Ajker Patrika

গুদামে প্রয়োগের বিষ বাসায় স্প্রে করে পেস্ট কন্ট্রোল: ডিবি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৯ জুন ২০২৩, ০১: ০২
গুদামে প্রয়োগের বিষ বাসায় স্প্রে করে পেস্ট কন্ট্রোল: ডিবি

রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় স্প্রে করা বিষে দুই শিশু নিহতের ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির এমডি ও চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি)  লালবাগ বিভাগ।

ডিবি বলছে, ডিসিএস অর্গানাইজেশন লিমিটেড নামের প্রতিষ্ঠানটির স্প্রে করা বিষগুলো ছিল গুদাম, কারখানা বা বড় কোনো বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের জন্য। কিন্তু তারা সেটি বাসাবাড়িতে স্প্রে করেছে। আবার এ বিষয়ে ভুক্তভোগী পরিবারকে কোনো ধরনের তথ্য দেয়নি।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। তিনি বলেন, গত শুক্রবার (২ জুন) বসুন্ধরার আই ব্লকের একটি নতুন বাসায় পেস্ট কন্ট্রোল সার্ভিসের কর্মীরা তেলাপোকা মারার বিষ স্প্রে করেন। এর দুই দিন পর রোববার ভুক্তভোগী পরিবারটি ওই বাসায় ওঠে। বাসায় প্রবেশ করেই অসুস্থ হয়ে পড়ে পরিবারের সদস্যরা। পরে তাদের হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানেই ৪ জুন সকালে শাহিল মোবারত জায়ান (৯) মারা যায়। একই দিন রাত ১০টায় মারা যায় শায়েন মোবারত জাহিন (১৫)।

এ ঘটনায় নিহতের বাবা গত ৫ জুন ডিসিএস অর্গানাইজেশনের তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। পরে প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা টিটু মোল্লাকে গ্রেপ্তার করে ভাটারা থানার পুলিশ।

ডিবিপ্রধান বলেন, এ ঘটনার পর থেকে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান আশরাফুজ্জামান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর (এমডি) ফরহাদুল আমিন আত্মগোপন করেন। তাঁরা গাড়িতে করে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরতে থাকেন৷ পরে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে নরসিংদী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সীমান্ত এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

ডিবিপ্রধান আরও বলেন, অ্যালুমিনিয়াম ফসফেট সমৃদ্ধ এই বিষ বড় গার্মেন্টস ও বীজের গুদাম বা বাণিজ্যিক স্থানে ব্যবহার করা হয়। এগুলো ঘর বা বাসাবাড়িতে ব্যবহার করা যায় না। আর ঘরবাড়িতে এগুলো ব্যবহার করলেও ৭২ থেকে ৯৬ ঘণ্টা সম্পূর্ণ বন্ধ রাখতে হয়। বসুন্ধরার এই বাসায় ব্যবহৃত তেলাপোকানাশক রাসায়নিক বিষ সঠিক অনুপাতে ছিল না। ফলে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।

আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে এই বিষাক্ত আইটেমস কীভাবে সংগ্রহ করা হয়েছে, এর অনুমোদন ছিল কি না, এর রাসায়নিক অনুপাত সঠিক ছিল কি না, মানবদেহের জন্য এগুলো কতটা ক্ষতিকর—এই বিষয়গুলো যাচাই-বাছাই করা হবে বলে জানান গোয়েন্দাপ্রধান।

এ দিকে নিহত দুই শিশুর বাবা মোবারক হোসেন তুষার বলেন, পেস্ট কন্ট্রোলের কারণে আমার দুই সন্তানকে হারাতে হলো। তারা যেন কোনোভাবেই পার না পায়। আমরা যেন ন্যায়বিচার পাই।

কোনো কাজ আমরা না পারলে বিশেষজ্ঞদের ডাকি। কিন্তু তারা টাকার লোভে আমার দুইটা সন্তানকে মেরে ফেলল। আমি যতটা শুনেছি, কোম্পানিটির স্প্রে করা বিষ বাসা বাড়িতে দেওয়ার বিষ ছিল না। এগুলো গুদামে স্প্রে করার জিনিস, অথচ তারা আমার বাসায় এগুলো করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত