Ajker Patrika

চিকিৎসকদের কর্মবিরতি: ঢামেকের আউটডোর বন্ধ, জরুরি বিভাগে রোগীদের উপচে পড়া ভিড়

ঢামেক প্রতিবেদক
চিকিৎসকদের কর্মবিরতি: ঢামেকের আউটডোর বন্ধ, জরুরি বিভাগে রোগীদের উপচে পড়া ভিড়

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের চিকিৎসককে মারধরের ঘটনায় তারা কর্মবিরতি স্থগিত করলেও হাসপাতালের বহির্বিভাগ বন্ধ রয়েছে। সেখানে নেই কোনো চিকিৎসক। ফলে জরুরি বিভাগে রোগীদের ভিড় বেড়েছে প্রায় তিন গুন। সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন সেখানকার চিকিৎসকেরা। আজ সোমবার সকাল থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত দেখা গেছে এমন চিত্র। 

এ বিষয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. কিশোর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সকাল থেকে রোগীদের উপচে পড়া ভিড়। সকাল থেকে ১টা পর্যন্ত ৫৫০ জন টিকিট নিয়েছে। যা আগের দিনের তুলনায় তিন গুন।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘আউটডোর বন্ধ থাকায় জরুরি বিভাগে রোগীর চাপ বেড়েছে। রোগীদের চিকিৎসা দিতে চিকিৎসকদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। জরুরি বিভাগে সব সময় জরুরি রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হয়। পুরোনো রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হয় আউটডোরে। আউটডোর বন্ধ থাকায় সবাই জরুরি বিভাগে ভিড় করছেন।’ 

সরেজমিনে দেখা যায়, আউটডোর বন্ধ থাকায় জরুরি বিভাগের টিকিট পেতে রোগীদের লম্বা লাইন। তাদের মধ্যে অধিকাংশই আউটডোরে চিকিৎসা নিতে এসেছেন। তাদের সঙ্গে কথা হয় আজকের পত্রিকার। 

জরুরি বিভাগের সামনে সকাল থেকে সেনাবাহিনী পাহারা দিচ্ছে। হাসপাতালের ভেতরে সেনা-বিজিবির পাহারায় চিকিৎসা চলছে। 

নাকের সমস্যা নিয়ে ভাগনি শিশু জান্নাতকে (৫) নিয়ে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আসেন সাথী আক্তার। তিনি মুন্সিগঞ্জ থেকে এসেছেন। জরুরি বিভাগে টিকিটের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। সাথী আক্তার আজকের পত্রিকাকে জানান, গত কয়েক দিন ধরে নাকের ব্যথায় ভুগছে জান্নাত। সকালে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে আসেন। কিন্তু হাসপাতালে এসে দেখেন আউটডোর বন্ধ। উপায়ান্ত না পেয়ে লাইনে দাঁড়িয়েছেন তিনি। 

ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে মাজায় ব্যথা নিয়ে এসেছেন সায়মা আক্তার (৩৮)। তাকে নিয়ে এসেছেন স্বামী ইসমাঈল হোসেন। তিনি বলেন, ‘গত এক বছর ধরে মাজার ব্যথায় ভুগছেন আমার স্ত্রী। আমরা জানতাম না হাসপাতালের আউটডোর বন্ধের কথা। সকালে এসে দেখি হাসপাতালের আউটডোর বন্ধ। এখন জরুরি বিভাগে টিকিটের জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছি।’ 

চাঁদপুরে হাইমচর থেকে আউটডোরে এসেছেন সোহেল (৪২)। তিনি বলেন, ‘গত এক মাস ধরে আউটডোরে ডাক্তার দেখাচ্ছি। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে টিবি ধরা পড়ছে। আজকে রিপোর্ট দেখানোর জন্য চাঁদপুর থেকে মেডিকেলে আসছি। এসে দেখি আউটডোর বন্ধ। আমিতো জানতাম না, জানলে এত দূর থেকে আসতাম না। এখন ফিরে যেতে হবে।’ 

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বহির্বিভাগ বন্ধ থাকায় জরুরি বিভাগের রোগীদের উপচে পড়া ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকানরসিংদীর রায়পুর থেকে পায়ে ব্যান্ডেজ নিয়ে হাসপাতালের আউটডোরে এসেছেন রমিজ মিয়া (৩৬)। তিনি জানান, গত ১৫ দিন আগে সড়ক দুর্ঘটনায় তার পা ভেঙে যায়। সে সময় আউটডোরে ডাক্তার দেখিয়েছিলেন। ১৫ দিন পর ফলোআপ ছিল। আজ এসে জানতে পারলেন ডাক্তারকে মারধর করায় আউটডোর বন্ধ রাখা হয়েছে। এখন বাসায় ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। 

এমন পরিস্থিতির বিষয়ে জরুরি বিভাগের টিকিট কাউন্টারের ইনচার্জ মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘সকাল ৮ থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত ৫৫০ জন টিকিট নিয়েছে। যা গত দিনের তুলনায় তিন গুন। এ পর্যন্ত ভর্তি হয়েছে অর্ধশত। যা আগে কখনো হয়নি। আউটডোর বন্ধ থাকায় জরুরি বিভাগে রোগীর চাপ বেড়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত