অনলাইন ডেস্ক
মিয়ানমারে ২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করে সামরিক বাহিনী। এরপর থেকেই দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠী ও জান্তা বাহিনীর মধ্যে চলছে সংঘাত। গত তিন বছরে গৃহযুদ্ধ মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে দেশটির অর্থনীতি ও সমাজব্যবস্থায়। এরই মধ্যে দেশের বহু এলাকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে জান্তা সরকার। ক্রমেই বিদ্রোহী জোট শক্তিশালী হয়ে উঠছে। বিদ্রোহীদের প্রতিরোধের মুখে মিয়ানমারের প্রায় ১০০ সীমান্তরক্ষী বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। সীমান্ত এলাকায় চলছে তীব্র গোলাগুলি। অনেকে বলছেন, মিয়ানমারের জান্তা সরকারের পতন আসন্ন। কিন্তু সার্বিক পরিস্থিতি এতটাই জটিল হয়ে উঠেছে যে মিয়ানমারের ভবিষ্যৎ এখনো ঝাপসা—এমনটিই মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকেরা।
২০২৩ সালে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে ঐক্য হলে যুদ্ধ গতি পায়। জান্তা বাহিনীর স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কাউন্সিল (এসএসি) বিভিন্ন এলাকায় ধারাবাহিক পরাজয়ের স্বাদ পেতে থাকে। এতে জান্তা বাহিনী বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সেনাবাহিনীর মধ্যে শৃঙ্খলা এবং মনোবল ভেঙে পড়েছে, অভিজাত বিভাগগুলোর মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য বিনষ্ট হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব তাসমানিয়ার সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অধ্যাপক নিকোলাস ফ্যারেলি চলতি সপ্তাহে এক নিবন্ধে লেখেন, নেপিডোর জেনারেলরা এখন প্রচণ্ড চাপের মধ্যে রয়েছেন। যুদ্ধক্ষেত্র দ্রুত বদলে যাচ্ছে এবং মিয়ানমার আন্তর্জাতিকভাবে স্বাভাবিকের চেয়ে আরও বেশি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এরপর কী ঘটবে, তা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে।
এই প্রশ্নগুলোর মধ্যে একটি হলো সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত জাতীয় ঐক্য সরকারের (এনইউজি) বেসামরিক রাজনীতিবিদ এবং জান্তাবিরোধী বিভিন্ন জাতিগত বিদ্রোহী যোদ্ধাদের সমন্বয়ে কী ধরনের রাজনৈতিক ঐকমত্যে পৌঁছানো যেতে পারে।
ফ্যারেলি বলেছেন, ‘যদি সামরিক শাসন শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়—অর্থাৎ সেনা সরকারের পিঠ দেয়ালে ঠেকে যায়—এরপরও মিয়ানমারের জনগণের লড়াই জারি থাকবে, যা প্রায়শই জাতিগত, ধর্মীয় এবং আদর্শ দ্বারা চালিত।
অভ্যুত্থানের তৃতীয় বার্ষিকীর প্রাক্কালে এনইউজি প্রধান জাতিগত সশস্ত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে একটি যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করেছে। বিবৃতিতে এনইউজি ২০০৮ সালে সামরিক সরকার রচিত সংবিধানের অধীন সীমাবদ্ধ গণতন্ত্রকে প্রত্যাখ্যান করেছে। পরিবর্তে একটি সত্যিকারের গণতান্ত্রিক ফেডারেল রাষ্ট্রের আহ্বান জানিয়েছে, যেখানে সামরিক বাহিনীর কোনো ভেটো ক্ষমতা এবং রাজনীতিতে তাদের কোনো ভূমিকা থাকবে না।
ঐক্যবদ্ধ বৃহৎ রাজনৈতিক সংস্কারের প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও ফ্যারেলি সতর্ক করেছেন, সংঘাত থেমে গেলেই দীর্ঘদিন ধরে লড়াই করা বহু বিদ্রোহী গোষ্ঠীর মধ্যে ক্ষমতা এবং সম্পদের সুষম বণ্টন নিয়ে দ্বন্দ্ব দেখা দিতে পারে। তারা কর্তৃত্বের ক্ষেত্র তৈরি, নিজেদের সরকার গঠন এবং দেশের বিশাল সম্পদের একটি অংশের নিয়ন্ত্রণ পেতে আগ্রহী।
তবে সেই ক্ষণ আসতে এখনো অনেক রক্তপাত বাকি! ঐক্যবদ্ধ বিদ্রোহী বাহিনী জান্তাদের আরও ঘায়েল করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, যাতে জান্তা সরকার এনইউজি এবং এর মিত্রদের সঙ্গে সংলাপে বসতে বাধ্য হয়। সংলাপে ব্যর্থ হলে সামরিক লড়াই চালিয়ে যাবে বিদ্রোহীরা। একের পর এক বিভিন্ন প্রদেশ ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান দখলে নেওয়ার নৃশংস লড়াই চলবে—যেখানে শেষমেশ নেপিডোর পতন ঘটবে।
ফ্যারেলি লিখেছেন, সামরিক নেতৃত্বকে ক্ষমতার অংশীদার করে সমঝোতার কল্পনা করা এখন কঠিন। কেননা পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে বিদ্রোহীরা নেপিডোর নিয়ন্ত্রণ নিতে পারলে জান্তাদের মুখে চুনকালি মেখে নির্বাসনে যেতে হবে।
মিয়ানমারের জান্তা বাহিনী (তাতমাদো) এখন বেসামরিক মানুষ ও বাড়িঘরে ইচ্ছাকৃতভাবে আক্রমণ করছে, যাতে গোষ্ঠীগুলোকে আত্মসমর্পণে বাধ্য করা যায়। জান্তার উচ্ছেদ ঘটলে জবাবদিহি এবং নৃশংসতার প্রশ্নগুলো বড় হয়ে উঠবে—যেখানে সংঘর্ষ-পরবর্তী সামরিক বাহিনীর সঙ্গে বেসরকারি সরকারের প্রাতিষ্ঠানিক সমন্বয় যা-ই হোক না কেন, সেনা কর্মকর্তারা সেখানেও শক্তিশালী রাজনৈতিক নেতা হয়ে উঠতে পারেন। সেই পরিস্থিতিতে ক্ষমতার শূন্যতা এবং গৃহযুদ্ধজর্জরিত মিয়ানমারের ব্যর্থ রাষ্ট্রে পর্যবসিত হওয়া ঠেকাতে কঠিন রাজনৈতিক সমঝোতা করতে হবে।
জান্তার উত্তরসূরি সরকারের একটি মৌলিক প্রাতিষ্ঠানিক সমন্বয় থাকবে ধরে নিলে মিয়ানমারকে আবার সুস্থ রাজনীতির ধারায় ফেরাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে দেশটিকে অনেক কাজ করতে হবে। কোভিড মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত জনগণকে এই সংঘাত শুধু অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত করেনি, এটি সামাজিক কাঠামোও ভেঙে দিয়েছে। এ সময়ে দেশটির ‘স্টেট ল রেস্টোরেশন কাউন্সিল’ যুগের নজরদারি, অবহিতকরণ, নির্বিচার আটক এবং নির্যাতন জান্তাদের মাধ্যমেই চলেছে।
মিয়ানমারের গৃহযুদ্ধ এখন আর আগের মতো নেই। অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথ এশিয়ান ন্যাশনসকে (আসিয়ান) এখন অবশ্যই প্রতিটি সুযোগের সর্বোচ্চ ব্যবহারের বিষয়ে জান্তাকে বোঝাতে হবে। জান্তাকে ২০২১ সালে স্বাক্ষরিত ‘পাঁচ দফা ঐকমত্যে’ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করতে হবে। কারণ, আসিয়ান এখানে বিদ্রোহী ও জান্তার মধ্যে আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতাকারী হিসেবে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখতে পারে, পশ্চিমারাও এতে সমর্থন দেবে।
আলোচনার মাধ্যমে শান্তি ফিরিয়ে আনতে এখানে চীনের ভূমিকা এখনো অস্পষ্ট। ইউনিভার্সিটি অব হংকংয়ের অধ্যাপক এনজে হান দেখছেন, মিয়ানমার নিয়ে খেলায় চীন কৌশল পরিবর্তন করছে। জান্তাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখলেও দৃশ্যত বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোকে সমর্থন দিচ্ছে। চীন শুরু থেকেই এনইউজি সম্পর্কে সতর্ক ছিল; কারণ, বেইজিং তাদের পশ্চিমের দোসর বলে মনে করে। তবে শাসনক্ষমতা যদি জান্তার হাতেই থাকে, সেই সময়ে চীনের ভূমিকা কেমন হবে, তা এখনো দেখার বাকি।
ইউক্রেন এবং মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে এখন পশ্চিমারা ব্যস্ত। মিয়ানমার তাদের কূটনৈতিক অগ্রাধিকারে নেই। এই সংঘাত সমাধানের দায় এখন আসিয়ানের কাঁধেই, তা না পারলে এই অঞ্চলে আঞ্চলিক জোটটির কার্যকারিতা ও প্রভাব প্রশ্নের মুখে পড়বে। তাই মিয়ানমারের বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া আসিয়ানের জন্য কূটনৈতিক বাধ্যবাধকতায় পরিণত হয়েছে।
তথ্যসূত্র: ইস্ট এশিয়া ফোরাম
মিয়ানমারে ২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করে সামরিক বাহিনী। এরপর থেকেই দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠী ও জান্তা বাহিনীর মধ্যে চলছে সংঘাত। গত তিন বছরে গৃহযুদ্ধ মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে দেশটির অর্থনীতি ও সমাজব্যবস্থায়। এরই মধ্যে দেশের বহু এলাকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে জান্তা সরকার। ক্রমেই বিদ্রোহী জোট শক্তিশালী হয়ে উঠছে। বিদ্রোহীদের প্রতিরোধের মুখে মিয়ানমারের প্রায় ১০০ সীমান্তরক্ষী বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। সীমান্ত এলাকায় চলছে তীব্র গোলাগুলি। অনেকে বলছেন, মিয়ানমারের জান্তা সরকারের পতন আসন্ন। কিন্তু সার্বিক পরিস্থিতি এতটাই জটিল হয়ে উঠেছে যে মিয়ানমারের ভবিষ্যৎ এখনো ঝাপসা—এমনটিই মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকেরা।
২০২৩ সালে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে ঐক্য হলে যুদ্ধ গতি পায়। জান্তা বাহিনীর স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কাউন্সিল (এসএসি) বিভিন্ন এলাকায় ধারাবাহিক পরাজয়ের স্বাদ পেতে থাকে। এতে জান্তা বাহিনী বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সেনাবাহিনীর মধ্যে শৃঙ্খলা এবং মনোবল ভেঙে পড়েছে, অভিজাত বিভাগগুলোর মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য বিনষ্ট হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব তাসমানিয়ার সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অধ্যাপক নিকোলাস ফ্যারেলি চলতি সপ্তাহে এক নিবন্ধে লেখেন, নেপিডোর জেনারেলরা এখন প্রচণ্ড চাপের মধ্যে রয়েছেন। যুদ্ধক্ষেত্র দ্রুত বদলে যাচ্ছে এবং মিয়ানমার আন্তর্জাতিকভাবে স্বাভাবিকের চেয়ে আরও বেশি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এরপর কী ঘটবে, তা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে।
এই প্রশ্নগুলোর মধ্যে একটি হলো সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত জাতীয় ঐক্য সরকারের (এনইউজি) বেসামরিক রাজনীতিবিদ এবং জান্তাবিরোধী বিভিন্ন জাতিগত বিদ্রোহী যোদ্ধাদের সমন্বয়ে কী ধরনের রাজনৈতিক ঐকমত্যে পৌঁছানো যেতে পারে।
ফ্যারেলি বলেছেন, ‘যদি সামরিক শাসন শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়—অর্থাৎ সেনা সরকারের পিঠ দেয়ালে ঠেকে যায়—এরপরও মিয়ানমারের জনগণের লড়াই জারি থাকবে, যা প্রায়শই জাতিগত, ধর্মীয় এবং আদর্শ দ্বারা চালিত।
অভ্যুত্থানের তৃতীয় বার্ষিকীর প্রাক্কালে এনইউজি প্রধান জাতিগত সশস্ত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে একটি যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করেছে। বিবৃতিতে এনইউজি ২০০৮ সালে সামরিক সরকার রচিত সংবিধানের অধীন সীমাবদ্ধ গণতন্ত্রকে প্রত্যাখ্যান করেছে। পরিবর্তে একটি সত্যিকারের গণতান্ত্রিক ফেডারেল রাষ্ট্রের আহ্বান জানিয়েছে, যেখানে সামরিক বাহিনীর কোনো ভেটো ক্ষমতা এবং রাজনীতিতে তাদের কোনো ভূমিকা থাকবে না।
ঐক্যবদ্ধ বৃহৎ রাজনৈতিক সংস্কারের প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও ফ্যারেলি সতর্ক করেছেন, সংঘাত থেমে গেলেই দীর্ঘদিন ধরে লড়াই করা বহু বিদ্রোহী গোষ্ঠীর মধ্যে ক্ষমতা এবং সম্পদের সুষম বণ্টন নিয়ে দ্বন্দ্ব দেখা দিতে পারে। তারা কর্তৃত্বের ক্ষেত্র তৈরি, নিজেদের সরকার গঠন এবং দেশের বিশাল সম্পদের একটি অংশের নিয়ন্ত্রণ পেতে আগ্রহী।
তবে সেই ক্ষণ আসতে এখনো অনেক রক্তপাত বাকি! ঐক্যবদ্ধ বিদ্রোহী বাহিনী জান্তাদের আরও ঘায়েল করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, যাতে জান্তা সরকার এনইউজি এবং এর মিত্রদের সঙ্গে সংলাপে বসতে বাধ্য হয়। সংলাপে ব্যর্থ হলে সামরিক লড়াই চালিয়ে যাবে বিদ্রোহীরা। একের পর এক বিভিন্ন প্রদেশ ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান দখলে নেওয়ার নৃশংস লড়াই চলবে—যেখানে শেষমেশ নেপিডোর পতন ঘটবে।
ফ্যারেলি লিখেছেন, সামরিক নেতৃত্বকে ক্ষমতার অংশীদার করে সমঝোতার কল্পনা করা এখন কঠিন। কেননা পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে বিদ্রোহীরা নেপিডোর নিয়ন্ত্রণ নিতে পারলে জান্তাদের মুখে চুনকালি মেখে নির্বাসনে যেতে হবে।
মিয়ানমারের জান্তা বাহিনী (তাতমাদো) এখন বেসামরিক মানুষ ও বাড়িঘরে ইচ্ছাকৃতভাবে আক্রমণ করছে, যাতে গোষ্ঠীগুলোকে আত্মসমর্পণে বাধ্য করা যায়। জান্তার উচ্ছেদ ঘটলে জবাবদিহি এবং নৃশংসতার প্রশ্নগুলো বড় হয়ে উঠবে—যেখানে সংঘর্ষ-পরবর্তী সামরিক বাহিনীর সঙ্গে বেসরকারি সরকারের প্রাতিষ্ঠানিক সমন্বয় যা-ই হোক না কেন, সেনা কর্মকর্তারা সেখানেও শক্তিশালী রাজনৈতিক নেতা হয়ে উঠতে পারেন। সেই পরিস্থিতিতে ক্ষমতার শূন্যতা এবং গৃহযুদ্ধজর্জরিত মিয়ানমারের ব্যর্থ রাষ্ট্রে পর্যবসিত হওয়া ঠেকাতে কঠিন রাজনৈতিক সমঝোতা করতে হবে।
জান্তার উত্তরসূরি সরকারের একটি মৌলিক প্রাতিষ্ঠানিক সমন্বয় থাকবে ধরে নিলে মিয়ানমারকে আবার সুস্থ রাজনীতির ধারায় ফেরাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে দেশটিকে অনেক কাজ করতে হবে। কোভিড মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত জনগণকে এই সংঘাত শুধু অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত করেনি, এটি সামাজিক কাঠামোও ভেঙে দিয়েছে। এ সময়ে দেশটির ‘স্টেট ল রেস্টোরেশন কাউন্সিল’ যুগের নজরদারি, অবহিতকরণ, নির্বিচার আটক এবং নির্যাতন জান্তাদের মাধ্যমেই চলেছে।
মিয়ানমারের গৃহযুদ্ধ এখন আর আগের মতো নেই। অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথ এশিয়ান ন্যাশনসকে (আসিয়ান) এখন অবশ্যই প্রতিটি সুযোগের সর্বোচ্চ ব্যবহারের বিষয়ে জান্তাকে বোঝাতে হবে। জান্তাকে ২০২১ সালে স্বাক্ষরিত ‘পাঁচ দফা ঐকমত্যে’ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করতে হবে। কারণ, আসিয়ান এখানে বিদ্রোহী ও জান্তার মধ্যে আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতাকারী হিসেবে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখতে পারে, পশ্চিমারাও এতে সমর্থন দেবে।
আলোচনার মাধ্যমে শান্তি ফিরিয়ে আনতে এখানে চীনের ভূমিকা এখনো অস্পষ্ট। ইউনিভার্সিটি অব হংকংয়ের অধ্যাপক এনজে হান দেখছেন, মিয়ানমার নিয়ে খেলায় চীন কৌশল পরিবর্তন করছে। জান্তাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখলেও দৃশ্যত বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোকে সমর্থন দিচ্ছে। চীন শুরু থেকেই এনইউজি সম্পর্কে সতর্ক ছিল; কারণ, বেইজিং তাদের পশ্চিমের দোসর বলে মনে করে। তবে শাসনক্ষমতা যদি জান্তার হাতেই থাকে, সেই সময়ে চীনের ভূমিকা কেমন হবে, তা এখনো দেখার বাকি।
ইউক্রেন এবং মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে এখন পশ্চিমারা ব্যস্ত। মিয়ানমার তাদের কূটনৈতিক অগ্রাধিকারে নেই। এই সংঘাত সমাধানের দায় এখন আসিয়ানের কাঁধেই, তা না পারলে এই অঞ্চলে আঞ্চলিক জোটটির কার্যকারিতা ও প্রভাব প্রশ্নের মুখে পড়বে। তাই মিয়ানমারের বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া আসিয়ানের জন্য কূটনৈতিক বাধ্যবাধকতায় পরিণত হয়েছে।
তথ্যসূত্র: ইস্ট এশিয়া ফোরাম
একটা সময় ইসরায়েলের ছোট ও সুসংহত সমাজকে বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার কাছে প্রায় অপ্রতিরোধ্য বলে বিবেচনা করা হতো। কিন্তু এখন বিষয়টি কার্যত বদলে গেছে। বর্তমান সংঘাত, ইসরায়েলে উগ্র ডানপন্থার উত্থান এবং নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে ২০২৩ সালের বিচার বিভাগ সংস্কারের মতো বিষয়গুলো দেশটির সমাজে বিদ্যমান সূক্ষ্ম বিভাজনগুলো
৫ ঘণ্টা আগেট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের রূপ এবং যুদ্ধ ও বাণিজ্য সম্পর্কের পরিবর্তন নিয়ে বিশ্লেষণ। চীন, রাশিয়া ও ইউরোপের সাথে নতুন কৌশল এবং মার্কিন আধিপত্যের ভবিষ্যৎ।
২ দিন আগেকোভিড-১৯ মহামারির পর সোশ্যাল মিডিয়া ফাস্ট ফ্যাশন শিল্পকে ভঙ্গুর করে তুলেছে। জায়গা করে নিচ্ছে ভয়াবহ মানবাধিকার সংকট সৃস্টিকারী ‘আলট্রা-ফাস্ট ফ্যাশন’। সেই শিল্পে তৈরি মানুষেরই ‘রক্তে’ রঞ্জিত পোশাক সোশ্যাল মিডিয়ায় স্ক্রল করে কিনছে অনবরত। আর রক্তের বেসাতি থেকে মালিক শ্রেণি মুনাফা কামিয়েই যাচ্ছে।
৪ দিন আগেনবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন ডিপার্টমেন্ট অব গর্ভমেন্ট এফিসিয়েন্সি বা সরকারি কার্যকারী বিভাগ পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছেন ধনকুবের ইলন মাস্ক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক বিবৃতিতে ট্রাম্প জানিয়েছেন, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূরীকরণ, অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমানো ও বিভিন্ন সরকারি সংস্থা পুনর্গ
৮ দিন আগে