আম্পানের ক্ষত সেরে উপকূলে ফিরছে সবুজ

আবুল কাসেম, সাতক্ষীরা 
Thumbnail image
সড়কের পাশে বেড়ে উঠছে গাছের চারা। সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগরে। ছবি: আজকের পত্রিকা

সাতক্ষীরার উপকূলে ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তাণ্ডবে গাছপালা উজাড় হয়ে যাওয়ার চার বছরের মাথায় ফিরে আসতে শুরু করেছে সবুজ বনায়ন। সেখানে বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংস্থার উদ্যোগে রোপণ করা হয়েছে নানা জাতের ফলদ ও বনজ গাছ। তবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা উপকূলীয় এলাকায় প্রচুর পরিমাণে গাছ রোপণে সরকারকে উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০২০ সালে আম্পানের তাণ্ডবে লন্ডভন্ড হয়ে যায় সাতক্ষীরার উপকূল। তারপরও টিকে থাকা বাকি গাছগুলো লবণাক্ততার করাল গ্রাসে পড়ে মরে মরুভূমিতে রূপান্তর হওয়ার উপক্রম হয় পুরো এলাকা। পরিবেশে পড়ে বিরূপ প্রভাব। তবে আগের সে দৃশ্য এখন আর নেই। এলাকায় লবণসহিষ্ণু জাতের ফলদ ও বনজ গাছ লাগানোর ধুম পড়েছে। জাম, কতবেল, লিচু, কামরাঙা, সফেদা, তাল, আকাশমণি, নিম, বাবলা, খয়েরসহ বিভিন্ন গাছ লাগানো হচ্ছে উপকূলে।

আশাশুনির কুড়িকাহুনিয়া গ্রামের মাসুমবিল্লাহ বলেন, উপকূলীয় এলাকায় আম্পানের পর মরুভূমি হয়ে গিয়েছিল। এখন এখানে ব্যক্তি বা সংস্থার উদ্যোগে কিছু গাছ লাগানো হচ্ছে। আরও ভালো হয় যদি সরকারি উদ্যোগে বৃহৎ প্রকল্প নেওয়া যায়।

প্রতাপনগর গ্রামের মো. রাসেল জানান, আম্পানের পর প্রতাপনগর গাছহীন হয়ে পড়ে। কিন্তু বাঁধ হওয়ার পর ধীরে ধীরে সবাই গাছ রোপণ করতে শুরু করেন। কিছু গাছ মরে গেছে, আবার কিছু বেঁচে আছে। সব মিলিয়ে ধীরে ধীরে প্রতাপনগর সবুজায়নের দিকে যাচ্ছে। একই এলাকার আব্বাস হোসেন জানান, আম, জাম, নারকেলগাছ সব মারা গিয়েছিল। এখন বাবলা, শিরীষ, বেল, তালগাছ লাগানো হচ্ছে। এগুলো বেঁচে থাকছে, ছায়া দিচ্ছে।

৫০ কিলোমিটার রাস্তার পাশে নিজ উদ্যোগে কতবেল ও তালগাছ লাগিয়েছেন প্রতাপনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু দাউদ গাজী। তিনি বলেন, ‘এই ইউনিয়ন ছিল একসময় সাগরের মতো, পরে হলো মরুভূমির মতো। আমি সংস্থার কাছ থেকে গাছ নিয়ে লাগিয়েছি। ২৫ হাজার তালের আঁটি পুঁতেছি। হাজার হাজার কতবেলগাছ লাগিয়েছি।’

তবে পুরো উপকূলীয় এলাকাকে সবুজ বেষ্টনীর মধ্যে নিয়ে আসতে সরকারকে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জেলা পরিষদের সভাপতি আশেক-ই-এলাহী। তিনি বলেন, লোকজন ব্যক্তি উদ্যোগে কাজ করতে পারে; কিন্তু সেটা সব সময় সফলতার মুখ দেখে না। তাই মূল কাজটা হবে সরকারের বন বিভাগের। সামাজিক বনায়ন কর্মসূচির মাধ্যমে এটি হতে পারে।

উপকূলে লবণসহিষ্ণু জাতের গাছ লাগানোর পরামর্শ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের। সাতক্ষীরা সামাজিক বনায়ন কর্মসূচির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জি এম মারুফ বিল্লাহ বলেন, ‘বিভিন্ন ঝড়-বর্ষায় আশাশুনি, কালীগঞ্জ ও শ্যামনগরে বেড়িবাঁধ ভেঙে লবণপানি ঢুকে গাছ মারা যায়। বর্তমানে বৃষ্টির ফলে লবণাক্ততা কিছুটা কমেছে। আমরা সেখানে গাছ লাগাচ্ছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কারা পরিদর্শক হলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক

ট্রাম্পের অভিষেক: সি আমন্ত্রণ পেলেও পাননি মোদি, থাকছেন আরও যাঁরা

ট্রাম্পের শপথের আগেই বার্নিকাটসহ তিন কূটনীতিককে পদত্যাগের নির্দেশ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে: সলিমুল্লাহ খান

সংস্কারের কিছু প্রস্তাবে মনঃক্ষুণ্ন বিএনপি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত