সমতল ভূমিতে কফি চাষে সফল নরসিংদীর সালাহউদ্দিন

হারুনূর রশিদ (রায়পুরা) নরসিংদী
প্রকাশ : ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৬: ৫৫

বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় পানিয় কফি। সাধারণত পাহাড়ি অঞ্চল ও দেশের বাইরে কফি চাষ হয়ে থাকে। তবে সমতল ভূমিতে কফি চাষ বিষয়টি তাক লাগার মতো। ভূমিতে শখের বশে প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলক কফি চাষ করেছেন নরসিংদীর বেলাব উপজেলার বাসিন্দা মো. সালাহ্ উদ্দিন মোল্লা। 

সালাহ্ উদ্দিন উপজেলার সররাবাদ ইউনিয়নের নিলক্ষীয়া গ্রামের হানিফ মোল্লার ছেলে। তিনি পেশায় একজন ব্যবসায়ী। জেলায় একমাত্র তিনিই সমতল ভূমিতে কফি চাষে সফল হয়েছেন। প্রতিনিয়ত তাঁর কফি বাগান দেখতে ও কফি পানের ছবি তুলতে দূর-দুরন্ত থেকে আসছেন দর্শনার্থীরা। 
 
নিলক্ষীয়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, বিস্তীর্ণ মাঠে সবজিসহ নানান ফসল চাষাবাদ করা হয়েছে। রাস্তার পাশে বাগান দেখতে দর্শনার্থীদের ভিড়। বাগানে কফি গাছের সবুজ পাতায় ছেয়ে গেছে। ডালে ডালে ঝুলে রয়েছে কাচা-পাকা রঙিন কফি বীজ। সালাহ্ উদ্দিন গাছ থেকে পরিপক্ব কফি বীজ ওঠাচ্ছেন। বীজ রোদে শুকিয়ে নিজ হাতে পাউডার করে কফি বানিয়ে বাগানে আগতদের খাওয়াচ্ছেন। 

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় ২০২১-২২ অর্থ বছরে সার কীটনাশকসহ ১৩৫টি কফি চারা নিয়ে শখের বশে চাষ শুরু করেন। 

দেশের মাটিতে কফি চাষে সফলতার মুখ দেখছেন অনেকে। দেশে কফির চাহিদা প্রায় ২ হাজার টন। গত এক দশকে গড়ে কফির চাহিদার প্রবৃদ্ধি প্রায় ৫৬ শতাংশ। বছরে প্রায় ৬০০ কোটি টাকার কফি দেশের অভ্যন্তরে বিক্রি হয়। ভোক্তা পর্যায়ে গত ৫ বছরে এ দুটি পণ্যের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। 

দর্শনার্থী আলমগীর পাঠান বলেন, ‘আমরা নিয়মিত কফি খাই, কীভাবে চাষ হয় তা নিজ চোখে দেখে ও খেয়ে খুবই ভালো লাগছে। জেলার মধ্যে কফি চাষে সফলতায় আনন্দিত। বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন করে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেবে। তাকে দেখে অনেকে চাষে উৎসাহী হচ্ছে।’ 

স্থানীয় বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘এ অঞ্চল সবজি খ্যাত তার পরও শখের বশে সালাহউদ্দিন বাগান করে সফলতার মুখ দেখছেন। তার এমন সফলতায় গর্বিত। বাগানটি দেখতে খুবই সুন্দর। এটা দেখতে প্রতিনিয়ত দূর-দুরন্ত থেকে আসা লোকজন ভিড় জমায়।’ 

সালাহউদ্দিন মোল্লা বলেন, ‘উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগিতায় ২০২১-২২ অর্থ বছরে ১৩৫টি কফি চারা নিয়ে শখের বশে চাষ শুরু করি। এক বছর পর চলতি মৌসুমে ১২০টি গাছে ভালো ফলন আসে। পরিপক্ব কফি গাছ থেকে কফি উঠিয়ে ভালো করে রোদে শুকিয়ে বীজগুলো আলাদা করে পাউডার গুঁড়ো করে খাবার উপযোগী করতে হয়। গুঁড়ো করা খুব কষ্টকর সরকারি সহযোগিতায় একটি মেশিন পেলে ভালো হতো। ইতিমধ্যে বিভিন্ন মিডিয়ায় সংবাদ দেখে দেশ বিদেশসহ বিভিন্ন কোম্পানি থেকে অনেকে কেনার আগ্রহের কথা জানিয়েছেন। আশা করি সফল হব।’ 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাজিম উর রউফ খান বলেন, ‘কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর দেশে কফি চাষ জনপ্রিয় করতে ২০২১ সালের জানুয়ারিতে ‘কাজুবাদাম ও কফি গবেষণা, উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ প্রকল্প’ হাতে নেয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই)। প্রকল্পে ২১১ কোটি টাকা মোট ব্যয় ধরা হয়েছে। বেলাব উপজেলার নিলক্ষীয়া গ্রামের সালাহ্ উদ্দিন মোল্লা সফলতার মুখ দেখছেন। বাণিজ্যিক সম্প্রসারণ ঘটাতে পারলে আরও নতুন নতুন চাষি উঠে আসবে। কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের পরামর্শ সহায়তা করে আসছি।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত