Ajker Patrika

নলকূপ থেকে ওঠা গ্যাসে ৪ মাস ধরে জ্বলছে চুলা

  • গভীর নলকূপ স্থাপন করতে গিয়ে গ্যাসের সন্ধান মেলে।
  • গ্যাসের মজুতের বিষয়ে বাপেক্সকে জানানো হয়েছে–বলছে প্রশাসন।
মিজানুর রহমান রিয়াদ, নোয়াখালী
নোয়াখালীর আন্ডারচর ইউনিয়নে নলকূপ থেকে ওঠা গ্যাসে জ্বলছে চুলা। ছবিটি সম্প্রতি তোলা। আজকের পত্রিকা
নোয়াখালীর আন্ডারচর ইউনিয়নে নলকূপ থেকে ওঠা গ্যাসে জ্বলছে চুলা। ছবিটি সম্প্রতি তোলা। আজকের পত্রিকা

সুপেয় পানির জন্য গভীর নলকূপ (টিউবওয়েল) স্থাপন করতে গিয়ে গ্যাসের সন্ধান মিলেছে নোয়াখালীর সদর উপজেলার আন্ডারচর ইউনিয়নের বাসিন্দা ফারুক হোসেনের বাড়িতে। সাধারণত ভূগর্ভ থেকে ৫ থেকে ১০ দিন গ্যাস ওঠার পর বন্ধ হয়ে যায়। তবে এই স্থান থেকে এক বছর ধরে অনবরত গ্যাস উঠেই চলছে।

কৌতূহলবশত চার মাস আগে গ্যাস বের হওয়ার মুখটিতে একটি চুলা বসিয়ে রান্নাবান্নার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে ফারুকের পরিবার। বিষয়টি দেখতে প্রতিদিন তাঁর বাড়িতে আশপাশের এলাকার লোকজন ভিড় জমাচ্ছেন।

সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে বাড়ির মালিক ফারুকের সঙ্গে এই প্রতিনিধির কথা হয়। ফারুক জানান, আন্ডারচর ইউনিয়নের বানিয়াগো সমাজ এলাকার নিজ বাড়িতে সুপেয় পানির সংকট ছিল। ২০২৩ সালের দিকে ৮ হাজার টাকা খরচ করে একটি টিউবওয়েল বসান। কিন্তু লবণাক্ততার কারণে সেই নলকূপের পানি ব্যবহার করতে পারেনি ফারুকের পরিবার। পরে গত বছরের চৈত্র মাসের দিকে ১৮ হাজার টাকা খরচ করে ১৬৫ ফুট গভীর একটি নলকূপ বসানোর কাজ শুরু করেন ফারুক। পাইপ ১৬০ ফুট গভীরে যাওয়ার পর নিচ থেকে পাইপটি ওপরের দিকে উঠে আসে। কয়েকবার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন শ্রমিকেরা। পরে গ্যাসের গন্ধ নাকে আসার পর সেটির পাশে দেশলাই ধরলে তাতে আগুন ধরে যায়।

ফারুক বলেন, প্রথম দিকে বিষয়টি সবাই স্বাভাবিক এবং কয়েক দিন পর গ্যাস ওঠা বন্ধ হয়ে যাবে বলে ধারণা করা হলেও দীর্ঘ এক বছরে গ্যাস ওঠা বন্ধ হয়নি।

ফারুক হোসেন বলেন, ‘চার মাস আগে আমার বাড়িতে একটি পারিবারিক অনুষ্ঠান ছিল। কৌতূহলবশত আমার ছেলের কয়েকজন বন্ধু গ্যাস ওঠার স্থানটিতে ইট দিয়ে চুলার মতো বানিয়ে সেখানে আগুন জ্বালিয়ে দেন এবং তাঁরা চা তৈরি করেন। পরে পরিবারের সদস্যদের আবদার রাখতে গিয়ে গ্যাস ওঠার মুখটিতে চুলা বসাই। এর পর থেকে প্রতিদিন বাড়ির সব রান্নাবান্নার কাজ এ চুলাতে করা হচ্ছে। প্রয়োজন হলে তাতে গ্যাসলাইট দিয়ে আগুন ধরাই, আবার রান্না শেষে ভেজা কাপড় দিয়ে আগুন নিভিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়।’

ফারুক হোসেন আরও বলেন, ‘ধারণা করছি এখানে গ্যাসের কোনো খনি রয়েছে। এই গ্যাস যদি দেশের কাজে লাগে, তাহলে এ বিষয়ে প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিলে আমার আপত্তি নেই।’

নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ বলেন, ‘বিষয়টি বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেডসহ (বাপেক্স) সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের গবেষক দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত