গাজীপুর প্রতিনিধি
রাজধানী লাগোয়া শিল্প নগরী গাজীপুরকে দ্বিতীয় গোপালগঞ্জ ও আওয়ামী লীগের ঘাঁটি মনে করা হয়। মহান মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে এ দেশের গণমানুষের অধিকার আদায়ের লড়াই সংগ্রাম এবং উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় আওয়ামী লীগের রয়েছে সুদীর্ঘ ইতিহাস। দলটির ইতিহাসের অংশীদার আওয়ামী লীগের প্রয়াত অনেক নেতার মধ্যে গাজীপুরে রয়েছেন চারজন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের পাঁচটি সংসদীয় আসনের মধ্যে চারটিতেই আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনী লড়াইয়ে নেমেছেন বাবাদের আদর্শের অনুসারী তিন কন্যা ও এক ছেলে। তাঁরা বাবার আদর্শ বাস্তবায়ন এবং উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে নৌকা মার্কায় ভোট প্রার্থনা করে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
অপরদিকে জেলার পাঁচটি আসনের মধ্যে তিনটিতেই নারী প্রার্থী পেয়ে ভোটারদের মধ্যে রয়েছে আলাদা উৎসাহ।
এবারের নির্বাচনে বাবার উত্তরসূরি হিসাবে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীরা হলেন—গাজীপুর-৩ আসনে রোমানা আলি টুসি, গাজীপুর-৪ আসনে সিমিন হোসেন রিমি, গাজীপুর-৫ আসনে মেহের আফরোজ চুমকি ও গাজীপুর-২ আসনে মো. জাহিদ হাসান রাসেল।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আসনগুলো বরাবরই আওয়ামী লীগের দখলে রয়েছে। এ চার উত্তরসূরির মধ্যে তিনজন সরাসরি ভোটে নির্বাচিত এবং একজন সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। এবার নির্বাচনে বিরোধী দল না থাকলেও আসনগুলোতে এসব প্রার্থীরা দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্রবল বিরোধিতার মুখে পড়েছেন। এসব কারণে আসনগুলোতে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা জমে উঠেছে। ভোটারদের মধ্যেও সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা।
গাজীপুর-২:
এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন শ্রমিক লীগের কিংবদন্তি নেতা, ভাওয়াল বীর, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টারের উত্তরসূরি মো. জাহিদ আহসান রাসেল। তিনি এ আসনের ৪ বারের সংসদ সদস্য এবং সরকারের যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এবারের নির্বাচনে তাঁর সঙ্গে আরও ৬ জন প্রার্থী থাকলেও মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে স্বতন্ত্র প্রার্থী কাজী আলিম উদ্দিন বুদ্দিনের (ট্রাক) সঙ্গে।
কাজী আলিম উদ্দিন বুদ্দিন গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি। তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। এর আগে গাজীপুর সদর উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে অংশ নিয়ে পরাজিত হয়েছিলেন। তিনি আগে কখনো নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ছিলেন না।
এ আসনটি গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ১৯ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ৩৯ নম্বর ওয়ার্ড (গাজীপুর সদর) ও ৪৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ৫৭ নম্বর ওয়ার্ড (টঙ্গী) এলাকা এবং গাজীপুর ক্যান্টনমেন্ট (গাজীপুর সদর) এলাকা নিয়ে গঠিত। জাহিদ আহসান রাসেলের বাড়ি টঙ্গী। কাজী আলিম উদ্দিন বুদ্দিনের বাড়ি গাজীপুর অংশে। টঙ্গীর ভোট ভাগ না হলে রাসেল জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এখানে কাজী আলিম উদ্দিন বুদ্দিনকে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম সমর্থন দিয়ে ব্যাপক প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন। ফলে এখানে নির্বাচনে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে।
গাজীপুর-৩:
আসনটিতে দীর্ঘদিনে আওয়ামী লীগের তুমুল জনপ্রিয় নেতা ছিলেন প্রয়াত অ্যাডভোকেট রহমত আলী। তিনি আওয়ামী লীগের জনপ্রিয় ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্পের উদ্ভাবক ও স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। পিতার আদর্শের পথ ধরে এ আসনে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন রহমত আলীর কন্যা অধ্যাপক রুমানা আলী টুসি। তিনি বর্তমান সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য।
টুসি কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক। নৌকা পাওয়ার পর সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুলি জলিল, বর্তমান পৌর মেয়র আনিছুর রহমানসহ রহমত আলীর অনুসারী নেতা-কর্মীরা বিপুল উৎসাহে টুসির পক্ষে রয়েছেন।
এখানে আরও প্রার্থী আছেন ৬ জন। তবে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে মুহাম্মদ ইকবাল হোসেন সবুজের (ট্রাক) সঙ্গে। মুহাম্মদ ইকবাল হোসেন সবুজ একাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে এ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি এবার মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী। তিনি গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সম্পাদক ও সাবেক শ্রীপুর উপজেলা চেয়ারম্যান। এখানে বর্তমানে আওয়ামী লীগ ও বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কমিটি তাঁর হাতে গড়া। এ কারণে অধিকাংশ নেতা তার প্রতি বিশ্বস্ত। ফলে এখানে জয়ের লড়াই হবে তীব্র।
রুমানা আলী টুসি বলেন, ‘আমার বাবা স্বাধীনতার পর বহুদিন এ এলাকার মানুষের সেবা করেছেন, জাতীয় রাজনীতিতে বঙ্গবন্ধু ও তার কন্যা শেখ হাসিনার পাশে থেকেছেন। আমি জয়ী হলে পিতার আদর্শ নিয়ে সব সময় মানুষের পাশে থাকব।
গাজীপুর-৪:
কাপাসিয়া আসন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সংগঠক, প্রথম প্রধানমন্ত্রী, বঙ্গতাজ তাজউদ্দীন আহমেদের জন্মভূমি। তাঁর প্রতি কাপাসিয়ার মানুষের রয়েছে গভীর শ্রদ্ধা, মমতা ও ভালোবাসা। এখানে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন তাজউদ্দীন আহমদের উত্তরসূরি সিমিন হোসেন রিমি। রিমি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য। রিমির ছোট ভাই সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ পদত্যাগ করলে ২০১২ সালের উপনির্বাচনে তিনি প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর থেকে তিনি এখানকার সংসদ সদস্য। এবারও দল তার প্রতি আস্থা রেখে নৌকা তুলে দিয়েছে।
এখানে আরও প্রার্থী আছেন ৪ জন। তবে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে তাজউদ্দীন আহমদের ভাগিনা, শিল্পপতি, বাংলাদেশ কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা আলম আহমেদের সঙ্গে। আলম আহমেদ দলীয় মনোনয়ন চেয়ে ব্যর্থ হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন।
আলম আহমেদ বাছাইকালে ঋণ খেলাপির কারণে মনোনয়ন হারান। পরে উচ্চ আদালতের রায় নিয়ে প্রতীক বরাদ্দের একদিন পর নির্বাচনী লড়াইয়ে ফিরে আসেন। আলম আহমেদ প্রতীক নিয়েছেন ঈগল। পরে রিমি নিজে পক্ষভুক্ত হয়ে ফুপাতো ভাইয়ের পক্ষে উচ্চ আদালতের দেওয়া রায় বাতিলের আবেদন করলে গত ২ জানুয়ারি উচ্চ আদালতের ফুল বেঞ্চ রিমির আবেদন না মঞ্জুর করেন। নির্বাচনী প্রচারণায় এটি এখন মূল ইস্যু। এখানে চলছে তাজউদ্দীন আহমদের মেয়ে ও ভাগিনার লড়াই। জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোতাহার হোসেন মোল্লাসহ আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিন ধরে উপেক্ষিত একটি অংশ আলমের পক্ষে।
সিমিন হোসেন রিমি বলেন, ‘আমি আমার বাবা, জাতির পিতা ও আওয়ামী লীগের আদর্শ ধারণ করে রাজনীতি করে যাচ্ছি। আমি নির্বাচিত হওয়ার পর পিছিয়ে পড়া এলাকার উন্নয়নে গতি এনেছি। সঙ্গে মা ও শিশু মৃত্যুর হার কমানো, বাল্য বিয়েমুক্ত এলাকা গড়ে তোলা, সবার জন্য স্বাস্থ্য-শিক্ষার সুযোগ ও মাদকমুক্ত এলাকা গঠনে কাজ করেছি। এবার লক্ষ্য স্মার্ট দেশ গঠনে কাজ করা। এ লক্ষ্যে আমি আবারও নৌকা প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করছি।’
গাজীপুর-৫:
গাজীপুর-৫ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও ঐতিহাসিক আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক ও স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের শহীদ অ্যাড. ময়েজ উদ্দিনের উত্তরসূরি মেহের আফরোজ চুমকি। চুমকি ১৯৯৬ সালে সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য ছিলেন। পরে ২০০৯,২০১৪ এবং ২০১৮ সালে এই আসনে নৌকার প্রার্থী হিসাবে নির্বাচিত হন। তিনি মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেন দুই মেয়াদে। চুমকি এখানকার বর্তমান সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। তিনি বাবার পরিচয়ে রাজনীতিতে এলেও রাজনীতির মাঠে বিশ্বস্ত নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছেন। এখানে আওয়ামী লীগ ও বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সকল কমিটি তার হাতে গড়া। কালীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান ও পৌর মেয়রসহ প্রায় সকল পদধারী নেতা তাঁর প্রতি বিশ্বস্ত। তিনি এলাকায় শান্তি কন্যা হিসাবে পরিচিত।
এখানে আরও প্রার্থী আছেন পাঁচজন। তবে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী আখতারউজ্জামানের (ট্রাক) সঙ্গে। আখতারউজ্জামান এখানকার সাবেক সংসদ সদস্য, গাজীপুর জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান, ডাকসুর সাবেক ভিপি-জিএস। তিনি এখাসকার মানুষের কাছে বেশ প্রিয়। এ কারণে কালীগঞ্জের প্রবীণ নাগরিক, সিনিয়র নেতা-কর্মী যারা বিভিন্ন সময়ে অবহেলিত হয়েছেন, তারা আখতারউজ্জামানের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন।
মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, ‘বাবার দেখানো পথেই রাজনীতির মাঠে বিচরণ করে চলছি। আমৃত্যু আওয়ামী লীগের আদর্শ ধারণ করতে চাই। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে নারীদের সঙ্গে নিয়ে একটি উন্নত সমৃদ্ধ দেশ গঠনে কাজ করতে চাই।’
এ ছাড়া গাজীপুর-৫ আসনটি কালীগঞ্জ উপজেলা, গাজীপুর সিটির ৩টি ওয়ার্ড ও সদর উপজেলার বাড়ীয়া ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এখানে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম আখতারউজ্জামানকে সমর্থন দিয়ে তার পক্ষে ব্যাপক প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন। এ আসনে তাদের উভয়ের প্রচারণায় ব্যাপক জন সমাগম দেখা যায়। এ আসনে বর্তমান ও সাবেক দুই এমপির তীব্র লড়াই হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
রাজধানী লাগোয়া শিল্প নগরী গাজীপুরকে দ্বিতীয় গোপালগঞ্জ ও আওয়ামী লীগের ঘাঁটি মনে করা হয়। মহান মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে এ দেশের গণমানুষের অধিকার আদায়ের লড়াই সংগ্রাম এবং উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় আওয়ামী লীগের রয়েছে সুদীর্ঘ ইতিহাস। দলটির ইতিহাসের অংশীদার আওয়ামী লীগের প্রয়াত অনেক নেতার মধ্যে গাজীপুরে রয়েছেন চারজন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের পাঁচটি সংসদীয় আসনের মধ্যে চারটিতেই আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনী লড়াইয়ে নেমেছেন বাবাদের আদর্শের অনুসারী তিন কন্যা ও এক ছেলে। তাঁরা বাবার আদর্শ বাস্তবায়ন এবং উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে নৌকা মার্কায় ভোট প্রার্থনা করে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
অপরদিকে জেলার পাঁচটি আসনের মধ্যে তিনটিতেই নারী প্রার্থী পেয়ে ভোটারদের মধ্যে রয়েছে আলাদা উৎসাহ।
এবারের নির্বাচনে বাবার উত্তরসূরি হিসাবে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীরা হলেন—গাজীপুর-৩ আসনে রোমানা আলি টুসি, গাজীপুর-৪ আসনে সিমিন হোসেন রিমি, গাজীপুর-৫ আসনে মেহের আফরোজ চুমকি ও গাজীপুর-২ আসনে মো. জাহিদ হাসান রাসেল।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আসনগুলো বরাবরই আওয়ামী লীগের দখলে রয়েছে। এ চার উত্তরসূরির মধ্যে তিনজন সরাসরি ভোটে নির্বাচিত এবং একজন সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। এবার নির্বাচনে বিরোধী দল না থাকলেও আসনগুলোতে এসব প্রার্থীরা দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্রবল বিরোধিতার মুখে পড়েছেন। এসব কারণে আসনগুলোতে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা জমে উঠেছে। ভোটারদের মধ্যেও সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা।
গাজীপুর-২:
এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন শ্রমিক লীগের কিংবদন্তি নেতা, ভাওয়াল বীর, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টারের উত্তরসূরি মো. জাহিদ আহসান রাসেল। তিনি এ আসনের ৪ বারের সংসদ সদস্য এবং সরকারের যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এবারের নির্বাচনে তাঁর সঙ্গে আরও ৬ জন প্রার্থী থাকলেও মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে স্বতন্ত্র প্রার্থী কাজী আলিম উদ্দিন বুদ্দিনের (ট্রাক) সঙ্গে।
কাজী আলিম উদ্দিন বুদ্দিন গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি। তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। এর আগে গাজীপুর সদর উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে অংশ নিয়ে পরাজিত হয়েছিলেন। তিনি আগে কখনো নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ছিলেন না।
এ আসনটি গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ১৯ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ৩৯ নম্বর ওয়ার্ড (গাজীপুর সদর) ও ৪৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ৫৭ নম্বর ওয়ার্ড (টঙ্গী) এলাকা এবং গাজীপুর ক্যান্টনমেন্ট (গাজীপুর সদর) এলাকা নিয়ে গঠিত। জাহিদ আহসান রাসেলের বাড়ি টঙ্গী। কাজী আলিম উদ্দিন বুদ্দিনের বাড়ি গাজীপুর অংশে। টঙ্গীর ভোট ভাগ না হলে রাসেল জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এখানে কাজী আলিম উদ্দিন বুদ্দিনকে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম সমর্থন দিয়ে ব্যাপক প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন। ফলে এখানে নির্বাচনে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে।
গাজীপুর-৩:
আসনটিতে দীর্ঘদিনে আওয়ামী লীগের তুমুল জনপ্রিয় নেতা ছিলেন প্রয়াত অ্যাডভোকেট রহমত আলী। তিনি আওয়ামী লীগের জনপ্রিয় ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্পের উদ্ভাবক ও স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। পিতার আদর্শের পথ ধরে এ আসনে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন রহমত আলীর কন্যা অধ্যাপক রুমানা আলী টুসি। তিনি বর্তমান সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য।
টুসি কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক। নৌকা পাওয়ার পর সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুলি জলিল, বর্তমান পৌর মেয়র আনিছুর রহমানসহ রহমত আলীর অনুসারী নেতা-কর্মীরা বিপুল উৎসাহে টুসির পক্ষে রয়েছেন।
এখানে আরও প্রার্থী আছেন ৬ জন। তবে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে মুহাম্মদ ইকবাল হোসেন সবুজের (ট্রাক) সঙ্গে। মুহাম্মদ ইকবাল হোসেন সবুজ একাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে এ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি এবার মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী। তিনি গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সম্পাদক ও সাবেক শ্রীপুর উপজেলা চেয়ারম্যান। এখানে বর্তমানে আওয়ামী লীগ ও বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কমিটি তাঁর হাতে গড়া। এ কারণে অধিকাংশ নেতা তার প্রতি বিশ্বস্ত। ফলে এখানে জয়ের লড়াই হবে তীব্র।
রুমানা আলী টুসি বলেন, ‘আমার বাবা স্বাধীনতার পর বহুদিন এ এলাকার মানুষের সেবা করেছেন, জাতীয় রাজনীতিতে বঙ্গবন্ধু ও তার কন্যা শেখ হাসিনার পাশে থেকেছেন। আমি জয়ী হলে পিতার আদর্শ নিয়ে সব সময় মানুষের পাশে থাকব।
গাজীপুর-৪:
কাপাসিয়া আসন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সংগঠক, প্রথম প্রধানমন্ত্রী, বঙ্গতাজ তাজউদ্দীন আহমেদের জন্মভূমি। তাঁর প্রতি কাপাসিয়ার মানুষের রয়েছে গভীর শ্রদ্ধা, মমতা ও ভালোবাসা। এখানে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন তাজউদ্দীন আহমদের উত্তরসূরি সিমিন হোসেন রিমি। রিমি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য। রিমির ছোট ভাই সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ পদত্যাগ করলে ২০১২ সালের উপনির্বাচনে তিনি প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর থেকে তিনি এখানকার সংসদ সদস্য। এবারও দল তার প্রতি আস্থা রেখে নৌকা তুলে দিয়েছে।
এখানে আরও প্রার্থী আছেন ৪ জন। তবে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে তাজউদ্দীন আহমদের ভাগিনা, শিল্পপতি, বাংলাদেশ কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা আলম আহমেদের সঙ্গে। আলম আহমেদ দলীয় মনোনয়ন চেয়ে ব্যর্থ হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন।
আলম আহমেদ বাছাইকালে ঋণ খেলাপির কারণে মনোনয়ন হারান। পরে উচ্চ আদালতের রায় নিয়ে প্রতীক বরাদ্দের একদিন পর নির্বাচনী লড়াইয়ে ফিরে আসেন। আলম আহমেদ প্রতীক নিয়েছেন ঈগল। পরে রিমি নিজে পক্ষভুক্ত হয়ে ফুপাতো ভাইয়ের পক্ষে উচ্চ আদালতের দেওয়া রায় বাতিলের আবেদন করলে গত ২ জানুয়ারি উচ্চ আদালতের ফুল বেঞ্চ রিমির আবেদন না মঞ্জুর করেন। নির্বাচনী প্রচারণায় এটি এখন মূল ইস্যু। এখানে চলছে তাজউদ্দীন আহমদের মেয়ে ও ভাগিনার লড়াই। জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোতাহার হোসেন মোল্লাসহ আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিন ধরে উপেক্ষিত একটি অংশ আলমের পক্ষে।
সিমিন হোসেন রিমি বলেন, ‘আমি আমার বাবা, জাতির পিতা ও আওয়ামী লীগের আদর্শ ধারণ করে রাজনীতি করে যাচ্ছি। আমি নির্বাচিত হওয়ার পর পিছিয়ে পড়া এলাকার উন্নয়নে গতি এনেছি। সঙ্গে মা ও শিশু মৃত্যুর হার কমানো, বাল্য বিয়েমুক্ত এলাকা গড়ে তোলা, সবার জন্য স্বাস্থ্য-শিক্ষার সুযোগ ও মাদকমুক্ত এলাকা গঠনে কাজ করেছি। এবার লক্ষ্য স্মার্ট দেশ গঠনে কাজ করা। এ লক্ষ্যে আমি আবারও নৌকা প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করছি।’
গাজীপুর-৫:
গাজীপুর-৫ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও ঐতিহাসিক আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক ও স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের শহীদ অ্যাড. ময়েজ উদ্দিনের উত্তরসূরি মেহের আফরোজ চুমকি। চুমকি ১৯৯৬ সালে সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য ছিলেন। পরে ২০০৯,২০১৪ এবং ২০১৮ সালে এই আসনে নৌকার প্রার্থী হিসাবে নির্বাচিত হন। তিনি মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেন দুই মেয়াদে। চুমকি এখানকার বর্তমান সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। তিনি বাবার পরিচয়ে রাজনীতিতে এলেও রাজনীতির মাঠে বিশ্বস্ত নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছেন। এখানে আওয়ামী লীগ ও বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সকল কমিটি তার হাতে গড়া। কালীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান ও পৌর মেয়রসহ প্রায় সকল পদধারী নেতা তাঁর প্রতি বিশ্বস্ত। তিনি এলাকায় শান্তি কন্যা হিসাবে পরিচিত।
এখানে আরও প্রার্থী আছেন পাঁচজন। তবে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী আখতারউজ্জামানের (ট্রাক) সঙ্গে। আখতারউজ্জামান এখানকার সাবেক সংসদ সদস্য, গাজীপুর জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান, ডাকসুর সাবেক ভিপি-জিএস। তিনি এখাসকার মানুষের কাছে বেশ প্রিয়। এ কারণে কালীগঞ্জের প্রবীণ নাগরিক, সিনিয়র নেতা-কর্মী যারা বিভিন্ন সময়ে অবহেলিত হয়েছেন, তারা আখতারউজ্জামানের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন।
মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, ‘বাবার দেখানো পথেই রাজনীতির মাঠে বিচরণ করে চলছি। আমৃত্যু আওয়ামী লীগের আদর্শ ধারণ করতে চাই। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে নারীদের সঙ্গে নিয়ে একটি উন্নত সমৃদ্ধ দেশ গঠনে কাজ করতে চাই।’
এ ছাড়া গাজীপুর-৫ আসনটি কালীগঞ্জ উপজেলা, গাজীপুর সিটির ৩টি ওয়ার্ড ও সদর উপজেলার বাড়ীয়া ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এখানে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম আখতারউজ্জামানকে সমর্থন দিয়ে তার পক্ষে ব্যাপক প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন। এ আসনে তাদের উভয়ের প্রচারণায় ব্যাপক জন সমাগম দেখা যায়। এ আসনে বর্তমান ও সাবেক দুই এমপির তীব্র লড়াই হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পবিপ্রবি) তিন শিক্ষার্থী র্যাগিংয়ের শিকার হয়ে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। গতকাল শনিবার (২৩ নভেম্বর) দিবাগত রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের এম. কেরামত আলী হলে এ ঘটনা ঘটে। পরে অসুস্থ শিক্ষার্থীদের উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে
১ মিনিট আগেসিরাজগঞ্জের কাজীপুরে আব্দুল বাসেদ হত্যা মামলায় একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আজ রোববার জেলার অতিরিক্ত দায়রা জজ (২য় আদালত) কানিজ ফাতিমা এই রায় ঘোষণা করেন।
৪ মিনিট আগে৬৩ লাখ টাকার ভারতীয় বিভিন্ন প্রকার চোরাচালান পণ্য জব্দ করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। পৃথক ঘটনায় অবৈধভাবে ভারত থেকে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকারী ২ জনকে আটক করেছে।
৭ মিনিট আগেচট্টগ্রামে মাদ্রাসাশিক্ষার্থীকে (১১) ধর্ষণের ঘটনায় করা মামলায় প্রতিষ্ঠানটির বাবুর্চিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ রোববার চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭-এর বিচারক বেগম ফেরদৌস আরা আসামির উপস্থিতিতে এ রায় দেন। তা ছাড়া আসামিকে ১ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদ
১০ মিনিট আগে