লামায় ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের ১৭ বসতঘরে আগুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার ৪

বান্দরবান প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৬: ২৬
ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের ১৭ বসতঘরে আগুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার চার আসামি। ছবি: আজকের পত্রিকা

বান্দরবানের লামা উপজেলার টংগঝিরি পাড়ায় বড়দিন উপলক্ষে গির্জায় প্রার্থনা করতে গেলে দুর্বৃত্তের আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায় ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের ১৭ বসতঘর। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গতকাল বুধবার বিকেলে গঙ্গাং মনি ত্রিপুরা নামের একজন ব্যক্তি লামা থানায় ৭ জনের নামে ও অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। গতকাল রাতেই পুলিশ লামার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে মামলার চার আসামিকে গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নের পূর্ব বেতছড়া পাড়ার বাসিন্দা স্টিফেন ত্রিপুরা (৫০), মইশৈ ম্যা ত্রিপুরা (৪৮), টংগঝিরি পাড়ায় বাসিন্দা জোয়াতিং ত্রিপুরা (৫২) ও টংগঝিরি পাড়ায় বাসিন্দা মো. ইব্রাহিম (৬৫)।

গ্রেপ্তারের বিষয় আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেন বান্দরবানের লামা থানা-পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) মো. এনামুল হক। তিনি বলেন, গ্রেপ্তার চার আসামিকে আদালতে পাঠানোর প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

বান্দরবানের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হোছাইন মোহাম্মদ রায়হান কাজেমী বলেন, লামার ঘটনায় জড়িত অন্যদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে। ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের কয়েক পরিবার নতুনভাবে বসতি করে ওই এলাকায় বসবাস শুরু করায় তাঁদের মধ্যে দ্বন্দ্বে এই ঘটনা হয়েছে বলে ধারণা করছি।

এদিকে, আজ বৃহস্পতিবার সকালে বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ কাউছার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

গত তিন মাস আগে লামা উপজেলা ও পাশের আলীকদম উপজেলা থেকে ১৯টি ত্রিপুরা পরিবার উপজেলার সরই ইউনিয়নের পূর্ব বেতছড়া পাড়ায় বসতি শুরু করেন। বড়দিন উপলক্ষে গত মঙ্গলবার রাত ১টার দিকে এসব পরিবারের লোকজন পাশের টংগঝিরি পাড়ার গির্জায় প্রার্থনা করতে যান, এ সময় তাঁদের কাঁচাঘরগুলোতে আগুন লাগিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। এতে ১৭টি ঘর সম্পূর্ণ পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এদিকে এই ঘটনার পর ওই এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

পূর্ব বেতছড়া পাড়ার বাসিন্দা গুংগা মনি ত্রিপুরা বলেন, স্টিফেন ত্রিপুরাসহ বেশ কয়েকজনের সন্ত্রাসী গ্রুপ অনেক দিন ধরে অস্ত্রের ভয়ভীতি দেখিয়ে মোটা অঙ্কের অর্থ দাবি করেন। অর্থ না দিলে পাড়াবাসীকে হুমকিও দেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে আমরা হুমকি দাতাদের বিরুদ্ধে লামা থানায় মামলা করি।

পার্বত্য উপদেষ্টার নিন্দা

বান্দরবানের লামায় ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের ঘর-বাড়িতে অগ্নিসংযোগকারীদের ছাড় দেওয়া হবে না বলে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা। তিনি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, বান্দরবান গোয়েন্দা সংস্থা ইঙ্গিত দিয়েছে, পলাতক সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের সন্দেহভাজন গুন্ডা জায়গা দখলের নামে এই জঘন্য হামলা চালিয়েছে। বান্দরবান জেলা কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যেই আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘর পুনর্নির্মাণের জন্য সব ধরনের সহায়তা হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকেও এ সংক্রান্ত আরও সহায়তা দেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত