Ajker Patrika

ক্ষমতায় এসে কোনো দেশের গোলামি করা চলবে না: নুর

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
পাকুন্দিয়া পৌর ঈদগাহে মাঠে গণঅধিকার পরিষদের সমাবেশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
পাকুন্দিয়া পৌর ঈদগাহে মাঠে গণঅধিকার পরিষদের সমাবেশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, ‘এই দেশে যারাই ক্ষমতায় আসে, কেউ ভারতের গোলামি করে, কেউ পাকিস্তানের গোলামি করে। কেউ মার্কিনপন্থী, কেউ চীনপন্থী। কিন্তু আমরা বারবার বলেছি, কোনো পন্থী হয়ে বাংলাদেশকে ঝুঁকিতে ফেলা যাবে না। বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে হুমকির মুখে ফেলা যাবে না। বাংলাদেশে রাজনীতি করতে হলে দেশের মানুষের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে রাজনৈতিক দল হতে হবে।’

আজ শনিবার কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া পৌর ঈদগাহ মাঠে এক গণ-সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

নুরুল হক নুর বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে অপারেশন ‘ডেভিল হান্ট’ দুর্বৃত্তদের ধরার জন্য যৌথ বাহিনীর অভিযান পরিচালনার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আমরা এই অভিযানকে স্বাগত জানাই। দেশে অবস্থানরত আওয়ামী দুর্বৃত্তদের নিশ্চিহ্ন করার জন্য সামরিক বাহিনী, পুলিশ, র‍্যাব ও ছাত্র-জনতা নাগরিক যৌথভাবে কাজ করবে। তবে নিরীহ মানুষের সঙ্গে অন্যায় করবে না।

নুর বলেন, কারও বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া, কারও বিল্ডিং ভেঙে দেওয়াকে আমরা সমর্থন করি না। কারণ পৃথিবীর ইতিহাসে বিপ্লবের পর প্রতিবিপ্লব হয়। ক্যুর পর পাল্টা ক্যু হয়। বাংলাদেশেও ’৭৫-পরবর্তী সময়ে আমরা ক্যু-পাল্টা ক্যু দেখেছি। বাংলাদেশের বর্তমান যে সময়, এ সময়টা খুব বেশি ভালো সময় নয়। এ সময় অস্থিরতা সৃষ্টি করার জন্য, দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য দেশি-বিদেশি নানা চক্র কাজ করছে।

সে ক্ষেত্রে গণ-অভ্যুত্থানের শক্তিগুলোকে ঐক্যবদ্ধভাবে আগামীর বাংলাদেশকে বিনির্মাণের জন্য এখানে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে হবে।

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি বলেন, যারা আওয়ামী লীগের সাধারণ কর্মী-সমর্থক, নিরীহ নেতা-কর্মী তারা প্রয়োজনে নতুন নামে নতুনভাবে রাজনীতি করবে। কিন্তু ডাকাত, খুনি, সন্ত্রাসী আওয়ামী লীগের নামে এ দেশে রাজনীতি করার কোনো জায়গা নেই।

নুর বলেন, ‘আওয়ামী লীগের মতো একটি ফ্যাসিস্ট রাজনৈতিক দলকে যদি বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে নিষিদ্ধ করা না হয়, আগামীর বাংলাদেশে এমনই ফ্যাসিস্ট তৈরি হবে। খুনি-স্বৈরাচার তৈরি হবে। কাজেই আমরা বারবার ছাত্র-জনতার রক্তে, শহীদদের রক্তে রাজপথ রঞ্জিত হতে দেখতে চাই না। আমরা চাই, এই ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার চিরতরে বিলোপ ঘটুক। আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে নিষিদ্ধ হোক।’

ডাকসুর সাবেক ভিপি নুর বলেন, পতিত স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা ভারতে বসে ভারতের প্রেসক্রিপশনে এ দেশে অরাজকতা সৃষ্টির জন্য আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের উসকানি দিচ্ছে। অথচ মূল নেতারা কিন্তু সবাই দেশ থেকে নিরাপদে পালিয়ে গেছে।

কাজেই দেশে অবস্থানরত সাধারণ আওয়ামী লিগার ও নিরীহ আওয়ামী লিগার, যাঁরা জনগণের ওপর নির্যাতন করেননি, গুম-খুন করেননি, তাঁরা জনগণের কাছে ক্ষমা চান। এলাকার মানুষের কাছে ক্ষমা চান, মানুষ আপনাদের ক্ষমা করবে।

কিন্তু যারা বিগত ১৫ বছর ধরাকে সরা জ্ঞান করে জনগণের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন চালিয়েছে, মামলা-হামলা দিয়ে এলাকা ছাড়া করেছে—তাদের কোনো ক্ষমা নেই। তিনি আরও বলেন, ‘কেউ আমাকে একটি স্লিপ ধরিয়ে দিয়েছে। নতুন সিন্ডিকেট করে পাকুন্দিয়া থেকে কিশোরগঞ্জের ভাড়া নাকি ৩০-৫০ টাকা করেছে। ইউএনও সাহেব নাকি এই গণহত্যার সময় ছাত্র-জনতার ওপর হামলা মামলার আসামিদের বালু উত্তোলন ব্যবসার টেন্ডার দিয়েছেন।’

কোনো কোনো ক্ষেত্রে কোনো কোনো রাজনৈতিক দলের উৎপাতে মানুষ আবার অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে। এ লক্ষণ কিন্তু কারও জন্য ভালো নয়। বেশি দূর যাওয়া লাগবে না। খুব নিকট-অতীতেই আওয়ামী লীগের নিষ্ঠুর পতন আপনারা দেখেছেন।

উপজেলা গণঅধিকার পরিষদের নেতা শহীদুল হকের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ফারুক হাসান, সহসভাপতি শফিকুল ইসলাম শফিক, উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন, কিশোরগঞ্জ জেলা গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন লিটন প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার দায়িত্বেও ড. খলিলুর রহমান

ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলের পর আপাতত ভরসা ঢাকা ও সিলেট বিমানবন্দর

বাথরুমে গোপনে নারীদের ভিডিও ধারণ, পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের কর্মচারী আটক

একমাত্র বিদেশি ‘বীর প্রতীক’ ঔডারল্যান্ড, যাঁর জন্য মুক্তিযুদ্ধের অংশ হলো বাটা

নির্বাচন ঘিরে মাঠ প্রশাসন গোছাচ্ছে সরকার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত