) বাংলাদেশের ২০২৬ সালের ন্যাশনাল প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন আরেফিন রাফি আহমেদ। সম্প্রতি রাজধানীর হোটেল র্যাডিসনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত জেসিআই নেতারা অংশ নেন।
৩ ঘণ্টা আগে
স্বাস্থ্য খাতের ব্যয়ে বাংলাদেশ পিছিয়ে আছে। বাংলাদেশে স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে কম। স্বাস্থ্যসেবায় মাথাপিছু সরকারি খরচ মাত্র ১ হাজার ৭০ টাকা। স্বাস্থ্য খাতে জিডিপির মাত্র ১ শতাংশ বরাদ্দ। দেশের ৪৯ শতাংশ মানুষ এখনো মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা পায় না। বিদেশে চিকিৎসায় প্রতিবছর প্রায় পাঁচ বিলিয়ন
৫ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

স্বাস্থ্য খাতের ব্যয়ে বাংলাদেশ পিছিয়ে আছে। বাংলাদেশে স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে কম। স্বাস্থ্যসেবায় মাথাপিছু সরকারি খরচ মাত্র ১ হাজার ৭০ টাকা। স্বাস্থ্য খাতে জিডিপির মাত্র ১ শতাংশ বরাদ্দ। দেশের ৪৯ শতাংশ মানুষ এখনো মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা পায় না। বিদেশে চিকিৎসায় প্রতিবছর প্রায় পাঁচ বিলিয়ন ডলার দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে। যদিও বর্তমানে এখাতের মোট বাজার প্রায় ১৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এই বাজার দ্রুত বাড়ছে। আগামী আট বছরে এখাতের বাজার ৯ বিলিয়ন ডলার বাড়বে। আগামী ২০৩৩ সালে স্বাস্থ্য খাতের বাজার ২৩ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আজ শনিবার ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা খাতে আস্থা বৃদ্ধি: মান নিয়ন্ত্রণে কৌশলগত কাঠামো নিশ্চিতকরণ’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তরা এসব বিষয় তুলে ধরেন।
রাজধানীর ডিসিসিআই কার্যালয়ে আয়োজিত সেমিনারে বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক এ কে আজাদ খান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
অপ্রতুল অবকাঠামো ও নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারে পিছিয়ে থাকা, দক্ষ মানবসম্পদের ঘাটতি, সেবা প্রাপ্তিতে উচ্চ ব্যয়, ব্যবস্থাপনার ঘাটতি, বিদ্যমান নীতিমালার তদারকির অভাবের কারণে দেশের স্বাস্থ্য খাতে কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন হয়নি বলে জানান তারা।
এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি ও জাতীয় অধ্যাপক এ কে আজাদ খান বলেন, ‘আমাদের স্বাস্থ্য সেবায় বেশ অর্জন রয়েছে, তবে সামগ্রিকভাবে কাঙ্ক্ষিত মান নিশ্চিতের করা যায়নি, এ ক্ষেত্রে সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। দেশের স্বাস্থ্য সেবার মান উন্নতন দেশগুলোর মতো নয়, এমনকি পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর চেয়ে আমরা পিছিয়ে রয়েছি। বাংলাদেশের পক্ষে ইউনিভার্সেল স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়, তবে আমাদের প্রাইমারি হেলথ কেয়ারের ওপর বেশি হারে জোর দিতে হবে।’
এ খাতের ব্যবস্থাপনায় উন্নয়নের পাশাপাশি বিকেন্দ্রীকরণের কোনো বিকল্প নেই বলে তিনি অভিমত জ্ঞাপন করেন।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে ইউনাইটেড হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ঢাকা চেম্বারের প্রাক্তন ঊর্ধ্বতন সহসভাপতি মালিক তালহা ইসমাইল বারী বলেন, স্বাস্থ্য খাতে বাংলাদেশ সরকারের জনপ্রতি বাৎসরিক ব্যয় ১ হাজার ৭০ টাকা এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, প্রায় ৪৯ শতাংশ জনগণ গুণগত স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত, যদিও বর্তমানে এ খাতের মোট বাজার প্রায় ১৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং ২০৩৩ সালে তা ২৩ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ইসমাইল বারী আরও বলেন, স্বল্প বাজেট বরাদ্দ ও অদক্ষ ব্যবস্থাপনা, শহর-গ্রামে স্বাস্থ্যসেবার বৈষম্য, সেবার মান ও আস্থার ঘাটতি, দক্ষ স্বাস্থ্যকর্মীর সংকট, ক্রমবর্ধমান স্বাস্থ্যসেবা ব্যয়, অপ্রতুল অবকাঠামো এবং নিয়ন্ত্রক ব্যবস্থার দুর্বলতা এ খাতের অন্যতম প্রতিবন্ধকতা। তুলনামূলকভাবে ভালো স্বাস্থ্যসেবা পেতে রোগীদের একটি বড় অংশ অন্যান্য দেশে চিকিৎসা নিচ্ছে। ফলে এ বাবদ প্রতিবছর প্রায় পাঁচ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বাইরে চলে যাচ্ছে।
ঢাকা চেম্বারের সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেন, ‘দেশে মানসম্মত ও রোগীবান্ধব সেবা নিশ্চিতে এখনো কাঠামোগত ঘাটতি রয়ে গেছে। সরকারি-বেসরকারি খাতে স্বাস্থ্য সেবা মানের অসমতা, প্রশিক্ষিত মানবসম্পদের ঘাটতি, অনুমোদনহীন ক্লিনিক ও ফার্মেসির সম্প্রসারণ, রোগ নির্ণয়ে ভুল রিপোর্ট, ভুয়া ওষুধ ও তদারকি দুর্বলতা, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে সীমাবদ্ধতা এবং সর্বোপরি আইন বাস্তবায়নে উদাসীনতা আমাদের জনস্বাস্থ্য নিরাপত্তা এবং আস্থাকে ক্রমাগত ক্ষতিগ্রস্ত করছে।’
তাসকীন আহমেদ বলেন, বাংলাদেশে স্বাস্থ্য বিমা ব্যবস্থাপনার কার্যকর ব্যবহার না থাকার কারণে মোট স্বাস্থ্য ব্যয়ের প্রায় ৭৪ শতাংশ ব্যক্তিকে নিজস্ব ব্যয়ে বহন করতে হয়। এতে নিম্ন ও মধ্য আয়ের জনগোষ্ঠী আর্থিকভাবে বড় ঝুঁকিতে পড়েন।
অনুষ্ঠানের নির্ধারিত আলোচনায় গ্রিন লাইফ সেন্টারের চিফ কনসালটেন্ট অধ্যাপক সৈয়দ আতিকুল হক বলেন, যেহেতু দেশের বেশির ভাগ লোকই সরকারি খাতের হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিয়ে থাকে, তাই সরকারি হাসপাতালগুলোতে সর্বোত্তম মান উন্নয়ন ও নিশ্চিতের কোনো বিকল্প নেই। এ খাতের সব স্তরের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা প্রয়োজন বলে তিনি মতপ্রকাশ করেন।
ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চেয়ারম্যান প্রীতি চক্রবর্তী বলেন, দেশীয় স্বাস্থ্য খাতের বাজার ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং এ খাতের আস্থা ফিরাতে সরকারি-বেসরকারি খাত ও জনগণকে একযোগে কাজ করতে হবে, পাশাপাশি এ খাতে পিপিপি মডেলের ব্যবহার করার সুযোগ রয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের চিকিৎসা শিক্ষায় অংশ নেওয়া বিদেশি শিক্ষার্থীরা প্রতিবছর দুই হাজার কোটি টাকা ব্যয় করেন, যদিও কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসা প্রাপ্তি অসংখ্য বাংলাদেশি অন্যান্য দেশে সেবা নিয়ে থাকেন, তাই বিষয়টি নিয়ে সচেতনভাবে চিন্তার প্রয়োজন রয়েছে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. শাফিউন নাহিন শিমুল বলেন, স্বাস্থ্য খাতের আস্থা বাড়াতে সেবা প্রদানকারীদের সঙ্গে রোগীদের যোগাযোগ বৃদ্ধি, স্বাস্থ্যবিষয়ক নেতিবাচক সংবাদ পরিহার এবং সর্বোপরি প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবার ওপর জোরারোপ করা প্রয়োজন।
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজের সেক্রেটারি জেনারেল ডা. মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘প্রয়োজনীয় নীতি সহায়তার কারণে বাংলাদেশের ৯৭% ঔষধ স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত হচ্ছে এবং ১৬০টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে, তার মানে হলো আমাদের উৎপাদিত ঔষধের ওপর আস্থা রয়েছে, তবে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য নীতি ২০১১ সালে হলেও গত ১৪ বছরেও তা যুগোপযোগী করা এবং সার্বিকভাবে স্বাস্থ্য খাতের কোনো সমন্বিত নীতিমালা নেই। তাই এ খাতের জন্য দীর্ঘমেয়াদি টেকসই নীতিমালার পাশাপাশি সরকারি-বেসরকারি খাতের সমন্বয় একান্ত অপরিহার্য, সেই সঙ্গে স্বাস্থ্য খাতের অর্থায়ন স্ট্র্যাটেজি একান্ত অপরিহার্য বলে তিনি মতপ্রকাশ করেন।’
আইসিডিডিআরবির সংক্রামক রোগ বিভাগের সিনিয়র সায়েন্টিস্ট ডা. মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আইসিডিডিআরবি হতে প্রতিবছর প্রায় তিন লাখ রোগী ডায়রিয়া সেবা নিচ্ছে, বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়নের জন্য আইসিডিডিআরবির মডেলে অন্যান্য জায়গায় অনুসরণ করা যেতে পারে। তিনি আরও বলেন, গত অক্টোবর হতে তার প্রতিষ্ঠানে ক্যানসার ডায়াগনস্টিক জেনেমিক্স নিয়ে কাজ করছে। ডেঙ্গি ভ্যাকসিন নিয়ে এরই মধ্যে গবেষণা কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে এবং আগামী দুই বছরের মধ্যে এ রোগের ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

স্বাস্থ্য খাতের ব্যয়ে বাংলাদেশ পিছিয়ে আছে। বাংলাদেশে স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে কম। স্বাস্থ্যসেবায় মাথাপিছু সরকারি খরচ মাত্র ১ হাজার ৭০ টাকা। স্বাস্থ্য খাতে জিডিপির মাত্র ১ শতাংশ বরাদ্দ। দেশের ৪৯ শতাংশ মানুষ এখনো মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা পায় না। বিদেশে চিকিৎসায় প্রতিবছর প্রায় পাঁচ বিলিয়ন ডলার দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে। যদিও বর্তমানে এখাতের মোট বাজার প্রায় ১৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এই বাজার দ্রুত বাড়ছে। আগামী আট বছরে এখাতের বাজার ৯ বিলিয়ন ডলার বাড়বে। আগামী ২০৩৩ সালে স্বাস্থ্য খাতের বাজার ২৩ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আজ শনিবার ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা খাতে আস্থা বৃদ্ধি: মান নিয়ন্ত্রণে কৌশলগত কাঠামো নিশ্চিতকরণ’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তরা এসব বিষয় তুলে ধরেন।
রাজধানীর ডিসিসিআই কার্যালয়ে আয়োজিত সেমিনারে বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক এ কে আজাদ খান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
অপ্রতুল অবকাঠামো ও নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারে পিছিয়ে থাকা, দক্ষ মানবসম্পদের ঘাটতি, সেবা প্রাপ্তিতে উচ্চ ব্যয়, ব্যবস্থাপনার ঘাটতি, বিদ্যমান নীতিমালার তদারকির অভাবের কারণে দেশের স্বাস্থ্য খাতে কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন হয়নি বলে জানান তারা।
এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি ও জাতীয় অধ্যাপক এ কে আজাদ খান বলেন, ‘আমাদের স্বাস্থ্য সেবায় বেশ অর্জন রয়েছে, তবে সামগ্রিকভাবে কাঙ্ক্ষিত মান নিশ্চিতের করা যায়নি, এ ক্ষেত্রে সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। দেশের স্বাস্থ্য সেবার মান উন্নতন দেশগুলোর মতো নয়, এমনকি পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর চেয়ে আমরা পিছিয়ে রয়েছি। বাংলাদেশের পক্ষে ইউনিভার্সেল স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়, তবে আমাদের প্রাইমারি হেলথ কেয়ারের ওপর বেশি হারে জোর দিতে হবে।’
এ খাতের ব্যবস্থাপনায় উন্নয়নের পাশাপাশি বিকেন্দ্রীকরণের কোনো বিকল্প নেই বলে তিনি অভিমত জ্ঞাপন করেন।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে ইউনাইটেড হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ঢাকা চেম্বারের প্রাক্তন ঊর্ধ্বতন সহসভাপতি মালিক তালহা ইসমাইল বারী বলেন, স্বাস্থ্য খাতে বাংলাদেশ সরকারের জনপ্রতি বাৎসরিক ব্যয় ১ হাজার ৭০ টাকা এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, প্রায় ৪৯ শতাংশ জনগণ গুণগত স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত, যদিও বর্তমানে এ খাতের মোট বাজার প্রায় ১৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং ২০৩৩ সালে তা ২৩ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ইসমাইল বারী আরও বলেন, স্বল্প বাজেট বরাদ্দ ও অদক্ষ ব্যবস্থাপনা, শহর-গ্রামে স্বাস্থ্যসেবার বৈষম্য, সেবার মান ও আস্থার ঘাটতি, দক্ষ স্বাস্থ্যকর্মীর সংকট, ক্রমবর্ধমান স্বাস্থ্যসেবা ব্যয়, অপ্রতুল অবকাঠামো এবং নিয়ন্ত্রক ব্যবস্থার দুর্বলতা এ খাতের অন্যতম প্রতিবন্ধকতা। তুলনামূলকভাবে ভালো স্বাস্থ্যসেবা পেতে রোগীদের একটি বড় অংশ অন্যান্য দেশে চিকিৎসা নিচ্ছে। ফলে এ বাবদ প্রতিবছর প্রায় পাঁচ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বাইরে চলে যাচ্ছে।
ঢাকা চেম্বারের সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেন, ‘দেশে মানসম্মত ও রোগীবান্ধব সেবা নিশ্চিতে এখনো কাঠামোগত ঘাটতি রয়ে গেছে। সরকারি-বেসরকারি খাতে স্বাস্থ্য সেবা মানের অসমতা, প্রশিক্ষিত মানবসম্পদের ঘাটতি, অনুমোদনহীন ক্লিনিক ও ফার্মেসির সম্প্রসারণ, রোগ নির্ণয়ে ভুল রিপোর্ট, ভুয়া ওষুধ ও তদারকি দুর্বলতা, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে সীমাবদ্ধতা এবং সর্বোপরি আইন বাস্তবায়নে উদাসীনতা আমাদের জনস্বাস্থ্য নিরাপত্তা এবং আস্থাকে ক্রমাগত ক্ষতিগ্রস্ত করছে।’
তাসকীন আহমেদ বলেন, বাংলাদেশে স্বাস্থ্য বিমা ব্যবস্থাপনার কার্যকর ব্যবহার না থাকার কারণে মোট স্বাস্থ্য ব্যয়ের প্রায় ৭৪ শতাংশ ব্যক্তিকে নিজস্ব ব্যয়ে বহন করতে হয়। এতে নিম্ন ও মধ্য আয়ের জনগোষ্ঠী আর্থিকভাবে বড় ঝুঁকিতে পড়েন।
অনুষ্ঠানের নির্ধারিত আলোচনায় গ্রিন লাইফ সেন্টারের চিফ কনসালটেন্ট অধ্যাপক সৈয়দ আতিকুল হক বলেন, যেহেতু দেশের বেশির ভাগ লোকই সরকারি খাতের হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিয়ে থাকে, তাই সরকারি হাসপাতালগুলোতে সর্বোত্তম মান উন্নয়ন ও নিশ্চিতের কোনো বিকল্প নেই। এ খাতের সব স্তরের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা প্রয়োজন বলে তিনি মতপ্রকাশ করেন।
ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চেয়ারম্যান প্রীতি চক্রবর্তী বলেন, দেশীয় স্বাস্থ্য খাতের বাজার ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং এ খাতের আস্থা ফিরাতে সরকারি-বেসরকারি খাত ও জনগণকে একযোগে কাজ করতে হবে, পাশাপাশি এ খাতে পিপিপি মডেলের ব্যবহার করার সুযোগ রয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের চিকিৎসা শিক্ষায় অংশ নেওয়া বিদেশি শিক্ষার্থীরা প্রতিবছর দুই হাজার কোটি টাকা ব্যয় করেন, যদিও কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসা প্রাপ্তি অসংখ্য বাংলাদেশি অন্যান্য দেশে সেবা নিয়ে থাকেন, তাই বিষয়টি নিয়ে সচেতনভাবে চিন্তার প্রয়োজন রয়েছে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. শাফিউন নাহিন শিমুল বলেন, স্বাস্থ্য খাতের আস্থা বাড়াতে সেবা প্রদানকারীদের সঙ্গে রোগীদের যোগাযোগ বৃদ্ধি, স্বাস্থ্যবিষয়ক নেতিবাচক সংবাদ পরিহার এবং সর্বোপরি প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবার ওপর জোরারোপ করা প্রয়োজন।
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজের সেক্রেটারি জেনারেল ডা. মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘প্রয়োজনীয় নীতি সহায়তার কারণে বাংলাদেশের ৯৭% ঔষধ স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত হচ্ছে এবং ১৬০টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে, তার মানে হলো আমাদের উৎপাদিত ঔষধের ওপর আস্থা রয়েছে, তবে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য নীতি ২০১১ সালে হলেও গত ১৪ বছরেও তা যুগোপযোগী করা এবং সার্বিকভাবে স্বাস্থ্য খাতের কোনো সমন্বিত নীতিমালা নেই। তাই এ খাতের জন্য দীর্ঘমেয়াদি টেকসই নীতিমালার পাশাপাশি সরকারি-বেসরকারি খাতের সমন্বয় একান্ত অপরিহার্য, সেই সঙ্গে স্বাস্থ্য খাতের অর্থায়ন স্ট্র্যাটেজি একান্ত অপরিহার্য বলে তিনি মতপ্রকাশ করেন।’
আইসিডিডিআরবির সংক্রামক রোগ বিভাগের সিনিয়র সায়েন্টিস্ট ডা. মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আইসিডিডিআরবি হতে প্রতিবছর প্রায় তিন লাখ রোগী ডায়রিয়া সেবা নিচ্ছে, বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়নের জন্য আইসিডিডিআরবির মডেলে অন্যান্য জায়গায় অনুসরণ করা যেতে পারে। তিনি আরও বলেন, গত অক্টোবর হতে তার প্রতিষ্ঠানে ক্যানসার ডায়াগনস্টিক জেনেমিক্স নিয়ে কাজ করছে। ডেঙ্গি ভ্যাকসিন নিয়ে এরই মধ্যে গবেষণা কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে এবং আগামী দুই বছরের মধ্যে এ রোগের ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির ক্ষেত্রে ‘দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি’ বা লং-টার্ম কন্ট্রাক্ট আন্তর্জাতিক বাজারে একটি অতি পরিচিত পদ্ধতি। এই পদ্ধতির বড় সুবিধা হলো, বাজারে স্বল্প মেয়াদে দাম ওঠানামা করলেও চুক্তিতে নির্ধারিত দামেই গ্যাস পাবে ক্রেতা। কিন্তু এই সুযোগ হেলায় ফেলে স্পট মার্কেট থেকে চার গুণ ব
০৪ জুন ২০২২
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চালিত ডেটা সেন্টারগুলোর ক্রমবর্ধমান চাহিদা এবং বৈশ্বিক সরবরাহ সংকটের কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে তামার দাম দ্রুত বেড়ে প্রতি টন প্রায় ১২ হাজার ডলারে পৌঁছেছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে তামার ঘাটতি পরিস্থিতিকে আরও ঘনীভূত করেছে।
৩ ঘণ্টা আগে
জুনিয়র চেম্বার ইন্টারন্যাশনাল (জেসিআই) বাংলাদেশের ২০২৬ সালের ন্যাশনাল প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন আরেফিন রাফি আহমেদ। সম্প্রতি রাজধানীর হোটেল র্যাডিসনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত জেসিআই নেতারা অংশ নেন।
৩ ঘণ্টা আগে
বাজারে পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে দৈনিক আমদানির অনুমতি চার গুণ বাড়িয়েছে সরকার। আজ শনিবার থেকে প্রতিদিন ৬ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তবে ব্যাংক বন্ধ থাকায় প্রথম দিনে ব্যবসায়ীরা ঋণপত্র খুলতে না পারলেও আগামীকাল রোববার থেকে মোট ১২ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানি করতে পারবেন।
৩ ঘণ্টা আগে